৮ মার্চ, ২০১৩

পরিপূর্ন যুক্তির খোঁজে

আমি প্রতিদিন অনেকরকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হই, সর্বপ্রথম নিজের কথা মনে হয় যেখানে জ্ঞানের প্রবল সংকট আমার জীবনের সমস্যাগুলোকে শত-শতগুণে বর্ধিত হবার কারণ হিসেবে কাজ করেছে। একই চিন্তা আমার সমাজের মানুষদের ও মুসলিম উম্মাহর জন্যেও অত্যন্ত তীব্রভাবে মনে হয়। অল্পকিছু জানা জিনিসকে আরো একটু জানার পরে আমার পূর্বেকার অবস্থান নিয়ে খুব লজ্জাবোধ হয়। এখনকার জীবনেও এত দারুণ মানুষের খোঁজ পাই যে তখন অবাক লাগে এইরকম সামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক অবস্থাতেও কিছু মানুষ বুকে এত ঔদার্য আর আলো নিয়ে ঘুরে বেড়ান!!

যাহোক, ক'দিন আগে আমার বস একটা কথা বলছিলেন, মজার ব্যাপার হলো তার কাছ থেকে এমন গভীর জ্ঞান আশা করিনি। উনি বলছিলেন, "আমাদের পৃথিবীতে কিছুই নতুন হচ্ছেনা। ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে দেখ, এরকমই আগেও ছিল। আমাদের কাজ হচ্ছে শুধু কর্তব্যটুকু করা।" ভেবে দেখলাম, সত্যিই তো। নবী-রাসূলদের ইতিহাস খুবই হালকা করে কিছু হয়ত জানি। কিন্তু এই উপমহাদেশের মুসলমানদের ইতিহাস তেমন কিছুই জানিনা। কী দুঃখজনক!

অথচ এরই মাঝে কতজন কত কিছুই না জানে! এক ছোট ভাইয়ের মুখে একদিন শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভীর কথা শুনেছিলাম অনেকদিন আগে। ক'দিন আগে ইমাম সুহাইব ওয়েবের এক আলোচনাতেও ভারতবর্ষের এই মহান স্কলারের নাম শুনেছিলাম। ইমাম সুহাইব তাবিঈন যুগের স্কলার থেকে শুরু করে এই শতাব্দী পর্যন্ত সেরা স্কলারদের বিভিন্ন বইতে উল্লেখিত সামঞ্জস্য নিয়ে মনমুগ্ধ আলোচনা করছিলেন, তখন উনার নাম বলেছিলেন। আজকে এই স্কলারের সম্পর্কে খুব অল্প জানলাম। অসাধারণ মানুষগুলোর 'বায়োগ্রাফি' পড়ে বারবার মুগ্ধ হই। তারা সবাই অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হয়েছিলেন, তবু দ্বীনকে উজ্জীবিত করার আপ্রাণ প্রচেষ্টা জীবন দিয়েই করে গেছেন। আমরা আসলে আরাম-আয়েশে জীবন কাটাতে চাই, তাই কিছুই অর্জন হয়না। তারা অনেক ত্যাগ স্বীকার করতেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা এরকম সকল সৎকর্মশীল মানুষদের প্রতি রাহমাত বর্ষণ করুন, তাদের সাথে আমাদের সাক্ষাত যেন আল্লাহর সন্তুষ্টি নিয়ে জান্নাতে হয় -- সেই তাওফিক দান করুন। শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভীর (রাহিমাহুল্লাহ) একটি গ্রন্থের নাম 'হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা'। মহিমান্বিত কুরআনের সূরা আন'আম [৬:১৪৯]-এর একটি শব্দের অনুপ্রেরণায় নাকি এই নামকরণ। সে আয়াতটা খুঁজে পড়তে গিয়ে দেখলাম যেন এই সময়েরই কিছু ঘটনার ইঙ্গিত! সুবহানাল্লাহ!

আল্লাহ বলেছেনঃ

♥"এখন মুশরেকরা বলবেঃ যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন, তবে না আমরা শিরক করতাম, না আমাদের বাপ দাদারা এবং না আমরা কোন বস্তুকে হারাম করতাম। এমনিভাবে তাদের পূর্ববর্তীরা মিথ্যারোপ করেছে, এমন কি তারা আমার শাস্তি আস্বাদন করেছে। আপনি বলুনঃ তোমাদের কাছে কি কোন প্রমাণ আছে যা আমাদেরকে দেখাতে পার। তোমরা শুধুমাত্র আন্দাজের অনুসরণ কর এবং তোমরা শুধু অনুমান করে কথা বল। আপনি বলে দিনঃ অতএব, পরিপূর্ন যুক্তি আল্লাহরই। তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদের সবাইকে পথ প্রদর্শন করতেন।"♥ --[আল আন'আম, ১৪৮-১৪৯]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে