কলেজ-ভার্সিটির সহপাঠিদের আলাপের মাঝে সুযোগ পেলেই *সুখ* জিনিসটা আসলে ভালো
স্যালারি, ধবল-ফ্যাশনেবল গার্লফ্রেন্ড, গাড়ি-ফ্ল্যাটের মধ্যে নাই এমন
টপিকে আলাপ ঠেলে দিতাম সূক্ষ্ম কৌশলে, সবসময়েই। প্রায় সময়েই কিছু বন্ধু
একটা কথা বলত, যাদের *স্বার্থপরতা* কথার মাঝেই ফুটে উঠতো -- "আমি আল্লাহর
কাছে চেয়ে দেখসি, যখন চাই, তখনই পাই কিন্তু সবসময় নামাজ পড়া হয়ে উঠেনা"।
অথবা, "নামাজ পড়লে আমার অনেক ভালো লাগে। মন খারাপ লাগলে আমি নামাজে যাই,
মনে ভালো হয়ে যায়"। বলাই বাহুল্য, যাদের মন ভালো হয়ে যেত, তারা আর
পরবর্তীতে পুনরায় মন খারাপ না হলে, ঠেকায় না পড়লে, বিপদে না পড়লে নামাজে
যেত না।
এইরকম কিছু বিষয় নিয়ে আমি পাজলড ছিলাম। মনে হত, যে কারণেই হোক, একজন মানুষ তো আল্লাহকে স্মরণ করছে, হয়ত আরো হিদায়াহ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যাচ্ছে ... নিজের অবস্থা যেমন তেমন ছিলো, আমিও পুরাই ভুলে ডুবে ছিলাম, এর মাঝেও ওদের এই আচরণটা সুন্দর মনে হত না। আর ওদের দেখার পরেই নিজে বিপদে পড়লে, নিজের অস্থিরতার মাঝে ভালো লাগার অনুভূতি পেতে নামাজ পড়ার ব্যাপারে আমার খুব সঙ্কোচ লাগত। মনে হত, এইসময়ে আমার আর ওদের কাজ একই হয়ে গেলেও আমাদের চিন্তার তো অনেক ফারাক! বিচিত্র ছোট ছোট ক্ষুদ্রতার প্যাঁচে পড়ে নাজেহাল অবস্থা! উত্তরও জানা ছিলো না!
আলহামদুলিল্লাহ, একটা দারুণ জিনিস শিখলাম ক'দিন আগে ইমাম সুহাইব ওয়েবের আলোচনা শুনতে গিয়ে। আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলছিলেন, অনেকে তার কাছে গিয়ে অভিযোগ করে বলেছেন, আমি অনেক বছর ধরে নামাজ পড়ি, কিন্তু আমি আসলে খুব ভালো ফিল করিনা, শান্তি পাইনা, ইবাদাতে মজা পাইনা। নওমুসলিমরা তো অল্প ক'দিন ইসলামে ফিরে এসেই দেখি অনেক শান্তি পায়, কেন?
এই প্রসঙ্গে তিনি দারুণ একটা কথা জানিয়েছিলেন। ইমাম ইবনু আতা আল্লাহ আল ইসকান্দারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, যে ব্যক্তি ভালো অনুভূতি পাওয়ার জন্য আল্লাহর ইবাদাত করে, সে একজন বোকা। সে আসলে তার অনুভূতির দাসত্ব করে, আল্লাহর নয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার ইবাদাত করতে হবে কেবলমাত্র একটা কারণেই, তা হলো, তিনি আল্লাহ। আর এই কাজের মধ্যেই আনন্দ খুঁজে নিতে হবে।
অন্যরকম একটা মাত্রা আছে এই উপলব্ধিটার মাঝে। আল্লাহ রব্বুল আলামীন হলেন মহান, তিনি এক, অদ্বিতীয়, সুন্দরতম, মহাপরাক্রমশালী। সমস্ত চিন্তা, কল্পনার শ্রেষ্ঠত্ব যেই আল্লাহর, তিনি আমাদের কোন কিছুতেই দায়বদ্ধ নন, আমরা সম্পূর্ণরূপে তার, আমরা ক্ষুদ্রের চাইতেও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র। আর আমাদের সাথে আল্লাহর কোন দেয়া নেয়ার সম্পর্ক হতে পারেনা। মহান আল্লাহ মহামহিম, বিশ্বজগতের প্রতিপালক, তিনি আমাদের মালিক আর আমরা তাঁর দাস -- এটাই আমাদের দাসত্বের কারণ। আমরা দাস হতে পেরে গর্বিত, আনন্দিত। আর স্বতঃস্ফূর্ত এই দাসত্বই আমরা করতে চাই, এতেই আমাদের আনন্দ। চিন্তাগুলো বারবার ঝালিয়ে নিলে আমাদের অন্তরের ব্যধিগুলোকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দিতে সহজ হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদেরকে তার অনুগত ও সন্তুষ্টি অর্জনকারী বান্দা হিসেবে কবুল করে নিন।
*প্রাসঙ্গিক ভিডিও লেকচার লিঙ্ক - I Tried But It Didn't Work - ইমাম সুহাইব ওয়েব :: http://www.youtube.com/watch? v=an30sWAUr74
[১২/১২/১২]
এইরকম কিছু বিষয় নিয়ে আমি পাজলড ছিলাম। মনে হত, যে কারণেই হোক, একজন মানুষ তো আল্লাহকে স্মরণ করছে, হয়ত আরো হিদায়াহ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যাচ্ছে ... নিজের অবস্থা যেমন তেমন ছিলো, আমিও পুরাই ভুলে ডুবে ছিলাম, এর মাঝেও ওদের এই আচরণটা সুন্দর মনে হত না। আর ওদের দেখার পরেই নিজে বিপদে পড়লে, নিজের অস্থিরতার মাঝে ভালো লাগার অনুভূতি পেতে নামাজ পড়ার ব্যাপারে আমার খুব সঙ্কোচ লাগত। মনে হত, এইসময়ে আমার আর ওদের কাজ একই হয়ে গেলেও আমাদের চিন্তার তো অনেক ফারাক! বিচিত্র ছোট ছোট ক্ষুদ্রতার প্যাঁচে পড়ে নাজেহাল অবস্থা! উত্তরও জানা ছিলো না!
আলহামদুলিল্লাহ, একটা দারুণ জিনিস শিখলাম ক'দিন আগে ইমাম সুহাইব ওয়েবের আলোচনা শুনতে গিয়ে। আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলছিলেন, অনেকে তার কাছে গিয়ে অভিযোগ করে বলেছেন, আমি অনেক বছর ধরে নামাজ পড়ি, কিন্তু আমি আসলে খুব ভালো ফিল করিনা, শান্তি পাইনা, ইবাদাতে মজা পাইনা। নওমুসলিমরা তো অল্প ক'দিন ইসলামে ফিরে এসেই দেখি অনেক শান্তি পায়, কেন?
এই প্রসঙ্গে তিনি দারুণ একটা কথা জানিয়েছিলেন। ইমাম ইবনু আতা আল্লাহ আল ইসকান্দারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, যে ব্যক্তি ভালো অনুভূতি পাওয়ার জন্য আল্লাহর ইবাদাত করে, সে একজন বোকা। সে আসলে তার অনুভূতির দাসত্ব করে, আল্লাহর নয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার ইবাদাত করতে হবে কেবলমাত্র একটা কারণেই, তা হলো, তিনি আল্লাহ। আর এই কাজের মধ্যেই আনন্দ খুঁজে নিতে হবে।
অন্যরকম একটা মাত্রা আছে এই উপলব্ধিটার মাঝে। আল্লাহ রব্বুল আলামীন হলেন মহান, তিনি এক, অদ্বিতীয়, সুন্দরতম, মহাপরাক্রমশালী। সমস্ত চিন্তা, কল্পনার শ্রেষ্ঠত্ব যেই আল্লাহর, তিনি আমাদের কোন কিছুতেই দায়বদ্ধ নন, আমরা সম্পূর্ণরূপে তার, আমরা ক্ষুদ্রের চাইতেও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র। আর আমাদের সাথে আল্লাহর কোন দেয়া নেয়ার সম্পর্ক হতে পারেনা। মহান আল্লাহ মহামহিম, বিশ্বজগতের প্রতিপালক, তিনি আমাদের মালিক আর আমরা তাঁর দাস -- এটাই আমাদের দাসত্বের কারণ। আমরা দাস হতে পেরে গর্বিত, আনন্দিত। আর স্বতঃস্ফূর্ত এই দাসত্বই আমরা করতে চাই, এতেই আমাদের আনন্দ। চিন্তাগুলো বারবার ঝালিয়ে নিলে আমাদের অন্তরের ব্যধিগুলোকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দিতে সহজ হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদেরকে তার অনুগত ও সন্তুষ্টি অর্জনকারী বান্দা হিসেবে কবুল করে নিন।
*প্রাসঙ্গিক ভিডিও লেকচার লিঙ্ক - I Tried But It Didn't Work - ইমাম সুহাইব ওয়েব :: http://www.youtube.com/watch?
[১২/১২/১২]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে