১৯ মার্চ, ২০১৪

আমাদের সম্পর্কগুলো সচরাচর খুব নাজুক হয়

আমাদের সম্পর্কগুলো সচরাচর খুব নাজুক হয়। টিকিয়ে রাখতে হলে শ্রম দিতে হয়, নতুনত্ব আনতে হয়। হাদিস থেকে শিখেছিলাম, বিরতি দিয়ে দিয়ে পরস্পরের সাথে মিলিত হলে সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়। এরপর থেকে দ্বীনি ভাইদের সাথে একটু বিরতি বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। এতে বিরতির পরের প্রথম দেখায়, আন্তরিক উষ্ণতাটুকু অনুভব করে সেই জ্ঞানটার নিপুণতা অনুভব করেছি।

কিন্তু, পরিবারের সম্পর্ক? সেখানে তো বিরতি দেয়ার উপায় নেই। এই সম্পর্কগুলো নিত্যদিনের, আটপৌরে ব্যাপার। এখানে থাকে পারস্পারিক সাহায্য-সহযোগীতা ও নির্ভরশীলতার ব্যাপার। এখান থেকেই তৈরি হয় পরস্পরের প্রতি দয়াশীলতা। কিন্তু তবুও, প্রতিদিন একই মানুষ, একই ধরণের জীবনধারণ, বাইরে থেকে ঘরে ফেরা, পরিবার ও দেশ নিয়ে মন্তব্য -- সবকিছুতে বাক্যগুলোও যেন একই রকম...

একটা উপায় খুঁজে পেয়েছি জীবনে। তা হলো, নিজের মাঝে পরিবর্তন আনা। এই পরিবর্তন উদ্ভট কিছু নয়, বরং প্রতিদিন অন্তত কিছু শেখা। প্রতিদিন নিজেকে আগের চেয়ে একটু ভালো মানুষে উন্নীত করা। প্রতিদিন একটু কম সমালোচনা করা, একটু বেশি আশাবাদী আলাপ করা।

পরিষ্কার পানির বদ্ধ জলাধার দীর্ঘদিন একই রকম করে রেখে দিলে তাতে শ্যাওলা পাওয়া যাবে একসময়। কিন্তু, স্রোতময় সমুদ্রের মাঝে ময়লা ফেললেও তা পরিষ্কারই রয়ে যায়। আমাদের সত্ত্বাকে তাই প্রতিদিন একটু হলেও নতুন চিন্তায়, নতুন উদ্দীপনায়, নতুন ভালোবাসায় উদ্বোধন করা দরকার। আমাদের চিন্তা আর জ্ঞানের বিশালতাকে সমুদ্রের মতন করে আর ভালোবাসার ও স্বপ্নের গতিময়তাকে স্রোতের মতন করে আমাদের সত্ত্বার মাঝে আমরা ময়লা-আবর্জনা-কষ্টের জঞ্জালকে দূরে সরিয়ে দিতে পারবো ইনশা আল্লাহ।

প্রতিদিন অন্তত একটা কুরআনের আয়াত থেকে অনুধাবন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রেখে যাওয়া মহান জীবনাদর্শ থেকে নেয়া অন্তত একটা ঘটনাকে অনুসরণের চেষ্টা করলে, নিজেকে বদলে দেয়া যায় অনেকখানি। প্রিয়জনদের সাথে আলাপচারিতায় একটা নতুন বিষয় যদি হয় এমন কিছু যা হৃদয়কে আলোকিত করে, সেই সম্পর্কগুলো গতানুগতিকতার হাত থেকে হয়ত মুক্তি পেতে পারে...

[১৮ মার্চ, ২০১৪]