৬ মার্চ, ২০১৪

মনের জানালা মাঝে # ৮



(৮০)
সবকিছুর একটা শ্রেষ্ঠ সময় থাকে, একটা সময় নির্দিষ্ট সময় থাকে যেসময় সে পূর্ণ বিকশিত হয়, শক্তিশালী হয়। নাইট কুইন ঠিক রাতেই বেলাতেই যেমন সুশোভিত হয়। চাঁদ পূর্ণ আলোকে আলোকিত হয় পূর্ণিমার রাতে, একটি মাসকে চাঁদের জীবন ধরলে ঠিক ১৪ এবং ১৫ তম দিনটিও চাঁদের যৌবন, সে রাতগুলোতে তার উপচে পড়া আলোয় ভেসে যায় বিশ্বচরাচর। পূর্ণিমার পরেও চাঁদ থাকে, আলো দেয়, পূর্ণিমার মতন আর হয়না।

সৃষ্টির মাঝে এমন দ্যোতনা বুঝি আরো অনেক খুঁজে পাওয়া যাবে। শ্রেষ্ঠ সময়টি পেরিয়ে গেলে যা থাকে, তা শুধুই সময়ের অতিক্রমণ। সঠিক সময়ের কাজগুলোর মূল্য অনেক। প্রকৃতির সাথে মানুষের অনেক মিল, সৃষ্টিজগতের বিশালতার মাঝে তাই শেখার আছে অনেক কিছু। অন্ততঃ সবাই-ই সেই মহান স্রষ্টা, আল-খালিকের হাতের নিপুণতায় তৈরি। শেখার আছে অনেক কিছু, কিন্তু আমরা শিখিনা...  

(৮১)
প্রতিটা মানুষই একেকজন যোদ্ধা। প্রত্যেকের জীবনেই রয়েছে বেদনা-যন্ত্রণা-কষ্টের মহাকাব্য। প্রতিটি সফল মানুষের রয়েছে খুবই কষ্টকর অতীত। সফলতার পাওয়ার স্বপ্নে বিভোর থেকে আমরা ভুলে যাই কষ্ট করা যে অবধারিত।  কষ্ট তাই স্বাভাবিক। বিষয় হলো, কষ্টটা কার জন্য করছি। যদি জীবনের ঘটনাগুলোকে আল্লাহর দেয়া পরীক্ষা, আমাদের জন্য আল্লাহর পছন্দ হিসেবে মেনে নিই, তাহলে জীবনটা সরল হয়ে যায়।  দিনশেষে মোটা দাগে কষ্টের আলাপ একটাই --কষ্ট সবাই করে। কেউ করে আল্লাহর জন্য, কেউ করে দুনিয়ার জীবনের সাময়িক কিছু সফলতার আশায়।

(৮২)
কোন মানুষের কাছে কিছু আশা করা মানেই নিজের মাঝে যন্ত্রণার সৃষ্টি করা। 'এক্সপেকটেশন' কখনই ভালো বিষয় না। কেবল আল্লাহর কাছে আশা করা যায়, দু'আ করে, কেননা ওটা কোনদিন ব্যর্থ হবে না। সঠিকভাবে করা প্রতিটি দু'আ গ্রহণ হয়, তার অফুরন্ত ভান্ডার থেকে পাওয়া যাবেই, এখন অথবা আখিরাতে।  তবু ঘুরে ফিরে মানুষের কাছে আশা করি, মনে হয়, ভালোবাসা পাওয়া যেন আমার অধিকার, যেন কিছুটা যত্ন-সম্মান আর সহমর্মীতা পাওয়ারই কথা-- এটা খুবই ভুল চিন্তা। মানুষ কোনদিন কিছুতেই আমাদের মনের আশা কিছুতেই পূরণ করতে পারবে না।

চিন্তার জগতটা আর ধরণটা তাই বদলে দিতে হবে। নইলে জ্বলে-পুড়ে খাক হয়ে যেই কষ্ট পাবেন -- সেটার কোন 'মিনিং' নেই, বিনিময়ে এই জীবনে কিছু পাবো না; আখিরাতেও পাওয়া যাবে না কিছুই।

(৮৩)
অনেক কিছুই লেখার ইচ্ছা ছিলো জীবনে। সময় পেরিয়ে যাচ্ছে কল্পনার চেয়ে দ্রুতবেগে। পেছনে ফিরে তাকালে বুক হু হু করে ওঠে। যখন বুঝি অনেক কিছুই হবে না জীবনে, কিছুতেই হবে না -- তখন কেমন যেন হাহাকার লাগে। জীবনটা অনেক ছোট, খুব বেশি অনিশ্চয়তার। অথচ সবাই কেমন শক্তপোক্ত হয়ে চলে, নিশ্চিত তারা ভ্রমের মাঝে আছে। ভ্রমের মাঝে থাকার আনন্দ অনেক, নিজেদের সুখী করা যায়। অর্থহীন কথা আর চিন্তা দিয়ে নিজেদেরকে *বুঝ* দেওয়া যায়।

(৮৪)
আমি সারাজীবন এখানে, ওখানে, সেখানে আমার সমস্যাগুলোর উৎস খুঁজে বেড়িয়েছি। সমাধানও খুঁজেছি যত্রতত্র...

অবশেষে জেনেছি সমস্যা আমার মাঝেই ছিলো, আমার মনে, আমার আত্মার মাঝে। সমাধানও আমার হাতেই ছিলো, আমার নাগালেই ছিলো...

(৮৫)
আমরা ভুল থেকে শিক্ষা না নিলে, ভুলগুলোই আমাদেরকে শিক্ষা দেয়...

(৮৬)
যখন কিছু দেখার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিটা আমরা বদলে ফেলি, যা দেখি তা বদলে যায়।

(৮৭)
আমি জীবনে এমন অনেক সমস্যা ও আতঙ্কে জর্জরিত ছিলাম, যা আসলে কখনো পৃথিবীতে ছিলো না।

(৮৮)
একসময় আমি সংখ্যায় বিশ্বাসী ছিলাম। এখন আমি গুণগত মানে বিশ্বাসী।

(৮৯)
অনেক সময় কিছু যখন প্রকট দুনিয়াবী এবং আজেবাজে ফালতু কথা শুনতে না চাইলেও শুনতে হয় তখন সেসব কথার প্রত্যুত্তরে মনে মনে অনেকে যেসব কথা বলেন, বক্তারা সেসব শুনতে পেলে কেমন খেপতো ভাবলে চেপে রাখা হাসি প্রকাশ হয়ে যেতে পারে।

সামনে বসেও সম্মান/সমীহ বজায় রেখে বিরক্তিকর কথার উত্তর মনে মনে দেয়ার বিষয়টা বেশ দারুণ!! :P