৮ আগ, ২০১৩

বোধ, শরীর মন ও আবেগ নিয়ে কিছু কথা

জীবন থেকে আমার একটা উপলব্ধি হচ্ছে, ব্যক্তিগত এবং সামষ্টিক যেকোন উন্নতির মূলে থাকতে হবে উত্তম চরিত্র, এর অভাবে বর্তমান সমাজ তথা পৃথিবীর ক্রমঅধোঃগতি হচ্ছে দ্রুতবেগে। উত্তম চরিত্রের মূলে রয়েছে উত্তম জ্ঞানার্জন (বইপড়া সর্বাগ্রে এবং সৎসঙ্গ ও অন্যান্য) যাকে বাড়াতে হবে, আমাদেরকে রোধ করতে হবে সময়ের অপচয়। জ্ঞান না থাকলে যত ভালো মনই থাকুক, তাকে ব্যবহার করা যায় না সঠিক উপায়ে। আর জ্ঞান থাকতে হবে, অবশ্যই থাকতে হবে আন্তরিকতা,ইখলাস।

একই সাথে নিজেকে যেকোন বিষয়ে প্রশ্ন করার মানসিকতাটা, নিজেকে চিন্তা করানোর পদ্ধতিটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। জ্ঞান এবং বোধ দুইটা ভিন্ন জিনিস। একটা মানুষের কিছু জানা থাকলেই সে বুঝে -- এমন না। আমাদের সেই বোধটাকে গড়ে তোলা দরকার। আবেগ কমাতে হবে, দ্বীন এবং দুনিয়া উভয়ক্ষেত্রেই আবেগ কমিয়ে চিন্তা ও বুদ্ধিকে ব্যবহার করতে হবে। এই উপলব্ধি এবং প্রয়োগেও মনের মধ্যকার বোধের উত্তম অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। না হলে আবেগ জ্ঞানকে অতিক্রম করে, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হয় না।


ইসলামের যে অপার সুন্দর জিনিসটা আমাকে মুগ্ধ করে রাখে তা হলো এর সার্বজনীনতা। যেকোন সময়ে, যেকোন অবস্থাতে আল্লাহ অন্তরের, জীবনের, সমাজের এবং রাস্ট্রের কেন্দ্রেই থাকেন অথচ একই নিয়ম মানার ব্যাপারে পারিপার্শ্বিকের উপরে ভিত্তি করে শিথিলতা/কাঠিন্য খুঁজে পাই। আমাদের দ্বীন সত্যিই সবসময়ের আধুনিক এক জীবনবিধান। অথচ কতই না মূর্খ আমরা! আমাদের অজ্ঞানতার সুযোগে আল্লাহর শত্রুরা আমাদেরকে অপদস্থ করতে সুযোগ পাচ্ছে বারংবার। অথচ চুড়ান্ত বিজয় তো কেবল আমাদেরই।

আমাদের প্রচুর বই পড়া দরকার, আন্তরিকভাবে কাজ করা দরকার। বই পড়া, জানা এবং তাকে উপলব্ধি করার এই প্রক্রিয়াটির অভাব এখন চরমভাবেই প্রকট, মুসলিম সমাজে তো বটেই, গোটা বিশ্বেই। ফলস্বরূপ তো আমরা দেখতে পাচ্ছি এমন সব প্রজন্ম যারা তাদের শরীরকে মাথার চাইতে শতগুণ বেশি প্রাধান্য দেয়।

[০৮ আগস্ট, ২০১৩ ঈসায়ী]