১ জানু, ২০১৩

আলাপন : নতুন বছর ২০১৩

{{ ১ }}

আজকের রাতটি খ্রিষ্টাব্দের শেষ দিন। হতভাগা আমাকেও একজন প্রশ্ন করেছে আজকের 'নাইটে' কি করব। আলহামদুলিল্লাহ উত্তর দিতে পেরেছি। আজকে ইনশাআল্লাহ রিয়াদুস সলিহীন থেকে কিছু পৃষ্ঠা পড়ব। এছাড়া কয়েকটা বই কিনেছিলাম, সেগুলো পড়ব। যতদূর স্মরণ হয়, আমার জীবনের এমন সকল 'নাইটে' আমি আমার নিজ গৃহে অবস্থান করেছি, আজকেও ইনশাআল্লাহ ব্যতিক্রম হবেনা।

নিজের ব্যক্তিগত অনুভূতি থেকে একসময় দলবদ্ধভাবে যত ছোট-বড় অশ্লীলতা/উত্তাল আনন্দ দেখেছি, দূরে থেকেছি। এখন আমি জানি, যারা প্রকাশ্যে অশ্লীল কাজ ও পাপ কাজ করে, আল্লাহ তাদের অকল্পনীয় শাস্তি দিবেন। একা একা করা পাপের সাক্ষী থাকে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, ফেরেশতা প্রমুখ। কিন্তু দলবদ্ধভাবে করা পাপের সাক্ষী অজস্র, কেউ আমাকে বিচারের দিনে ছেড়ে কথা বলবে না, সমাজে খারাপ কাজকে ছড়িয়ে দেয়ার দায় আমার কাঁধেই আসবে... আল্লাহ সমস্ত অন্যায় ও অশ্লীলতা থেকে আমাদের রক্ষা করুন।



আল্লাহ আমাদের বলেছেনঃ

♥ "…নির্লজ্জতার কাছেও যেয়ো না, প্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্য…"[সূরা আনআম - ১৫১]

♥ "যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে…" [আন নূর :১৯]

♥ "মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে… " — [সূরা আন নূর :৩০]

♥ "আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি।…" [সূরা ক্বাফ -১৬]






স্বপ্ন কারখানা, তিলোত্তমা নগরী
রাত ৮টা, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১২







{{ ২  }}
নবাগত খ্রিষ্টীয় অব্দটি হলো ২০১৩। আনলাকি থারটিন বলার স্রোত বইছে আমাদের মাঝে। ফান করে, না বুঝে বলতে বলতেই এর উপরে আমাদের এক ধরনের ন্যুনতম বিশ্বাস হলেও চলে আসে। অথচ আমরা জানি, এই দুনিয়াতে সবকিছু কেবল এবং কেবলমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার ইচ্ছাতেই ঘটে। এখানে সেই ঘটনাকে কোন গ্রহ, নক্ষত্র, মানুষ, প্রজাপতি, তিমি, অজগর, রাজা-মন্ত্রী, ডাইনি, হুজুর প্রভাবিত করতে পারে না। আমাদের সমস্ত ঘটনার একক ক্ষমতাশালী কেবলমাত্রই আল্লাহ, তিনি আমাদের রব এবং মালিক। আমাদের নেতা যিনি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শিখিয়েছিলেন কোন কিছুকে যেন অমঙ্গল হিসেবে ধরে না নেয়া হয়। এই ধরণের জাহিলিয়াতের কুসংস্কারের স্থান আল্লাহর বান্দাদের কাছে থাকার কথা নয়। যেই জিনিস আমার চিন্তা ও বিশ্বাসের পরিপন্থী, তা নিয়ে আমি যদি ফান করি, একজন অজ্ঞ লোক সেটাকে সিরিয়ায়সলি ভেবে বসতে পারে -- এভাবেই কুসংস্কার ছড়ায়। যাত্রার শুরুতে হাত থেকে বই পড়ে গেলে বিচলিত হওয়া, নতুন কিছু কিনেই হাত থেকে পড়ে গেলে চিন্তিত হওয়া -- এগুলো ভিত্তিহীন নয়কি?

শুভ জিনিসগুলো নিয়ে কেন ভাবছিনা? নতুন বছরের প্রথম দিনটিতে বের হতেই দেখলাম ঝকঝকে রোদ -- শীতের কুয়াশা আজ কেটে গেছে। দিনটিও তাহলে হোক আমার অমন মন খারাপের কুয়াশা মুক্ত। অথবা, সকালে বের হয়েই একজন হাসিমুখ মানুষকে দেখলাম -- কী দারুণ একটা দিন শুরু হলো! এমন চিন্তা করলে আশাবাদী হওয়া যায়, এমন জিনিস আমাদের জন্য কল্যাণকর। আমরা কেবল আল্লাহ রব্বুল আলামীনের দাসত্ব করি, কেবল তার কাছেই সাহায্য চাই, তিনিই সমস্ত কিছুর উপরে পূর্ণ ক্ষমতাশালী। আল্লাহ না চাইলে কিছুই হয়না, আল্লাহ যা চান, সেটাকে কেউ হওয়া থেকে ঠেকাতে পারেনা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদের জ্ঞানে ও কাজে রাহমা ও বারাকাহ দান করুন, তার পছন্দ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দিন।



স্বপ্ন কারখানা, তিলোত্তমা নগরী
সকাল ১০টা, ০১ জানুয়ারি, ২০১৩

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে