ইশার সালাত আদায় করে বাড়ি ফিরছিলাম, আধাঘন্টার উপরে রিকসার পথ পেরিয়ে এলাম। কিছুক্ষণ পরেই টের পেলাম, রিকসাওয়ালা নেশাগ্রস্ত। গা হাত চুলকাচ্ছিলো এলোমেলো। অকারণে বহুপথ ঘুরে রাস্তার পাশে রিকসা থামিয়ে কোন কথা ছাড়াই আড়ালে চলে গেলো। জায়গাটা আমার অফিস থেকে কাছেই, তাই আমি আগে জানতাম ওখানে নানান ধরণের নেশা পাওয়া যায়। এক মহিলা প্রায় সময়েই সেখানে চাদর জড়িয়ে বসে থাকে।
সে ফেরার পরে একটু শক্ত গলায় কথা বললাম, বাড়াবাড়ি বেয়াদবি টোন লোকের। আল্লাহকে স্মরণ করে কিছু বুদ্ধি খাটিয়ে ক'টা কথা বলে লাইনে আনতে পারলাম। এরপর অনেক কথা বলে জানার চেষ্টা করলাম কিছু তথ্য। সত্য-মিথ্যা আল্লাহ জানেন। নেশাগ্রস্তদের কথা আমার অনেকটা ইসরাইলিয়া রেফারেন্স টাইপ লাগে!! বিশ্বাস অবিশ্বাস কিছুই করা ঠিক না। প্রদেয় তথ্যমতে তার বাড়ি কুমিল্লায়, জন্ম ঢাকাতেই, বয়স চল্লিশ, অবিবাহিত। বাবা নেই, মায়ের দেখাশোনা করে সে এবং তার ছোট ভাই। এইটা মা সৎ মা। সে একদম ছোট থাকতেই রামপুরাতে থাকা অবস্থায় নেশা শুরু করে। তখন নাকি সে অনেক বেশি নেশা করত, এখন অনেক কম করে! [এই কথা শুনে আমার কিঞ্চিৎ চোখ বড় করে "আচ্ছা!' বলার ইমো হবে] আমি তখন জিজ্ঞাসা করলাম, আপনার অবস্থা তো এখনো অনেক খারাপ। আজকে কি নিলেন? হেরোইন? সে বলে, 'না'। আমি বলি -'গাঁজা'? সে বলে, না তামুক। সে কিছুতেই চিকিৎসা করাবে না কেননা ডাক্তার নাকি ইঞ্জেকশন দিয়ে ৫-৬ দিন ফেলে রাখে, এরপর ফিরে এসে যা-তা অবস্থাই। এরপর আমি তাকে চিকিৎসা করার কথা বারবার বলার পরে সে বললো, 'ম্যালা খরচ'। আমি এরকম লোককে কখনো ভালোবাসা দিয়ে কথা বলে দেখিনি। ভাবলাম, চেষ্টা করতে দোষ কি, না করুক কিছু! পরে ভাবলাম অন্তত তাকে নিজে থেকেই বলাই যে সে চিকিৎসা করার চেষ্টা করবে। টাকা দেয়ার আগে সে বললো (হয়ত মিথ্যা) যে আসলেই তার উচিত সুস্থ হয়ে শরীরের যত্ন নেয়া।
বাসায় ফেরার পরে ভাইয়া বললেন, তিনি কমলাপুরে দেখেছেন অজস্র পিচ্চি পিচ্চি ছেলেমেয়েরা পলিথিন দিয়ে কেমন যেন নেশা করে। আমার আজকে ফেরার সময়েই মনে হচ্ছিলো, আমাদের এই জনপদে রক্তাক্ত হয়ে মরে যাওয়া লাশ দেখার পরেও মানুষদের কোন বিকার হয়না, নেশাগ্রস্ত এবং আগামীর নেশাময় প্রজন্মের দিকে কে তাকাবে? বিশ্ববিদ্যালয়ের 'শিক্ষিত লার্নেড' ছেলেপিলেরা হলে গাঁজার ধোঁয়ায় মাঞ্জা মারে, তখন দিনে ৫০০-৬০০ টাকা ইনকাম করা স্বপ্নহীন এসব রিকসাওয়ালা বা পথশিশুদের নেশার কথা কে দেখবে? অথচ যেসব লোক লক্ষ কোটি টাকা দিয়ে সন্তান বড় করে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা করাতে যায়, সেইসব লোকের সন্তানদের খুন করতে এমন পথশিশুদেরকেই কিছু টাকা দিয়েই ব্যবহার করা হয়। আমাদের সমাজের অর্থনৈতিক আর সুবিধাদির এই অসাম্য কারো চোখে না আসলেও বাস্তবতা খুবই কঠিন। এভাবেই একদিন কোটিপতি, লাখোপতির নন্দদুলাল চলে যাবে, তার বুক খালি হবে। তখন দুনিয়া খুঁজেও সন্তান পাবে না স্বার্থপর অন্ধরা। সামাজিক এসব দায়বদ্ধতা কেউ এড়াতে পারে না। আর যেই পরিবারের কারো ক্ষতি হয়, তারাই কেবল বুঝে তারা কী হারালো। আল্লাহ আমাদের একটা সুন্দর সমাজ গঠনের যোগ্য করে দিন। আমরা যেন সবার অধিকার সংরক্ষণ করতে পারি।
সমাজে এমন প্রবল অসাম্য নিয়ে কিছু দৃশ্যপট আর উপলব্ধি আমার একটা লেখায় লিখেছিলাম, অনিবার্য সেই সময়ের প্রতীক্ষায় : http://idream4life.blogspot.com/2011/05/blog-post.html
সে ফেরার পরে একটু শক্ত গলায় কথা বললাম, বাড়াবাড়ি বেয়াদবি টোন লোকের। আল্লাহকে স্মরণ করে কিছু বুদ্ধি খাটিয়ে ক'টা কথা বলে লাইনে আনতে পারলাম। এরপর অনেক কথা বলে জানার চেষ্টা করলাম কিছু তথ্য। সত্য-মিথ্যা আল্লাহ জানেন। নেশাগ্রস্তদের কথা আমার অনেকটা ইসরাইলিয়া রেফারেন্স টাইপ লাগে!! বিশ্বাস অবিশ্বাস কিছুই করা ঠিক না। প্রদেয় তথ্যমতে তার বাড়ি কুমিল্লায়, জন্ম ঢাকাতেই, বয়স চল্লিশ, অবিবাহিত। বাবা নেই, মায়ের দেখাশোনা করে সে এবং তার ছোট ভাই। এইটা মা সৎ মা। সে একদম ছোট থাকতেই রামপুরাতে থাকা অবস্থায় নেশা শুরু করে। তখন নাকি সে অনেক বেশি নেশা করত, এখন অনেক কম করে! [এই কথা শুনে আমার কিঞ্চিৎ চোখ বড় করে "আচ্ছা!' বলার ইমো হবে] আমি তখন জিজ্ঞাসা করলাম, আপনার অবস্থা তো এখনো অনেক খারাপ। আজকে কি নিলেন? হেরোইন? সে বলে, 'না'। আমি বলি -'গাঁজা'? সে বলে, না তামুক। সে কিছুতেই চিকিৎসা করাবে না কেননা ডাক্তার নাকি ইঞ্জেকশন দিয়ে ৫-৬ দিন ফেলে রাখে, এরপর ফিরে এসে যা-তা অবস্থাই। এরপর আমি তাকে চিকিৎসা করার কথা বারবার বলার পরে সে বললো, 'ম্যালা খরচ'। আমি এরকম লোককে কখনো ভালোবাসা দিয়ে কথা বলে দেখিনি। ভাবলাম, চেষ্টা করতে দোষ কি, না করুক কিছু! পরে ভাবলাম অন্তত তাকে নিজে থেকেই বলাই যে সে চিকিৎসা করার চেষ্টা করবে। টাকা দেয়ার আগে সে বললো (হয়ত মিথ্যা) যে আসলেই তার উচিত সুস্থ হয়ে শরীরের যত্ন নেয়া।
বাসায় ফেরার পরে ভাইয়া বললেন, তিনি কমলাপুরে দেখেছেন অজস্র পিচ্চি পিচ্চি ছেলেমেয়েরা পলিথিন দিয়ে কেমন যেন নেশা করে। আমার আজকে ফেরার সময়েই মনে হচ্ছিলো, আমাদের এই জনপদে রক্তাক্ত হয়ে মরে যাওয়া লাশ দেখার পরেও মানুষদের কোন বিকার হয়না, নেশাগ্রস্ত এবং আগামীর নেশাময় প্রজন্মের দিকে কে তাকাবে? বিশ্ববিদ্যালয়ের 'শিক্ষিত লার্নেড' ছেলেপিলেরা হলে গাঁজার ধোঁয়ায় মাঞ্জা মারে, তখন দিনে ৫০০-৬০০ টাকা ইনকাম করা স্বপ্নহীন এসব রিকসাওয়ালা বা পথশিশুদের নেশার কথা কে দেখবে? অথচ যেসব লোক লক্ষ কোটি টাকা দিয়ে সন্তান বড় করে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা করাতে যায়, সেইসব লোকের সন্তানদের খুন করতে এমন পথশিশুদেরকেই কিছু টাকা দিয়েই ব্যবহার করা হয়। আমাদের সমাজের অর্থনৈতিক আর সুবিধাদির এই অসাম্য কারো চোখে না আসলেও বাস্তবতা খুবই কঠিন। এভাবেই একদিন কোটিপতি, লাখোপতির নন্দদুলাল চলে যাবে, তার বুক খালি হবে। তখন দুনিয়া খুঁজেও সন্তান পাবে না স্বার্থপর অন্ধরা। সামাজিক এসব দায়বদ্ধতা কেউ এড়াতে পারে না। আর যেই পরিবারের কারো ক্ষতি হয়, তারাই কেবল বুঝে তারা কী হারালো। আল্লাহ আমাদের একটা সুন্দর সমাজ গঠনের যোগ্য করে দিন। আমরা যেন সবার অধিকার সংরক্ষণ করতে পারি।
সমাজে এমন প্রবল অসাম্য নিয়ে কিছু দৃশ্যপট আর উপলব্ধি আমার একটা লেখায় লিখেছিলাম, অনিবার্য সেই সময়ের প্রতীক্ষায় : http://idream4life.blogspot.com/2011/05/blog-post.html
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে