২৯ জানু, ২০১৩

আলাপন : কুরআনকে বুঝতে হবে যেই উপায়ে

বয়ঃসন্ধিকালের সেই কিশোর সময়ের মতন মিটমিট করে হাসি, আবার খানিক পরে ভেউ ভেউ করে কাঁদি। কেউ খেয়াল করে দেখলে হয়ত আমাকে পাগলই ঠাওরাবে। অথচ আমার মনে হচ্ছিলো, কুরআনের আলোচনা কেমন করে জীবনকে পালটে দেয়! সকালে আলোচনা শুনতে শুনতে ভাবছিলাম -- তারুণ্যের সময়টায় ভেসে যেতে যেতে কখনো বুকের পুরোটা জুড়ে প্রশান্তির এই বাতাস আবার কখনো অনুভব করতে পারব। বাসে চড়ে জানালার পাশে বসে এয়ারপোর্ট রোড পার হবার সময় হেডফোনে বক্তার কাছে অর্ধপৃথিবীর শাসক উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু এর জীবনের কান্নাকাটির ঘটনা শুনে ভেজা চোখ মুছতে গিয়ে আমার লজ্জা আর সংকোচটুকু চলে গেল।


আমি কি কখনো ভেবেছিলাম যে ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে কয়েকবছর পরেও নিজেকে এতটা বেশি হতভাগা গন্ডমূর্খ মনে হবে? দুনিয়ার জীবনে সফল হবার চেষ্টায় রাতের পর রাত পড়াশোনা করা হয়, ক'জন পড়ে দুনিয়া এবং আখিরাতের অনন্তকালের জীবন -- উভয় জীবনে সফল হবার সেই মহিমান্বিত গ্রন্থ আল কুরআন? হায়! কতই না নির্বোধ আমরা, কতই না বোকা আমরা। আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) ১৪ বছর ধরে সূরা বাকারাহ মুখস্ত করেছিলেন, তার এই অর্জনকে তিনি আনন্দের সাথে আয়োজন করে উদযাপন করেছিলেন। কেন এই আনন্দ ছিলো? সাহাবা আজমাঈন শিখতেন একটি আয়াত এবং ব্যাখ্যা, জীবনে তাকে প্রতিষ্ঠিত করতেন -- তবেই এগিয়ে যেতেন।

আমাদের এমন হয়, যেই সূরাগুলো নামাজে পড়ি, তাদেরই অর্থ জানিনা। ব্যাখ্যাও জানিনা, জীবনে প্রয়োগ হবে কী করে? যখন জ্ঞান রইবে না, তখন কীভাবে তাকে প্রয়োগের সম্ভাবনা থাকবে? সূরা আসরের শিক্ষার কথা মনে হয়, মানুষ তো ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত। সেদিন আলোচনায় শুনেছিলাম, সমস্ত মানুষ জাহান্নামের দিকে ঝাঁপ দিয়ে যেতে ব্যস্ত। যারা কুরআন এবং সুন্নাহকে ঘিরে জীবনকে গড়তে চাইবে, হয়ত তারাই ব্যতিক্রম হতে পারবে। আমরা কবে বাসে চলতে, ঘরে যেকোন ক্ষুদ্র অবসরে, অফিসে খানিক সময়ের ফাঁকে কুরআনকে হৃদয়াঙ্গম করতে চেষ্টা করব? কবে আমরা কুরআনকে ঘিরে সমাজ গড়ব?

আমাদের মতন মানবসমাজ কি এই পৃথিবীতে আর ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ছিলনা? দু'টা বাড়ি আর গাড়ি, রূপ আর জ্ঞান, খ্যাতি আর যশ দিয়ে আমরা আলাদা ভাবছি নিজেদের? হে আল্লাহ! আমাদেরকে সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করুন। ঈমানের উপরে দৃঢ় এবং অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে