২৪ এপ্রি, ২০১২

কেন চলে গেলে দূরে



ভালোবাসার জন্য আমার অনেক কাঙ্গালপনা। কেউ আমার খোঁজ নেবে, আমার সাথে বসে গল্প করবে, আমাকে একটু ভালো করে বুঝবে -- এমন আশা আমার সেই ছোটবেলা থেকেই। স্কুলে পড়ার সময় সুমনের সাথে দু'বছর একই বেঞ্চে বসতাম। একদিন কিছু না বলেই ওরা ঢাকা ছেড়ে চলে গেলে কষ্টে কেঁদে ফেলেছিলাম। এরপর অনেকবারই কাঁদতে হয়েছে। অনেক রকম ঘটনায়। আমি ছেলেমানুষ, তাই লোকচক্ষু এড়িয়ে আড়ালে আবডালে চোখের পানি মুছতাম। কেউ দেখে ফেললে হাসাহাসি করবে -- সেই আতঙ্ক থাকতো!

আরো কতবার এই হৃদয় যে ভাঙ্গলো, তার ইয়ত্তা নাই। একটা সময় অনেক মনে হতো -- আমি খুব অভাগা, তাই আমার দিকে কেউ ফিরে চায়না। আমি অভাগা বলেই হয়ত যাকে ভালোবাসি, সে আমাকে গুণেও দেখেনা। অজস্র সময় গেছে জীবনে, যখন অন্য কেউ আমার সাথে কথা বললে, আমার খোঁজ নিলে আমার ভালো লাগবে -- এই ভেবে ভগ্নহৃদয়ে কেটেছে সময়। অনেক ভাবতাম, কেন আমার জীবন এমন হবে! আমি তো বিশ্বাস করিনা এত দুঃখী আমি হতে পারি। কেনই বা হবো -- আমার জীবনের সমস্তটুকু দিয়েই তো আমি আমার সব কাজে প্রচেষ্টা চালাই!

আধ্যাত্মিক শূণ্যতা

শিরোনামটা এমন দিলাম কারণ আমি একটা ভিডিও দেখলাম, কিছু শিখলাম যার শিরোনামটাও এরকমই ছিলো। এই শিক্ষাটা আমার জন্য সময়োপযোগী আর গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। তাই সবার সাথে শেয়ার করে দেয়ার উদ্দেশ্যে লিখতে বসেছি। ভিডিওটি ছিলো উস্তাদ নুমান আলী খানের -- "spiritual void" 


আমাদের সমাজে অনেক মানুষ আছেন যারা আল্লাহর রাস্তায় নিজেদেরকে বিলিয়ে দেন। অর্থাৎ তারা আল্লাহর দ্বীন প্রচারে নিয়োজিত থাকেন, অন্যদেরকে আল্লাহর পথে ডাকেন, জ্ঞানের কাজ করেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার কাজ করেন। মোটকথা, সত্যিকার অর্থেই (লোক দেখানোর জন্য না) তারা নিজেদেরকে দাওয়াতের কাজে নিয়োজিত রাখেন। কিন্তু এই কাজে ব্যস্ত থাকতে থাকতে অনেক সময় নিজেদের দিকে খেয়ালটা রাখা হয়না।

১৫ এপ্রি, ২০১২

নতুন বছরের প্রত্যয়

আজ নতুন বছরের প্রথম দিন। ১৪১৯ বঙ্গাব্দের পহেলা বৈশাখ। বহুদিনের পুরোনো বাংলার সংস্কৃতির সবচাইতে উল্লেখযোগ্য জিনিসটি ছিলো -- হালখাতা। হালখাতার আইডিয়াটা আমার কাছে দারুণ লাগতো। পুরোনো সবকিছুর হিসাব নিকাশ করে নতুন একটা খাতা খোলা। সেই সুযোগে একটা পুনর্মিলনী হওয়া, একটা নতুন উৎসবের আমেজ পাওয়া।

এই সুযোগে আমিও নিজের চিন্তা আর কাজের হালখাতা খুললাম। সেটাতে যা যুক্ত হলো, তা হলো -- নতুন কিছু পরিকল্পনা। আপাতত যা ঠিক করলাম তা হলোঃ

  •  আজ থেকে সময় নষ্ট করবো না
  •  খারাপ কথা বলবো না, গালাগালি করবো না
  •  যেসব জায়গায় সময় নষ্ট হয়, তা এড়িয়ে চলবো
  •  মিথ্যা কথা বলবো না। এমন কাজ যদি থাকে যেখানে মিথ্যা বলার চান্স আছে -- সে কাজগুলো এড়িয়ে যাবো
  •  প্রতিদিন ৫টি করে ইংরেজি শব্দ শিখবো। বছর শেষে হবে বিশাল শব্দভান্ডার (vocabulary) হবে। প্রতিদিন অন্ততঃ একটা ইংরেজি আর্টিকেল পড়বো।
  •  ইংরেজি শিখবো কারণ পৃথিবীর চমৎকার সব সাহিত্য আর জ্ঞানের ভান্ডারগুলো যে ভাষারই হোক না কেন, তা প্রথমেই অনুবাদ হয় ইংরেজিতে। এই বিশাল জ্ঞানভান্ডারের রত্নগুলো আমার ঘরে আনতে চাই। তাছাড়া নিজের দেশের সুন্দর জিনিসগুলো পৃথিবীময় ছড়িয়ে দিতেও এই ভাষায় দক্ষতা দরকার হবে।
  •  প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত সালাত সঠিকভাবে আদায় করবোই ইনশাআল্লাহ। নামায হলো বেহেশতের চাবি।
  •  প্রতিদিন কুরআনের অন্তত ১/২ আয়াত অর্থসহ (সম্ভব হলে তাফসির) সহ পড়বো, মাত্র ১০-১৫ মিনিট লাগবে। কারণ, কুরআন আখিরাতে আমাদের জন্য শাফায়াত করবে। আর পৃথিবীর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান আমাদের প্রতি আল্লাহর পাঠানো এই বইটিতেই আছে। আমি জীবনটাকে সুন্দর আর অর্থপূর্ণ করতে চাই।
  •  প্রতিদিন অন্তত ১ জন মানুষকে অনাকাংখিত উপকার করে চমকে দিবো। দিনে একজনকে খুশি করতে পারলে বছর শেষে ৩৬৫ জন মানুষকে খুশি করতে পারবো খুউউব সহজেই!! কাজগুলো যেমন হতে পারেঃ
  •  রিকসাওয়ালার সাথে মোটামুটি দামাদামি করে উঠে নামার সময় কয়টা টাকা বেশি দিয়ে দেয়া যেতে পারে।
  •  আমার কলিগের যখন পানি খেতে ইচ্ছা হচ্ছে টাইপ কিছু বললেন, তখন তার জন্য পানি নিয়ে এসে সেটা তার হাতে তুলে দেয়া।
  •   রাস্তার মাঝে ইট থাকলে সেটাকে তুলে দূরে কোথাও সরিয়ে রেখে দেয়া।
  • আব্বা-আম্মা, ভাই-বোন বা রুমমেটের জন্য তাদের পছন্দের কোন একটা খাবার কিনে নিয়ে যাওয়া। সেটা চকোলেট টাইপের কিছু হলেও হতে পারে।
  •  কাউকে ভারী কোন ওজন বহন করতে দেখলে সেটিকে কিছু পথ এগিয়ে সাহায্য করা।

আল্লাহ আমাদের চিন্তা আর নিয়্যাতে বারাকাহ দিন এবং চেষ্টাগুলোকে কবুল করে নিন। নিজেকে গড়ার কাজে অংশ নিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার মতন একটা সমাজ আর রাস্ট্র গড়ে তোলার তাওফিক দিন। সবাইকে নতুন বছরের প্রথম দিনে শুভেচ্ছা জানাই। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন। আমিন।

২ এপ্রি, ২০১২

কেমন আছ তুমি


"কেমন আছ" -- আমি বোধহয় জীবনে এই প্রশ্নটা সবচেয়ে বেশি শুনেছি। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, চাকুরিক্ষেত্রের সহকর্মীরা -- সবাইই প্রতিদিন অজস্রবার এই প্রশ্ন করে। প্রতিটি মানুষেরই কুশল বিনিময়ের প্রথম প্রশ্ন "কেমন আছেন"? ইদানিং পরিচিতজনরা বেশিরভাগই একটা উত্তর দেয় -- "এইতো"। কী অদ্ভূত !! এইতো মানে আবার কী? ভালো নাকি খারাপ?

খারাপ বলতেও 'এইতো বলা' লোকদের বাঁধে -- কেননা তারা সবাইই আসলে অনেক ভালো আছেন। জীবনে প্রাপ্তি তাদের প্রচুর। "খারাপ আছি" -- বললেই তাকে জিজ্ঞেস করা হবে -- কী হয়েছে? যার উত্তর দিতে পারবেন না। আবার "ভালো আছি" সেটা স্বীকার করলে সম্ভবত নিজের উচ্চাকাংখা প্রকাশ করা হবেনা, তাই সবাইই বলেন -- "এইতো"। ভালো আছি বললে তার আরো অনেক কিছু পেতে হবে, সেইটা আবার প্রশ্নদাতা হয়ত খেয়াল করবেন না, তাকে আরো বেশি মূল্যায়ণ করবেন না, তাই হয়ত বলে -- "এইতো"। "ভালো আছি" বলার মানুষ কেন যে এত কম সেটা ভেবেই পাইনা!