২৯ ডিসে, ২০১৪

সেই সময়ে আমাদের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের জন্য হাতে অনেক সময় থাকতো

অনেকদিন আগের কথা...

যখন 'উইন্ডো' ছিলো ঘরের জানালার চারকোনা ফাঁকা জায়গা এবং 'অ্যাপ্লিকেশন' ছিলো কাগজের উপরে কিছু লেখা। যখন 'কীবোর্ড' ছিলো একটি পিয়ানো এবং 'মাউস' ছিলো একটি প্রাণী। যখন 'ফাইল' ছিলো গুরুত্বপূর্ণ অফিসিয়াল বস্তু এবং 'হার্ড ড্রাইভ' ছিলো অশান্তিময় পথযাত্রা, যখন 'কাট' করা হতো ছুরি দিয়ে এবং 'পেস্ট' করা হতো আঠা দিয়ে। যখন 'ওয়েব' ছিলো  মাকড়শার জাল এবং 'ভাইরাস' ছিলো ফ্লু। যখন অ্যাপেল এবং ব্ল্যাকবেরি ছিলো শুধুই ফল...

সেই সময়ে আমাদের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের জন্য হাতে অনেক সময় থাকতো।

[শাইখ যাহির মাহমুদের ফেসবুক পেজ থেকে অনূদিত, ২৩ আগস্ট, ২০১৪]

[গ্রন্থচারণ] সুবহে সাদিক : খুররম মুরাদ


আমরা কেউ একদিনে বদলে যেতে পারিনা। কত ভুল প্রতিদিন করি, কত যে পাপ করি। শয়তান এসে হাল ছাড়িয়ে দেয়ার জন্য কত যে কুমন্ত্রণা দেয়!! এই পৃথিবীর প্রতিটা মানুষেরই লক্ষ্য আদর্শ মানুষটির মতন হওয়া হলেও কেউ কোনদিন পুরোপুরি তেমন, হতে পারবে না। তাই কেউ কখনো *অ্যাবসোলিউট* ভালো মানুষ হতে পারবে না দুনিয়াতে, তাই তার আজীবনই বিনয়ী থাকতে হবে এই ভেবে যে সত্যিকারের ভালো মানুষ হওয়া তার ঢের দেরি।

আত্মার উন্নয়ন এক অতি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সবার প্রথমে দরকার জীবনটার উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা। জীবনের উদ্দেশ্য আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা, আল্লাহর জন্যই আমাদের এই জীবন। সেই বিষয়টা যেই অবস্থাতেই আছি, সেই অবস্থাতেই নিজেকে বুঝানো। অর্থাৎ, জীবনটাকে অর্থবহ আর শান্তিপূর্ণ করতে হলে আল্লাহর পথে গিয়ে যেতে হবে, সেই জন্য দৃঢ় সংকল্প করতে হবে। হৃদয়ের যত্ন নিতে হবে, এই যত্ন তার বেড়ে ওঠা ও পরিপুষ্টির জন্য দরকার। আমাদের হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করার মাঝে রয়েছে সফলতা। যিনি হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করতে পারেন, তিনি তো সত্যিকার সফল। আমাদের লক্ষ্য তো জান্নাত লাভ করা, আর তা অর্জন করা সম্ভব আল্লাহ সন্তুষ্টির মাধ্যমে। জান্নাত লাভ কোনভাবেই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ছাড়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে রব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি পেলেই জান্নাত অর্জন সম্ভব। তাই, যেভাবেই হোক, জীবনের প্রতিটি কাজের উদ্দেশ্যই হতে হবে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা। এতেই সফলতা, এতেই শান্তি, এতেই পরিতৃপ্তি...

ঐ পারেতে সর্বসুখ বোকাদের বিশ্বাস


এক বনে এক কাক বাস করতো।
কাকটি তার জীবন নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট ছিল। কিন্তু একদিন সে একটি রাজহাঁস দেখতে পেল...
কিন্তু কথায় আছে, "নদীর এ পার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস, ও পারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস।" কাকটি ভাবলো, আহা! রাজহাঁস কতই না সুন্দর!  নিশ্চয়ই সে এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী পাখি। কাকটি তার এই ভাবনার কথা রাজহাঁসকে জানালো।

রাজহাঁস জবাব দিলো, "আসলে, আমি ভাবতাম আমিই বুঝি এখানকার সবচেয়ে সুখী পাখি যতক্ষণ না আমি একটি টিয়াকে দেখলাম... টিয়ার গায়ে আছে দু'ধরনের রং। তাই এখন আমি মনে করি, টিয়াই হলো সৃষ্টির মাঝে সবচেয়ে সুখী পাখি।"

কাক এরপর গেল টিয়ার কাছে। টিয়া তাকে বললো, "আমি ছিলাম খুব খুব সুখী, যতক্ষণ না আমি ময়ূরকে দেখতে পেলাম...... আমার গায়ে তো মাত্র দু'টি রং, আর ময়ূরের শরীরে কত বর্ণেরই না সমাহার!"

কাক এরপর চিড়িয়াখানায় গেল ময়ূরের সাথে দেখা করতে। সেখানে সে দেখতে পেল, ময়ূরকে দেখতে শত শত মানুষ ভিড় জমিয়েছে।  সবাই চলে যাওয়ার পর, কাক ময়ূরের কাছে গেল--
"ও ময়ূর, তুমি দেখতে কতই না সুন্দর! তোমাকে দেখতে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ভিড় জমায়। আর আমি? আমাকে দেখলেই মানুষ দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। তুমি নিশ্চয়ই জগতের সবচেয়ে সুখী পাখি।"

ময়ূর জবাব দিলো,
"আমিও ভাবতাম, আমিই বোধহয় এই গ্রহের সবচেয়ে সুন্দর এবং সুখী পাখি। কিন্তু এই সৌন্দর্যের কারণে আমাকে খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। আমি এই চিড়িয়াখানা খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি এবং বুঝতে পেরেছি কাকই হচ্ছে একমাত্র পাখি যাকে কখনোই খাঁচায় বন্দি করা হয় না।তাই গত ক'দিন যাবত আমি ভাবছি, ইশ! আমি যদি কাক হতাম, তাহলে যেখানে খুশি ঘুরে বেড়াতে পারতাম।"

....................
এটাই হলো আমাদের সমস্যা।
আমরা অহেতুক অন্যদের সাথে নিজেদের তুলনা করি আর দুঃখ পাই।
আল্লাহ আমাদের যা দিয়েছেন,আমরা তার কোন গুরুত্ব দিই না। এভাবে আমরা সকলেই দুঃখের দুষ্টচক্রে পড়ে ঘুরপাক খেতে থাকি।

তাই স্রষ্টা আপনাকে যা দিয়েছেন, তার গুরুত্ব দিয়ে, সুখী হওয়ার গোপন রহস্যটা বুঝতে শিখুন আর অহেতুক অন্যদের সাথে তুলনায় নিয়ে নিজে অসুখী হওয়াকে দূরে ছুড়ে ফেলুন।

* * * * * * *
শাইখ যাহির মাহমুদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত।
অনুবাদ কৃতজ্ঞতা: ইমরান হেলাল]

মনের জানালা মাঝে # ২০


(২১২)
কোন কিছু গড়ে তুলতে অনেকদিন সময় লাগে। ভাঙ্গতে চাইলে কিছুই প্রয়োজন হয়না। অনেক সময় একটু অসতর্কতার কারণেও অনেক কিছু ভেঙ্গে চৌচির হয়ে যায়।

(২১৩)
মানুষ বড় অদ্ভুত। সে যখন জানে কেউ তার সফলতার প্রতি আশা করে, কেউ তাকে ভালোবাসে, কেউ তাকে মূল্য দেয়-- তখন সে প্রবলভাবে চেষ্টা করতে থাকে যেন তার কাজ অনেক সুন্দর হয়। ভালোবাসার অনুভূতি মানুষকে আত্মবিশ্বাস যোগায়। অন্যদিকে যখন সে বুঝতে পারে কোথাও তাকে অপছন্দ করা হচ্ছে, যখন সে সমালোচনার মুখোমুখি হয় অকারণেই, তখন সে এক ধরণের নির্বিকারতা অনুভব করে, তার আচরণ ও কাজ আরো বেশি কোমলতাবিবর্জিত হয়ে যায়, কখনো কখনো সে চায় ঐ ব্যক্তি তার কাজের সৌন্দর্যই আর দেখতে না পাক।

(২১৪)
আপনার জীবনের অপূর্ণতাগুলোই আপনার পার্থিব জীবনের পূর্ণতা। আপনার অপূর্ণতা,অপ্রাপ্তি,অশান্তি আপনাকে মনে করিয়ে দিবে আপনি এগুলোর অনুভূতিকে আখিরাতে চান না, ফলে জান্নাতের আকাঙ্ক্ষা আপনাকে আরো বেশি তীব্র হয়ে ধরা দিবে।

(২১৫)
আমরা যারা ভালো কাজের পরিকল্পনা করি, অথবা প্রতিদিন/সপ্তাহ/মাসের রুটিন তৈরি করি যেন সময় বাঁচিয়ে সময়ের উপযুক্ত ব্যবহার করে নিজেকে উন্নত করে ভালো কাজের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া যায় --

তারা খুব কমই হয়ত লক্ষ্যপূরণ করতে পারি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রুটিন বা প্ল্যান অল্প ক'দিন গিয়ে আর সেভাবে আগায় না। তাই অনেকে নিয়মিত প্ল্যান করি, বারবার ফসকে গেলেও আরো করি কেননা রুটিন বা প্ল্যানবিহীন দিনগুলোর সময় খুবই নষ্ট হয় আর তেমন কোন কাজই হয় না।

(২১৬)
পরিকল্পনা করা বন্ধ করে দেয়া মানে নিজের পরাজয় নিশ্চিত করা। আমাদের প্রতিটি প্ল্যানমাফিক কাজ আমাদের আপাতত সফলতা না দিলেও অনেকদিন পরে জীবনের পেছনে তাকালে দেখা যায় সেই প্ল্যান করে কাজ করে এগিয়ে যাওয়া পরিশ্রমটুকু আমাদের এমন সব পথ খুলে দিয়ে এগিয়ে আসতে দিয়েছে যা অনেক অনেক বেশি সুন্দর অথচ প্রথম করা প্ল্যানিং-এর মানসিকতা ও বুদ্ধিতে আমরা জানতাম না নিজেকে আমরা এতদূর নিয়ে আসতে পারবো!

তাই কখনো রুটিন করা ও প্ল্যানিং করা বন্ধ করা উচিত নয় বরং নিয়মিত পরিকল্পনা করুন, পরিকল্পনার আপডেট করে আরো উন্নত করুন এবং প্রচেষ্টা করতে থাকুন। পথ দেখানোর মালিক আল্লাহ, তিনি আমাদের অনেক উত্তম গন্তব্যে নিয়ে যাবেন ইনশা আল্লাহ।

(২১৭)
কখনো কখনো শব্দের চেয়ে নৈঃশব্দ ভয়ংকর!!

(২১৮)
আমরা যাদের ভালোবাসি তাদেরকে মূলত নিজেদের অজান্তেই খুব বেশি অনুকরণ করে ফেলি। তাদের ভালোলাগা আমাদের কাছেও ভালোলাগা হয়ে যায়, তাদের প্রিয় জিনিসগুলো আমাদের কাছেও প্রিয় হয়ে ধরা দেয়। তাদের প্রিয় শব্দগুলো আমাদের প্রিয় হয়ে যায়, তাদের প্রিয় মানুষগুলোও আমাদের প্রিয় হয়। মানবিক ভালোবাসা অথবা ঐশ্বরিক ভালোবাসা উভয়ক্ষেত্রেই এমনটা হয়ে থাকে...

(২১৯)
কিছু মানুষ কোন খাবার খেতে সুস্বাদু লাগলেও 'মজাদার বা সুস্বাদু' না বলে বরং বলে 'সুন্দর খাবার'। তাদের কাছে পৃথিবীর সবই 'সুন্দর' আর 'পচা'!! ব্যাপারটা মজার! হিহি!

(২২০)​
যতই সময় পেরিয়ে যায়, বুঝতে পারি আল্লাহ আমাকে যে পথে ঘুরিয়েছেন সেটা আমার পছন্দ করা পথের চেয়ে হাজার হাজার গুণ বেশি কল্যাণকর আর শান্তির। আলহামদুলিল্লাহ! হে আমাদের প্রিয় রব! আপনি সত্যিই ক্ষমাশীল, প্রেমময়, রাহমান।

(২২১)
প্রতিটি আলোক উৎস নিজেকে পুড়িয়ে অন্যকে আলো দেয়। মোমবাতি নিজেকে পোড়ায়; লন্ঠন পোড়ায় নিজের তেল, নিজের সলতে এবং নিজেকে নিঃশেষ করে অন্যকে আলো দেয়।  আলো ছড়িয়ে দেয়ার, অন্যদের সাহায্য করার ব্যাপারটাই এমন। তখনই কেবল অন্যদের আলোকিত করা যায় যখন কেউ নিজেকে পোড়ায়। হয়ত, এই পুড়ে যাওয়ার মাঝে, আলোকউৎস হবার মাঝেই রয়েছে সার্থকতা। তবু এতটুকু নিশ্চিত, নিজেকে না পুড়িয়ে আলো ছড়ানো যায় না।

তবে সবাই আলো চেনে না, যারা আলোকে ভালোবাসে, যারা আলোর আকাঙ্ক্ষায় অধীর থাকে, তাদের কাছেই আলো হয় উপকারী শক্তি, প্রাণসঞ্চারক, আনন্দোদ্দীপক... তারা সেই আলোকে কাজে লাগাতে পারে।

অন্যদের কাছে আলো মানে স্রেফ আলো নামক কিছুমিছুমাত্র; আশাজাগানিয়া, ভালোবাসার কোন শক্তি নয়...

(২২২)
অমুক ফ্ল্যাটের ছেলেটা বুঝে না লাঙ্গল কিংবা পাওয়ার টিলারের মূল্য, চাষা বুঝে না জিআরই স্কোরে কী হয়, পাড়ার মস্তান বুঝে না কবিতা, স্টেশনের কুলিটা জানে না থ্রিজিতে কী এমন লাভ... তেমনি ফুল বাগানে সুন্দর, ফুল সুন্দর ফুলপ্রেমীর ঘরের ফুলদানিতে কিংবা ফুলে মুগ্ধ কোন নারীর খোঁপায়...

যে যার কদর বুঝে না, তার কাছে সেই জিনিসের মূল্য নেই। কেউ হয়ত যা পায় তা চায় না, যা পায় তা বুঝে না। উলুবনে মুক্তো ছড়িয়ে থাকলে তো লাভ নেই, মুক্তো থাকবে হারের মাঝে, সৌন্দর্যবর্ধনে, কারো প্রাণকে জুড়িয়ে দিতে।

চারিদিকে বেমানান সব মিল। অমিলের মাঝে মিলের প্রভাব, মিলের মাঝে অমিল। শান্তিপ্রেমীর অশান্তি আর অশান্তিপ্রেমীর শান্তি যেন একই রকম! বিচিত্রতা এই জগতে... ততোধিক বিচিত্র এই মানবগোষ্ঠী ও তাদের রুচি...

২৬ ডিসে, ২০১৪

অনুপ্রেরণা - ৬


[ইসলামিক অনলাইন ইউনিভার্সিটি ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহীত ও অনুবাদকৃত]

* * *
আল্লাহ আপনার সাথে থাকার অর্থ এই নয় যে আপনার সমুদ্র যাত্রাতে বড় কোন ঢেউ কাঁপাবে না। আল্লাহ সাথে থাকার মানে হলো, এমন একট জাহাজে চড়ে বসা যা কোন ঝড়ই ডুবাতে পারবে না।

* * *
ঔদ্ধত্য ও অহংকারের কারণে শয়তানকে জান্নাত থেকে বের করে দেয়া হয়েছিলো। খেয়াল রাখবেন এই কারণগুলো যেন আপনার জান্নাতে ঢোকা থেকে বঞ্চিত হবার কারণ না হয়।

​বদলে যাওয়া সামাজিক সম্পর্ক ও আমাদের শিশুদের শৈশব হারিয়ে যাওয়া নিয়ে কিছু কথা

সবারই শৈশব স্মৃতিময়, মধুময়। সম্ভবত শৈশবের ব্যাপারটাই আল্লাহ এমন করে আমাদের বুকে গড়ে দেন। যন্ত্রণায় অনেক সময়েই শৈশবের স্মৃতিগুলো আরাধ্য ভালোলাগা হয়ে ওঠে। ইদানিংকার শিশুদের শৈশব দেখে আমার নিজের শৈশবের কথা মনে পড়ে। আমরা তো আমাদের শিশুদের শৈশব কেড়ে নিয়েছি।

আজ থেকে ২০ বছর আগেও আমাদের সামাজিক সংস্কৃতি অনেকটাই স্থির ছিলো। গল্পের বইতে পড়ে থাকতাম, সেটাই ছিলো বিনোদন আমার। আমার মতন অনেকেই ছিলো। আসরের আজান হলেই কেবল কিছু ছেলেপিলে বাসার বাইরে বের হবার অনুমতি পেতো। ঢাকার অলিগলির রাস্তায় ক্রিকেট বল নিয়ে বা ফুটবল নিয়ে খেলা, রাতে আবার এশার পরে মাসজিদের সামনে থেকে গলির মাথা পর্যন্ত একটু গপশপ করা... শুক্রবারের সকালে ন'টা পর্যন্ত পড়ে তারপর খেলতে বের হওয়া টাইপের ব্যাপার ছিলো।

ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের ​ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষতি হচ্ছে অনেক

​কমবেশি সবাই বুঝি, সময়ের সাথে সাথে ফেসবুক শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে গেছে। রাজনৈতিক বিষয়ে ও ইস্যুতে কোন পক্ষের শক্তি বৃদ্ধি ও হ্রাস করতে মিডিয়া হিসেবে ফেসবুক কতটুকু সক্ষম সেটা গবেষণার বিষয় হলেও সামাজিক ও ব্যক্তিগত বিষয়গুলো এর ভূমিকা যে অত্যন্ত বেশি তা প্রশ্নাতীত নিশ্চিত বিষয়।

আমি বলতে চাইছি, আমাদের আত্মিক বিষয়গুলোর কথা ভেবে আমাদের অত্যন্ত সাবধান হওয়া প্রয়োজন। নিজ স্পিরিচুয়ালিটি এবং সামাজিক সম্পর্কগুলো নষ্ট করতে ফেসবুক এখন খুব ঠুনকো সহজ বিষয়। একদিকে যেমন অন্যদের খুশি করতে কিছু লিখলে তা আমাদের কাজকে আখিরাতের পুরষ্কারের পরিবর্তে শাস্তি পাওয়ার সুযোগ করে দেয়, অন্যদিকে নিজ অসচেতনতায় লেখা আজেবাজে বিষয় ও শব্দ অন্যদের মনকে কলুষিত করলে তার দায়ভার আমাদের উপরেও বর্তাবে আখিরাতে। ফেসবুক অজস্র দাম্পত্য সম্পর্ককে নষ্ট-ধ্বংস-যন্ত্রণাবিদ্ধ করতে কাজ করেছে,করছে,করবে। সাবধান হওয়া অত্যন্ত জরুরী।

​​ ​ইন্টারনেট ও আমাদের অনুপকারী জ্ঞানের মাতাল চর্চা

​​কেন যেন আজ হঠাৎ ছেলেবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। জীবনটা কতই না সহজ ছিলো। এই স্মৃতিকাতরতা আমার স্রেফ ভাবাবেগে ডুবে থাকা টাইপ নয়, আমাদের বাল্যের সহজতার সাথে এ সময়কে মেলাতে চেষ্টা করছিলাম। আমার যতটুকু মনে পড়ে, আমার কৈশোরটাও এতটা জটিল ছিলো না। আমার সামনে যা কিছু ঘটনা থাকতো, যে ক'জন মানুষ থাকতো, তাদের প্রতি খেয়াল করে জীবনের রুটিনকে সাজিয়ে নিতে চেষ্টা করতাম। ওটুকুর মাঝে সহজতা ছিলো জীবনে।

এখনকার জীবনে আমাদের সবারই মনে হয় অনেক অনেক সম্পর্ক ও চাপ। মোবাইল-ফেসবুক-ইন্টারনেটের যুগের যে মানসিক চাপ, তা বোধহয় পূর্বেকার সময়ের মানুষদের সাথে অনেক আলাদা। এই যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ভালো দিকগুলোকে অস্বীকার করছি না, সেসবের জন্যই ব্যবহার করতে আসা আমাদের সবার।

২২ ডিসে, ২০১৪

আমরা হয়ত বিশ্বাস করিনা আমরা যেকোন সময় মারা যেতে পারি

​আমার চারপাশে অনেক মানুষ নিয়মিত মারা যাচ্ছেন। কখনো একদিনেই দু'টি কাছের দূরের আত্মীয়ের সংবাদ শুনেছি। এদের কারো বয়স কম, কারো বেশি। কয়েক বছর আগে যে আমার ক্লাসমেট ছিলো, আজ সে মাটির নিচে। সুশীলদের মতন করে ইসলামবিহীন ঢঙ্গে তো আর বলতে পারি না, "যেখানেই থাকিস, ভালো থাকিস।" বরং আমি স্পষ্ট জানি সে এখন আখিরাতের জীবনে ঢুকে গেছে। হয়ত এখন খুব আনন্দ অথবা ভয়ংকর আযাবের মাঝে অন্ধকার কবরের সময়টা কাটাচ্ছে।

২০ ডিসে, ২০১৪

রুমী কবিতা (তৃতীয় কিস্তি)



* * *
তুমি যত বেশি নিশ্চুপ থাকবে, তত বেশি শুনতে পাবে। ~ জালালুদ্দিন রুমী

* * *
তোমার দু'টো চোখকেই বন্ধ করে দাও
যদি অন্য চোখটি দিয়ে দেখতে চাও।
~ জালালুদ্দিন রুমী

* * *
আমাকে দেখতে অস্থির মনে হতে পারে, কিন্তু আমার গভীরে আমি শান্ত ও স্থির। গাছের শাখারা দুলতে থাকে কিন্তু তার শেকড় থাকে দৃঢ়। ~ জালালুদ্দিন রুমী

* * *
তুমি যদি প্রকৃত ভারসাম্য অর্জন করতে না পারো তাহলে যে কেউ তোমাকে প্রতারিত করতে পারবে। ~ জালালুদ্দিন রুমী

* * *
কারো চোখের মাঝে যে আলো জ্বলে সে আসলে তার হৃদয়ে জ্বলে থাকা আলো। ~ জালালুদ্দিন রুমী

* * *
​বাতিগুলো আলাদা হলেও তাদের আলো ঠিক একইরকম। ~ জালালুদ্দিন রুমী​

* * *
শান্ত হও, নড়াচড়া করো না! নীরবতার সাথে সখ্যতা করে নাও। আরো গভীরে যাও, তোমার হৃদয়ের গহীনে ডুব দাও। সমস্ত কোলাহল থেকে একটি দিনের জন্য ছুটি নাও।~জালালুদ্দিন রুমী

* * *
ভালোবাসার কোন ভিত্তি বলতে কিছু নেই। এটা এমন এক অশেষ সমুদ্র যার শুরু নেই, শেষ নেই। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * *
আল্লাহ তোমাকে একটা অনুভূতি থেকে আরেকটা অনুভূতির দিকে ঘুরিয়ে দেন এবং এই বিপরীতধর্মী দুই অনুভূতি দিয়ে তোমাকে কিছু শেখাতে চান, যেন তুমি তোমার দু'টো ডানা দিয়ে উড়তে পারো, একটি দিয়ে নয়! ~ জালালুদ্দিন রুমী

* * *
হে আমার আত্মার পাখি, যাও এখনি উড়ে যাও! আমার তো রয়েছে প্রাচীরঘেরা শত দুর্গ। ~ জালালুদ্দিন রুমী

* * *
আমি ভেবে কুল পাইনা আমি কতবার তোমাকে দিবো বলে
উপহার খুঁজে বেড়িয়েছি এখানে-ওখানে
তবু কিছুকেই তোমার জন্য সঠিক বলে মনে হয়নি।
স্বর্ণকে সোনার খনিতে ফিরিয়ে এনে,
পানিকে বিশাল সমুদ্রে নিয়ে আসার যৌক্তিকতা কী?
আমার হৃদয় আর গোটা সত্ত্বা তোমায় দিয়ে লাভ নেই
কেননা সেগুলো তো ইতোমধ্যেই তোমার হয়ে গেছে।
তাই আমি এনেছি একটি আয়না
তার মাঝে তুমি তোমায় দেখ এবং আমায় স্মরণ করো।

~জালালুদ্দিন রুমী

২ ডিসে, ২০১৪

​আমাদের সামনে অনেক বিপদ



আমাদের সামনে অনেক বিপদ। আমরা যতক্ষণ বড় কোন বিপদে না পড়ি, ততক্ষণ পর্যন্ত বুঝি না আমরা কত ভালো ছিলাম। এ কথাগুলো শঙ্কা না জাগালেও এগুলোই বাস্তব। কেন বললাম তা আমি এখনই স্পষ্ট করে বলছি...

এই কথার স্পষ্টতা দেখতে পাওয়া যাবে আমাদের ইতিহাসে। বিভিন্ন জায়গায় পড়তে গিয়ে দেখি অনেক বড় বড় দার্শনিকেরা মানুষকে ইতিহাস শিখতে বলেন। ইতিহাস আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়, শেখায়। অথচ মুসলিমদের আল্লাহ দিয়েছেন কুরআন, তাতে রয়েছে নবীদের কাহিনী এবং আরো নানান রকম ঘটনা যা থেকে আল্লাহ 'শিক্ষা' রেখেছেন 'চিন্তাশীলদের' জন্য। এই চিন্তাশীল হওয়াটাও আমাদের দায়িত্বের মাঝে পড়ে। রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জীবন, শ্রেষ্ঠ সময় সেই সাহাবী এবং পরবর্তী তাবিঈন ও তাবে'তাবিঈদের জীবন জানাটাও আমাদের মূল জ্ঞানার্জনের অন্তর্গত-- সেটা একটা জ্ঞানময় ইতিহাস, শিক্ষা ও অনুপ্রেরণায় ভরা। আমরা খুব কম, খুবই কম মানুষ এগুলোকে আগ্রহভরে পড়ি। বাঁচতে পড়িনা হয়ত, পড়ার জন্য পড়ি।

২৩ নভে, ২০১৪

মনের জানালা মাঝে # ১৯


(২০০)
এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ও সৌভাগ্যময় মূহুর্তগুলোর একটি হলো সিজদাহ।

(২০১)
একজন মানুষের প্রকৃত সৌন্দর্য তার হৃদয়ে। যার প্রকাশ ঝরে পড়ে তার শব্দচয়নে, তার চাহনিতে, তার পরিশ্রমভরা কাজগুলোর প্রতিটি আঁচড়ে, কাজে ও কথায় তার যত্ন আর আন্তরিকতায়...

(২০২)
ঠিক যেই মূহুর্তে আমরা আল্লাহকে ভুলে যাই, আমরা আসলে সবকিছুকেই হারিয়ে ফেলি এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাই।

(২০৩)
সমুদ্রকে দূর থেকে দেখেই মুগ্ধ হই। সমুদ্রে ভ্রমণে যখন তার প্রবল উত্তাল জলরাশির আর ঢেউয়ের ধাক্কা খেতে হয় তখন ছোট কোন জাহাজে থাকা আরোহী অস্থির হয়ে আতঙ্কিত ও ভীত হয়ে যায়। আমাদের সম্পর্কগুলো যাদের সাথে, সেই মানুষগুলো হতে পারে সমুদ্রের মতন বিশাল, তথাপি তাদের সাথে সহাবস্থান যদি বিশাল ঢেউ সামলানোর মতন হয়, তাতে কোন আনন্দ থাকে না।অন্যদিকে শান্ত স্নিগ্ধ কোন বিলের জলের পাশে বসে তার টলটলে পানি উপভোগ করা যায়, তাতে হাত ডুবিয়ে সেই পরিষ্কার পানিতে মুখ ধুয়ে নেয়া যায়। বিলের পানিতে নৌকা চড়ে যেতেও স্নিগ্ধতা আর প্রশান্তির অনুভব হয়।  সম্পর্ক যদি হয় এমন শান্ত হৃদয়ের স্নিগ্ধ আর কোমল হৃদয়ের মানুষদের সাথে, তখন সম্পর্কটি হয় হৃদয় শীতলকারী।

দূর থেকে নয় বরং কাছে এসেই আমরা সুন্দরকে সত্যিকার অর্থে অনুভব করি!

(২০৪)
তুমি আছ আমার প্রতিটি নিঃশ্বাসে, খুব কাছে। আমার প্রতিটি অনুভবে, প্রতিটি প্রার্থনায়, প্রতিটি আনন্দে, প্রতিটি বেদনায়। তুমি আছ তাই অর্থপূর্ণ আমার জীবন। তুমি আছ তাই প্রেরণা পাই। একদিন দেখা হবে তোমার সাথে, সেই স্বপ্নে ভেসে যাই প্রতিদিন, প্রতিবেলায়... হে প্রেমময়!

(২০৫)
আব্বা সন্তুষ্ট থাকলে আল্লাহ আমাদের উপরে সন্তুষ্ট থাকবেন এইটা জানার পর থেকে প্রতিদিনই আব্বার প্রতি আমাদের ভালোবাসা জড়িয়ে থাকে তাদের প্রতি দোয়া আর তাদের সেবায়।

(২০৬)
আমাদের বেশিরভাগ মানুষ নিজের পরিচয় জানে না। নিজের ইতিহাস জানেনা, ক্ষমতা জানে না, ঐতিহ্য সম্পর্কে জানে না। কীটপতঙ্গের চেয়ে নিম্নমানের জীবন যাপন করে কেননা তারা এমন 'লাইফ স্ট্যান্ডার্ড' পেতে জীবন বিলিয়ে দেয় যা পুরোটাই পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা। তাদের ব্র্যান্ড নেশায় গর্বিত হওয়াও খুব ইন্টারেস্টিং। শার্ট-প্যান্ট-জুতা-শাড়ি হতে হয় ব্র্যান্ডের, স্নো-পাউডার-টুথপেস্ট, ল্যাপটপ-মোবাইল হতে হয় ব্র্যান্ডের। এমনকি ফ্ল্যাট-গাড়ি-বাইক-সাইকেল হতে হয় ব্র্যান্ডের। চাকুরিটাও ব্র্যান্ডের হতে চাইতে হয়। এভাবে কর্পোরেট ব্যবসার ডিজাইনের দাস হয়ে মরে যায় মানুষ। অস্থির মানবজীবন... হায়!!

(২০৭)
ছোট ছোট কিছু কাজ মিলে বিশাল অর্জন আর সফলতাকে তৈরি করে। ছোট কাজগুলো কখনই কম মূল্যবান নয়।

(২০৮)
রামাদান এগিয়ে আসছে। চারপাশে যেই বিপুল উদ্দীপনায় বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রস্তুতি তার শতভাগের একভাগ নেই রামাদানের জন্য। এই কথাটা শুনলে অনেকের গা জ্বালা করে, তাদেরকে বলছি না। বলছি সেই মানুষদের যারা বিশ্বাস করেন এই রামাদানে অতীত গুনাহগুলোর মাফ না পেলে অভিশপ্ত হয়ে যাবেন তারা। আফসোস তো হওয়াই উচিত সেই মানুষগুলোর কারণে যারা হয়ত এই বিশ্বকাপে ডুব দিয়ে সময় কাটিয়ে দিবেন অথচ রামাদানের মাফ পাওয়া হবে না, হয়ত তাদের আগামী রামাদান পাওয়ার আগেই দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হবে। আল্লাহ যেন আমাদেরকে এমন রামাদান কাটানোর করার সুযোগ দান করেন যেন রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত অর্জন করতে পারি।

(২০৯)
যখন কারো অনুপস্থিতি প্রকটভাবে অনুভব হয় তখনই আসলে বোঝা যায় সেই মানুষটির উপস্থিতি আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

(২১০)
আমাদের জীবনটা এমনিতেই ছোট। ফেসবুকের কারণে তা আরো বেশি ছোট হয়ে গেছে।

(২১১)
অসুস্থতা দিয়ে আল্লাহ ঈমানদারদের গুনাহ মাফ করিয়ে নেন।

১০ নভে, ২০১৪

কিশোর-কিশোরীদের ফেসবুক ম্যানিয়া ও অধঃপতন : উন্নতিকল্পে কিছু সম্ভাব্য পরিকল্পনা


ফেসবুকের আশেপাশে থাকা আমার প্রায় ৭ বছর হয়ে এলো। এতটুকু বুঝি, এখানে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা, যাদের জীবনে ঠিক বিশেষ কোন মিশন নেই, ভিশন নেই, সময় কাটানোর মতন 'এন্টারটেইনমেন্ট' নেই-- তাদেরকে নষ্ট-ভ্রষ্ট-বিপথগামী করতে ফেসবুকের মতন শক্তিশালী সোশাল মিডিয়া কমই আছে এখন। এমনকি ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের চিন্তার বিষয়কে বদলে দিতে পারে সোশাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং টপিকগুলো। অর্থাৎ, একটানা যে টপিকের  আলাপ হোমপেইজে ভাসতে থাকবে, বইপুস্তক-হালাকা-ক্লাস/দারস বিহীন ইন্টেলেকচুয়াল লেভেলের ছেলেমেয়েরা সেদিন শুধু সেইসব টপিক নিয়েই চিন্তা করতে থাকবে। এভাবে নোংরামির বিষেদাগার, সমালোচনা, অতিমাত্রায় ফানে বিষগ্রস্ত হয়ে বদলে যেতে দেখেছি অনেককে। ফেসবুকে সহজে ছেলে/মেয়েদের কাছে পাওয়া যায়, কমিউনিকেট করা যায়, ছবি দেখা যায়-- এসব কারণেও অনেকে ফেসবুকে আগ্রহ করে। কিন্তু চিন্তা করে দেখলেই ভয় পেতে হয় যে এরকম কোন একটি কিশোর/কিশোরী, তরুণ/তরুণী যদি আমাদের নিজ পরিবারের কখনো হয়, তাহলে তার উত্তম বেড়ে ওঠা কেমন হতে পারে?

​সবাই খুব হতাশার কথা বলে চারপাশে

​সবাই খুব হতাশার কথা বলে চারপাশে। একটু স্বপ্ন দেখতে, প্রশান্ত মনের কথা শুনতে বহুত কষ্ট করতে হয়!

সত্যিকার অর্থে চারপাশে তাকালে আশাবাদী হবার কথা কি? পথে বের হলে দেখতে পাই বাসের/লেগুনার হেলপাররা ইচ্ছে হলে পারলে ধাক্কা দিয়ে লোক নামায়। এভাবে অনেক মানুষ আহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ইচ্ছেমতন বাস থামিয়ে লোক নেয়া, প্রতিটি বাসে কন্ডাকটর আর প্যাসেঞ্জারের ক্যাচাল এবং মুখ ভরা গালি শুনতে গিয়ে গা ঘিনঘিনিয়ে ওঠে। প্রায় প্রতিদিন দেখি গাড়ির সাথে রিকসা বা সিএনজি লেগে গেছে, বডি নষ্ট বা ট্যামা হয়ে যায়, এতেও আহত হয় লোকে। পথের ধারে কনস্ট্রাকশন কাজ চলে, ফুটপাথে ফেরিওয়ালায় ভর্তি। কোথায় যাবো অসহায় একেকটি মানুষ আমরা?

৯ নভে, ২০১৪

জীবনের অতি-গুরুত্বপূর্ণ ক্যারিয়ারভাবনা বনাম আমাদের বোকামি

​আমি অনেকগুলো মানুষ দেখেছিলাম যারা আকণ্ঠ ডুবে থাকতো তাদের 'ক্যারিয়ারকে' কতটা 'জোস' করা যায় তা নিয়ে। আমি সত্যিকারের 'জোস ক্যারিয়ারওয়ালা' কিছু মানুষের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলাম যারা তাদের জীবনকে খুব মূল্যবান মনে করতেন। সবাই তাদের জীবনকে মূল্যবান মনে করে। আমিও করতাম। স্কুল-কলেজ জীবনে এই-সেই বই পড়ে দেশ-জাতি নিয়ে চিন্তা করা খুব স্বল্প সংখ্যক তরুণকে দেখেছিলাম যারা ভাবতো তাদের চিন্তাগুলো খুব দরকারি। তাদের কেউ কেউ স্পিন বলের মতন ঘুরতে ঘুরতে কনফিউশনিস্ট-অ্যাগনস্টিক হয়ে এখন একটা বাফারে পড়ে আছে। দেশ-জাতি তাদের কাছে তেমন কিছু পায়নি, পেয়েছে তাদের প্রেমিকারা। প্রেমিকাদের নামে রচনা হয়েছিলো গানের লিরিক, কিছু কবিতা। প্রেমিকাদের দেখাতেই হয়ত ফেসবুকে তারা রচেছে বিশাল কলেবরের শব্দসর্বস্ব পোস্ট যা আদতে তেমন কোন অর্থবহন করে না। তাদের মূল্যবান জীবন ভালো ইউনিভার্সিটির ভালো ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডাক্তারি পেরিয়ে ভালো চাকরি, লিঙ্কিং পার্কে-আয়রন মেইডেনের গান, বাসায় ফিরে মুভি দেখা, বুক খা-খা করে এমন কিছু ব্লগপোস্ট লেখাতে রূপ নিয়ে আছে। ওরা অনেক বুঝে, কেউ কিছু গেলতে গেলে উলটা বুঝিয়ে ছ্যাড়াব্যাড়া করে দেয়। ধর্মবিশ্বাসীরা অনেক ব্যাকডেটেড, না বুঝেই নাকি বিশ্বাস করে বসে থাকে যা ওরা পারেনা। ওরা ব্রিলিয়ান্ট ইঞ্জিনিয়ার/সরকারি কলেজে পড়া ডাক্তার তাই 'ধর্মের' কথা বলা 'লিমিটেড ভিশনের' বন্ধু/বড় ভাইদের বেইল নাই।

৬ নভে, ২০১৪

আশুরার দিনে ঢাকার মাটিতে শিয়াদের বীভৎস তাজিয়া মিছিল

চলে যাওয়া দিনটি ছিলো আশুরার দিন।

ঘটনাক্রমে সন্ধ্যার পর আল্লাহ আমাকে মোহাম্মদপুরে নিয়ে গিয়েছিলেন। টাউন হলের মেইন রোড বন্ধ, ভেতরের রাস্তাগুলো দিয়ে সিএনজি আমি যে রাস্তা দিয়েই ঘুরাই, সবখানে লম্বা লাঠি হাতে "ঐ হালা গুরা, গুরা" বলে চিৎকার করছিলো কিছু পোলাপাইনজ। একসময় আমাকে হতভম্ব করে 'তাজিয়া মিছিল' চলে এলো পাশে। আমি জটে পড়ে থাকা যানের ভেতর থেকে একটা ঘোড়ার মতন কিছুর প্রতিকৃতির ভ্যানগাড়ির চারপাশে পুরুষ-নারীর যৌথ পদযাত্রাতে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। একটু পরে আরেকটা মিছিল সামনের রাস্তায়, সেখানে একটি গম্বুজের চারমাথায় চারটা মিনারের প্রতিকৃতি, আলো ঝিলমিল। বিকট চিৎকার, রাস্তা বন্ধ করে বড় বড় লাঠি হাতে একগাদা ছেলে, অনেকেরই গায়ে পুরো কালো পোশাক। ট্র্যাফিকরা দর্শকের ভূমিকা পালন করছিলো, পথচারীরা ভীতসন্ত্রস্ত...

নিশ্চয়ই আল্লাহ আহকামিল হাকিমীন, তিনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক

​​আমি জানি জ্ঞান, উপলব্ধি আর আমলের দিক থেকে আমি কুরআনের মতন মহিমান্বিত গ্রন্থ নিয়ে দু'কথা বলারও যোগ্য নই। তবু একজন মানুষ হিসেবে ঘুরেফিরে অনুভব করি কুরআন এমন এক মোহনীয়, হৃদয়স্পর্শী গ্রন্থ যা সমস্ত সময়েই সবচেয়ে কাছে থেকে হৃদয়কে প্রশান্ত করে দেয়। গত জুমু'আর দিন সলাতে দাঁড়িয়ে ইমামের তিলাওয়াত শুনছিলাম, আমাদের খতীব সাহেবের আবেগভরা তিলাওয়াত আমার খুবই পছন্দের। চেষ্টা করতে করতে টুকটাক আরবি বুঝতে পারি বলে এখনকার সময়ে আল্লাহ সলাতকে আগের চেয়ে অনেক বেশি 'এনগেজিং' করে দিয়েছেন আমার জন্য। সেদিন সলাতে দাঁড়িয়ে কানে এলো, "আলাইসাল্লহু বি-আহকামিল হাকিমিন?"... সেদিনের প্রকম্পিত হৃদয় আমাকে তাফসীর গ্রন্থ খুলতে সাহায্য করেছিলো...

"আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্টতম বিচারক নন?"
-- [সূরা আত-ত্বীন, আয়াত ৮, বাংলা অনুবাদ: মুহিউদ্দিন খান]

চলে যাওয়া মানে এক অদ্ভুত জগতে পদার্পণ

​জানি একদম সবকিছু ছেড়ে চলে যাবো একদিন। বিদায়টা সাহিত্যের শব্দালংকারের ঝংকারে মাতানো মিষ্টি কোন অনুভূতির মতন মতন না। বিদায়টার সাথে আমার শীতের ঘাসের উপরের স্নিগ্ধ শিশির কিংবা পূর্ণিমা রাতের জোছনার বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার মতন না। বিদায়টা কঠিন, অনেক কঠিন। ইদানিং একে-একে বিদায় নেয়া অনেকের মৃত্যুর কথা শুনে শ্বদন্ত বের করে কথা বলা মানুষগুলোর নির্বিকারতা দেখে মাঝে মাঝে বিষ্ময়ের মাঝে হারিয়ে যাই; শীতল শিহরণ বয়ে চলে আমার শরীর জুড়ে, মেরুদন্ড বেয়ে। মৃত্যুকে আমি ভয় করি। ভয়হীন এই মানুষগুলো কি মৃত্যুর পরবর্তী জীবন নিয়ে কি খুবই আত্মবিশ্বাসী? নাকি তাদের কাছে সেগুলো মূল্যহীন? নাকি তারা চিন্তা করতেও অনাগ্রহী এবং বেখবর? জানিনা আমি...

৩ নভে, ২০১৪

বাংলা ভাষায় দারুণ কিছু ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজের ঠিকানা

দীর্ঘদিন যাবত অনলাইনে ঢুঁ মেরে আমার কাছে উপকারী এবং ভালোলাগা কিছু ব্লগ ও ফেসবুক পেইজের লিঙ্ক একসাথে করেছি এখানে। ইনশাআল্লাহ সময়ের সাথে সাথে এটি আপডেট করা হবে।

## বাংলা ভাষায় কিছু সুন্দর ওয়েব ঠিকানা ##

১) কুরআনের কথা http://quranerkotha.com/
২) সঞ্চারণ : http://shoncharon.com/
৩) আলোকিত শান্তির বাণী http://bnislamicquotes.wordpress.com
৪) আলোর পথে http://alorpothe.wordpress.com/
৫) অনুপ্রেরণা : www.onuprerona.com
৬) পাঠচক্র : www.pathchokro.com
৭) সমাজ, সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র : http://cscsbd.com
৮) ইউসুফ সুলতান : http://yousufsultan.com/
৯) তানজিল ডট নেট (বাংলা কুরআন) : http://tanzil.net/#trans/bn.bengali/1:1
১০) দাম্পত্য টিপস http://dampotto.blogspot.com/
১১) কুরআনের আলো : http://quraneralo.com
১২) আসিফ সিবগাত : http://sibgat.wordpress.com/
১৩) বাংলা তাফহীম : http://www.banglatafheem.com/
১৪) IslamQA (ইসলামিক প্রশ্নোত্তর): http://islamqa.info/bn
১৫) মাসিক আল-কাউসার পত্রিকা : http://www.alkawsar.com/
১৬) রিয়াদুস সলিহীন : http://riyadussoliheen.wordpress.com/
১৭) আগন্তক : http://agontuuk.blogspot.com/
১৮) জীবনের কথা : http://jeebonerkotha.blogspot.com/
১৯) সুন্দর জীবনের স্বপ্ন : http://idream4life.blogspot.com/
২০) অনুনাদ অনুক্ষণ : http://onunadonukhon.blogspot.com/
২৪) আধুনিক মানুষের কাছে ইসলাম : http://blog.omaralzabir.com/
২৫) মুসাফির শহীদ : http://musafirshahid.blogspot.com/
২৬) ইসলাম - শান্তি ও মুক্তির দ্বীন http://learningdeen.wordpress.com/
২৭) ইসলাম হাউস : http://www.islamhouse.com/
২৮) আমার স্পন্দন : http://amarspondon.wordpress.com/
২৯) জীবন থেকে শিখছি : http://learningfrommylife.wordpress.com/
৩০) আহমদ আল সাবা : https://alsabanow.wordpress.com/


## বাংলা ভাষায় ভালো লাগার মতন কিছু ফেসবুক পেজ ##

১) আলোকিত শান্তির বাণী :  https://www.facebook.com/IslamicQuotesBangla
২) নুমান আলী খান-বাংলা : https://www.facebook.com/NAKbangla
৩) কুরআনের কথা : https://facebook.com/QuranKotha
৪) কুরআনের আলো :  https://www.facebook.com/QuranerAlo
৫) সঞ্চারণ-ঐতিহ্যের অনুরণন  : https://www.facebook.com/shoncharon
৬) অনুপ্রেরণা : http://facebook.com/onuprerona.bn
৭) দ্বীন উইকলি : https://www.facebook.com/DeenWeekly
৮) Campaign for Timely Marriage :  https://www.facebook.com/earlymcpage
৯) Collected Notes and Discussions : https://www.facebook.com/collected.notes
১০) ইসলামের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস : https://www.facebook.com/islameritihash
১১) ইসলাম : https://www.facebook.com/Islam.Bangla
১২) ইবানা : https://www.facebook.com/ibanaway
১৩) বিবাহ একটি উত্তম বন্ধুত্ব :  https://www.facebook.com/marriage.bestfriendship
১৪) স্বপ্ন দেখবো বলে দু'চোখ পেতেছি : https://www.facebook.com/dream.of.the.garden



## এছাড়াও অনেকদিন আগে প্রকাশ করা আমার প্রিয় ওয়েবসাইট তালিকা সম্পর্কে জানতে পারবেন http://idream4life.blogspot.com/2012/10/blog-post_13.html এই লেখাটি থেকে। 

২১ অক্টো, ২০১৪

[গ্রন্থচারণ] মুহম্মদ বিন কাসিম: নসীম হিজাযী


​​​​ঈদের ছুটিতে একটা স্নিগ্ধ দিন ছিলো গতকাল। আমার সারাটা দিন কেটেছে মুহম্মদ বিন কাসিমের সাথে। হাজার বছর আগের ইতিহাস আর তার দৃশ্যপটগুলোতে ডুবে ছিলাম গোটাদিন।

সেই ষষ্ঠ শতকেই ইসলাম এসেছিলো ভারতবর্ষে আরব ব্যবসায়ীদের সাথে। তারা সমুদ্র পেরিয়ে জাহাজে চড়ে এসেছিলো ব্যবসা করতে ঠিকই, কিন্তু তাদের আমল-আখলাক ও সম্পদের বিনিময়ের সৌন্দর্য মুগ্ধ করেছিলো ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী বন্দরগুলোর মানুষদের। পরবর্তীতে অনেক মানুষই ইসলাম গ্রহণ করে। আরবদের বহনকারী এমনই বাণিজ্য জাহাজগুলোকে আক্রান্ত করে সিন্ধুরাজ দাহিরের নির্দেশে দেবলের রাজা। আক্রান্ত হয় মুসলিম নারী ও পুরুষেরা, নির্যাতিত হয় বন্দীরা। নিপীড়িতা এক মুসলিম বোন লুকিয়ে চিঠি লিখে পাঠান তখনকার বসরার শাসনকর্তা হাজ্জাজ বিন ইউসুফের বরাবরে। মুসলিম মুজাহিদরা এই অত্যাচারকে মেনে নিবে না এমন আত্মবিশ্বাস থেকে লেখা এই চিঠিটি পৌঁছে যায় বসরায়। রাজা দাহিরের অত্যাচারে অত্যাচারিত মুসলিম বোনের কান্নাজড়ানো চিঠি হাতে পেয়ে মানবতাকে মুক্ত করে ইসলামকে ছড়িয়ে দিতে মুহম্মদ বিন কাসিম সেনাপতি হিসেবে সিন্ধু অভিযানে বের হন। মাত্র ১৭ বছর বয়স, কিন্তু কী ভীষণ তার বীরত্বগাঁথা! ঈমানের তেজোদীপ্ততা তার এবং তার সঙ্গীদের বীরত্বকে হাজারগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিলো। তাদের অল্প কিছু মুজাহিদসমৃদ্ধ সেই সেনাদল জাহাজে চড়ে ভারতবর্ষে এসে দেবল, আরোর, ব্রাহ্মণাবাদের যুদ্ধগুলোতে হিন্দু শাসকদের অত্যাচারের বেড়াজালকে ছিন্নভিন্ন করে প্রতিটি যুদ্ধে পরাজিত করেছিলো, মুক্ত করেছিলো সাধারণ মানুষকে, দিয়েছিলো স্বাধীনতা ও মুক্তির স্বাদ।

এই ইতিহাসকে উপন্যাসের আদলে পাওয়া যাবে নসীম হিজাযীর মুহম্মদ বিন কাসিম বইটিতে। অসাধারণ বইটি মিস করা ঠিক না। নসীম হিজাযীর অনবদ্য সাহিত্যগুলোতে ডুব দিয়ে অবগাহন করুন ইতিহাস আর উদ্দীপনার মিলিত স্রোতে।

২০ অক্টো, ২০১৪

তরুণ কবির কাছে লেখা চিঠি : রেইনার মারিয়া রিলকা


​​​এই পোস্টের কথাগুলো বিখ্যাত ঔপন্যাসিক রেইনার মারিয়া রিলকার লেখা 'লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট' নামক গ্রন্থটি থেকে বেছে নেয়া কিছু অংশমাত্র। পুরো চিঠিটি পড়তে চাইলে ক্লিক করুন এখানে। অনুবাদ করেছি আমি, মাঝে মাঝে কথাগুলো পড়তে বেশ লাগে! 

জীবনের যেসব বিষয় নিয়ে হিসাব-নিকাশ মেলেনি, সেগুলোর ব্যাপারে ধৈর্য ধরুন। সেই উত্তর-না-পাওয়া প্রশ্নগুলোকেই ভালোবাসতে চেষ্টা করুন, যেমন করে আপনি গ্রহণ করে থাকেন বন্ধ দরজার একটি ঘর অথবা ভিনদেশি ভাষায় লেখা কোন একটা বই। এখনই সব উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত হবেন না। আপনাকে সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর এখন দেয়া হবে না কেননা সেসব জেনে আপনি ঠিকভাবে বাঁচতে পারবেন না। তাছাড়া, এই বিষয়গুলো হলো অভিজ্ঞতার পথ দিয়ে যাওয়া। জীবনের এই দিনগুলোতে আপনার এই প্রশ্নগুলো বুকে নিয়েই বাঁচতে হবে। হয়ত, সময়ের সাথে কোন একদিন, আপনি নিজের অজান্তেই ধীরে ধীরে প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে যাবেন।
~রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
নিজের বেড়ে ওঠার গোটা সময়টাতে তুমি ধীরস্থিরভাবে এবং সতর্কভাবে বেড়ে ওঠো। যখন কেবল সম্ভবত নিজের ভেতরের গভীরতম অনুভূতিগুলো তোমাকে তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে তখন অন্যদের দিকে তাকিয়ে এবং অন্য কোথাও থেকে উত্তর খোঁজার মাঝে নিজের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে চরম ক্ষতি মনে হয় আর হতে পারে না।
~রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
অতএব প্রিয় বন্ধু আমার, যদি কখনো এমন দুঃখ-কষ্ট এসে তোমাকে জর্জরিত করে ফেলে যারা তোমার গোটা জীবনে পাওয়া কষ্টগুলোর চেয়েও বড়, যা তোমার সমস্ত কাজের উপরে কষ্টের ছায়া বিছিয়ে দেয়, কখনো ভীত হয়ে যেয়ো না। তোমাকে অবশ্যই ভাবতে হবে যে তোমার ভেতরে কিছু ঘটে চলেছে; মনে রেখো জীবন তোমায় ভুলে যায়নি; সে তোমাকে তার হাতে আঁকড়ে ধরেছে এবং তোমাকে পড়ে যেতে দেবে না। তুমি কেন তোমার জীবন থেকে অস্বস্তি, অশান্তি, ব্যথা, বিষণ্ণতাকে দূর করে দিতে চাইবে যখন তুমি জানই না তারা এসে তোমারই ভেতরে কী দারুণ সব অর্জনকে পূর্ণ করে চলেছে?
-- রেইনার মারিয়া রিলকা ['লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট' বই থেকে অনূদিত]

* * * * * *
যারা আপনাকে সাধারণ কিছু স্নিগ্ধ ও শান্ত কথা বলে একটুখানি স্বস্তি এনে দিতে চেষ্টা করেন, তাদের দেখে  এমনটা ভেবে বসবেন না যে তাদের জীবনটা যন্ত্রণাবিহীন। তার জীবনেও দুঃখ-কষ্ট এবং যন্ত্রণা থাকতে পারে যা হয়ত আপনার চাইতেও বেশি। যদি তেমনটা না-ই হতো, তাহলে তিনি এমন কিছু শব্দ কখনো খুঁজে পেতেন না।
~রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
এমন এক ভালোবাসাতে বিশ্বাস করুন যা আপনার জন্য জমা আছে যেমন থাকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদ। দৃঢ় বিশ্বাস রাখুন সেই ভালোবাসার মাঝে এমন সুবিশাল শক্তি আর আশীর্বাদ আছে যার মাঝে আপনি যত ইচ্ছা তত ঘুরে বেড়াতে পারবেন এবং সেই ভালোবাসার বৃত্ত থেকে বাইরে পা দেয়ার দরকারই আপনার হবে না। [রেইনার মারিয়া রিলকার উদ্ধৃতি অনুসরণে]

* * * * * *
কোন মানুষের সাথে আপনার সর্বশেষ কথোপকথন যা হয়েছিলো, তিনি কেবলই সেই মানুষটি নন। বরং, প্রকৃতপক্ষে আপনার সাথে তার গোটা সম্পর্কটি জুড়ে তিনি আপনার সাথে যেমন ছিলেন সেটিই তিনি।~রেইনার মারিয়া রিলকা

* * * * * *
আপনার প্রতিদিনের জীবন যদি খুব সেকেলে ও আনন্দহীন হয়, তাহলে দিনকে দোষ দিবেন না, বরং নিজেকে দোষারোপ করুন। নিজেকে বলুন যে আপনি এমন ভালো  একজন কবি নন যে দিনের ঐশ্বর্য থেকে কিছু পরিমাণ বের করে নিয়ে আসতে পারে। স্মরণ রাখবেন, স্রষ্টার কাছে অভাব বলতে কিছু নেই, যেমন নেই কোন আনন্দহীন জায়গা।
-- রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
আমার কাছে দু'জন মানুষের সম্পর্কের বন্ধন ভালো রাখার জন্য যে জিনিসটা সবচেয়ে বড় কাজ বলে মনে হয় তা হলো: পরস্পরের নির্জনতার একাকীত্বের হাত থেকে পরস্পরকে আগলে রাখা।
~ রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
একটা উত্তম বিয়ে সেটাই যেখানে দু'জন তাদের পরস্পরকে নিজ নিজ একাকীত্বের অভিভাবক বানিয়ে দেয়। ~ রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
খেয়াল রাখুন কোন কিছুর স্রেফ বাইরের আবরণ যেন আপনাকে বিভ্রান্ত না করে।
~ রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
জীবনে যা ঘটেছে তা থেকে খুব দ্রুত কোন সিদ্ধান্ত নিতে যেয়োনা, স্রেফ পেরিয়ে যেতে দাও সময়টাকে। তা না হলে অতীতকে অভিযোগের চোখে দেখাটা খুব সহজ হয়ে যাবে। অথচ তোমার বর্তমানে তুমি যা কিছুর সাথে পরিচিত হয়ে চলেছ, তারা খুব স্বাভাবিকভাবে এই অতীতের সাথে সম্পর্কিত।
~রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * *
কোন মানুষের সাথে আপনার সর্বশেষ কথোপকথন যা হয়েছিলো, তিনি কেবলই সেই মানুষটি নন। বরং, প্রকৃতপক্ষে আপনার সাথে তার গোটা সম্পর্কটি জুড়ে তিনি আপনার সাথে যেমন ছিলেন সেটিই তিনি।~রেইনার মারিয়া রিলকা

মনের জানালা মাঝে # ১৮


(১৯২)
আঁধার নিয়ে শত-শতবার সমালোচনা করা, ​আহাজারি​ করার চেয়ে বরং অন্তত ১টা আলোর বাতি জ্বালানোও উত্তম। আমাদের প্রতিটি কাজই আমাদেরকে আল্লাহর কাছে অথবা আল্লাহর কাছ থেকে দূরে নিয়ে যায়।​

(১৯৩)
গল্প করার সময়, কথা বলার সময় সুন্দর শব্দগুলোকে পছন্দ করাটা যেন অনেকটা রিফ্রেশারের মতন। কিছু প্রিয়মুখ, প্রিয়জনদের সাথে যখন আলাপ হবে, তখন অতীতের তিক্ততা, গ্লানির গল্প করে যদি কাজে না লাগে, তাহলে পুরো এড়িয়েই যাওয়া উচিত। বরং কিছু সুন্দর শব্দ দিয়ে ঘেরা আলাপ করা যেতে পারে।

(১৯৪)
শুভ্রতা, স্নিগ্ধতা, স্বপ্নময়তা, ভালোবাসা, জান্নাত, বাগান, সাদাকাহ, আতিথেয়তা, মেহমান, উপহার, ফুল, সৌরভ, ভালো মানুষ, বিনয়ী, উদার, পরোপকারী, ভদ্র, সাহায্যকারী, নিরহংকার, আশাবাদ, সুন্দর ভবিষ্যত, হাসিমুখ কথা -- এরকম শব্দগুলো নিজেরাই কেমন একটা সুন্দর অনুভূতির জানান দেয়, তাইনা? এরকম সুন্দর শব্দ দিয়ে তৈরি বাক্যগুলোও অন্তরকে শান্তি দেয়। যদি সম্ভব হয়,  বাজে কথা ছেড়ে ভালো কথা নয় কেন?

(১৯৫)
আপনি যা অপছন্দ করে তাকে ধ্বংস করে গুঁড়িয়ে দেয়ার চেয়ে বরং আপনি যা ভালোবাসেন তাকে ছড়িয়ে দিন চারপাশে। ফুলের সুগন্ধ তো সবাই ভালোবাসে...

(১৯৬)
কখনো কখনো মানসিক ক্লান্তিগুলো শারীরিক ক্লান্তির চেয়ে শত-সহস্রগুণ বেশি শক্তিশালী এবং ক্ষতির দিক থেকেও মারাত্মক। তবু আমরা অনেক সময়েই মানসিক ক্লান্তি দূর করার উপায় খুঁজে পাইনা।

(১৯৭)
মানুষ আশা করে অন্যেরা তাকে বুঝবে। অথচ তা অসম্ভব। অন্য কেউ আপনার জীবনটার গলি-ঘুঁপচি জানে না, ধারণাও করতে পারবে না। তাই আপনাকে বোঝা সম্ভবও নয়। মিছে আশা করে ঠকবেন না। তার চেয়ে বরং নির্বিকার হোন, প্রত্যাশা কমিয়ে ফেলুন। মানুষের কাছে আশা না করে বরং প্রার্থনা করুন কেবলই আল্লাহর কাছে। আল্লাহ চাইলে আপনার প্রত্যাশাগুলো পূরণ হতেও পারে, হয়ত সেই মানুষটাই করবে। পদ্ধতিটা ভিন্ন...

(১৯৮)
একজন বই পড়ুয়া মানুষের সাথে থাকলে প্রতিদিন দেখবেন আপনি যেন বদ্ধ ঘরেও হিমেল বাতাসের পরশ পাচ্ছেন। তিনি প্রতিদিন আপনাকে নিত্য নতুন ধারণা, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, অনুপ্রেরণাময় গল্প, জীবনেতিহাস জানাবেন। পাঠিকা বা পাঠকের সাথে কাটানো সময়গুলো তাই অনেক 'অবোরিং' হয়। আপনি প্রতিদিন কিছু না কিছু পড়েন তো?​​

​​ (১৯৯)
পরীক্ষার রেজাল্টের দিনে মা-ছেলের কথোপকথন....
মা : কী রে, রেজাল্ট কী তোর?
ছেলে: (কুরআনের আয়াত আওড়িয়ে)
"পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য ব্যতীত আর কিছু নয়" (৫৭:২০)  
:P :P

লালমনিরহাটে খ্রিষ্টান মিশনারীদের আগ্রাসন

​​​ক'দিন আগে এক ভাই তাঁর লেখায় লিখেছিলেন লালমনিরহাটে এক স্কুলে বাচ্চারা খাওয়ার পূর্বে বিসমিল্লাহ না বলে বলে,বান্দা যীশুর নামে চাই! কী ভয়াবহ!

আমার জীবনের একটা বড় অভিজ্ঞতা ছিলো এই বছরের শুরুতে লালমনিরহাট ভ্রমণ--'মিশনারী রোডে' বাস থেকে নামতে যখন হলো, তখন টের পেয়েছিলাম এই শহরে 'মিশনারীরা' খুব তৎপর। পরবর্তীতে জেলা শহরের প্রাঙ্গনে যখন অজস্র চার্চ, চার্চ স্কুল, মিশনারী স্কুলের ভীড়ে তেমন কোন ন্যুনতম সরকারি/ইসলামিক প্রতিষ্ঠান তুলনা করার মতনও চোখে পড়লো না তখন টের পেয়েছি এই শহরে ওদের কর্মযজ্ঞ কী ভয়ংকর! এরপর আশেপাশে কয়েকটা মাদ্রাসা আর মক্তবে গিয়ে বুঝেছিলাম মিশনারীরা স্কুল দিয়ে, স্কুলে ফ্রি পড়িয়ে, স্কুলে চাল দিয়ে, মাঝে মাঝে বিভিন্ন গিফট দিয়ে কেমন করে মানুষকে তাদের দিকে আকর্ষণ করেছে। অর্থকষ্টে থাকা বাবামায়েরা সন্তানদের জন্য ইসলামিক স্কুলগুলোর আবেদন হারিয়ে 'মিশনারী স্কুলে' এগিয়ে যাচ্ছে।

১৪ অক্টো, ২০১৪

চরিত্রবান সন্তান পেতে হলে দরকার ভালো বই


আমার জীবনের খুব বড় একটা সময় আমি সাহিত্যে ডুব দিয়ে থেকেছি। আমার বাল্য আর কৈশোরের পুরোটাই ছিলো বইয়ের মাঝে হারিয়ে যাওয়া। বাংলা সাহিত্য, বিদেশি সাহিত্যের অনুবাদগুলো যেখানে পেতাম পড়ে ফেলতাম। আল্লাহ যেটুকু জ্ঞান দিয়েছেন সেটুকুকে পূর্ণ ভালোবাসায় ব্যবহার করা হয়েছিলো বইপাঠে। জীবনে পরবর্তীতে টের পেয়েছি আমার যেকোন পড়াশোনায় পৃষ্ঠা সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি হয় উপলব্ধি ও অনুধাবন। রবীন্দ্র-নজরুল, শরত-বঙ্কিম, সুনীল-শীর্ষেন্দু-সমরেশ, গোর্কি-তলস্তয়-শেক্সপিয়র পেরিয়ে একসময় ঘোর ভাঙ্গে ভার্সিটি লাইফে এসে। বাস্তব জীবন আর পেছনের হাজার হাজার দিনের কল্পনার জগতে বহু বহু পরিস্থিতি পেরিয়ে আসা জীবনের ফারাকটুকুকে বুঝতে ও নিজের অন্তরকে তা বুঝাতে অনেক বেশি সময় চলে গিয়েছিলো। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের চারপাশে অর্থহীন এক প্রকান্ড স্বাধীনতা, স্বেছাচারিতার সুযোগগুলোকে কেন অপছন্দ হতো, এটা নিজেকে বুঝাতে হয়েছিলো। সেসময় দেশে ও বিশ্বে যেসব মর্মস্পর্শী ঘটনা ঘটতো যেগুলোতে চারপাশের প্রায় সবার নিরুদ্বেগ থাকাটা মেনে নিতেও কষ্ট হতো।

১ অক্টো, ২০১৪

মনের জানালা মাঝে # ১৭



(১৮০)
প্রতিনিয়ত অনেক ছোট ছোট বিদায় নিতে হয় আমাদের। বিদায় নিই বন্ধুদের কাছ থেকে, পরিবারের কাছ থেকে, সহকর্মীদের কাছ থেকে, দ্বীনী ভাইদের/বোনদের কাছ থেকে। প্রতিটি বিদায়ই যেন অনুচ্চারিত শব্দে একটি কথা আমাদের বলে যায়-- একদিন পৃথিবীর সবকিছুর কাছ থেকে বিদায় নিতে হবে!

(১৮১)
শব্দ আপনাকে অনেক অর্থ দেবে ঠিকই, কিন্তু ব্যাখ্যা খুঁজতে আপনাকে ঐ নৈঃশব্দ্যের কাছেই ফিরে যেতে হবে।~লালবৃত্ত

(১৮২)
আশাহত হয়ে হয়ত তুমি ভেবেছিলে তপ্ত রৌদ্রের তেজে ক্লান্ত-শ্রান্ত-বিদ্ধস্ত হয়ে যাবে!
কিন্তু টের কি পাওনি আল্লাহ চাইলেই আকাশে মেঘ জমিয়ে শান্তির বৃষ্টি ঝরাতে পারেন?

(১৮৩)
চারিদিকে জীবনের এত আয়োজন, কেবল জীবনটাই কোন ফাঁকে মূল্যহীন হয়ে পড়লো। ~লালবৃত্ত

(১৮৪)
মুভিতে দেখা বিয়েগুলোর সাথে আপনার বিয়ের তুলনা করতে যাবেন না। মুভির বিয়েগুলো লিখেছে স্ক্রিন-রাইটাররা, আপনারটা লিখেছেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা। ~জনৈক

(১৮৫)
আল্লাহর সাথে কথোপকথনের অভ্যাসটা খুব সুন্দর! প্রতি মূহুর্তে এটা অনুভব করে কথা বলা যে তিনি আমাকে শুনছেন, আমার প্রতিটি আবেগ আর কথার উত্তর তিনি দিচ্ছেন, আমার প্রতিটি দোয়ার উত্তর তিনি প্রতিদান হিসেবে দিবেন। সুবহানাল্লাহ!

(১৮৬)
আখিরাতে বিচারের দিনে আল্লাহ আমাদের কাজগুলোকে গুণে দেখবেন না, বরং সেগুলোকে ওজন করবেন। তাই আমাদের কাজগুলোর পরিমাণ নয় বরং তাদের গুণগত মান গুরুত্বপূর্ণ।

(১৮৭)
যে পাহাড়ের চুড়া যতটা বেশি খাড়া এবং যেখানে উঠতে যত বেশি পরিশ্রম, সেই পাহাড়ের চুড়া থেকে চারপাশের দৃশ্য তত বেশি নয়নাভিরাম সুন্দর মনে হয়...

(১৮৮)
কারো চরিত্র সম্পর্কে যদি ধারণা পেতে চান তাহলে খেয়াল করুন তার বন্ধুদের প্রতি।

(১৮৯)
প্রচন্ড কঠিন, দুর্যোগময়, কষ্টকর সময়েও একজনের পক্ষে শান্তি খুঁজে পাওয়া সম্ভব যদি তিনি আল্লাহর দিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন।

(১৯০)
কখনো কখনো অন্য কারো হৃদয়কে প্রশান্ত করতে আপনার মুখের কয়েকটি শব্দই যথেষ্ট।

(১৯১)
আপনি যখন কাউকে উপদেশ দিতে যাবেন তখন কথা সংক্ষিপ্ত করুন, অনর্থক বাক্যগুলো এড়িয়ে যান।

২৯ সেপ, ২০১৪

সমাজের ক্রমবর্ধমান অশ্লীলতার শেষ কোথায়?

​ওরা সংশয় ছুঁড়ে দেয়-- এত প্রেরণা দিয়ে কী হবে? এত সচেতনতা দিয়ে কী হবে? ওরা বলে ওঠে, সমাজের সবাই ভেসে যাচ্ছে, ঘরে ঘরে এখন সবাই নাটক-সিনেমাতে বুঁদ হয়ে আছে, প্রেমের সাগরে ডুবে শরীরের উত্তাপে পুড়ে চলেছে তরুণ-তরুণীরা যখন, তখন তোমাদের এসব লিখে কী হবে?

২৮ সেপ, ২০১৪

ফেসবুকে লোকের সুখ প্রদর্শনের ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং

​​​ফেসবুকে লোকজনের সুখ প্রদর্শনের ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং। এখানে এলে মনে হয় যেন দেশের মানুষ সিঙ্গাপুর, নেপাল, থাইল্যান্ড, কক্সবাজার, সিলেটে বেড়াচ্ছে তো বেড়াচ্ছেই... বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাথে তাদের স্ত্রীরা। ফেসবুকের হোমপেইজে ভরা বিভিন্ন ফ্রাইড চিকেনের প্লেটের ছবি, ডিএসএলআর ক্যামেরাতে অনেক চকচকে পুরুষ-নারীর যুগল, যাদের প্রায় সবাই প্রেম নামক হারাম সম্পর্কতে যুক্ত, যাদের প্রতিটি মূহুর্তই যিনা হিসেবে আল্লাহর কাছে গৃহীত হচ্ছে। কারো আবার নতুন আইফোন, নতুন আইপ্যাড, মোটর সাইকেল, গাড়ির নিত্যনতুন ছবি দেখবেন...

অথচ এই দেশে খুব অল্প পরিমাণ মানুষের কাছে খুব বেশি পরিমাণ সম্পদ আটকে আছে। ফ্রাইড চিকেনে ঢুকলে প্রায় হাজার টাকার মামলা। এককালে অনেক টাকা বেতন পাওয়া ইঞ্জিনিয়ারদের লাইনের বি,এস,সি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেও আজকাল খুব কম ছেলেমেয়েই দশ-বারো হাজারের বেশি টাকার বেতনে ঢুকতে পারে। মেডিকেলে যারা পড়ে, তাদের তো ৬ বছর পেরিয়ে অনারারী (অনাহারী বলে পরিচিত) ডাক্তার থাকার সময়ে বিনা বেতনে কাজ করে, খ্যাপ দিয়ে পেটে ভাত যোগাতে হয়। দেশে চাকুরির বাজারের অবস্থা খুবই সঙ্গীন তা পাগলেও জানে, রাস্তার কুকুরেও হয়ত বুঝে। খুব কম ছেলেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে ভালো চাকরির স্বপ্ন দেখার সাহস করে যদি মামা-চাচা না থাকে! এসব বুঝে সবাই, বুঝে না শুধু শো অফে অস্থির থাকা অসুস্থ মানসিকতার রোগীর দল।

২৫ সেপ, ২০১৪

অনুপ্রেরণা - ৫


* * *
হাল ছাড়বেন না! ভালো কিছু হতে সময় লাগেই...

* * *
ঠিক যেই মূহুর্তে আমরা আল্লাহকে ভুলে যাই, আমরা আসলে সবকিছুকেই হারিয়ে ফেলি এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাই।

* * *
প্রচন্ড কঠিন, দুর্যোগময়, কষ্টকর সময়েও একজনের পক্ষে শান্তি খুঁজে পাওয়া সম্ভব যদি তিনি আল্লাহর দিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন

* * *
যে মানুষটার সাথে আমরা ভালো হবার প্রতিযোগিতা করতে পারি সে হলো আমাদের গতকালকের আমি।

* * *
জ্ঞানী মানুষেরা সবসময় চুপ থাকেন না, কিন্তু তারা জানেন কখন চুপ থাকতে হয়।

* * *
যে আল্লাহর সামনে হাঁটু গেঁড়ে সিজদাহ করতে পারে সে সবার সামনে দৃঢ় হয়ে শক্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে।

* * *
দুশ্চিন্তা আপনার আগামীকালের সমস্যা দূর করতে পারবে না, বরং আজকের শান্তিটুকু দূর করে দিবে।

১৮ সেপ, ২০১৪

অনুপ্রেরণা - ৪


ইসলাম পালনের মানে এই না যে আমরা আনন্দ ও উৎসব করতে পারবো না। ইসলাম আমাদের সব রকমের আনন্দের সুযোগ দিয়েছে কিন্তু তা হতে হবে যাবতীয় পাপকাজ মুক্ত।

* * *
দোয়া করা ছাড়বেন না। যতই আশাহীন আর কঠিন লাগুক সময়। বিশ্বাস রাখুন। আল্লাহ নিশ্চয়ই প্রশান্তি লাভের ব্যবস্থা করে দেবেন।

 * * *
সুন্দর একটা দিন শুরু করার চাবি হলো ফজরের সলাত।

 * * *
আল্লাহর জন্য বাঁচা -- এই কথাটির মানে হলো আপনি কী সেই ব্যাপারে কম খেয়াল করে আল্লাহ আপনাকে কেমন করে চান সেই বিষয়েই বেশি মন দেয়া।

 * * *
দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা আপনাকে আখিরাত ভুলিয়ে দেবে।

 * * *
হে আল্লাহ! আমার অন্তরকে দুনিয়ার আকর্ষণ থেকে মুক্ত করে আখিরাতের সাথে যুক্ত করে দেন। আমীন।

 * * *
যখন আপনি যেভাবে ভেবেছিলেন সেভাবে জীবনের ঘটনাগুলো না ঘটে তখন আল্লাহর উপরে বিশ্বাস রাখুন। নিশ্চয়ই আপনার ব্যাপারে তার উত্তম পরিকল্পনা আছে।

 * * *
বারবার তাওবা করতে স্মরণ করিয়ে দিন নিজেকে। যতবারই ভুল করে ফেলুন না কেন, মনে রাখবেন আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালোবাসেন।

 * * *
দোয়ার শক্তির ব্যাপারে আশা হারিয়ে ফেলবেন না! মনে রাখবেন আল্লাহ আপনার সমস্ত দোয়াই কবুল করেন যতক্ষণ তা আপনার জন্য কল্যাণকর হয়।

 * * *
হৃদয় ভেঙ্গে যাওয়ার কষ্টগুলো আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় আমার হৃদয়ে ভালোবাসার সর্বোচ্চ আসনে আল্লাহ ছাড়া এই পৃথিবীর অন্য কোন কিছুকেই বসিয়ে দেয়া উচিত নয়।

 * * *
যখন আপনার জীবনে আল্লাহ ছাড়া আর কিছুই থাকেনা, তখন উপলব্ধি করতে পারবেন আল্লাহই আপনার জন্য যথেষ্ট।

 * * *
আপনি যখন কারো জন্য দোয়া করেন তখন আপনি আসলে আপনারই উপকার করেন কেননা তখন ফেরেশতারাও আপনার জন্য সেই দোয়াটি করে।

 * * *
আপনার কাজ করার সময়টা এখনই! পরে করবেন ভেবে কিংবা আলসেমি করে অমূল্য সময়কে নষ্ট করবেন না!

 * * *
শব্দ দিয়ে অনেক কিছুকে গড়ে দেয়া যায়, আবার ধ্বংস করে দেয়া যায় অনেক কিছু, শব্দ ব্যবহারের আগে তাই খেয়াল করা উচিত।

 * * *
আপনি কষ্ট-যন্ত্রণা অথবা বিষণ্ণতায় ভুগছেন? তাহলে কুরআন পড়ুন যা সমস্যার সমাধান, সঠিক নির্দেশনা ও অন্তরের সকল রোগের চিকিৎসা দেবে।

১১ সেপ, ২০১৪

রাতের দ্বিপ্রহরে ঝুম বৃষ্টি

​রাতের দ্বিপ্রহরে ঝুম বৃষ্টি...  বৃষ্টিফোঁটাদের তীব্রবেগে কংক্রিটের রাস্তায়, ইটপাথরের ভবনগুলোর দেয়ালে আছড়ে পড়ার শব্দ কানে আসছে। দিনভর উত্তপ্ত আবহাওয়া পেরিয়ে আসা এই প্রকৃতিতে যেন নিমিষেই শীতল স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে দিচ্ছে আকাশ ভেঙ্গে অঝোর ধারায় নেমে আসা পানির ধারা... বর্ষাধারা ঝরে যাওয়ায় একটা অন্যরকম গন্ধ এখন প্রকৃতিতে...

এই বৃষ্টি এক অদ্ভুত সুন্দর সৃষ্টি আল্লাহর যা মানব মনকে সবসময় স্নিগ্ধ আর্দ্র ও সতেজ করেছে। মনের মাঝে অন্যরকম এক দ্যোতনা, এক ভিন্ন রকম অনুভূতি এনে দেয় বর্ষাধারা। আলহামদুলিল্লাহ! প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাদেরকে এমন অসাধারণ সৌন্দর্য অনুভব করার যোগ্যতা দিয়েছেন, সুযোগ দিয়েছেন।

১০ সেপ, ২০১৪

আপনার অকৃতজ্ঞতা অন্যদের জন্য কষ্টকর

​​হ্যাঁ, অনেক সময় আপনার-আমার অকৃতজ্ঞতা ও বোধহীনতা অন্যদের জন্য বেশ কষ্টকর বটে!

ধরুন, আপনি কোথাও নিমন্ত্রিত হয়ে খেতে বসলেন। খেতে বসেই খাবারের মেনু দেখে বলতে শুরু করে দিলেন আপনি কী কী পছন্দ করেন না, কী কী খাবেন না। তিনি আপনার জন্য এই আয়োজনটুকুতে সাধ্যমতন সুস্বাদু করার চেষ্টা করলেও শুধুমাত্র আপনার অসময়োপযোগী মন্তব্য তাকে কষ্টকর ও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিতে পারে। হয়ত বাসায় মা কিংবা স্ত্রী রান্নাবান্না শেষ করে খাবার টেবিলে সব গুছিয়ে খেতে বসেছেন-- এমন সময় আমাদের কথা "পানি নেই জগে"। অথচ দিব্যি একটুখানি কষ্ট করে উঠে গেলেই জগে পানি ভরে এনে এতক্ষণ একটানা কষ্ট করা মানুষটাকে স্বস্তি ও ভালোলাগা দেয়া সম্ভব।

৯ সেপ, ২০১৪

বাংলার মুসলিমরা জানেই না মুসলিম ইতিহাস কত সমৃদ্ধ ও ঐশ্বর্যময়

​​আফসোস হয়! মাত্র কয়েকটা বছর আগেও আমি মুসলিমদের অনেক ইতিহাস জানতাম না। জানতাম না ইহুদি-খ্রিষ্টান শয়তানগুলোর হাতে হত্যা হওয়া আমার লক্ষ লক্ষ মুসলিম ভাইবোনদের ইতিহাস। ক্রুসেডের ইতিহাস। যখন সালাহ আদ-দীন আইয়ুবী জয় করেছিলেন আল-আকসা, তখনো মুসলিম বিশ্বের অনেক নেতারা আরাম-আয়েশে আর পরস্পর বিবাদে মত্ত ছিলো। ইতিহাস বারবার কাঁদায়। অনেক পরে হলেও জেনেছি স্পেনের ইতিহাস, সেই তারিক বিন যিয়াদকে, যিনি স্পেনের মাটিতে পা দিয়ে জাহাজ পুড়িয়ে সাথীদের বলেছিলেন সামনে এগিয়ে জয় কিংবা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে হবে, কেননা পেছনে রইলো শুধুই উত্তাল সমুদ্র। জয় তারা পেয়েছিলেন। এমন অনেক নাম আছে, যাদের ইতিহাস পাঠ শুধু প্রবাহ বাড়িয়ে দেয় রক্তকণিকাদের, কেঁপে ওঠে শরীর, আবেগাপ্লুত হয় মন, অশ্রুসিক্ত হয় নয়ন। বীরত্বে ভরা সেই ইতিহাস, ঈমানে টগবগিয়ে থাকা সেই মানুষদের অসম বীরত্বের সেই ইতিহাস আমাদের। যথেষ্ট আগ্রহী হওয়া সত্বেও এই পরিপূর্ণ সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থায় মুসলিম ইতিহাস জানতে পারিনি, বেশিরভাগ বাংলাদেশীই পারে না। হায় আফসোস!

২ সেপ, ২০১৪

ফেসবুকে আমরা কেন বিভিন্ন জিনিস শেয়ার করি?

​​​আচ্ছা, ফেসবুকে আমরা কেন বিভিন্ন জিনিস শেয়ার করি? প্রথমত, বলা যায় যে আমরা শেয়ার করি কেননা আমরা চাই আমরা যে জিনিসটিকে ভালো মনে করি, যাতে আনন্দ পাই তা যেন অন্যরাও পায়। যদি সেটা কোন 'নিউজ' হয়? হয়ত সেটা আতঙ্কের বিষয়, অথবা বড় কোন ক্ষতিকর কিছু হয়, তাহলেও তা শেয়ার করে থাকি। কিন্তু বিষয়টা হলো, আমরা কোন সোর্স থেকে শেয়ার করছি? ফেসবুকে শত-শত/হাজার হাজার পেইজ আছে, ইউজার একাউন্ট আছে। ইচ্ছে হলেও পেইজ/গ্রুপ/একাউন্ট খোলা যায়। এগুলোর অনেকেই হয়ত উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা/গুজব/অশ্লীলতা ছড়ায়। আমাদের সজ্ঞানে ও অগোচরে প্রতিটি *লাইক* কিন্তু বিভিন্ন তথ্য/পোস্ট/লিঙ্কের প্রচার ও প্রসারে ভূমিকা রাখে। আমাদের খুব সতর্ক থাকা উচিত এই বিষয়ে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
“কোন ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে তাই বলে বেড়ায়।” [মুসলিম]
#রিয়াদুস সলিহীন: ১৫৪৭

১ সেপ, ২০১৪

কাকে ভালোবাসছি, কী ভালো লাগছে এসব আমরা চাইলেই প্রভাবিত করতে পারি

​​একটা চিন্তা আমাকে অনেক তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াত সেই ছোটবেলা থেকেই। আমার চারপাশের সবাই যেসব নিয়ে আনন্দিত হতো, যা ভালোবাসত --আমার সেসবে আগ্রহ কমই হতো। একটা ছোট্ট উদাহরণ হলো-- যখন সবাই বিকেল ৪টা বাজতেই বাসার বাইরে গিয়ে ক্রিকেট বা ফুটবল খেলতে শুরু করতো, তার কয়েক ঘন্টা আগে থেকেই হয়ত কোন একটা উপন্যাস কিংবা অ্যাডভেঞ্চারের গল্পে আমি ডুব দিয়ে আছি। যে বয়সে সবাই আর্সেনাল, চেলসি আর রিয়াল মাদ্রিদের কে কাকে পাস দিলো, কয় গোল করলো সেই হিসেব-নিকেশ করতো, তখন আমার সময় কাটত ক্যাম্পাসের নানান রকম মনোকষ্টে ভুগতে থাকা ছোটভাই, বন্ধুদের সঙ্গ দিয়ে, আলাপ করে তাদের বেদনা হালকা করার চেষ্টা করতে করতে। দিনের বেশিরভাগ সময়ে খেলতে থাকা আর খেলা নিয়ে আলাপ করা ছেলেগুলোর সাথে আমার পছন্দের এক বিশাল ভিন্নতা স্পষ্ট হয়ে দেখতে পেতাম। আমি যেসব কাজ করতাম, সেটা হয়ত বাধ্য হয়ে করতাম যার সবই পছন্দের ছিলো তা নয়, কিন্তু যারা কল অফ ডিউটি, এজ অফ এম্পায়ার, কাউন্টার স্ট্রাইক আর ফিফা নিয়ে থাকতো তার কাজগুলো খুবই অর্থহীন আর সময় নষ্ট লাগতো বলে অপেক্ষাকৃত কম অর্থহীন অন্য কিছুতে ব্যস্ত থেকে সময় কাটাতে চাইতাম...

৩১ আগ, ২০১৪

এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট : পরীক্ষার্থীদের সফলতা-ব্যর্থতায় কী আসে যায়?

​​​আজকে এইচএসসি রেজাল্ট হবে। বাংলাদেশে যাবতীয় ছোট ছোট পরীক্ষাগুলোর রেজাল্ট নিয়েও প্রচুর 'সাসপেন্স' তৈরি হয়। এতে ভালো/খারাপ করায় জীবনের গতিপথে আহামরি কিছু বদলে যায়না। সেই আমলে বোর্ড স্ট্যান্ড করা ভাইদের ভার্সিটিতে এসে বছরের পর বছর ধরে অকৃতকার্য হতে দেখেছি। আবার প্রথমবার খুবই খারাপ ফল হওয়ায় দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিয়ে ভার্সিটিতে ঢুকে কোন কোন ছেলেকে ক্লাসে ফার্স্ট হতেও দেখেছি।

এসব পরীক্ষাগুলো আসলে জীবনের তুলনায় অনেক কম গুরুত্ব বহন করে। এই পরীক্ষায় ভালো করে "মুই কি হনু" ভেবে আকাশে ওড়ার যেমন কিছু নেই, তেমনি খারাপ করে' "আমি শেষ হয়ে গেছি" মনে করাটাও নিরর্থক এক বোকামি। আমাদের জীবনের প্রতিটি ধাপই আমাদের জন্য কিছু 'মেসেজ' বয়ে নিয়ে আসে। আল্লাহ আমাদেরকে কিছু বুঝিয়ে দেন যেন আমরা আরো নিজেদের উন্নত করি, আরো বেশি পরিশ্রমী হতে চেষ্টা করি, যেন ঈমানকে আরো বেশি বেশি বাড়াতে চেষ্টা করি...

৩০ আগ, ২০১৪

অনুপ্রেরণা -৩

​​​
 * * * আল্লাহর কাছে নিজ দুর্বলতা ও অক্ষমতাকে স্বীকার করতে লজ্জা পাবেন না কেননা আল্লাহ আপনার সেই দুর্বলতাকে শক্তিতে পরিণত করতে সাহায্য করবেন।

* * *
​মনে রাখবেন, আল্লাহ ক্ষমা করতে কখনো ক্লান্ত হন না।

* * *
জ্ঞানার্জনের ​ ফলে আমাদের অনেক বেশি বিনয়ী হবার কথা। যদি জ্ঞান অর্জন আমাদেরকে উদ্ধত করে দেয় ​ তাহলে ​ আমরা কী নিয়াতে কী শিখছি তা নিয়ে চিন্তা করা দরকার।​

 * * *
প্রশান্তি খুঁজতে বরং সলাতে দাঁড়িয়ে পড়ুন।

প্রেমের কারণে বেশিরভাগ ছেলেপিলে অশান্তিতে থাকে

​ছাত্র যখন ছিলাম, চারপাশে দেখতাম হারাম প্রেম ও প্রেমসংক্রান্ত ঘটনা। যে সম্পর্কটি আগাগোড়া আল্লাহর অপছন্দকে ঘিরে, তাতে ভালো কিছু কোনদিন দেখিনি। দেখচছি প্রচুর রক্তাক্ত হৃদয়, প্রচুর আউলা-ঝাউলা ছেলেপিলে। ছ্যাঁকা খাওয়া, পিছনে ঘুরা, ডেটিং ইত্যাদি নানান ঘটনা। সময়ের পর সময় অপচয় সবার। এক মেয়ের কারণে অন্য অনেকের সাথে শত্রুতা, ত্রিভুজপ্রেমের মারামারি, রিফিউজড হয়ে গাঁজা টানতে বসা -- ইত্যাদি নানান ঘটনা পেরিয়ে কেউ কেউ বিয়ে করেছিলো। যে সম্পর্ক আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে, তাতে কেমন করে শান্তি থাকতে পারে সে কথা ভাবতাম। ক'দিন আগে জানলাম ছেলেটি পরকীয়া করছে। মেয়েটি তার ঘরের সব কথা বান্ধবীদের বলে বেড়ায়...  কোথা থেকে কত কান হয়ে কতই না ঘটনা কানে আসে! না শোনার চেষ্টা করতে হয়...

২৯ আগ, ২০১৪

বইপড়ুয়ারা অনেক কিছু করতে পারে

​ছোটবেলায় অনেক অনেক বই পড়া হতো। আমার ছেলেবেলায় ঢাকার সেই এলাকাটায় ছিলো না মাঠ, পুকুর, গাছ বেয়ে ওঠার মতন কোন গাছ। কিন্তু আমার ছিলো অনেক অনেক বই। আল্লাহ যুগিয়েছিলেন বলেই চারপাশে বইওয়ালা অদ্ভুত মানুষ ছিলেন সেই সময়। তাদের কাছ থেকে নিয়মিত বই সংগ্রহ করতে পারতাম। প্রতিদিন বইতে ডুব দিয়ে থাকতাম কয়েকটা ঘন্টা। আমার বাল্যকালের সেরা স্মৃতি ঐ বইগুলোর সাথেই! গোয়েন্দাকাহিনী, রহস্যোপন্যাস, অ্যাডভেঞ্চার, ট্রাভেলগ, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ক্লাসিকস... আরো কত কী! কিন্তু বইপড়ুয়াদের সাথে সময় কাটানো হয়নি আমার কোনদিনই। একলা আমার পাঠক জগত! সময়ের সাথে সাথে নানান পরীক্ষা, কলেজ-ভার্সিটি যাওয়ার পথে একসময় পাঠকের মৃত্যু ঘটলো।

জীবনে যা হয় তা আসলে কল্যাণময়



এক রাজার একজন কর্মচারি ছিলো যে সবসময় যেকোন অবস্থাতেই রাজাকে বলতো, "রাজা মশাই, কখনো মন খারাপ করবেন না কেননা আল্লাহ যা করেন সবকিছুই নিখুঁত ও সঠিক।"

একদিন তারা শিকারে বের হয় এবং এক হিংস্র প্রাণি তাদের আক্রমণ করে। রাজার কর্মচারীটি সেই প্রাণীকে মেরে ফেলতে সমর্থ হলেও রাজাকে তার একটি আঙ্গুল হারানো থেকে রক্ষা করতে পারেনি। কৃতজ্ঞ না হয়ে বরং ক্ষিপ্ত হয়ে রাজা তাকে বলে ওঠে, "আল্লাহ যদি ভালো হতেন তাহলে আমাকে এই আক্রমণে পড়ে আঙ্গুল হারাতে হতো না।"

২৮ আগ, ২০১৪

আল্লাহ গোটা দুনিয়াকে 'সিস্টেমেটিক' করে চালিয়ে থাকেন

​ফেসবুকে লেখালেখিকে অনেক বেশি সস্তা মনে হয়। হোমপেইজের ফিডে ইসলামের ডিপ-ডিপার-ডিপেস্ট থটগুলোকে যখন মুড়ি-মুড়কির মতন আজেবাজে নিক, ছাইয়া নিক থেকে সমাধান লিখে ভরিয়ে দেয়া হয়, তখন নিজের উপরে ঘেন্না জন্মায়, যেই প্ল্যাটফর্মে আছে সেটার উপরেও রাগ হয়। অনেকবারই এইসব ফিতনাহ থেকে বেঁচে থাকতে ফেসবুকে লগিন করাই ছেড়েছিলাম। এসব দেখে ড. তারিক রমাদানের একটা কথা মাথায় চলে আসে প্রায়ই--
“আমরা যখন জটিল সমস্যার জন্য সরলীকৃত সমাধান দিতে চাই তখন আমরা সবকিছু হারাই।"

মনের জানালা মাঝে # ১৬


(১৭১)
বিশুদ্ধতার প্রতি ভালোবাসা ও আগ্রহ কোন ভুল নয়। অশুদ্ধ এই পৃথিবী বেশিদিন থাকবে না। অনন্ত বিশুদ্ধতাকে পেতে হলে বুকে সেই আজন্ম আকাঙ্ক্ষা আগলে রাখতে হবে।

(১৭২)
কীভাবে বুঝবেন আপনি ক্ষতিগ্রস্ত কিনা?

যখন আপনার প্রিয়তম/প্রিয়তমার চেয়ে আল্লাহকে কম ভালোবাসবেন, যখন সেই প্রিয়জনকে আপনার এত বেশি ভালোলাগবে যে আল্লাহর সামনে সময়মতন দাঁড়ানোর কথা ভুলে যাবেন... তখন বুঝবেন আপনি ক্ষতিগ্রস্ত।

তখন শীঘ্রই নিজেকে সাবধান করুন। আপনার নিজের চেয়ে বেশি ভালোবাসতে হবে আপনার স্রষ্টাকে, যিনি আপনাকে পরম মমতায় অজস্র নিয়ামাত দান করেছেন। প্রিয়জনদের ভালোবাসা হবে সেই ভালোবাসার পরে... তবেই আপনার প্রিয়জনেরা ভালোবাসার এক উত্তম 'service' পাবেন balance রেখে। ভালোবাসার কেন্দ্রে আল্লাহ না থাকলে ভালোবাসার distribution একদমই imbalance হয়ে যায়।

(১৭৩)
যে মানুষটার সাথে আমরা ভালো হবার প্রতিযোগিতা করতে পারি সে হলো আমাদের গতকালকের আমি।

(১৭৪)
আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটির (AUST) একটা ছেলে সমুদ্র দেখার অভিপ্রায়ে বের হয়েছিলো দলবেঁধে। সে মারা গেছে আরেকজনসহ পানিতে ডুবে, কয়েকজন নিখোঁজ। ছেলেটা পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে। ছেলেটা রওনা হবার আগে ফাইজলামি করে/ফান করে/মজা করে হয়ত ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছিলো "দূরে চলে যাচ্ছি বহূ দূরে"... এই টাইপের। পোস্টটা দেখে আর কমেন্ট পড়ে মনে হয়েছে তার কনট্যাক্ট লিস্টের সবাই টিপিক্যাল 'ঢং' টাইপের পোস্ট বা ফান হিসেবে মনে করেছিলো।

নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের প্রত্যেকের ক্বাদর লিখে রেখেছেন। তিনি ছেলেটির সেই অদ্ভুত ফেসবুক স্ট্যাটাসকে সত্য হিসেবেই প্রমাণিত করেছেন। পোস্টটা দেখে কষ্ট লেগেছে ছেলেটার জন্য। তার মৃত্যুটা আমার জন্য স্মরণিকা নিয়ে এসেছে, আমার ভয় হয়েছে নিজের কথা ভেবে। কত কথাই তো লিখেছি ফেসবুকে, টুইটারে, ব্লগে। এমন কথা যেন কখনো না লিখি, যা আমার আফসোসের কারণ হবে। প্রতিটি কথাই হিসেব করে লেখা উচিত।

মৃত্যু এত চরমতম বাস্তব! আল্লাহ যেন আমাদেরকে ঈমানী মৃত্যু দান করেন। আল্লাহ যেন আমাদেরকে হায়াতে তাইয়্যেবা দান করেন। আমাদের মৃত্যু যেন হয় জীবনের সবচেয়ে উত্তম কাজটি করতে থাকা অবস্থায়। একবার সালাফদের এক উপদেশবাণীতে শিখেছিলাম, এমন কাজ এড়িয়ে যাওয়া উচিত যা করার সময় আমি মৃত্যুবরণ করাকে অপছন্দ করি। কেননা, মালাকুল মাওত (মৃত্যুর ফেরেশতা) কখন এসে হাজির হবেন, আমরা জানিনা। তিনি এলে এক মূহুর্তও আর অবকাশ নেই। তাই সবসময়ে আমাদের জিহবা চলুক ক্ষমাপ্রার্থনায়, ইস্তিগফারে, আল্লাহর যিকিরে। আমাদের হৃদয়ের আর্তি হোক এই ক্ষুদ্র জীবনের পৃথিবী পেরিয়ে অনন্তকালে আল্লাহর সন্তুষ্টিতে শান্তির প্রত্য্যাশায়...

হে আমাদের রব! আমরা তো আপনার কাছেই মুখাপেক্ষী, আমরা দুর্বল, আমরা পাপী, আমরা অকৃতজ্ঞ। আপনি তো গাফুরুর রাহীম, আপনি তো রাহমানুর রাহীম, আপনি আমাদের দয়া করুন, মাফ করে দিন, জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন, জান্নাতুল ফিরদাউসের জন্য কবুল করে নিন...

(১৭৫)
কখনো কখনো নীরবতা যেন শব্দের চেয়েও বেশি কথা বলে যায়...

(১৭৬)
আমরা যখন বেশি কথা বলি, তখন একই কথা বারবার বলি। চিরন্তন বাণীগুলো সবসময়েই মধুর,কিন্তু ব্যক্তিগত মতামতগুলো ক্লান্তিকর। অনেক সময় প্রিয়জনেরাও হাঁপিয়ে ওঠেন। হতে পারে সৌন্দর্যহীন কথা আমাদের মাঝে অদ্ভুত দুরত্ব তৈরি করে দিতে পারে। যদি সুন্দর কথা না বলতে পারি, চুপ থাকাই ভালো। অন্তত নীরবতার মাঝেও আমাদের হৃদ্যতা ও ভালোবাসা সঞ্চারিত হতে পারে, কিন্তু ক্লান্তিকর ও অসুন্দর ভাষা তার বিপরীতধর্মী কাজ করে।

(১৭৭)
আমাদের প্রিয়জনেরা যতটা সুন্দর, তার চেয়েও বেশি সুন্দর তারা আমাদের মনের সৌন্দর্যে। আপনি কোন একটা মূহুর্তকে অনেক বেশি সুন্দর করে হৃদয়ে ধরে রাখতে পারেন, বা সেই মূহুর্তটিকে অবিস্মরণীয় করে রাখতে পারেন আপনার মনের মাধুর্য, সৌন্দর্য, ভালোবাসা দিয়ে। মনটাকে সুন্দর করলে, ভালোবাসাময় আর উদার করতে পারলে আপনি জগতটাকেই দেখবেন অনেকটাই সুন্দর। তবে মনে রাখতে হবে, এই পৃথিবী কখনই নিখুঁত নয়। নিখুঁত ও সম্পূর্ণ আনন্দ ও সৌন্দর্য কেবল জান্নাতেই সম্ভব। সেই চাওয়া বুকে জাগলে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যেন তিনি আপনাকে জান্নাতের পথে পরিচালিত করেন।

(১৭৮)
মাঝে মাঝে মনে হয়, আল্লাহর জন্য যাদের ভালোবাসি তাদেরকে জন্য যে পরিমাণ ভালোবাসা অনুভব করি তা ধারণ করার জন্য এই বুকটা খুব ছোট।

(১৭৯)
ভালোবাসার গল্প শুনতে চাই আমরা। ভালোবাসার কতটুকু বুঝি? সত্যিই কি আমরা কাউকে ভালোবাসি? কয়েকটা কথা হয়ত আপনি আগে ভাবেননি। আপনি কি জানেন--

- আপনি আপনার প্রিয়জনকে ভালোবাসেন না যদি সে যা ভালোবাসে সেটাকেও আপনি ভালো না বাসেন।
- আপনি তখনই কাউকে ভালোবাসেন যখন তাকে যারা ভালোবাসে আপনি তাদেরকেও ভালোবাসেন।

# ভালোবাসা নিয়ে এমন আরো চমৎকার কিছু মনোমুগ্ধকর আলাপ শুনুন শাইখ হামজা ইউসুফের বক্তব্যের অংশবিশেষ নিয়ে এই ছোট্ট ক্লিপটিতে:

Tell Me about Love - Shaykh Hamza Yusuf : http://www.youtube.com/watch?v=ls_eQXGlXNA

২৭ আগ, ২০১৪

যখন মনে হয় "নাহ! আর পারছি না"

​​​​আমাদের অনেকের জীবনেই মাঝে মাঝে কিছু সময় আসে যখন মনে হয় "আর হবে নাহ/আর পারছি না",অথবা হয়ত কখনো জীবনের মূহুর্তগুলো এতই কঠিন লাগে যে আর আশা খুঁজে পাইনা, নিজের উপরে বিশ্বাস হারিয়ে যেতে থাকে। হয়ত কখনো কোন ভুলের কারণে হওয়া কষ্ট এত তীব্র হয় যে মনে হতে পারে জীবনের ফেলে আসা পথগুলো/কষ্টগুলো/প্রচেষ্টাগুলো আসলে ভুল ছিলো। আবার এমনও মনে হয়, আমি যে জীবন কাটাচ্ছি, হয়ত এ থেকে খুব ভালো কিছু দূরে থাক, এই কঠিন পৃথিবীতে কোনরকম কিছু করেও টিকে থাকতে পারবো বলে আশা করা যায় না...

২৬ আগ, ২০১৪

দাড়ি কেন রাখে ওই মুসলিম পুরুষগুলো?

অদ্ভুত এক মুসলিম সমাজ আমরা! নিজেকে মুসলিম মনে করা মানুষগুলো এমন এক চিন্তা ও শিক্ষা নিয়ে বড় হয়েছে যে কেউ দাড়ি রাখলে তাকে প্রশ্ন করে "কী ব্যাপার শিবির করো নাকি?/তুমি কি জঙ্গী-টঙ্গী হয়ে গেলা?"... ​​​আমাদের ইজ্জত নিয়ে কি আদৌ চিন্তা করি আমরা?

আমাদের এই সমাজটাকে জাহেল সমাজ বললে কি অত্যুক্তি হয় কিনা আমার জানা নেই। এখান প্রচলিত কনসেপ্টটাই এমন যে-- হজ্ব থেকে ফিরে দাড়ি রাখতে হয়, আর হজ্বে যেতে হয় বৃদ্ধ বয়সে!! এদিকে যৌবনে ছেলেদের গাল হবে চকচকা, টেলিভিশন কমার্শিয়ালে দেখানো হয় চকচকা গালের প্রতি নারীদের অনেক 'আকর্ষণ'!! মেয়েদের হিজাব প্রয়োজন এমন কনসেপ্টটা কমবেশি মুসলিম (যারা আসলেই নিজেদের মুসলিম মনে করেন) পরিবারগুলোতে থাকলেও ছেলেদের দাড়ির কনসেপ্টটা একদমই নেই। এই কারণেই সমাজে প্রো-সেক্যুলার লোকেরা দাড়িওয়ালা ছেলেদের নিয়ে একটু বেশি সহজে কৌতুক করার ধৃষ্টতা দেখায়। তবে আজকাল অনেক পরিবারেই চল্লিশ পেরিয়ে যাওয়া 'বোরকা পরা' মায়ের জিন্স-টিশার্ট পরিহিতা সন্তান পাওয়া যায়। পর্দার কনসেপ্টটাকে পানি দিয়ে গুলে খাওয়া হয়ত এটাকেই বলে!

আশাহত না হবার অনুরোধ জানাই

আমি আমার মুসলিম ভাইদের আশাহত না হবার অনুরোধ জানাই।

যখন বন্ধুদের মাঝে, আত্মীয়মহলে কিংবা পথে-ঘাটে আপনার মুখের দাড়ি কিংবা টাখনুর উপরে কাপড়, টিভিতে অবাধ নগ্নতা থেকে চোখ দূরে রাখা, মেয়েবন্ধু কিংবা মেয়ে-কলিগদের সাথে 'খাজুইরা আলাপ' থেকে নির্বিকার থাকা, মেয়ে 'কাজিনদের' সাথে অপ্রয়োজনীয় খুনসুঁটি না করা, হারাম অর্থোপার্জন 'সুদ' নিয়ে করা অর্থনৈতিক লেনদেনে সাবধান হয়ে থাকা, গান না শোনা, ইসলামী আলোচনা ও হালাকায় আগ্রহ থাকা নিয়ে আশেপাশে সবাই একটু হাসি-তামাশা ও অবাক হয়...

তখন জেনে রাখবেন, আপনি আল্লাহর এমন কিছু বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত যারা প্রচন্ড ভাগ্যবান। খুব অল্প মানুষই নামসর্বস্ব মুসলিম হবার পরে নিজেদেরকে বদলে ফেলার পথে আছে। আপনি এমন এক দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে আছেন যে দায়িত্ব নিয়েছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষটি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তিনি যে মূহুর্তটিতে দ্বীনের দায়িত্ব পেয়েছিলেন, তখন গোটা দুনিয়ায় তার পাশে একটি মানুষও ছিলো না। কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ আসবে, তাদের সবাইকে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব ঐ মানুষটির দু'টি কাঁধে ছিলো-- ভেবে দেখুন তার সেই অনুভূতিটুকু...

জান্নাতকে ঘিরে রাখা হয়েছে অনাকর্ষণীয় সব বস্তুতে। জাহান্নামের চারপাশে আকর্ষণীয় বস্তু। দুনিয়ার  চাকচিক্য, গার্লফ্রেন্ড, সুদী ব্যাঙ্কের টাকা, বন্ধুদের সাথে পার্টিতে গিয়ে মদ-হুইস্কি-বিয়ার খাওয়া --আপনার অন্তরকে অন্ধকের থেকে অন্ধকারে নিয়ে চলে যেতে থাকবে। আপনি এমন বস্তুর থেকে যত দূরে থাকতে পারবেন, নিজেকে তত বেশি ভাগ্যবান মনে করতে পারবেন। আখিরাতের অনন্তকালের কষ্টের সাথে দুনিয়ার কষ্টগুলো তুলনাহীন।

তাই, যত কষ্টই হোক, আখিরাতের অনন্তজগতের সুখস্বপ্নকে বুকে নিয়ে
আমি আমার ভাইদেরকে আশাহত না হবার আহবান জানাচ্ছি।

[১৮ আগস্ট, ২০১৪]

২০ আগ, ২০১৪

বাসায় ডিশের লাইন

​আমাদের বাসায় কোনদিন 'ডিশের লাইন' (স্যাটেলাইট কানেকশন) ছিলো না। স্রেফ নামকাওয়াস্তে একটা টিভি ছিলো। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের ভাইবোনদের মাঝে টিভি দেখার তেমন কোন ন্যুনতম আকর্ষণ কাজ করেনি, এখনো করে না। টিভি দেখা হতো না, হয় না শুনে অনেকে ' এটাকে 'অসম্ভব' বিবেচনা করে প্রশ্ন তুলতে চেষ্টা করেন আমাকে "এটা তো হারাম না। সাধারণ জ্ঞান বাড়ে, দেশ-বিদেশের খবর জানা যায়। ইসলাম মানেই তো সব টাইট করে রাখতে হবে এমন না।" ... মজার ব্যাপার হলো, এই ডাউটমার্কা কথাটা একটা মুখস্ত বুলি। ইসলামের পারমিশনকে এমন লোকজন থোড়াই তোয়াক্কা করে। তাই আলোচনায় ইসলাম 'টাইট' নাকি 'ঢিলা' প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে আমাকে বলতে হয় যে আলহামদুলিল্লাহ আমাদের এতগুলা ভাইবোনদের সবাইকে কেউ কোনদিন বলতে পারেনি যে সাধারণ জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা আছে বা আমরা অন্য সবার চেয়ে কিছুমাত্র কম জানি।

১১ আগ, ২০১৪

সুখ কোথায়?

​একদম সুনসান নিরবতা মনে হয় ঢাকা শহরে হয়ে ওঠে না। তিলোত্তমা নগরীতে​ সবসময়েই​ অনেক লোকের আনাগোনা চলতেই থাকে। একটু জায়গা পেলেই যেন মাটি ফুঁড়ে জেগে উঠে ডেভেলপার কোম্পানির নতুন প্রজেক্ট। নতুন অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে নতুন কিছু সংসার --নতুন দম্পতি, পুরোনো দম্পতি, ব্যাচেলর। ​যেকোন এক ​নির্ঘুম রাতে জেগে উঠে আলো-আঁধারির মাঝে জানালা দিয়ে, বারান্দা দিয়ে বাইরে উঁকি দিলেই অন্য কাউকে পাওয়া যায় দূরে কোথাও -- এক টুকরো মোবাইলের আলোতে জেগে থাকা কিশোর, কিশোরী। অথবা হয়ত কোন তরুণ বা তরুণী। এভাবেই অপচয় হয় কৈশোরের, তারুণ্যের।

৪ আগ, ২০১৪

আমরা কী চাই আর কী পাই?

​​যদি আমরা জীবনের একটু পেছনে ফিরে তাকাই, মনে হয় সেখানে অনেক প্রাপ্তি পাবো, পাবো অনেক অপ্রাপ্তির অনুভূতি। যে জিনিসটা নিশ্চিত পাবো, তা হলো কিছু দগদগে ঘা। অনেক কষ্ট আর বেদনার ফেলে আসা অসহায় দিন, দুশ্চিন্তার রাত, শঙ্কা ও সঙ্কোচের মূহুর্তে ভরা অনেকগুলো দিন। জীবনে খুব ছোট ছোট ব্যাপারে ঠকে ঠকে, প্রতারিত হয়ে, অবহেলা পেয়ে, রিক্ত থেকেই আমরা স্বস্তির কিছু প্রাপ্তি পাই, প্রশান্তির নিঃশ্বাস নিতে পারি। দুনিয়াতে যারা বড় হয়, তারা কমবেশি সবাই অনেক ত্যাগ করেন। আল্লাহ পৃথিবীর সবকিছুই খুব 'সিসটেমেটিক' করে তৈরি করেছেন। নিপুণ সেই স্রষ্টার হাতের স্পর্শে সবকিছু অদ্ভুত এক দ্যোতনার মাঝে চলে। দিন না পেরিয়ে রাত হয়না, অঙ্কুরোদগম না হলে চারাগাছ ফোটে না, গর্ভকে ধারণ না করলে হয়না সন্তান -- অমন লক্ষ-কোটি উদাহরণ সৃষ্টিজুড়ে...

৩ আগ, ২০১৪

গাযযাতে চলমান হত্যাযজ্ঞের ছবিগুলোর প্রতি সবাই কেমন যেন ডিসেনসিটাইজড হয়ে গেছে

​গাযযাতে চলমান হত্যাযজ্ঞের ছবিগুলোর প্রতি সবাই কেমন যেন ডিসেনসিটাইজড (অনুভূতিহীন) হয়ে গেছে...

এই ব্যাপারটাতে আমার কিছু বলার আছে! পশ্চিমে বেড়ে ওঠায় এরকম মৃত্যু আমরা কেবল মুভিতেই দেখেছি। আমরা এতো বেশি মুভি দেখেছি যে আমাদের কাছে গাযযায় চলমান হত্যাকান্ড আর ম্যুভির বিষয়টা একই মনে হয়, শুধুই যেন পর্দায় ভেসে থাকা কিছু নিথর দেহ! তাই আমরা নতুন করে ডিসেনসিটাইজড হয়ে পড়িনি, আমাদের বেশিরভাগ মানুষই অনেক আগে থেকেই এরকম বিষয়ে ডিসেনসিটাইজড হয়ে আছি। যারা আমাকে বলছেন এসব শেয়ার না করতে তাদের বলছি, আমি ভাল করেই জানি আপনাদের অবস্থান এবং আমি আপনাদের উপদেশটা মনে রাখব। দয়া করে বুঝতে চেষ্টা করুন যে আমার পেশাদারিত্ব এবং আবেগের মাঝে আমি এক টানাপোড়েনে আছি। আমি আল-শিফা হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তায় বড় হয়েছি। এ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন প্রতিদিন সকালে আমাদের ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিত। আমি ও আমার বন্ধু মিলে আল-শিফার বাগানে অনেক খেলাধূলা করেছি! এই ভয়াবহতা স্রেফ একটা ছবির দেখার অনেক ভিন্ন একটা ব্যাপার। আমি নিজের চোখে আল-শিফা হসপিটালের দরজা দিয়ে ক্ষতবিক্ষত শরীরগুলো দেখে বাসায় ফিরে খবর দেখেছি কিন্তু এ বিষয়ে কোন কিছুই পাইনি সেখানে। সংবাদ মাধ্যমগুলো গাযাতে চলমান হত্যাযজ্ঞ এমনিভাবেই চেপে যাচ্ছে ঠিক যেমন করে তারা সিরিয়া, বার্মা, পাকিস্তানে চলমান জুলুম ও নিপীড়নকে চেপে যাচ্ছে। আমি এসব দেখে প্রচন্ড ক্ষেপে গিয়েছিলাম, আমি এখনো ক্ষেপে আছি। আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম গোটা বিশ্বকে গাযার এমন চিত্র দেখাবো যা গাযায় বসবাসকারী মানুষদের চোখগুলো প্রতিদিন দেখে। অনলাইনে হয়ত আপনারা শুধু একটা ছবিই দেখেন। কিন্তু এই ছবির পেছনে থাকে অনেকগুলো গল্প, ছবিটা কেবলই একটা মৃতদেহ নয়। একজন মানুষের দেহ থেকে যখন তার আত্মা বের হয়ে যায় তখন শুধু মানুষটিই মারা যায় না, মারা যায় ভালোবাসা, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, সমবেদনা, স্বপ্ন। ছবিটি দেখতে কতটা  বীভৎস সেটিই কেবল বড় ব্যাপার নয়, বরং তিলতিল করে গড়ে ওঠা জীবনগুলোর কষ্ট ও হারানোর গল্পগুলো অনেক বড় ব্যাপার।

আমি আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

-- মুহাম্মাদ জেয়ারা

[লেখক কাডায় জন্মগ্রহণ করা ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত এক নাগরিক। তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়াশোনা করেছেন। তিনি একজন বক্তা এবং মূলত তরুণদের প্রতি অনুপ্রেরণাদানকারী বক্তব্য রাখেন। অনলাইনে প্রকাশিত এডুকেশনাল এবং মোটিভেশনাল ভিডিওগুলোর জন্য তিনি বেশি পরিচিত। গাযযায় বেড়ে ওঠার সময়ে জীবনের ৮টি বছর তার জীবনের একটি বড় অভিজ্ঞতা। তার ফেসবুক প্রোফাইল: https://www.facebook.com/mzeyara/]

৩১ জুল, ২০১৪

​ বন্ধ রাফাহ ক্রসিং এবং সহস্র মৃত্যু

২০১২ সালের নভেম্বরে ইসরাইল আক্রমণ করেছিলো গাজাতে, নাম দিয়েছিলো 'অপারেশন কাস্ট লিড'। হামাসের প্রতিরোধে টিকতে পারেনি খুব বেশিদিন। তখন মিশরের প্রেসিডেন্ট ছিলেন মুহাম্মাদ মুরসি। রাফাহ ক্রসিং তখন খোলা ছিলো, তাই মুসলিম ব্রাদারহুডের অনেক সাহায্য পেয়েছিলো হামাস। সেই গ্লানিতে হিংস্র হয়ে থাকা ইসরাইল হয়ত তাই মুরসিকে প্রেসিডেন্ট থেকে সরিয়ে প্রকাশ্য হত্যাকান্ডের মাধ্যমে ক্যু করতে সাহায্য করেছিলো জেনারেল সিসিকে। এবার তাই রাফাহ বন্ধ। মিশরের সিসি, সৌদির আব্দুল্লাহ, আমিরাতের আমির মিলেছে ইসরাইলের সাথে এবং গাজ্জাবাসির উপরে অত্যাচারকে অসহনীয় করে তুলেছে। ক্রমাগত অস্ত্রের সরবরাহ দিয়ে চলেছে আমেরিকা।

টুকরো আলাপ: বাংলা ভাষায় গুগল সার্চ

​​বাংলা ভাষায় গুগলে কিছু সার্চ দিতে গেলে আমি মাঝে মাঝেই কীবোর্ডে তাড়াতাড়ি করে শব্দগুলো চেপে যাই। নইলে শুধু দু'একটা অক্ষর সার্চ বক্সে থাকলে গুগলের সাজেশনে যা দেখি, তাতে ঘেন্নায় বমি-বমি লাগে। একটা গোটা জাতির কী টপিকে কত বেশি পছন্দ সেটা বেশ পরিষ্কার দেখা যায় গুগলের এইসব সার্চ কী-ওয়ার্ড দেখলে। আল্লাহ আমাদের বাংলাভাষী মানুষগুলোকে বেশি করে হিদায়াহ দিন, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে হেফাজত করুন।

এদিকে মাঝে মাঝে আমার ব্লগগুলোতে স্ট্যাটিসটিকস চেক করে গিয়ে দেখি এমন সব নোংরা কী-ওয়ার্ড সার্চ করে লোকে গুগলে গিয়ে আমার ব্লগে এসেছে! ভুলপথে চলে আসা লোকগুলো হয়ত বোকা হয়ে গেছে এইসব ব্লগে এসে। কখনো কখনো না হেসে পারিনা কিছু সার্চ কী-ওয়ার্ড দেখে... এত সব অদ্ভুত চিন্তা মানুষ করে কীভাবে!! এই যেমন আজকে একজন সার্চ দিয়েছিলেন যা লিখে তা হলো--

"নাবালক মেয়ে বিয়ে করার উপায়"​

টুকরো আলাপ: ড বিলালের ঢাকা ভ্রমণ

​ড বিলাল ফিলিপস আমার জীবনে বড় একজন মানুষ। যখন জন্মসূত্রে মুসলিম থাকা বিচিত্র বিশ্বাস আর আচার-সংস্কৃতির মানুষদের মাঝে পড়ে চিড়ে-চ্যাপ্টা হয়ে যাচ্ছিলাম তখন আল্লাহ এই মানুষটির লেকচারগুলো দিয়ে আমার জীবনে এক নতুন দিগন্তের সন্ধান দিয়েছিলেন। ঢাকায় ড. বিলালের লেকচারে উপস্থিত থাকার প্রবল ইচ্ছা ছিলো। কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম মনে মনে। শেষ মূহুর্তে যখন শুনলাম প্রোগ্রাম ক্যানসেল হয়ে গেছে তখন খুব চমকে যাইনি, হতভম্ব হইনি। নষ্টদের টাকা খাওয়া মিথ্যার বেসাতি নিয়ে প্রচার করা জঘন্য এক অনলাইন পত্রিকা যখন তার আগমনের আগেই মিথ্যা ছড়াচ্ছিলো তখনই টের পেয়েছিলাম এই দেশের মাটির নষ্টগুলো সেটাকে কন্টকময় করবে। আল্লাহই উত্তম পরিকল্পনাকারী। আমরা তো বড়জোর চেষ্টা করতে পারি, সফলতার মালিক আল্লাহ। ইনশাআল্লাহ নিশ্চয়ই আল্লাহ সেই মানুষগুলোর চাওয়াকে কবুল করে উত্তম প্রতিদান দিবেন যারা দ্বীনকে আরো ভালো করে বুঝতে আলোচনা শুনতে পরিকল্পনা করেছিলেন। মু'মিনদের পথ কখনই সহজ নয় কবরে পা দেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত... আল্লাহ আমাদেরকে জান্নাতি হিসেবে কবুল করুন, আল্লাহ আমাদেরকে নষ্ট-অভিশপ্ত-মিথ্যুক হওয়া ও তাদের প্রতি সমর্থনকারী হওয়া থেকেও হেফাজত করুন। নিশ্চয়ই আমাদের সকল নামাজ, প্রার্থনা, আমাদের সকল ত্যাগ, আমাদের জীবন ও আমাদের মরণ কেবলই আল্লাহর জন্য...

[২১ জুন, ২০১৪]

৩০ জুল, ২০১৪

মুখের দাড়ি যখন ফান

​​দাড়ি নিয়ে ফান করাটা বেশ অতিমাত্রায় চলছে ইদানিং। 'মিডিয়াওয়াশড' মুসলিম মনগুলো খুবই করুণাদায়ক। মাঝে মাঝে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক অসারতা, আত্মপরিচয়হীনতা দেখে হতভম্ব হয়ে করুণা অনুভব করি। কিন্তু করুণা করতে গিয়েও যন্ত্রণায় পড়ি। মানসিক দারিদ্রতায় আক্রান্ত এই ছেলেমেয়েগুলো আবার ইসলামের শত্রুতা করে অবলীলায়। তাই, এদের অজ্ঞতা আর শয়তানি কাজগুলোকে নিস্পাপ চোখে দেখা সম্ভব হয় না।

ঈদ : একাল ও সেকাল

​​হাজার কিম্ভুত টাইপের হলেও ছেলেবেলার ঈদ খুব বেশি ম্লান ছিলো না। ঈদের আগের রাতের মধ্যেই ঈদকার্ড বিতরণের একটা ব্যাপার ছিলো। ২ টাকা আর ৫ টাকায় কিছু কার্ড পাওয়া যেত। ৫ টাকার কার্ডগুলো এমবোস করা থাকতো। তখনো গোটা এলাকায় কিছু 'বাড়িওয়ালার' ছেলে ভাইয়েরা বিল্ডিং এর উপরে 'সাউন্ড বক্স' লাগিয়ে গান বাজাতো। সম্ভবত সেগুলোকে 'ডেক সেট' বলা হতো। বিটিভিতে অনুষ্ঠানের ঘোষিকাদের মাথার কাপড় ফেলে দিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা দেয়ার ব্যাপারটা থাকত ঈদ হবে কিনা তা জানার মূল উৎস।

[গ্রন্থচারণ] বিয়ে - স্বপ্ন থেকে অষ্টপ্রহর : মির্জা ইয়াওয়ার বেইগ


আজকে একটি বইয়ের ব্যাপারে লেখা প্রয়োজন মনে করছি যা এই সমাজে, এই সময়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বইটির নাম "বিয়ে : স্বপ্ন থেকে অষ্টপ্রহর" যা লিখেছেন শাইখ মির্জা ইয়াওয়ার বেগ। বিয়ে আমাদের প্রতিটি মানুষের জীবনের স্বপ্ন থাকে, একসময় সেটা আটপৌরে হয়ে যায়। নামকরণের দিক থেকে হিসেব করলে বইটি অসাধারণ হয়েছে এবং নামকরণ সার্থক হয়েছে। একজন মানুষ বিয়েকে স্বপ্ন হিসেবে কেমন করে, কী করে সুন্দর একটি বিয়ের দিকে আগানো যায় এবং বিয়ে যখন জীবনের একটা অংশ হয়ে যায় তখনো যে বিয়েকে নিজেদের উদ্যোগে কীভাবে সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সেই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। ইসলামী জ্ঞানে ভাস্বর লেখক অল্প কথায় ছোট কলেবরে তার দীর্ঘ জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে দাম্পত্য নিয়ে খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন এই বইটিতে।

২৭ জুল, ২০১৪

হামাস ও ইসরাইলের গাজা গণহত্যা নিয়ে কয়েকটি লিঙ্ক

​​​# প্রথম লিঙ্ক:
হামাস নেতা ওসামা হামদানের একটি সাক্ষাতকার প্রকাশিত হয়েছে আল জাযিরাতে। অনেক কিছু জানার মতন আছে এতে, বিশেষ করে হামাসের বলিষ্ঠ ও অবিচল লক্ষ্য। অভিশপ্ত ইয়াহুদিরা সবসময়েই চুক্তি লঙ্ঘন করতো, যতবারই তারা চুক্তি করে, ততবারই লঙ্ঘন করে। ওদের এইসব ফানি চুক্তি নাটক হামাস মোটেই বিশ্বাস করে না।

যতক্ষণ না পর্যন্ত তারা গাজা ছেড়ে দিচ্ছে এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিন রাস্ট্রের উপরে অবৈধ দখল না ছাড়ছে, হামাস তাদের বিরুদ্ধে মুক্তি সংগ্রাম করেই যাবে। আল্লাহ সকল মুজাহিদিনকে হেফাজত করুন এবং তাদের বিজয় দান করুন।

@ http://www.aljazeera.com/news/middleeast/2014/07/hamas-leader-israelis-are-playing-games-201472685657718753.html

​​​# দ্বিতীয় লিঙ্ক:
আলজাজিরা এরাবিক প্রথমে 'ম্যসাকার এট ডন' নামে এই অনুষ্ঠান প্রচার করে। পরে আলজাজিরা ইংলিশ এটার ইংরেজি ভার্সন তৈরি করেছে। সম্প্রতি ইসরাইল ফিলিস্তিনের Shujayea শহরে যে ম্যাসাকার করেছে এ ডকুমেন্টারিতে এর ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সেদিন সকালে হামলার এক্সক্লুসিভ সব ফুটেজ রয়েছে এ ডকুমেন্টারিতে। এক কথায় ভয়াবহ!

@ http://www.aljazeera.com/programmes/specialseries/2014/2014/07/shujayea-massacre-at-dawn-201472621348901563.html

​​​# তৃতীয় লিঙ্ক:
বিবিসির সাথে হামাস নেতা খালিদ মিশালের একটি এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউ প্রকাশিত হয়েছে।

@ http://www.bbc.co.uk/programmes/p023kld8

[২৭ জুলাই, ২০১৪]

ইসরাইলকে বয়কটের আন্দোলন

বিগত কিছুদিন যাবত গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা শুরু হবার পর থেকে অনলাইনে অফলাইনে ইসরাইলকে বয়কট সংক্রান্ত অনেক কিছু পড়েছি যার সত্যতা নিয়ে সন্দিহান ছিলাম। অনেক কোম্পানিই ইসরাইলে অর্থায়ন করে কিন্তু তাদের অথেনটিক একটি তালিকা অন্তত দরকার। এসব খোঁজাখুঁজিতে গিয়ে জানলাম বিডিএস মুভমেন্ট সম্পর্কে...

BDS Movement হলো বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনিদের একটি সংগঠিত আন্দোলন। বিডিএস মুভমেন্ট সত্যিকারের বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট ও স্যাংকশনের মাধ্যমে ইসরাইলকে জবাব দেয়ার জন্য শুরু হয়। এখন পর্যন্ত তারা বেশ সংগঠিত উপায়ে কাজ করে যাচ্ছে।

# ইসরাইলকে অর্থায়ন করা ৭টি কোম্পানির বিস্তারিত তথ্য নিয়ে একটি তালিকা:
http://www.bdsmovement.net/2014/freedom-and-justice-for-gaza-boycott-action-against-7-complicit-companies-12386

এগুলোর মাঝে বাংলাদেশের ভোক্তা হিসেবে পরিচিত পণ্যের মাঝে আপাতত হিউলেট প্যাকার্ড (এইচপি) HP কোম্পানিটিকে পেলাম পেলাম, এছাড়া গ্রুপ ফোর (G4S) সিকিউরিটি কোম্পানি বাংলাদেশেও কাজ করে।

# BDS মুভমেন্টের ওয়েবসাইট: www.bdsmovement.net

২৬ জুল, ২০১৪

তারিক রমাদানের কবিতা: জীবন


জীবন
বাবা-মায়ের ইন্তেকাল করা এবং বিদায় নিতে দেখা
সন্তানদের বেড়ে ওঠা এবং বিদায় নিতে দেখা
নিজেদের বয়স বাড়তে দেখা এবং বিদায় নেয়া

কিছু মানুষ বিদায় নিবে এবং বেঁচে রবে
বাদবাকিরা চলে যাবে, ফিরবে না কোনদিন।

আমরা সবাই তাঁর
তার কাছেই ফিরে যাবো
তার মুখোমুখি হবো আমরা, একদম একা।

-- তারিক রমাদান

* * *
[ড. তারিক রমাদানের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে 'LIFE' শিরোনামে একটি কবিতা প্রকাশিত হয় ২২ জুলাই, ২০১৪ তারিখে। বিষয়বস্তু ভালো লাগায় ধুম অনুবাদের চেষ্টা করলাম]

রাস্ট্রের মিথ্যা প্রোপাগান্ডার মেশিন হিসেবে ব্যবহার হয় ইসরাইলি ছাত্ররা

​​​প্রথম খবরটা গতবছরের আগস্ট মাসের, পত্রিকাটা বৃটেনের দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট, যারা বরাত দিয়েছে ইসরাইলি পত্রিকা হারেটজকে। খবরে এসেছে, ইসরাইলি সরকার তাদের ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় শত ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান করবে যদি তারা বিদেশিদের কাছে ইসরাইলের ইমেজ রক্ষার জন্য ফেসবুকে পোস্ট দেয় এবং টুইটারে টুইট দেয়। (বিস্তারিত পড়ুন: http://ow.ly/zBzp2)

২১ জুল, ২০১৪

গাজা গণহত্যা - ২০১৪: ডায়েরির পাতা থেকে


১০ জুলাই, ২০১৪

আজ কয়েকদিন ধরে ফিলিস্তিনে বোমা হামলা করছে নরাধম ইহুদিবাদী ইসরাইল নামক জারজ রাস্ট্রের এয়ারফোর্স, যারা বিশ্বের চতুর্থ অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ। এই বিপুল অস্ত্রধারী ও প্রযুক্তিময় ইতর আর্মি ও এয়ারফোর্সের প্রতিপক্ষ গাজা নামক এক শহর, যার লোকেরা নিরস্ত্র, যাকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ কারাগার বলেন অনেকে। আকাশে মিসাইল আর রকেট উড়লে তাদের মৃত্যুর অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না।

ক'দিন যাবত যাদের হত্যা করা হয়েছে তারা বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ইসরাইল চায় না ফিলিস্তিনে নতুন প্রজন্ম আসুক। শিশুদের হত্যা করে, পুরুষদের কারাগারে নিয়ে অত্যাচার করে আহত-নিহত করে শেষ করে দিতে চায় পুরুষদের সংখ্যা যেন নতুন সন্তান না আসে পৃথিবীতে। এরাই সেই বনী ইসরাইলের বংশধর, যারা আল্লাহর নাফরমানী করাকেই নিজেদের কাজ হিসেবে ধরে নিয়েছিলো।

ইসরাইলি ইহুদিবাদী শয়তানগুলোর হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে কথা বলার আজ কেউ নেই। গোটা পৃথিবী আজ ফুটবল নিয়ে কাতর। মেসি মেসি করতে করতে কেটে যায় বাংলার দামাল যুবক আর পুরুষগুলোর রাত। মিডিয়া এসব বিশ্বকাপমার্কা খবরের শিরোনামে ভরে রাখে পত্রিকার পাতাগুলো।

কৃতজ্ঞতা

আল্লাহর এক অসাধারণ নিয়ামাত ​বাতাসের মাঝে ডুবে থেকে আমরা বাতাসের মূল্য ও বিশুদ্ধ বাতাসের মর্ম বুঝিনা, কিন্তু কিছুটা হয়ত বুঝতে পারে তারা যখন কেউ থাকে অ্যাজমা রোগী, নাক দু'টোর ফুটোকে তখন সুঁইয়ের ডগার মতন ক্ষুদ্র ছিদ্র মনে হয়, বুক আকুলি-বিকুলি করতে থাকে একটু বাতাসের জন্য...

আমাদের জীবনের ভালোবাসার বা সম্পর্কগুলোর ক্ষেত্রেও আমরা বড্ড উদাসীন থাকি। অনেক মানুষদের কাছে পাওয়া আদর, যত্ন-আত্মি ভালোবাসাকে আমরা 'স্বাভাবিক' প্রাপ্তি হিসেবে হিসেব করে বেখেয়াল থাকি। অথচ মানুষের প্রতিটি সুন্দর আচরণই কষ্টের একটা ফলাফল। ভালো মানুষেরা সেগুলো নিয়মিত প্রচেষ্টার পরে তবেই অর্জন করেন। এমনকি মা-বাবার ভালোবাসাও সবক্ষেত্রে একই না। এই জগতেও অনেক মা-বাবা আছেন চরম বেখেয়াল, আবার অনেকে আছেন তাদের সর্বস্ব বিলিয়ে দেন সন্তানের জন্য... তাই কোনকিছুই যে আপনাআপনি হয়না বা আমরা এমনিতেই পাইনা সে কথা আমাদের মাথায় রাখা উচিত।

আমাদের চারপাশে অনেক নিদর্শন আছে যা দেখে আমাদের বুঝে নেয়া উচিত আল্লাহর নিয়ামাত। মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত কেননা যে মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ হয় না, সে আল্লাহর প্রতিও হয় না। একইভাবে, যে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হয় না, তার প্রকৃতপক্ষে বান্দাদের প্রতি কৃতজ্ঞ হবার প্রশ্নই আসে না। আল্লাহ আমাদেরকে কৃতজ্ঞ বান্দা হবার তাওফিক দান করুন, অন্য বান্দাদের প্রতি সহমর্মী হবার তাওফিক দিন।

[১০ জুলাই, ২০১৪]

২৬ জুন, ২০১৪

ফেসবুকে প্রচুর সময় নষ্ট হয়

ফেসবুকে প্রচুর সময় নষ্ট হয় আমার। খুব সম্ভব প্রায় সবারই এভাবে অবলীলায় সময় নষ্ট হয় ফেসবুকে। ফেসবুক তথা ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড এক অদ্ভুত ভ্রমময় জায়গা। নিজের পছন্দের কথা শুনতে ও শুনাতেই সবাই ফ্রেন্ড লিস্ট সাজায়। ভুল হোক, শুদ্ধ হোক -- পরবর্তীতে অনেক বেশি রেসপন্স পাওয়ার পরে মানুষটি ভুলে যায় প্রকৃতপক্ষে খুব কম লোকই তার মতন মত ধারণ করে। আমার জীবনের উপলব্ধি হলো-- এই সমাজে তীব্র খারাপের সংখ্যা যেমন কম, ভালো করতে চাওয়া দল-মতের মানুষও খুব কম। কিন্তু আছে প্রচুর জাহেল বা অজ্ঞ-মূর্খ লোক, ভালো-খারাপকে আলাদা করার আগ্রহও বা জ্ঞান নাই যাদের; তারা প্রকারান্তরে খারাপদেরকেই সাহায্য করে। নিজের সমমনা লোকদের ফ্রেন্ড লিস্টে/গ্রুপে/ফলো লিস্টে নিয়ে "অনেক বেশি কাজ হচ্ছে/ অনেক ভালো আছি/ আমাদের মতটাই সঠিক/ আমরাই ঠিক ভাবছি/আমরা জনমত বদলে দিচ্ছি" টাইপের মূর্খতা আর অজ্ঞতায় ভরা চিন্তা যেই বিভ্রমে রেখে দেয় আমাদেরকে তা অনেক ক্ষতিকর।

২৩ জুন, ২০১৪

রামাদান পরিকল্পনা : হিজরি ১৪৩৫

​​​​​​​ইসলামকে নতুন করে বুঝতে শেখার পর রামাদান আমার কাছে অন্যরকম আবেদন নিয়ে হাজির হয়! বিগত কয়েক বছর রজব পেরিয়ে শাবান মাসে এসে অনেক পরিকল্পনা করেছিলাম রামাদানের জন্য। খানিকটা পড়াশুনা করে, বুঝে আর শুদ্ধ আবেগ থেকে আমি 'অ্যাম্বিশাস' বা উচ্চাভিলাসী পরিকল্পনা না করার চেষ্টা করেছিলাম। তবু ক্রমাগত ঠেকে শিখছি! আলেমরা সবসময়েই বলেন রামাদানে অতি উঁচু লক্ষ্য আর পরিকল্পনা না করে বরং বর্তমান জীবনধারার সাথে মিলে যায় এমন কিছু লক্ষ্যস্থির করতে।

আল্লাহ এমন আমলকে পছন্দ করেন যা হয়ত আকারে ছোট, কিন্তু যদি তা নিয়মিত করা হয়। এই বিষয়টাকে মাথায় রেখে অন্যান্যবারের মতন তাই রামাদানে আহামরি কিছু ঠিক করিনি। এখনকার অবস্থান থেকে নিজেকে উন্নত দেখতে চাই তাই মূলত কুরআনকে ঘিরেই কিছু পরিকল্পনা করেছি। অন্য বছরগুলোতে ইসলামি সাহিত্য ও আলোচনা নিয়ে চিন্তাভাবনা ও ঘাঁটাঘাঁটি করতাম। এইবার কুরআন তিলাওয়াত, তার অনুবাদ এবং শুধু ত্রিশ পারার সূরাসমূহের তাফসির গভীরভাবে পড়ার মাঝেই মূল পড়াশোনা স্থির রাখবো। উস্তাদ নু'মান আলী খানের তাফসীর আলোচনাগুলোর অডিও mp3 শুনতে চেষ্টা করবো নিয়মিত ইনশাআল্লাহ। [http://www.nakcollection.com/download-tafsir.html]
ব্যাস এতটুকুই! কুরআনকে ঘিরে কুরআন নাযিলের মাসে পরিকল্পনায় আল্লাহ অনেক বারাকাহ দিবেন ইনশাআল্লাহ!

প্রতিদিন চাকুরিস্থলে, ঘরে দা'ওয়াহ সংক্রান্ত কাজ করার জন্য কিছু ছোট ছোট পরিকল্পনাও করেছি। অনলাইন জগত থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবো, যেহেতু এখানে আমার অযথাই অনেক সময় নষ্ট হয়, না চাইলেও অনেক ছবি দেখে ফেলতে হয় যা অনুচিত, অনেক তুচ্ছ আলোচনা পড়ে ফেলতে হয় যা দুনিয়া ও আখিরাতে কোন কল্যাণ আনবে না বরং সন্দেহ ও ঘৃণা দিয়ে মনকে বিষিয়ে দেয়।

একটা বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ম নে হয়-- রামাদানে নিজের মধ্যে আনা প্রতিটি পরিবর্তনকে একদম সবসময়ের জন্য ধারণ করতে চাওয়ার তৃষ্ণার্ত মানসিকতা। গীবত, ক্ষতিকর সমালোচনা, হিংসা, ঘৃণা, আজেবাজে আলাপ, খেলাধূলার মতন তুচ্ছ বিষয়ে দেদারসে সময় নষ্ট করার মতন বিষয়ে প্রচন্ড সতর্কতা যেন আজীবনের জন্য নিজের মাঝে গেঁথে যায় এমন চেষ্টা করা গুরুত্বপূর্ণ বলে অনুভব করছি।

প্রতিটি মুসলিমই রামাদানের জন্য অস্থির হয়ে অপেক্ষা করে, প্রস্তুতি নেয়। প্রাণপ্রিয় অতিথি রামাদানের জন্য মনের ঘরদোর পরিষ্কার করে বসে থাকার মাঝে আছে অন্যরকম এক আনন্দ! আল্লাহ আমাদের জন্য রহমত ও মাগফিরাতময় রামাদান কবুল করুন।

বর্ষণস্নাত  ঢাকা নগরী, 
২৩ জুন, ২০১৪ দুপুর

২২ জুন, ২০১৪

মনের জানালা মাঝে # ১৫

(১৬০)
আমাদের অনেকের জীবনের ক্ষুদ্র একেকটা অংশই একেকটা গল্প-উপন্যাসের চেয়ে অনেক অনেক বেশি নাটকীয় হয়। গল্প-উপন্যাসের কাহিনীগুলো তখন হাস্যকর রকমের তুচ্ছ মনে হতে থাকে...

(১৬১)
মাঝে মাঝে কিছু মানুষকে দেখে মুগ্ধ হতে হয় যারা ভালো কাজে, দ্বীনের জ্ঞানের মাঝে এত আগ্রহ, এত প্রাণশক্তি নিয়ে লেগে থাকেন। তাদের দেখে অবাক হয়ে মনে হয়, এত অনুপ্রেরণা তারা কোথা থেকে পান! তাদের নিরহংকার ও আন্তরিক আহবানে অনেক কিছু শেখা হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ এমন মানুষদেরকে রহম করুন, তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

 (১৬২)
আমাদের অতীতের প্রতিটি ঘটনা, প্রতিটি গল্পই আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা আর উদ্দীপনার গল্প হয়ে এসেছে। কিন্তু আমরা কীভাবে তাদেরকে ব্যাখ্যা করি, সেটা আমাদের উপরে নির্ভর করে।

(১৬৩)
সৌন্দর্যের বসবাস আমাদের ভেতরে, আমাদের হৃদয়ে, আমাদের চোখে, আমাদের মুখের শব্দগুলোতে, আমাদের দৃষ্টিতে, আমাদের চাহনিতে... সৌন্দর্য প্রকাশিত হয় আমাদের গোটা সত্ত্বাজুড়ে।

(১৬৪)
যে আল্লাহর সামনে হাঁটু গেঁড়ে সিজদাহ করতে পারে সে সবার সামনে দৃঢ় হয়ে শক্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে।

(১৬৫)
আমি আল্লাহর কাছে অনেককিছু চেয়েছিলাম এবং তিনি আমাকে কিছু সুযোগ দিয়েছিলেন। আমি হয়ত যা চেয়েছি তা পাইনি কিন্তু তা-ই পেয়েছি যা আমার প্রয়োজন ছিলো।

(১৬৬)
অন্যদের হক রক্ষা করতে গিয়ে, কষ্টে থাকা লোকের উপকার করতে গিয়ে নিজেকে বঞ্চিত ও হতভাগা মনে করা ঠিক নয়। যাকে খুশি করতে বা যার নির্দেশ মেনে এই কষ্টগুলো করা হয়ে তার কথা মনে করা উচিত। তিনি এই দুনিয়া ও সকল বিশ্বজগতের প্রতিপালক। তিনি যখন পুরষ্কার দিবেন, তখন কল্পনাতীত উপায়ে দিবেন। সেই প্রাপ্তির সৌন্দর্য আমাদের কল্পনাকেও ছাপিয়ে যায়, সুবহানাল্লাহ!

(১৬৭)
যদি মনে করেন দাড়িতে কাউকে দেখতে অনাকর্ষণীয় লাগে, তাহলে মনে রাখবেন সৃষ্টির সেরা মানুষ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা, তার দাড়ি ছিলো এবং তিনি দেখতে অনুপম সুন্দর ছিলেন।

(১৬৮)
আপনি হয়ত ফেসবুক সেলিব্রেটি টাইপের কেউ নন বা হতেও চাননি, আপনার নাম ধরে হয়ত খুব বেশি মানুষ চেনে না। আপনি সাদামাটা থাকেন বলে যদি কখনো মন খারাপ হয় তাহলে মনে রাখবেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আপনাকে নাম ধরেই চিনেন এবং তিনি প্রতি মূহুর্তেই আপনার কাজগুলো আগ্রহের সাথে দেখছেন।

(১৬৯)
ভালোবাসার গভীরতম সম্পর্কটি তার সাথে ঠিক করে রাখুন, তিনি গোটা পৃথিবীকে আপনার জন্য ঠিক করে দেবেন।

(১৭০)
সুরা আর-রুম একটা অসম্ভব সুন্দর সূরা, অসম্ভব সুন্দর এর অর্থ। শুধু রিডিং পড়ে গেলেও বুকে অদ্ভুত এক গভীর অনুভূতি হয়। আল্লাহ কেমন করে তার নিদর্শনগুলো বলেছেন এখানে, এত সুন্দর এক ভাষায় তা ভাবলেও বিষ্মিত হতে হয়। সুবহানাল্লাহ!!

সুরা আর-রুম: http://tanzil.net/#trans/bn.bengali/30:1

জমির মালিকানা ও ক্ষমতার লোভ এবং তাদের স্থায়িত্বকাল

​​​​​​​একসময় ইতিহাস পড়তে গিয়ে অত্যাচারী শাসক বাপকে হত্যা করে তার সন্তানের রাজা হবার অনেকগুলো দৃষ্টান্ত দেখেছিলাম। পার্সিয়ান আর রোমান সাম্রাজ্যের এমন বেশ কিছু গল্প মনে আছে, মুঘলদের মাঝেও ক্ষমতার এই লোভ নিয়ে ঘটনা ছিলো। নবাব সিরাজউদ্দৌলার খালা হিংসার একটি দৃষ্টান্ত। এমন হিংসুটে মানুষ পৃথিবীতে এসেছে যুগে যুগে, আবার চলেও গেছে নিঃস্ব হয়ে। শুধু পৃথিবীর সময়টা অনেক মানুষকে নিরতিশয় যন্ত্রণা দিয়েছে তারা।

২১ মে, ২০১৪

মনের জানালা মাঝে # ১৪


(১৪৬)
জেনে রাখুন, মন খারাপের বেলায় কেউ কখনো কোনদিনই পাশে থাকবে না।
আপনার ভাঙ্গা হৃদয় কখনো জোড়া লাগবে না যদি তা আল্লাহর কাছে সঁপে দিতে না পারেন।

(১৪৭)
কেউ আমাদের ভুল ধরিয়ে দিলে আমাদের মাথায় আগুণ ধরে যায়। আবার, কিছু কিছু মানুষ সবসময়ে খালি অন্যের ভুল ধরে -- দুটো ব্যাপারই ইগো থেকে হয়। সমালোচনার কাজটা করে তারা নিজেদের সুপিরিয়র অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে। আত্মিক দৈন্য যতটাই হোকনা কেন, সেটা পাতলা হয়ে যায় অন্যের ভুল ধরার মাধ্যমে। may Allah save us from this ego too....and help us to overcome our mistakes...

(১৪৮)
আমাদের বাবা-মায়েরা প্রত্যাশা করেন আমরা যেন *তাদের মত করে* ভালো থাকি...
কিন্তু, তাদের চাওয়া আর আমাদের চাওয়ার বৈপরীত্য অনেক বেশি।

(১৪৯)
ফেসবুকে ছদ্মনামে প্রোফাইল খোলার মানে কিন্তু এই না যে এই অ্যাকাউন্টের কর্মকান্ড কিরামান-কাতিবিনের হিসেবের খাতার বাইরে চলে যাবে। খেয়াল রাখা উচিত আমাদের...

(১৫০)
নিশ্চিত থাকুন, এই পৃথিবীতে কোনদিন, কোন অবস্থাতেই, আপনি সবকিছু ঠিকঠাক করে পাবেন না। পেরেশানি, অশান্তি, যন্ত্রণা তাড়া করে ফিরবেই। তাই, অন্তরে শান্তি আদায় করে নিতে হবে আল্লাহর প্রতি নির্ভর করে। তবে, এই জীবনের যারা শান্তিতে থাকে, তারাই অনন্তকালেও শান্তি পাবে। এই দুই সময়েই শান্তি পাওয়ার কেন্দ্র একজনই --যার হাতে সব ক্ষমতা। মানুষ তো অকৃতজ্ঞ, অন্যায়কারী; মানুষের কাছে আশা করলে ধাক্কা খেতেই হবে।

(১৫১)
ভালোবাসার মানুষটিকে ভালোবাসার চেয়ে শ্রদ্ধা করতেই আমরা অনেকে বেশি ভালোবাসি। ভালোবাসাটা তখন আরো মজবুত হয়, তার প্রতি শ্রদ্ধামাখা আচরণগুলো হয় বিনীত, নম্র... অনেক বেশি সুন্দর!

(১৫২)
কখনো কখনো মনে হয়, অপেক্ষাই মনে হয় অনেক সুন্দর!

কষ্টে থেকে সুন্দরের অপেক্ষায় থাকলে তখন একটা জ্বালা থাকে চামড়ার ভেতরের প্রান্তে, চামড়ার উপরে প্রান্তেই আবার ঠিক তখনই হিমেল বাতাস বয়, বুকে একটা চাপা কষ্ট থাকে, তাই মুক্ত নিঃশ্বাসটাও কেমন

ভারী হয়ে আসে। প্রাপ্তি? সে তো কেবল আল্লাহর ইচ্ছা। অপেক্ষা? সে তো আমাদের সবর (ধৈর্য), আমাদের ত্যাগ, আমাদের কর্ম যা আশ্বাস দেয় আল্লাহর পুরষ্কারের...

(১৫৩)
আমরা অন্যদের জীবনের গল্প পড়ে ঈর্ষান্বিত হই, মুগ্ধ হই, দুঃখিত হই। কী দরকার? আপনার জীবন তো একদমই আলাদা। নিজের জীবনের গল্প নিজেই লিখুন, সেটা নিশ্চিতভাবেই আনন্দ-বেদনা-সফলতার

গল্পভরা অন্যরকম এক সমৃদ্ধ রচনা...

(১৫৪)
কেবলমাত্র বোকারাই অস্থায়ী পৃথিবীতে স্থায়ী বাড়ি/গাড়ি/সম্পর্ক খুঁজে হয়রান হয়...

(১৫৫)
কেউ আপনাকে বুঝে না বলে দুঃখ হচ্ছে? আচ্ছা ভালো কথা, আপনি নিজেই কি নিজেকে বুঝেন?

(১৫৬)
অনুভূতিদের মেরে ফেলতে চান? স্রেফ ফেলে রাখেন, ওরা আপনাআপনি মরে যাবে...

(১৫৭)
অতৃপ্ততার স্পর্শ যেসব মানুষের হৃদয়, অদ্ভুত সুন্দর মায়ামাখা প্রশান্তির জন্য তাদের দরকার মসজিদে ভোরে ফজরের সলাত শেষ হবার পরে মানুষ যখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলে তখন সেই মূহুর্তগুলোতে অন্যদের

সাথে আলাপ না করে রাস্তায়/বারান্দায়/ছাদে দাঁড়িয়ে নিজেকে নিজের সামনে নিয়ে আসা...

(১৫৮)
এই যে জীবনের এত কষ্ট-ক্লান্তি-চাওয়া-পাওয়া, আনন্দ-হাসি-গান ... কিছুই রবে না বেশিদিন। থাকবেন শুধু আমাদের রব আল্লাহ, যিনি আল হাইয়্যু, আল কাইয়্যুম...

(১৫৯)
উস্তাদ নুমান আলী খান আমার জীবনের মোড় ঘুরানো এক মানুষ। কত কিছু যে শিখেছিলাম তার কাছে!! অনেকদিন কোন ভিডিও লেকচার দেখিনি উনার। আজকে রবার্ট ডাভিলার ভিডিওটার কথাগুলো

জেনে কেঁদেই ফেললাম। 'রবার্ট ডাভিলা' এক অদ্ভুত প্রাণশক্তির নাম, প্রিয় রাব্বুল আলামীনের এক ভালোবাসার নাম। কী সুন্দর এক আলোকপ্রাপ্তির গল্প!

হে আমার রব! আপনার ভালোবাসার চিহ্নগুলো চারপাশে দেখতে পাই মাঝে মাঝেই খুব বেশি স্পষ্ট করে। আপনি এই মানুষগুলোকে উত্তম প্রতিদান দিন, তাদের হিফাজত করুন। আমাদেরকে হিদায়াত দিন,

আমাদের ঈমান বাড়িয়ে দিন।

# ভিডিও: রবার্ট ডাভিলার গল্প : নুমান আলী খান : http://www.youtube.com/watch?v=vthRr3gk4W4