ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনে মনে হয় আমরা সবাই কমবেশি থাকি। আর সেই টানাটানি প্রভাব ফেলতে থাকে আমাদের মনের স্বাভাবিকতায়। যেমন ধরুন, অনেকেই যেচে পড়ে অপকার করেন, কেউ কেউ বিশ্বাসভঙ্গ করেন, কারো প্রতি অভিমান হয় কারণ তারা কথা দিয়ে কথা রাখেন না। খুব কাছের মানুষদের কাছ থেকে 'এক্সপেকটেশন' তৈরি হলেও তারা সেই ব্যাপারগুলোকে অগ্রাহ্য করেন... আবার অনেক সময় কিছু মানুষের অপরাধকে আমরা কিছুতেই ক্ষমা করতে পারিনা কারণ তাদের অপরাধ/ভুল তারা বারবার করতে থাকেন -- এরকম আরো অনেক রকমের ঘটনায় আমাদের মনকে সামলাতে একটা দুরূহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়।
কিছুদিন যাবত এমন অনেকগুলো পরিস্থিতিতে পড়ে আমি আবিষ্কার করছিলাম যে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমি নিজেই। যদিও আমি সবসময়েই আমার প্রসন্নতা এবং অপ্রসন্নতা মানুষগুলোকে মুখ ফুটে বলে ফেলি, নয়ত নিজের কাছ থেকেই ইগনোর করি। কিন্তু আমি কিছু মানুষকে কিছুতেই ক্ষমা করতে পারছিলাম না বিবিধ কারণে, বলাও সম্ভব হয়ে উঠছিলো না -- ভিন্ন রকমের পরিস্থিতির কারণে। আমার মানসিক প্রশান্তি বিঘ্নিত হয় যখন (আমার মনের কাছে) *অপরাধী* টাইপের মানুষগুলো আমার সামনে এসে হাজির হয়, অথবা তাদের আলোচনা আমার সামনে এসে পড়ে।
এমন অবস্থায় সেদিন আমার নিকটাত্মীয় একজন প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে গেলেন, চেনাজানা মানুষদের মাঝে বেশ ক'জনের মৃত্যু সংবাদ, অফিসের গেইটে উপুর্যুপুরি কয়েক সপ্তাহে খাটিয়ায় লাশের 'শেষ প্রদর্শনী' আমাকে অন্যরকম একটা উপলব্ধি দিলো। আমি যদি আজই চলে যাই দুনিয়া থেকে, তাহলে কি আমার এই ক্ষোভ কোন কাজে আসবে? যদি কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আমার ক্ষোভ জমে থাকে বুকে, সেইটা কখনো বুকের উপরে অসুস্থ যন্ত্রণা তৈরি করত না। কিন্তু অন্য যেকোন সম্পর্কে কেন ক্ষমা করে দিব না?
-- অন্য কারো অপরাধ থাকলে তাকে ক্ষমা করে দিলে, আল্লাহ আমাকেই ক্ষমা করে দিবেন।
-- অন্য কারো অপরাধ না থেকে আমি ভুল বুঝে রাগ করে থাকলে সেটার অধিকার আমার নেই।
-- আমি কারো দোষ (ব্যক্তিগত পর্যায়ের) গোপন রাখলে, কিয়ামাহ এর দিনের কঠিন সময়ে আমার আল্লাহ আমার দোষ গোপন রাখবেন।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, আমি রাগ করে যদি কাউকে একটা হাসি কম দিই, কারো ভালো কাজ থেকে উদ্দীপনামূলক একটি বক্তব্য/মন্তব্য কম করি -- প্রকারান্তরে আমি আরো অজস্র ভালো কাজের ভাগীদার হবার সুযোগ হারাচ্ছি। এত বিপুল ক্ষতির দিকে কেন যাব যখন ক্ষমাই দিতে পারে পরম প্রশান্তি?
এরকম সিদ্ধান্ত নেবার পরিস্থিতিতে মনের সামনে এসে হাজির হয় 'ইগো' ভ্রান্ত 'অহংকার' এবং 'ব্যক্তিত্ববোধের' চিন্তাভাবনা নিয়ে। এই ইগোকে দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথে এগিয়ে যাওয়াই সবচাইতে কল্যণকর। কেননা, একদম শেষে আমরা সবাই কেবল সেলাইবিহীন সাদা কাফনে জড়ানো একটা লাশ, যার নাকে তুলা গুঁজে দেয়া হয়, এরপর মাটিচাপা দিয়ে স্বস্তি পাবে নিকটাত্মীয়রাও। দম্ভ অহংকার করার কিছুই নেই কেননা --
হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বর্ননা করেন:
♥ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, “আল্লাহ তাআলা তোমাদের চেহারা ও দেহের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না; বরং তোমাদের অন্তর ও কর্মের প্রতি লক্ষ্য আরোপ করেন।” ♥ [মুসলিম]
# রিয়াদুস সলিহীন:৭
♥ ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাঁধ ধরে বললেন:
“দুনিয়াতে এভাবে কাটাও যেন তুমি একজন মুসাফির বা পথিক।”
ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলতেন,
“তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে সকাল বেলার অপেক্ষা (আশা) করো না এবং সকালে উপনীত হয়ে সন্ধ্যা বেলার অপেক্ষা করো না। সুস্বাস্থ্যের দিনগুলোতে রোগব্যাধির (দিনগুলোর) জন্য প্রস্তুতি নাও এবং জীবদ্দশায় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো।” [বুখারী]
# রিয়াদুস সলিহীন:৫৭৫
কিছুদিন যাবত এমন অনেকগুলো পরিস্থিতিতে পড়ে আমি আবিষ্কার করছিলাম যে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমি নিজেই। যদিও আমি সবসময়েই আমার প্রসন্নতা এবং অপ্রসন্নতা মানুষগুলোকে মুখ ফুটে বলে ফেলি, নয়ত নিজের কাছ থেকেই ইগনোর করি। কিন্তু আমি কিছু মানুষকে কিছুতেই ক্ষমা করতে পারছিলাম না বিবিধ কারণে, বলাও সম্ভব হয়ে উঠছিলো না -- ভিন্ন রকমের পরিস্থিতির কারণে। আমার মানসিক প্রশান্তি বিঘ্নিত হয় যখন (আমার মনের কাছে) *অপরাধী* টাইপের মানুষগুলো আমার সামনে এসে হাজির হয়, অথবা তাদের আলোচনা আমার সামনে এসে পড়ে।
এমন অবস্থায় সেদিন আমার নিকটাত্মীয় একজন প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে গেলেন, চেনাজানা মানুষদের মাঝে বেশ ক'জনের মৃত্যু সংবাদ, অফিসের গেইটে উপুর্যুপুরি কয়েক সপ্তাহে খাটিয়ায় লাশের 'শেষ প্রদর্শনী' আমাকে অন্যরকম একটা উপলব্ধি দিলো। আমি যদি আজই চলে যাই দুনিয়া থেকে, তাহলে কি আমার এই ক্ষোভ কোন কাজে আসবে? যদি কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আমার ক্ষোভ জমে থাকে বুকে, সেইটা কখনো বুকের উপরে অসুস্থ যন্ত্রণা তৈরি করত না। কিন্তু অন্য যেকোন সম্পর্কে কেন ক্ষমা করে দিব না?
-- অন্য কারো অপরাধ থাকলে তাকে ক্ষমা করে দিলে, আল্লাহ আমাকেই ক্ষমা করে দিবেন।
-- অন্য কারো অপরাধ না থেকে আমি ভুল বুঝে রাগ করে থাকলে সেটার অধিকার আমার নেই।
-- আমি কারো দোষ (ব্যক্তিগত পর্যায়ের) গোপন রাখলে, কিয়ামাহ এর দিনের কঠিন সময়ে আমার আল্লাহ আমার দোষ গোপন রাখবেন।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, আমি রাগ করে যদি কাউকে একটা হাসি কম দিই, কারো ভালো কাজ থেকে উদ্দীপনামূলক একটি বক্তব্য/মন্তব্য কম করি -- প্রকারান্তরে আমি আরো অজস্র ভালো কাজের ভাগীদার হবার সুযোগ হারাচ্ছি। এত বিপুল ক্ষতির দিকে কেন যাব যখন ক্ষমাই দিতে পারে পরম প্রশান্তি?
এরকম সিদ্ধান্ত নেবার পরিস্থিতিতে মনের সামনে এসে হাজির হয় 'ইগো' ভ্রান্ত 'অহংকার' এবং 'ব্যক্তিত্ববোধের' চিন্তাভাবনা নিয়ে। এই ইগোকে দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথে এগিয়ে যাওয়াই সবচাইতে কল্যণকর। কেননা, একদম শেষে আমরা সবাই কেবল সেলাইবিহীন সাদা কাফনে জড়ানো একটা লাশ, যার নাকে তুলা গুঁজে দেয়া হয়, এরপর মাটিচাপা দিয়ে স্বস্তি পাবে নিকটাত্মীয়রাও। দম্ভ অহংকার করার কিছুই নেই কেননা --
হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বর্ননা করেন:
♥ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, “আল্লাহ তাআলা তোমাদের চেহারা ও দেহের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না; বরং তোমাদের অন্তর ও কর্মের প্রতি লক্ষ্য আরোপ করেন।” ♥ [মুসলিম]
# রিয়াদুস সলিহীন:৭
♥ ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাঁধ ধরে বললেন:
“দুনিয়াতে এভাবে কাটাও যেন তুমি একজন মুসাফির বা পথিক।”
ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলতেন,
“তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে সকাল বেলার অপেক্ষা (আশা) করো না এবং সকালে উপনীত হয়ে সন্ধ্যা বেলার অপেক্ষা করো না। সুস্বাস্থ্যের দিনগুলোতে রোগব্যাধির (দিনগুলোর) জন্য প্রস্তুতি নাও এবং জীবদ্দশায় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো।” [বুখারী]
# রিয়াদুস সলিহীন:৫৭৫
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে