গত দু'দিন ধরে মাঝ রাতেই ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছে। প্রচন্ড কষ্ট বুকে নিয়ে ঘুমালে এমনই হয়। এত তীব্র কষ্ট জীবনে আর একবার লেগেছিল। টুইটারে ফিলিস্তিনের অনেকজনের কাছ থেকে জানতে পারছিলাম ক্রমাগত আপডেট। ঘন্টাখানেক আগে গাজায় ইসরাইলি বিমান ঝাঁকে ঝাঁকে আক্রমণ করেছে। আমার চোখের সামনে এক ফিলিস্তিনি বোন বললো, অমুক বাসায় ছোট্ট বাচ্চাটা মারা গেছে (সম্ভত আসলান -২ বছর) আর ওর বোনটা হাসপাতালে গেল, সম্ভবত পা হারিয়েছে। সহ্য করতে পারিনা আমি। অশ্রু আমার দু'দিন ধরে ঝরঝরিয়ে ঝরে যাচ্ছে। এমন করে কখনো দেখিনি আগে, বুঝিনি আগে।
ব্যাপারটা এমন না যে গাজা উপত্যকা অনেক বড়। প্রস্থে কয়েক কিলো আর দৈর্ঘ্যে এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে যেতে এক ঘন্টাও লাগে না। ইসরাইলি নেভি ঘিরে আছে গাজা, পৃথিবীর ৪র্থ শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী (নেটে পড়লাম) কেন তাদেরকে এভাবে আটকে মেরে ফেলছে? ইসরাইল কোন রাস্ট্র ছিলনা। ফিলিস্তিন বিশাল দেশ ছিল। বৃটিশ সরকার হাজার হাজার ইহুদিদের এখানে বসতি দিয়েছিলো গত শতকের প্রথমে, ফিলিস্তিনিদের সাথে থাকতে। ওরা সবখান থেকে অর্থ নিয়ে ক্রমেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক চালে ফিলিস্তিনিদেরকে কোণঠাসা করে গাজা আর পশ্চিম তীরের শহর রামাল্লাতে জায়গা নিতে বাধ্য করেছে। যখন ইচ্ছা হয় বিমান হামলা করে শহীদ করে দেয় আমাদের ভাইদের বোনদের। এমন কোন পরিবার নেই ফিলিস্তিনে, যাদের কেউ ওদের হামলায় শহীদ হয়নি। অতটুকু শহরে গিজিগিজি করে ক'জন মানুষ থাকে? মৃত্যু তাদের কাছে এতই সাধারণ ব্যাপার যে বাংলাদেশে আরাম করে ঘুমাতে যাওয়া আমরা কল্পনাই করতে পারব না। কেন ওদের এভাবে মারছে? এখানেই রহস্য। একটা জাতি তোমাকে থাকার জায়গা দিল, যখন হলোকাস্টে তোমাদের পুড়িয়ে মেরে দিলো নাৎসি বাহিনী -- তোমরা কৃতজ্ঞ না হয়ে একের পর এক জায়গা নিয়ে তাদেরকেই কেন হত্যা করছ? এখানেই ইহুদিবাদের স্বরূপ। আত্মরক্ষার্থে একটা মর্টার গেলেও নাকি নেতানিয়াহু সেনাবাহিনী চালনা করবে। এই ইসরাইলকে বার্ষিক বিলিয়ন ডলার দেয় আমেরিকা। সমস্ত আন্তর্জাতিক মিডিয়া প্রচার করেছে -- "ইসরাইল হামাস সহিংসতা" অথচ গত দু'দিনে কমপক্ষে ২৫ জন মারা গেছে ইসরাইলের বিমান আক্রমণে, চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে মেরে ফেলছে মানুষগুলোকে। তাদের ধ্বজাধারী মিডিয়া গণহত্যাকে বলছে "সংঘর্ষ। সে নাহয় দূরের কথা।
দেশে বসে আমি কি করতে পারি? ... জানিনা আসলে। আমি জেনেছি, নবী করীম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুসলিম একে অপরের ভাই। এই উম্মাহ দেহের মতন। আমি এতটুকু জানি, আমার ভাইয়া যদি আজ আহত হয়ে হাসপাতালে যেতেন, নিহত হয়ে যেতেন -- আমি গান শুনতে মত্ত থাকতাম না, ব্যাট-বল পিটিয়ে ভ্রমের মধ্যে ডুবে থাকতাম না। কায়মনোবাক্যে দু'আ করতাম। চোখের পানিরা ঝরে যেত। একদিন আমাকেও অমন অবস্থায় পড়তে হতে পারে -- তখন আমার পাশে কেউ না দাঁড়ালেও যদি দূরে থেকে কেউ দু'আও করে, আমি হয়ত তাতেই সাহায্য পাব।
এত দূরের ওরা কেমন করে আমার ভাইবোন? ...আখিরাতে আপন রক্তের ভাই যদি জাহান্নামী হয়, তবে কেউ তাকে ভাই বলে ডেকে লাভ পাবনা। তাদের সাথেই থাকব, যারা একসাথে থাকবেন, তারা সবাই আল্লাহর বান্দা হিসেবে দুনিয়ায় ছিলেন, তাদের ভালোবাসা আল্লাহর ভালোবাসায় সিক্ত, তাদের চাওয়া, চিন্তা, কথা আর কাজের ছাঁচ একই -- ঠিক যেন একই পরিবারের মতন। আমি আমার সমগ্র পৃথিবীর মুসলিম উম্মাহকে আপন ভাইবোন বলেই মনে করি, অনুভব করি। মুসলিম হিসেবে এ আমার দায়িত্ব। আর এই অনুভূতি স্বতস্ফূর্ত। এতগুলো কথা লিখলাম কেবল একটা উপলব্ধিকে ছড়িয়ে দিতে -- যদি আখিরাতে আসলেই আল্লাহর সান্নিধ্য চাই, তাহলে আমরা যেন অনেক দোয়া করি আমাদের ভাইদের জন্য। কাজ করি মানুষের জন্য, মানুষের শান্তির জন্য... নিশ্চয়ই রবের পাকড়াও বড়ই কঠিন। নিশ্চয়ই সত্যপথের মানুষ আর মিথ্যার দাসত্বকারীরা এক না।
১৮ নভেম্বর ২০১২
সকাল ৮ টা ৪৫ মি
ব্যাপারটা এমন না যে গাজা উপত্যকা অনেক বড়। প্রস্থে কয়েক কিলো আর দৈর্ঘ্যে এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে যেতে এক ঘন্টাও লাগে না। ইসরাইলি নেভি ঘিরে আছে গাজা, পৃথিবীর ৪র্থ শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী (নেটে পড়লাম) কেন তাদেরকে এভাবে আটকে মেরে ফেলছে? ইসরাইল কোন রাস্ট্র ছিলনা। ফিলিস্তিন বিশাল দেশ ছিল। বৃটিশ সরকার হাজার হাজার ইহুদিদের এখানে বসতি দিয়েছিলো গত শতকের প্রথমে, ফিলিস্তিনিদের সাথে থাকতে। ওরা সবখান থেকে অর্থ নিয়ে ক্রমেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক চালে ফিলিস্তিনিদেরকে কোণঠাসা করে গাজা আর পশ্চিম তীরের শহর রামাল্লাতে জায়গা নিতে বাধ্য করেছে। যখন ইচ্ছা হয় বিমান হামলা করে শহীদ করে দেয় আমাদের ভাইদের বোনদের। এমন কোন পরিবার নেই ফিলিস্তিনে, যাদের কেউ ওদের হামলায় শহীদ হয়নি। অতটুকু শহরে গিজিগিজি করে ক'জন মানুষ থাকে? মৃত্যু তাদের কাছে এতই সাধারণ ব্যাপার যে বাংলাদেশে আরাম করে ঘুমাতে যাওয়া আমরা কল্পনাই করতে পারব না। কেন ওদের এভাবে মারছে? এখানেই রহস্য। একটা জাতি তোমাকে থাকার জায়গা দিল, যখন হলোকাস্টে তোমাদের পুড়িয়ে মেরে দিলো নাৎসি বাহিনী -- তোমরা কৃতজ্ঞ না হয়ে একের পর এক জায়গা নিয়ে তাদেরকেই কেন হত্যা করছ? এখানেই ইহুদিবাদের স্বরূপ। আত্মরক্ষার্থে একটা মর্টার গেলেও নাকি নেতানিয়াহু সেনাবাহিনী চালনা করবে। এই ইসরাইলকে বার্ষিক বিলিয়ন ডলার দেয় আমেরিকা। সমস্ত আন্তর্জাতিক মিডিয়া প্রচার করেছে -- "ইসরাইল হামাস সহিংসতা" অথচ গত দু'দিনে কমপক্ষে ২৫ জন মারা গেছে ইসরাইলের বিমান আক্রমণে, চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে মেরে ফেলছে মানুষগুলোকে। তাদের ধ্বজাধারী মিডিয়া গণহত্যাকে বলছে "সংঘর্ষ। সে নাহয় দূরের কথা।
দেশে বসে আমি কি করতে পারি? ... জানিনা আসলে। আমি জেনেছি, নবী করীম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুসলিম একে অপরের ভাই। এই উম্মাহ দেহের মতন। আমি এতটুকু জানি, আমার ভাইয়া যদি আজ আহত হয়ে হাসপাতালে যেতেন, নিহত হয়ে যেতেন -- আমি গান শুনতে মত্ত থাকতাম না, ব্যাট-বল পিটিয়ে ভ্রমের মধ্যে ডুবে থাকতাম না। কায়মনোবাক্যে দু'আ করতাম। চোখের পানিরা ঝরে যেত। একদিন আমাকেও অমন অবস্থায় পড়তে হতে পারে -- তখন আমার পাশে কেউ না দাঁড়ালেও যদি দূরে থেকে কেউ দু'আও করে, আমি হয়ত তাতেই সাহায্য পাব।
এত দূরের ওরা কেমন করে আমার ভাইবোন? ...আখিরাতে আপন রক্তের ভাই যদি জাহান্নামী হয়, তবে কেউ তাকে ভাই বলে ডেকে লাভ পাবনা। তাদের সাথেই থাকব, যারা একসাথে থাকবেন, তারা সবাই আল্লাহর বান্দা হিসেবে দুনিয়ায় ছিলেন, তাদের ভালোবাসা আল্লাহর ভালোবাসায় সিক্ত, তাদের চাওয়া, চিন্তা, কথা আর কাজের ছাঁচ একই -- ঠিক যেন একই পরিবারের মতন। আমি আমার সমগ্র পৃথিবীর মুসলিম উম্মাহকে আপন ভাইবোন বলেই মনে করি, অনুভব করি। মুসলিম হিসেবে এ আমার দায়িত্ব। আর এই অনুভূতি স্বতস্ফূর্ত। এতগুলো কথা লিখলাম কেবল একটা উপলব্ধিকে ছড়িয়ে দিতে -- যদি আখিরাতে আসলেই আল্লাহর সান্নিধ্য চাই, তাহলে আমরা যেন অনেক দোয়া করি আমাদের ভাইদের জন্য। কাজ করি মানুষের জন্য, মানুষের শান্তির জন্য... নিশ্চয়ই রবের পাকড়াও বড়ই কঠিন। নিশ্চয়ই সত্যপথের মানুষ আর মিথ্যার দাসত্বকারীরা এক না।
১৮ নভেম্বর ২০১২
সকাল ৮ টা ৪৫ মি