সেদিন মিরপুর যাচ্ছিলাম। বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি
লাইনে, পাশেই ইতস্তত আরো কয়েকটা ছেলেমেয়ে দাঁড়ানো, গায়ে তাদের স্কুল/কলেজ
ইউনিফর্ম। একাধিক মেয়ে এবং একাধিক ছেলে, দাঁড়ানোর মধ্যে দৃঢ়তা নেই কারো,
অস্বস্তি কাটাতে একটা ছেলে বুকে হাত বাধছিলো, আবার পকেটে হাত ঢুকাচ্ছিলো।
একবার তাকিয়ে দেখলাম, সবার মাঝে কমবেশি রোমাঞ্চকর অনুভূতির জেল্লা বের
হচ্ছে। বেশ অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকায় তাদের কথাবার্তার টপিক কানে এলো, মেয়েটা
বলছিলো, -- 'অই তর চুল ভালো কইরা আছরাস
না? এইরকম ক্যান লাগতেছে?' ... 'আরো ঘুম থেইকা উইঠা আইসা পড়সি, খেয়াল করি
নাই'... এরপর খিলখিল হাসির শব্দ। 'তর ফেসবুকে কমেন্টে...' (বিপ বিপ)
-- আলোচনার এই পর্যায়ে আমি অন্যদিকে মন দিলাম...
মিরপুরে ১০ নাম্বারে নেমে স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম, বেলা ১২টার মতন বাজে। আমি অপেক্ষা করছিলাম যেখানে, পাশেই কয়েক হাত দূরে দুইটা মেয়ে, বারবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে। তারা বোধহয় আমার পেছনের দিক থেকে কেউ আসবে বলে অপেক্ষা করছিলো -- আর আমার দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকাচ্ছিলো। । মিনিটখানেক পর একটা ছেলে এলো, 'তুই এইটা কী জামা পরসস? তোরে তো নীল রঙ্গে সুন্দর লাগে।" -- নীল জামা ধুইতে দিসি, এইটা তো নতুন, আর্সেনালের জার্সি। জার্সির চাইতে ওইটা ভালো... ছেলেটা বারবার চুল ঠিক করছিলো। পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়ানোর ভঙ্গিটাও বেমানান। এরপর আবার কানে এলো, 'তোরে তো আজকে কালো কালো লাগতেসে, ঘুমাস নাই রাত্রে?... (বিপ বিপ) -- এই মানের ছ্যাবলা গায়ে-পড়ে কথা বলাবলি কয়েক মিনিট টানা চলতে থাকার পরে প্রমাদ গুণে অন্যদিকে মন দিলাম...
আমি জানিনা, ছেলেমেয়েরা বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে আলাপ করতে পারার রোমাঞ্চে হাবুডুবু খেতেই মনে হয় অস্বস্তি সত্বেও এঁকেবেঁকে দাঁড়িয়ে কথা বলতে চায়। আলাপের কোন কারণ নেই, গল্প করার হয়ত কিছু থাকেনা তাই চুল আঁচড়ানো, জামার রঙ নিয়ে আলাপ করে ছেলেমেয়েগুলো। মেয়েদের আলোচনা হয়ত এমন হতেই পারে, আমার জানামতে আমার ফ্রেন্ড সার্কেলে চুল আঁচড়ানো আর জামার কালার নিয়ে যেসব ছেলে কথা বলত মেয়েদের সাথে, তারা নরমালি ফ্রেন্ড জোনে পাত্তা পেত না বরং পার্সোনালিটি কম হিসেবেই চিহ্নিত হত।
আজকাল এরকম 'আধুনিক' ছেলেমেয়ে মনে হয় অজস্র। এরকম ঘটনা ইদানিং অনেক বেশি দেখি। জীবনটা হয়ত তাদের জামার রঙ নিয়ে চিন্তা করে, চুলের স্পাইক আর জেলের বিবিধ ব্যবহার, পারফিউমের আলাপে, বেল্টের রঙ এবং ঘড়ির আভিজাত্য নিয়ে চিন্তা করেই জীবন চলে। আলোচনার বিষয়বস্তু এতটা নিম্নমানের হলে তাদের কাছ থেকে কতটা উন্নত ভবিষ্যত আশা করা যায় জানিনা। আমাদের সমবয়েসিদের কথা জানি, যারা অমন ছিলো তারা এখনো কেবলই নিজের ভোগে ব্যস্ত। টাকা ইনকাম, ডেটিং, দামী জামাকাপড়, এখানে ওখানে বেড়ানোতেই সফলতা তাদের...
অবশ্য পূর্বকালে ইতিহাস বদলে দিয়েছে সবসময়ে কেবল একদল মানুষ। বাকিরা সবসময়েই ভোগ-বিলাসে ব্যস্ত থেকেছে। ওই একদল মানুষের পরিশ্রম আর কাজের প্রতি ভালোবাসা বদলে দেয় পার্থিব জগতের ও সমাজের অভিমুখ। প্রত্যাশা করি একদল Stranger দেখবো বলে -- গুরাবা, গুরাবা...
০৩ জানুয়ারি, ২০১৩
মিরপুরে ১০ নাম্বারে নেমে স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম, বেলা ১২টার মতন বাজে। আমি অপেক্ষা করছিলাম যেখানে, পাশেই কয়েক হাত দূরে দুইটা মেয়ে, বারবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে। তারা বোধহয় আমার পেছনের দিক থেকে কেউ আসবে বলে অপেক্ষা করছিলো -- আর আমার দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকাচ্ছিলো। । মিনিটখানেক পর একটা ছেলে এলো, 'তুই এইটা কী জামা পরসস? তোরে তো নীল রঙ্গে সুন্দর লাগে।" -- নীল জামা ধুইতে দিসি, এইটা তো নতুন, আর্সেনালের জার্সি। জার্সির চাইতে ওইটা ভালো... ছেলেটা বারবার চুল ঠিক করছিলো। পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়ানোর ভঙ্গিটাও বেমানান। এরপর আবার কানে এলো, 'তোরে তো আজকে কালো কালো লাগতেসে, ঘুমাস নাই রাত্রে?... (বিপ বিপ) -- এই মানের ছ্যাবলা গায়ে-পড়ে কথা বলাবলি কয়েক মিনিট টানা চলতে থাকার পরে প্রমাদ গুণে অন্যদিকে মন দিলাম...
আমি জানিনা, ছেলেমেয়েরা বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে আলাপ করতে পারার রোমাঞ্চে হাবুডুবু খেতেই মনে হয় অস্বস্তি সত্বেও এঁকেবেঁকে দাঁড়িয়ে কথা বলতে চায়। আলাপের কোন কারণ নেই, গল্প করার হয়ত কিছু থাকেনা তাই চুল আঁচড়ানো, জামার রঙ নিয়ে আলাপ করে ছেলেমেয়েগুলো। মেয়েদের আলোচনা হয়ত এমন হতেই পারে, আমার জানামতে আমার ফ্রেন্ড সার্কেলে চুল আঁচড়ানো আর জামার কালার নিয়ে যেসব ছেলে কথা বলত মেয়েদের সাথে, তারা নরমালি ফ্রেন্ড জোনে পাত্তা পেত না বরং পার্সোনালিটি কম হিসেবেই চিহ্নিত হত।
আজকাল এরকম 'আধুনিক' ছেলেমেয়ে মনে হয় অজস্র। এরকম ঘটনা ইদানিং অনেক বেশি দেখি। জীবনটা হয়ত তাদের জামার রঙ নিয়ে চিন্তা করে, চুলের স্পাইক আর জেলের বিবিধ ব্যবহার, পারফিউমের আলাপে, বেল্টের রঙ এবং ঘড়ির আভিজাত্য নিয়ে চিন্তা করেই জীবন চলে। আলোচনার বিষয়বস্তু এতটা নিম্নমানের হলে তাদের কাছ থেকে কতটা উন্নত ভবিষ্যত আশা করা যায় জানিনা। আমাদের সমবয়েসিদের কথা জানি, যারা অমন ছিলো তারা এখনো কেবলই নিজের ভোগে ব্যস্ত। টাকা ইনকাম, ডেটিং, দামী জামাকাপড়, এখানে ওখানে বেড়ানোতেই সফলতা তাদের...
অবশ্য পূর্বকালে ইতিহাস বদলে দিয়েছে সবসময়ে কেবল একদল মানুষ। বাকিরা সবসময়েই ভোগ-বিলাসে ব্যস্ত থেকেছে। ওই একদল মানুষের পরিশ্রম আর কাজের প্রতি ভালোবাসা বদলে দেয় পার্থিব জগতের ও সমাজের অভিমুখ। প্রত্যাশা করি একদল Stranger দেখবো বলে -- গুরাবা, গুরাবা...
০৩ জানুয়ারি, ২০১৩
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে