১৩ মার্চ, ২০১৩

বিশ্বাসীদের বুমেরাং ফিরে আসে গভীরতায়

বিগত কিছুদিন অনেক মসজিদের ইমাম, কুরআনের হাফিজ, মাদ্রাসার ছাত্র এবং ছাত্র-কুলি-ব্যবসায়ী-পথচারী আমাদের 'প্রাণপ্রিয় পুলিশ ভাইদের' গুলিতে বিদ্ধ আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছেন। আল্লাহ ও তার রাসূলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাচ্ছেতাই ভাষায় গালাগালি করার সাহস দেখানো এক পশু দুনিয়া থেকে বিদায় হয়েছে। আল্লামা আহমদ শফীর মতন আলেমদেরকে উদ্দেশ্য করে গালাগালি ছোঁড়া হয়েছে। বন্ধুদের অনেকের ভাবসাব দেখে বুঝেছি তাদের কাছে রাসূলুল্লাহ (সা) এবং তার পরিবারের নামে অশ্লীল ব্লগ লেখা বিষয়টা খুবই হালকা।


সার্টিফিকেটে মুসলিম নাম লেখা, কুরআনের বিন্দু-বিসর্গ না পড়তে যাওয়া, ইসলামের কিছুই না জানা, না বোঝা অনেক এমন অনেক নরাধম নাস্তিকদের ইসলামের নোংরা অপপ্রচার থেকে ইসলাম শিখে সরাসরি দ্বীনের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। চেনাপরিচিতদের অনেককে দেখেছি সবাই কত সহজে ইসলাম থেকে দূরে বহুদূরে চলে যাচ্ছে দিনরাত মুখ খারাপ করে গালি দিয়ে, ইসলামের নামে যা-তা বলে নিজদেরকেই ভূলুন্ঠিত করে। হবে না-ই বা কেন? যারা কখনো নিজেকে ইসলামের অংশ মনে করেনি, মসজিদে সালাত আদায় করতে যায়না তো বটেই কখনই সালাতে মন দেয়না, কুরআনকে জানেই না - তারা ইসলামকে বুকে ধারণ করবে এমনটা সম্ভব হয়না আসলে। তারা জানেই না আল্লাহ অন্তরের কোথায় থাকার কথা, জানেই না রাসূলকে (সা)-কে কতখানি ভালোবাসতে হয়, তারা জানেই না দ্বীনদার মানুষদের সাথে অন্তরকে লাগিয়ে রাখতে হয় যেন দলছুট হয়ে না যাই। ফলশ্রুতিতে সীমাহীন ক্ষতি, অনন্তকালের আগুণের কাছাকাছি যাওয়া নিশ্চিত করছে প্রতিমূহুর্তে আল্লাহর শত্রুতা করে!

এরই মধ্যে ভিন্ন চিত্রও দেখেছি!! ইদানিং একটা উপলব্ধি হলো, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা একেকটা পরীক্ষা দিয়ে আলাদা করে দেন তারা অনুগত বান্দা আর কুফফারদেরকে। আমার খুব নিকটাত্মীয় এবং নিকট বন্ধু ও কলিগদের মাঝে অজস্র মানুষ সালাতে মনোযোগী হয়েছে, কুরআন নিয়ে বেশি বেশি সময় দিচ্ছে। অনেক মানুষের রাতজাগা কান্নাকাটির কথা জানি দ্বীনের জন্য, মানুষের জন্য, দেশের জন্য। এরকম একেকটা মানুষের ঈমান জেগে ওঠা দেখে আপ্লুত হয়েছি।

সুবহানাল্লাহ! এমন একেকটা সুন্দর ঈমানদার মানুষের মূল্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার কাছে পৃথিবীপূর্ণ নাস্তিক-মুরতাদ-মুনাফিকের চাইতে বেশি। আল্লাহর দ্বীন কখনো সংখ্যা পরিবেষ্টিত বিষয় না। নূহ আলাইহিস সালাম ৯৫০ বছরে মাত্র ৪০জোড়া মানুষকে বুঝাতে পেরেছিলেন, অনেক নবীর দাওয়াতে ঈমান আনা লোকের সংখ্যা আরো কম ছিলো বলে শুনেছি। ঈমানের দৃঢ়তার কাছে সংখ্যা কিছুই না। কুরআন হলো সত্য ও মিথ্যার প্রভেদকারী। আমরা যার দাসত্ব করি, তিনি বিশ্বজগতের পরিচালক, রাজাধিরাজ, একমাত্র রব। তাই, মসজিদে সালাতের সময়ে একাধিক কাতার বেড়ে যাওয়া নতুন এই ভাইদের জন্য হাত তুলে দোয়া করি -- হে আল্লাহ! আমাদের সালাতে নিয়মিত হওয়া এই ভাইদের প্রতি রাহমাত বর্ষণ করুন, আমরা কেউ যেন কখনো সালাত থেকে দূরে না যাই, আমরা যেন আপনার পছন্দের পথে জীবন পরিচালিত করতে পারি। আমরা তো কেবল আপনারই, আপনার কাছেই আমরা ফিরে যাব। আমাদের দয়া করুন হে মালিক, আমাদেরকে কবুল করুন!

১৩ মার্চ, ২০১৩

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে