৩০ নভে, ২০১২

আলাপন : ডুবন্ত মানুষগুলোকে টেনে তোলা

 অনেক সময় আমরা যারা জীবনের আলটিমেইট অর্থ ও লক্ষ্য বুঝতে পেরেছি আল্লাহর অশেষ রাহমাতে, তারা অনেক ভুল করে ভোগান্তিতে থাকা মানুষদের দেখে দুঃখ পাই, পাওয়ারই কথা। মানুষ অকারণেই সহজ জীবনকে জটিল করে, ভুল করে -- ভুগতেও থাকে। তাদের সেই আলাপ হয়ত আমরা অন্য কারো সাথে এসে করি, দুঃখ প্রকাশ করি সমবেদনা হিসেবেই।

ভেবে কি দেখি, লাভ কি এতে? আমি যখন ভালো আছি, তখন এই ভালো থাকা আরেক মানুষের উপকারে না আসলে তাতে কোন লাভ নেই, আমার এই ভোগ, এই শান্তির বিছানায় আয়েশের সময় কোনই কাজে আসবে না অনন্তকালের জীবনে। তাই, কাউকে পানিতে ডুবে যেতে দেখলে তাকে টেনে তোলা উচিত দাঁড়িয়ে না থেকে। ভুল করতে থাকা মানুষটাকে তাই অক্লান্ত হয়ে টেনে তুলতে হবে, বুঝাতে হবে। আজই, এক্ষুনি, যেকোন ছোট উপায়ে তা শুরু করা হোক না কেন।

আসলে, আমরা দিক নির্দেশনা পেয়েছি, তাতে আমাদের কোন ক্রেডিট ছিলনা। সবই আল্লাহর অকল্পনীয় দয়ার প্রতিফলন, আর আমাদের ছোট ছোট চেষ্টাতেও হয়ত কারো জীবনে বড় পরিবর্তন এসে পড়তে পারে। ইতিহাসে এমন অজস্র অজস্র উদাহরণ আছে, যখন একজনের দাওয়াতে যিনি বদলে গেলেন, তিনি একটা জাতিগোষ্ঠীর জন্য বিশাল রাহমাতের কারণ হয়ে গেছেন। আল্লাহই সবকিছুর মালিক, তিনিই মহাপরিকল্পনাকারী।

একটা হাদিস পড়তে গিয়ে এই চিন্তাগুলো জেগে উঠলো, আমাদের প্রিয়তম আর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষটির শিখিয়ে যাওয়া কথাগুলো এমন ছিলো --

ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাঁধ ধরে বললেন:

♥ “দুনিয়াতে এভাবে কাটাও যেন তুমি একজন মুসাফির বা পথিক।” ♥ [বুখারী]

ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলতেন,

♥ “তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে সকাল বেলার অপেক্ষা (আশা) করো না এবং সকালে উপনীত হয়ে সন্ধ্যা বেলার অপেক্ষা করো না। সুস্বাস্থ্যের দিনগুলোতে রোগব্যাধির (দিনগুলোর) জন্য প্রস্তুতি নাও এবং জীবদ্দশায় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো।” ♥ [বুখারী]


# রিয়াদুস সলিহীন : ৫৭৫

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে