৩০ নভে, ২০১২

আলাপন : ডুবন্ত মানুষগুলোকে টেনে তোলা

 অনেক সময় আমরা যারা জীবনের আলটিমেইট অর্থ ও লক্ষ্য বুঝতে পেরেছি আল্লাহর অশেষ রাহমাতে, তারা অনেক ভুল করে ভোগান্তিতে থাকা মানুষদের দেখে দুঃখ পাই, পাওয়ারই কথা। মানুষ অকারণেই সহজ জীবনকে জটিল করে, ভুল করে -- ভুগতেও থাকে। তাদের সেই আলাপ হয়ত আমরা অন্য কারো সাথে এসে করি, দুঃখ প্রকাশ করি সমবেদনা হিসেবেই।

ভেবে কি দেখি, লাভ কি এতে? আমি যখন ভালো আছি, তখন এই ভালো থাকা আরেক মানুষের উপকারে না আসলে তাতে কোন লাভ নেই, আমার এই ভোগ, এই শান্তির বিছানায় আয়েশের সময় কোনই কাজে আসবে না অনন্তকালের জীবনে। তাই, কাউকে পানিতে ডুবে যেতে দেখলে তাকে টেনে তোলা উচিত দাঁড়িয়ে না থেকে। ভুল করতে থাকা মানুষটাকে তাই অক্লান্ত হয়ে টেনে তুলতে হবে, বুঝাতে হবে। আজই, এক্ষুনি, যেকোন ছোট উপায়ে তা শুরু করা হোক না কেন।

আসলে, আমরা দিক নির্দেশনা পেয়েছি, তাতে আমাদের কোন ক্রেডিট ছিলনা। সবই আল্লাহর অকল্পনীয় দয়ার প্রতিফলন, আর আমাদের ছোট ছোট চেষ্টাতেও হয়ত কারো জীবনে বড় পরিবর্তন এসে পড়তে পারে। ইতিহাসে এমন অজস্র অজস্র উদাহরণ আছে, যখন একজনের দাওয়াতে যিনি বদলে গেলেন, তিনি একটা জাতিগোষ্ঠীর জন্য বিশাল রাহমাতের কারণ হয়ে গেছেন। আল্লাহই সবকিছুর মালিক, তিনিই মহাপরিকল্পনাকারী।

একটা হাদিস পড়তে গিয়ে এই চিন্তাগুলো জেগে উঠলো, আমাদের প্রিয়তম আর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষটির শিখিয়ে যাওয়া কথাগুলো এমন ছিলো --

ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাঁধ ধরে বললেন:

♥ “দুনিয়াতে এভাবে কাটাও যেন তুমি একজন মুসাফির বা পথিক।” ♥ [বুখারী]

ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলতেন,

♥ “তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে সকাল বেলার অপেক্ষা (আশা) করো না এবং সকালে উপনীত হয়ে সন্ধ্যা বেলার অপেক্ষা করো না। সুস্বাস্থ্যের দিনগুলোতে রোগব্যাধির (দিনগুলোর) জন্য প্রস্তুতি নাও এবং জীবদ্দশায় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো।” ♥ [বুখারী]


# রিয়াদুস সলিহীন : ৫৭৫

২৭ নভে, ২০১২

জীবনসঙ্গীর খোঁজে অস্থির আমাদের তারুণ্য

 
কিছুদিন আগে ছেলেবেলার ঘনিষ্টতম বন্ধুর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম তার কর্মস্থলে। তার ভার্সিটি লাইফের রুমমেটও সেখানেই কাজ করে। ধরি তার রুমমেটটির নাম আকাশ। দীর্ঘ কয়েক বছরের পরিচিতির জন্য সেই আকাশও বেশ চেনাজানা হয়ে গেছে। আমার বন্ধুটি মাসখানেক আগে বিয়ে করেছে, আকাশও অনেক বছর যাবত প্রেম করছে ক্লাসমেটের সাথে। বিভিন্ন রকম আলাপ আলোচনাতে এটা-ওটা বলতে বলতে হঠাৎ সেদিন ওরা দুই বন্ধু সাংসারিক টাইপ ব্যক্তিগত কিছু আলাপ করছিল আমার সামনে।

বেশ কিছুক্ষণ পরে আমাকে একা থাকতে দেখে আমার দিকে তাকিয়ে নিরবতা ভঙ্গ করতেই হয়ত, আকাশ বললো,
-- তুমি বিয়ে করবা না? প্রেম তো কর না তাইনা?
আমি পরিশ্রমলব্ধ মুচকি হাসিখানি দিলাম।

দরকারি আর অদরকারি জ্ঞান

ক'দিন ধরে মাথায় কতক চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। এই যেমন আমার কিছু বন্ধু আছে আমার যারা দেশে খুব দারুণ ক্যারিয়ার করে ফেলা বা বিদেশে মাস্টার্স-পিএইচডি করতে যাওয়া -- তাদের সাথে একবেলা বসলেই নিজের অর্জন নিয়ে চিন্তায় পড়ে যেতে হয়। কয়েকদিন আগে এমনটাই হয়েছিল। মনে হচ্ছিল, হয়ত আমি পিছিয়ে, কয়েকবছর টানা লেগে থাকলে আমিও ঐরকম অর্জন করতে পারব। টাকা হবেই ইনশাআল্লাহ। কিন্তু...

১৯ নভে, ২০১২

ডায়েরির পাতা : ফিলিস্তিন ১

গত দু'দিন ধরে মাঝ রাতেই ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছে। প্রচন্ড কষ্ট বুকে নিয়ে ঘুমালে এমনই হয়। এত তীব্র কষ্ট জীবনে আর একবার লেগেছিল। টুইটারে ফিলিস্তিনের অনেকজনের কাছ থেকে জানতে পারছিলাম ক্রমাগত আপডেট। ঘন্টাখানেক আগে গাজায় ইসরাইলি বিমান ঝাঁকে ঝাঁকে আক্রমণ করেছে। আমার চোখের সামনে এক ফিলিস্তিনি বোন বললো, অমুক বাসায় ছোট্ট বাচ্চাটা মারা গেছে (সম্ভত আসলান -২ বছর) আর ওর বোনটা হাসপাতালে গেল, সম্ভবত পা হারিয়েছে। সহ্য করতে পারিনা আমি। অশ্রু আমার দু'দিন ধরে ঝরঝরিয়ে ঝরে যাচ্ছে। এমন করে কখনো দেখিনি আগে, বুঝিনি আগে।

ব্যাপারটা এমন না যে গাজা উপত্যকা অনেক বড়। প্রস্থে কয়েক কিলো আর দৈর্ঘ্যে এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে যেতে এক ঘন্টাও লাগে না। ইসরাইলি নেভি ঘিরে আছে গাজা, পৃথিবীর ৪র্থ শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী (নেটে পড়লাম) কেন তাদেরকে এভাবে আটকে মেরে ফেলছে? ইসরাইল কোন রাস্ট্র ছিলনা। ফিলিস্তিন বিশাল দেশ ছিল। বৃটিশ সরকার হাজার হাজার ইহুদিদের এখানে বসতি দিয়েছিলো গত শতকের প্রথমে, ফিলিস্তিনিদের সাথে থাকতে। ওরা সবখান থেকে অর্থ নিয়ে ক্রমেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক চালে ফিলিস্তিনিদেরকে কোণঠাসা করে গাজা আর পশ্চিম তীরের শহর রামাল্লাতে জায়গা নিতে বাধ্য করেছে। যখন ইচ্ছা হয় বিমান হামলা করে শহীদ করে দেয় আমাদের ভাইদের বোনদের। এমন কোন পরিবার নেই ফিলিস্তিনে, যাদের কেউ ওদের হামলায় শহীদ হয়নি। অতটুকু শহরে গিজিগিজি করে ক'জন মানুষ থাকে? মৃত্যু তাদের কাছে এতই সাধারণ ব্যাপার যে বাংলাদেশে আরাম করে ঘুমাতে যাওয়া আমরা কল্পনাই করতে পারব না। কেন ওদের এভাবে মারছে? এখানেই রহস্য। একটা জাতি তোমাকে থাকার জায়গা দিল, যখন হলোকাস্টে তোমাদের পুড়িয়ে মেরে দিলো নাৎসি বাহিনী -- তোমরা কৃতজ্ঞ না হয়ে একের পর এক জায়গা নিয়ে তাদেরকেই কেন হত্যা করছ? এখানেই ইহুদিবাদের স্বরূপ। আত্মরক্ষার্থে একটা মর্টার গেলেও নাকি নেতানিয়াহু সেনাবাহিনী চালনা করবে। এই ইসরাইলকে বার্ষিক বিলিয়ন ডলার দেয় আমেরিকা। সমস্ত আন্তর্জাতিক মিডিয়া প্রচার করেছে -- "ইসরাইল হামাস সহিংসতা" অথচ গত দু'দিনে কমপক্ষে ২৫ জন মারা গেছে ইসরাইলের বিমান আক্রমণে, চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে মেরে ফেলছে মানুষগুলোকে। তাদের ধ্বজাধারী মিডিয়া গণহত্যাকে বলছে "সংঘর্ষ। সে নাহয় দূরের কথা।

দেশে বসে আমি কি করতে পারি? ... জানিনা আসলে। আমি জেনেছি, নবী করীম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুসলিম একে অপরের ভাই। এই উম্মাহ দেহের মতন। আমি এতটুকু জানি, আমার ভাইয়া যদি আজ আহত হয়ে হাসপাতালে যেতেন, নিহত হয়ে যেতেন -- আমি গান শুনতে মত্ত থাকতাম না, ব্যাট-বল পিটিয়ে ভ্রমের মধ্যে ডুবে থাকতাম না। কায়মনোবাক্যে দু'আ করতাম। চোখের পানিরা ঝরে যেত। একদিন আমাকেও অমন অবস্থায় পড়তে হতে পারে -- তখন আমার পাশে কেউ না দাঁড়ালেও যদি দূরে থেকে কেউ দু'আও করে, আমি হয়ত তাতেই সাহায্য পাব।

এত দূরের ওরা কেমন করে আমার ভাইবোন? ...আখিরাতে আপন রক্তের ভাই যদি জাহান্নামী হয়, তবে কেউ তাকে ভাই বলে ডেকে লাভ পাবনা। তাদের সাথেই থাকব, যারা একসাথে থাকবেন, তারা সবাই আল্লাহর বান্দা হিসেবে দুনিয়ায় ছিলেন, তাদের ভালোবাসা আল্লাহর ভালোবাসায় সিক্ত, তাদের চাওয়া, চিন্তা, কথা আর কাজের ছাঁচ একই -- ঠিক যেন একই পরিবারের মতন। আমি আমার সমগ্র পৃথিবীর মুসলিম উম্মাহকে আপন ভাইবোন বলেই মনে করি, অনুভব করি। মুসলিম হিসেবে এ আমার দায়িত্ব। আর এই অনুভূতি স্বতস্ফূর্ত। এতগুলো কথা লিখলাম কেবল একটা উপলব্ধিকে ছড়িয়ে দিতে -- যদি আখিরাতে আসলেই আল্লাহর সান্নিধ্য চাই, তাহলে আমরা যেন অনেক দোয়া করি আমাদের ভাইদের জন্য। কাজ করি মানুষের জন্য, মানুষের শান্তির জন্য... নিশ্চয়ই রবের পাকড়াও বড়ই কঠিন। নিশ্চয়ই সত্যপথের মানুষ আর মিথ্যার দাসত্বকারীরা এক না।

১৮ নভেম্বর ২০১২
সকাল ৮ টা ৪৫ মি

ডায়েরির পাতা : ফিলিস্তিন ২

 আমার গলা বন্ধ হয়ে আসছে কান্নার গমকে... অনবরত অশ্রু ঝরে মাথা ঝিম-ঝিম করছে। এখনি জানলাম কিছুক্ষণ আগে গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় একই পরিবারের ১০ জন শহীদ হয়ে গেছে। ৩জন শিশু, ৪জন নারী। ইহুদিবাদ প্রতিষ্ঠায় অন্ধ অভিশপ্ত বনী ইসরাইলের বংশধররা স্বভাবসুলভ উন্মাদ হয়ে গেছে। গত দু'দিনে গাজায় শহীদ হয়েছে ৬০ জনের বেশি। আল্লাহ তাদের মৃত্যুকে কবুল করে নিন। এই বোনেরা তাদের সন্তানদের নিয়ে জান্নাতুল ফিরদাউসের ঝর্ণার ধারে যেন চিরকাল ধরে আনন্দ করতে পারেন -- আল্লাহ আমার মতন অসহায় বান্দাদের দোয়াগুলো কবুল করুন!!

আজ সারাদিন কাজের ফাঁকে ফাঁকে যতবার অনলাইনে এসেছি, কান্না থামাতে পারিনি, শুধু মনে হচ্ছিলো মৃত্যুর আগে তারা কতই না অসহায় অনুভব করছিল। অল্প কিছু মানুষের জন্য প্রায় ৭০০+ বার বিমান ছুটে গেছে গাজা উপত্যকার উপর দিয়ে বোমা ফেলতে ফেলতে। এই সেই বনী ইসরাইলের পথভ্রষ্ট বংশধরেরা, মুসা আলাহিস সালাম এর মতন অজস্র নবী রাসূলকে তারা বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছিল, তাদের অন্ধ অহংকার আর কপট ঔদ্ধত্য তাদের আল্লাহ রব্বুল আলামীনের কাছ থেকেই অভিশপ্ত করেছে। আমাদেরকে আল্লাহ করেছেন সম্মানিত, তাঁর দ্বীনের দায়িত্ব দিয়ে। একদিন ওদের বইয়ে ওদের পরাভূত করা হবেই ইনশাআল্লাহ, হয়ত সেদিন তেল আবিবের রাস্তাতে ওদের অপবিত্র রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। আমাদের প্রথম কিবলা মাসজিদুল আকসা একদিন ওদের করায়ত্ব থেকে মুক্ত হবেই, ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের এই রক্ত আমাদেরকে সেই সুন্দর সময়ের দিকেই নিয়ে যাচ্ছে।

ইহুদিরা এমনই। শত বছরের বেশি ওদের নীল নকশা। ওরা জ্ঞান বিজ্ঞানে সবসময়েই এগিয়ে থেকেছে, আল্লাহ তাদের অনেক রহম করেছিলেন সবসময়েই। সেটা ব্যবহার করে ওরা যেখানেই সুযোগ পায়, প্রতিষ্ঠান খুলে বসে। তাই বিবিসি, সিএনএন হোক, স্টারবাকস, ম্যাকডোনাল্ডস হোক, ফানটা, স্প্রাইট হোক, যা ছাড়া এই সময়ের মানুষ প্রায় অচল বলে মনে করে -- তাই ওদের করায়ত্ব প্রতিষ্ঠান। অজস্র প্রতিষ্ঠান থেকে উঠে আসে টাকা - তা দিয়ে কেনা বোমায় শহীদ হয় ফিলিস্তিনিরা। ওরা খবরকে ঘুরিয়ে দেয়, পৃথিবীর ইকোনমি কব্জা করে কেবল থাকার জায়গা পেতে, উড়ে এসে জুড়ে বসে। কোনদিন এই প্রচেষ্টা সফল হবেনা ইনশাআল্লাহ।

আজকে নিজের সাথে প্রতিজ্ঞা করছিলাম, যতটা সম্ভব সময়ের সদ্ব্যবহার করবো জীবনে। মানুষের উপকারে আসে -- এমন প্রতিষ্ঠান আমরা কেন তৈরি করতে পারব না? সেই প্রতিষ্ঠানের লাভের টাকায় হবে অন্য আরো দশটা মুসলিম-অমুসলিম মানুষের সাহায্য, দূর করা হবে তাদের কষ্ট। আমাদের একটা প্রজন্মই সব ঘুরিয়ে দিতে পারি। ইহুদিদের মতন শিকড় কাটা পশুগুলো যদি মাত্র একশ বছরে পৃথিবীকে ভ্রান্তির মাঝে ফেলে চুবিয়ে দিতে পারে -- আমরা সেই নোংরা শক্তির বিপরীতের আরো শতগুণ বেশি শক্তিশালী ও উপকারী হতে পারব।

আমাদের জীবনের গন্তব্য তো পরিষ্কার। আমাদের জীবনের প্রতিটি মূহুর্তই কল্যাণময়। কষ্টে থাকলেও তা আমাদের জান্নাতের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়, যখন সুখে থাকি, তখন প্রতিটি কৃতজ্ঞতার নিঃশ্বাস আমাদেরকে আমাদের চিরজীবনের সফলতার দিকেই নিয়ে যায়। সেই দিন তো তেমনও দূরে নয়, যেদিন আমরা বিশ্বাসীরা সবাই আল্লাহর সান্নিধ্যে থাকব, আমাদের কাছে দুনিয়াটা মনে হবে হয়ত দিনের একটা বেলা ছিলাম। আমাদের হারানোর কিছু নেই। সব প্রাপ্তির এই জীবনটা কেবলই অন্যের জন্য বিলিয়ে দেয়া, শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় -- মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের স্বপ্নে... আল্লাহ আমাদেরকে কবুল করুন।

১৮ নভেম্বর ২০১২
রাত ১০-৫৮ মি

১৫ নভে, ২০১২

আলাপন : ভাইয়ের জন্য প্রার্থনার বেলা

♥ একটা অপার আত্মিক ও মানসিক সৌন্দর্যের আর সৌহার্দ্যের দ্বীন আমাদের ইসলাম। প্রাত্যহিক জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা মাঝে মাঝেই আবেগাপ্লুত করে চোখ ভিজিয়ে দেয়। এর একটা হলো, মানুষের জন্য দু'আ করা। ♥

আমি জীবনে অসাধারণ ক'জন মানুষকে দেখেছি, যারা যখন কোন ইতিহাস শুনেন, সেখানে ত্যাগী মানুষদের গল্প শোনেন যারা আল্লাহকে ভালোবেসে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তখনই দু'আ করেন -- "তাদেরকে যেন আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন"। শুধু তা-ই না, অজস্র মুসলিম ভাইদেরকে দেখেছি, যারা হয়ত আমার মুখে একজন ভালো মানুষের কথা শুনলেন যিনি আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন -- এমন কথা শুনেই উনারা আন্তরিকভাবে একটা দু'আ করে ফেলেন "আল্লাহ তার ইবাদাহ আর প্রচেষ্টা কবুল করুন ও তাকে রহম করুন।" 

যখন এমন হয় যে, কারো আলাপ এলো, যিনি এখন বেশ কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন -- তার কথা শোনামাত্রই এই মুসলিম ভাইরা দু'আ করে ফেলেন যেন আল্লাহ তার পরীক্ষাকে সহজ করে দেন। এই দু'আ মুখের কিছু শব্দ শুধু? শাইখ আব্দুল নাসির আলোচনায় বলছিলেন, দু'আ নিজেই হলো একটা ইবাদাত। এর মাধ্যমে মহান আল্লাহর বিশালত্ব, তার মহান শক্তির কাছে সাহায্য চেয়ে আমরা তাকে রব হিসেবে, আমাদের মালিক হিসেবে মেনে নিই। আল্লাহ আমাদের দু'আ করাকে খুব পছন্দ করেন।

১৩ নভে, ২০১২

ইমাম গাজ্জালীর বই বিদায়াতুল হিদায়াহ-এর উপরে অডিও লেকচার

'হুজ্জাতুল ইসলাম' নামে পরিচিত ইমাম গাজ্জালী (রহিমাহুল্লাহ) আমার কাছে খুব আকর্ষণীয় মানুষ ছিলেন স্কুল জীবন থেকে যখন স্কুলের ইসলাম শিক্ষা স্যার বিভিন্ন আলোচনায় মুগ্ধ হয়ে উনার ব্যাপারে বলেছিলেন। এই আগ্রহটা চাপা পড়ে গিয়েছিল 'কিমিয়ায়ে সা'আদাত' বইটা পড়তে গিয়ে। একদিন বইটা থেকে খাওয়ার আদব অনুচ্ছেদটা পড়ার পর ওই সময়েই খুব চিন্তিত হয়ে গিয়েছিলাম নিজেকে নিয়ে। খাওয়ার মতন একটা কাজে কত যে সূক্ষ্ম বিষয় মিশে আছে তা বুঝে এবং নিজের সীমাবদ্ধতা বুঝে দমে গিয়েছিলাম!

এরপর আধযুগের বেশি সময় পেরিয়ে যাবার পর ক'দিন আগে আবার ইমাম গাজ্জালীকে পড়তে চেয়েছি একটা বিশেষ বিষয়ে জানতে গিয়ে। আমি ইসলামের অপ্রাতিষ্ঠানিক ছাত্র হিসেবে সম্ভাব্য অনেক জায়গাতে একটা বিষয় নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেও সন্তুষ্ট হতে না পেরে শেষ জায়গা হিসেবে ইমাম গাজ্জালির বই খুঁজলাম। আলহামদুলিল্লাহ এইবার কিমিয়ায়ে সা'আদাত বইটার একটা নির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ আবারো অনেক কিছু শেখালো। অনেক গভীর আর আমার প্রশ্নের উত্তর পেলাম।

অনেক উৎসাহী হয়ে ইমাম গাজ্জালির বই কিনতে গেলাম কাঁটাবনে। কিন্তু এহইয়াউ উলুম আদ-দ্বীন বইটা হাতে নিয়ে দেখলাম অনেক বিশাল ভলিউম, আর তার অনুবাদ পড়ে আগ্রহ হারিয়েই গেলো। যদিও পাঠকদের অনেকের কাছে অনুবাদটা মাওলানা মুহিউদ্দিন খানের অনুবাদটি পছন্দের যা ৫টি খন্ডে সমাপ্ত হয়েছে। সেই বই পড়ার সময়, সাহস আর আগ্রহ কোনটাই আর না থাকায় বিরসমুখে বাসায় ফিরলাম খালিহাতে। লম্বা পথের যাওয়া আর আসার একই রকম হলে মনটা বদলে গেলো... কিছু পজিটিভ, কিছু নেগেটিভ।

৮ নভে, ২০১২

রাসূলের (সা) সীরাত জানতে গিয়ে মুগ্ধতার স্পর্শ

মন কাঁদে রে ভাই, মন কাঁদে...আজকে সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে ফ্রি হবার পর মোবাইলে খুঁজে পেতে দেখলাম সব অডিও কয়েকবার করে শোনা হয়ে গেছে। বাকি ছিলো একটা অডিও, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাতের উপরে আলোচনা, আগে একবার শুনতে শুরু করে আর আগানো হয়নি। ইমাম আনওয়ার আল আওলাকী (রাহিমাহুল্লাহ) -এর আলোচনা। তন্ময় হয়ে শুনলাম আজ -- এত সুন্দর, পরিষ্কার, অকপট, সাবলীল আলোচনা, এত গভীর আলোচনা আমি কখনো শুনেছি কিনা মনে করতে পারলাম না। হয়ত আমার কল্পনাতেও ছিলনা। 

৬ নভে, ২০১২

আলাপন : এই পৃথিবীর সবকিছুর শেষ আছে

 এই পৃথিবীর সবকিছুর শেষ আছে।

আমাদের এই জীবনের শেষ আছে, দুঃখের দিনগুলোরও শেষ আছে। সুখের দিনগুলোও একটানা থাকেনা, তারও শেষ থাকে। এই পৃথিবীটার সবকিছুই এমন। অত্যাচারেরও শেষ আছে, শেষ আছে দাম্ভিকের দম্ভের, মিথ্যাবাদীর মিথ্যার। একদিন শক্তিশালীও হবে দুর্বল। রাস্তার মোড়ের জওয়ান রগচটা ছেলেটাও বৃদ্ধ বয়েসে লাঠি নিয়ে হাঁটবে। তাই যেকোন ক্ষমতার, শক্তির এই ভুলে ডুবে থাকার অর্থ নেই কোন, এ এক পরিপূর্ণ বিভ্রমমাত্র...

কেবল আল্লাহর বান্দা যারা, তারা জানে, এই জীবন ক্ষণিকের জন্য, সবই খেলনামাত্র। আখিরাতের জীবন উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী। তাই তারা বিপদে সবর করে, আনন্দেও মাত্রাছাড়া হয়না, বরং আরো কৃতজ্ঞ হয় আর বুঝে তার এই ভালো সময় অনেক দায়িত্ব নিয়ে হাজির হয়েছে তার জন্য।

আল্লাহ বলেছেন ধৈর্য্য আর সালাতের সাহায্যে সাহায্য প্রার্থনা করতে। আল্লাহ বলেছেন ধৈর্যধারণকারীদের জন্য সুসংবাদ। নিশ্চয়ই সত্য আর মিথ্যা এক নয়। নিশ্চয়ই জাহান্নামের নিকৃষ্ট বাসিন্দা আর জান্নাতের সম্মানিত অতিথিগণ এক নয়।

নিশ্চয়ই এই পৃথিবীর সবকিছুই নশ্বর, আখিরাতের জীবন অনন্তকালের।

*********
০৬ নভেম্বর, ২০১২ ঈসায়ী

চোখের সামনে অজস্র অন্যায়, বল কী উপায়?


চোখের সামনে ক্রমাগত অজস্র অন্যায়, মিথ্যা, কাম, ক্রোধ আর হিংসার জয় ও সদম্ভ আধিপত্য দেখে মন খারাপ হয়ে যায় প্রতিদিন। ভাবছিলাম, আমি জানি, এই কোটি কোটি মানুষের মাঝে আমি খুব ক্ষুদ্র একটা স্বত্ত্বা। আমি কি পারব এই দুনিয়ায় সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে? আমি কি পারব এই অন্ধকারের মাঝে আলোকে স্থাপিত করতে? হয়ত আমি জ্বলে ওঠার আগেই নিঃশেষ হয়ে যাব, পারব কি সত্যিই কিছু করতে? পরক্ষণেই প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা মনে হলো। তার মন-প্রাণ কতই না সুন্দর ছিল, তিনি ছিলেন এই সৃষ্টিজগতের রাহমাতস্বরূপ, যিনি আরবের মানুষদের কাছে আল-আমিন হিসেবে পরিচিত ছিলেন নবুওয়াতের পূর্ব পর্যন্ত; অথচ শুধুমাত্র আল্লাহর দ্বীনের কথা বলার কারণেই তাকে কতরকম অপবাদ দেয়া হয়েছিল, শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা তাকে সইতে হয়েছিল অবিরত, একদম নিকটাত্মীয়দের কাছ থেকেও। তবু তিনি নিঃশঙ্কোচে, নির্দ্বিধায় মানুষের উপকার করতেন, ভালোবাসতেন তাদের অন্তরের পরিবর্তনের আশা করে। কিয়ামাত পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বজাহানের মানুষের মুক্তির পথের দিশার জন্য তিনি চিন্তা করতেন, সে সুবিশাল দায়িত্বও তার কাঁধেই ছিল। তিনি সেই চাপে পিষ্ট হয়ে হারিয়ে যাননি, আমাদের মতই মানবজীবন ধারণ করেছেন -- শুধু কাজগুলো করেছিলেন সুনিপুণ করে। আমরা তো সেই মহান মানুষটারই অনুসারী, তাঁর আদর্শ, চরিত্র আর কর্মের অনুসারী।
...........................
এটুকু লিখতেই এইমাত্র আমার একজন কলিগের স্ট্রোকের খবর পেলাম। বয়স তার পঁয়ত্রিশের মতন হবে। কর্মচঞ্চল, হাসিখুশি লোকটা গতকাল রাত থেকে সিসিইউতে ভর্তি। সবাই খবরটাতে খুব অবাক হচ্ছে। আমার মনে হলো, আমাদের জীবনটা আসলে খুবই ছোট, আর আমাদের জীবনের শেষটাও অবধারিত, যার সময়টা কেবল আমাদের জীবনের মালিক, আল্লাহ জানেন। তাই, কোন বিশাল কিছু করে ফেলাতেই না, বরং আমাদের কাজটুকু মূলত নিজ নিজ সামর্থ্যের সম্পূর্ণটা উজাড় করে দেয়া। মনের মধ্যে যেন অজুহাত নিয়ে ঘুরে না বেড়াই, সন্দেহ আর নোংরামি না থাকে, ক্রোধ আর হিংসা, মিথ্যার প্রতি ভালোবাসা, খারাপ লোকের প্রতি শ্রদ্ধা বা ভালোবাসা না থাকে। সৎ ও সুন্দরকে যেন সবসময় সমর্থন করি, ছড়িয়ে দিই, আর অন্যায়কে যেন সবসময় প্রতিহত করি সর্বোত্তম সম্ভাব্য উপায়ে।

আর এই প্রসঙ্গে হাদিসটি মনে পড়ে যায়--

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ♥♥ “আল্লাহ তাআলা তোমাদের চেহারা ও দেহের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না; বরং তোমাদের অন্তর ও কর্মের প্রতি লক্ষ্য আরোপ করেন।” ♥♥ [মুসলিম]

# রেফারেন্স: রিয়াদুস সলিহীন -৭

৫ নভে, ২০১২

অনন্যার অরণ্যপ্রেম [ভালোবাসার অণুগল্প]


অনন্যা হঠাৎ এতটা বদলে যাবে আশা করিনি। ও সবসময়েই আমাকে পছন্দ করত, আর সেইটা বাড়াবাড়ি টাইপের পছন্দ ছিল। সেই পছন্দের সাথে মুগ্ধতা ছিল বলে মনে হত আমার। অনন্যাকে নিয়ে আমার অধিকার অনুভব করার ব্যাপার ছিল সেই স্কুলে পড়ার সময় থেকেই। আমার স্কুল ছুটি হত আগে, সে বাসায় ফেরার সময় আমি মাঝে মাঝে দরজা খুলে দাঁড়িয়ে যেতাম। সিঁড়িতে দিয়ে উঠার সময় আমার দিকে হাসি দিতো অনন্যা। ও হাসলে গালে টোল পড়ত, আমার সেইটা খুব পছন্দের ছিল।

ক্লাস ফোরে উঠতেই আমাদের বাসা বদলে গেল। ওরা তখনো আগের বাসায় থাকে। অনেকদূর হেঁটে ওদের বাসায় যেতে হত। আমি যেতাম মাঝে মাঝেই। খালাম্মা আগের মতন আদর করত না টের পেতাম। আগে বাসায় গেলেই খুব আগ্রহ নিয়ে আমাকে স্কুলের প্রশ্ন করতেন, আম্মা আর ভাইয়া আপুদের কথা জিজ্ঞেস করতেন, পরে কেমন না দেখার ভান করতেন যেন। বুঝতে পারতাম তাল কেটে গেছে।

৩ নভে, ২০১২

অন্যের ভালো দেখে বুকে জ্বলন লাগে যখন



বলতে দ্বিধা নেই, গতকাল থেকে যে একটা পরশ্রীকাতরতার সাথে যুদ্ধ করছিলাম, তা আমি পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারিনি। হিংসা নিয়ে ছোটবেলা থেকেই নিজের উপরে আমার অনেক হোমওয়ার্ক করা ছিল, মোটামুটি জেগে ওঠামাত্র ধরতে পারতাম, কিন্তু এই পরশ্রীকাতরতা ব্যাপারটা তেমন একটা টের পাইনি কখনো। ক'দিন আগে একজনের জীবনের সুন্দর অর্জন জানার পর থেকে তার জীবনের প্রাপ্তির সাথে নিজের প্রাপ্তিকে তুলনা করতে বসে গিয়েছিলাম অযথাই -- ফলস্বরুপ অশান্তি আর অস্থিরতায় ছিলাম সূক্ষ্মরকম।

এই হিংসা ও পরশ্রীকাতরতার ব্যাপারে মনে হয় মানুষের নফস স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কাজ করে। তাদেরকে চিনে-বুঝে তবেই শুধরে নিতে হয় নিজেকে। নইলে তা খুবই মারাত্মক ঈমান ধ্বংসকারী অস্ত্র। হিংসা ও পরশ্রীকাতরতা নিয়ে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের আলোকে ইমাম সুহাইবের আলোচনাতে সেদিন কিছু কথা শুনছিলাম। তা থেকে কিছু চিন্তা শিখেছিলাম --

আলাপন : অজ্ঞতা নিয়ে অজ্ঞতা

আজকে সপ্তাহের বরকতময় দিনটি -- জুমুয়া'র দিন। নামাযের পর ইমাম সাহেবের আবেগঘন মুনাজাতের পর থম মেরে কিছুক্ষণ বসে ছিলাম। আমার কাছে বারবার মনে হচ্ছিলো, আমরা যারা নামকাওয়াস্তে মুসলিম, আমরা আসলে জানিই না আমাদের রব যিনি, তার পরিচয়টা কেমন। আমি অফিসের অচেনা বসের কাছে যাবার আগে অন্যদের প্রশ্ন করে জেনে নিই -- উনি কেমন মানুষ, রাগ করেন কিনা, কতটা অপরাধ হলে মাফ করে দেন, কী করলে খবর করে দেন... ফলে তার পছন্দ অনুযায়ী চলতে সুবিধা হয়।

আমার পড়াশোনা আজীবন নন-ইসলামিক, বিজ্ঞান, অতঃপর প্রকৌশল বিষয়ক ছিলো। জীবনে ইলেকট্রনকে ক্যাথোড থেকে অ্যানোডে পাঠাতে, আর তাতে কতখানি বিদ্যুত উৎপাদন হবে, তা জানতে যতটা সময় দিয়েছিলাম -- আমার আল্লাহকে জানতে তার তিল পরিমাণ সময়ও দিইনি। একদিন খোঁজ পেয়ে রেজি করে অনলাইন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি (IOU) তে ফাউন্ডেশন অফ ইসলামিক স্টাডিজ (ফ্রি) কোর্সটা আমি করেছিলাম প্রায় একবছর ধরে। অল্প কয়টা অডিও আমি মাসের পর মাস শুনতাম বাসে বসে থেকে অফিসে যাবার পথে ও ফিরার পথে।

আলাপন : কিছু দুঃসহ অভিজ্ঞতা

আলহামদুলিল্লাহ! আজকে একটা অন্যরকম জিনিস খুঁজে পেলাম। জীবনের অনেক তিক্ত, দুর্বিসহ, অনাকাকঙ্খিত ও যন্ত্রণাদায়ক মূহুর্ত ছিলো, যেগুলো নিয়ে অনেক বিব্রত ছিলাম অনেক অনেক বছর।

আজ কিছু পড়াশোনা করতে গিয়ে উপলব্ধির ক্ষেত্রে সরাসরি উদাহরণ হিসেবে কাজ করেছে সেই অভিজ্ঞতাগুলো। অনেকগুলো বিন্দু মিলিয়ে একটা রেখা টেনে ফেলার মতন... সহজেই বুঝে ফেলে অনেক ধাপ পেরিয়ে গেছি চিন্তায় আর উপলব্ধিতে। সুবহানাল্লাহ ... অন্যরকম ভালো লাগলো।

আজকে সন্ধ্যার পর কয়েকবার মহিমান্বিত কুরআনের একটা আয়াত মনে হচ্ছিল। একটা ঘটনা ঘটে যাওয়ার সময় না চাইতেও হয়ত কিছু সময়ের মুখোমুখি হলাম, আল্লাহ আসলে হয়ত আমাদের সেই সময়গুলোকে ট্রেনিং পিরিয়ড হিসেবে দান করলেন, যা আসলে কল্যাণকর।

মনে পড়ে সেই আয়াতখানি...

♥ "... আর আল্লাহ্ পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে সর্বোত্তম। ♥

[সূরা আল-ইমরান : ৫৪]

এত কষ্ট, এত অভিযোগ, ধৈর্যধারণ করবো কীভাবে?



কিছুদিন আগে জুমুআর দিন মসজিদে ইমাম আলোচনাতে সবরুন জামিল এর উদাহরণ হিসেবে হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম এর কথা বলছিলেন। যখন তার ছেলেরা ইউসুফ আলাইহিস সালামকে বিক্রি করে এসে উনাকে মিথ্যা মৃত্যুর সংবাদ দিয়েছিল, তখন তিনি সাথে সাথেই বলেছিলেন, "ফা সবরুন জামিল, ওয়াল্লাহু মুস্তা'আন..."

ইমাম সাহেব বলছিলেন, উত্তম সবর সেটাই, যখন যেকোন কষ্টের জন্য আল্লাহর কাছে কোন অভিযোগ ছাড়াই অনতিবিলম্বে নিজেকে সোপর্দ করে ধৈর্যধারণ করা হয়। আর এমন ধৈর্যশীলদের সাথেই আল্লাহ আছেন। ধৈর্যধারণকারীদের জন্য সুসংবাদ।