২৫ এপ্রি, ২০১৪

মনের জানালা মাঝে # ১২


(১২৬)
অনেক সম্পদশালী রোলস রয়েস গাড়িওয়ালা কারো সামনে কিংবা ঝা তকতকে কর্পোরেট হাউসের ভেতরে আটপৌরে সাধারণ পোশাকের আমি হয়ত কখনো কখনো *অস্বস্তি* অনুভব করি ...

কিন্তু আজ টের পেলাম, বিশাল সমুদ্রের সামনে বা পাহাড়ের চূড়ায়, জ্ঞানী মানুষদের সামনে আমি অস্বস্তি নয়, রীতিমতন *অসহায়* অনুভব করি। প্রবল অসহায়... যে অসহায়ত্ব আমাকে দংশন করে...

জ্ঞানের সাথে কি সমুদ্রের অনেক মিল? দুটোই কি আমার জন্য বসে বসে দূর দিগন্ত দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলার জন্যই ফিরে ফিরে সামনে আসবে?

(১২৭)
মানুষকে কষ্ট-যন্ত্রণা দিলে তার ভোগান্তির আগুনে আপনাকে জ্বলতেই হবে..

(১২৮)
ক্রমাগত অভাবনীয় এবং অনাকাঙ্খিত ধাক্কা খাওয়ার ব্যাপারগুলোতে অবাক হবেন না, এটাই স্বাভাবিক। এমনটা না হওয়াই অবাক করা ব্যাপার!

(১২৯)
কোন মানুষের সাথে কথা বলে যদি নিজেকে ছোট আর ভুলে ভরা মনে হয়, আপনি আশাবাদী হতে না পারেন, বুঝবেন আপনি ভুল মানুষের সাথে আলাপ করেছেন। ভবিষ্যতে তার থেকে দূরে থাকবেন।

(১৩০)
কারো ভালোবাসা পাওয়ার মাঝে রয়েছে আনন্দ,
কাউকে ভালোবাসতে পারার মধ্যে রয়েছে মুক্তি।

(১৩১)
প্রতিদিন চারপাশে বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের ধ্বংস করে জাহান্নামের পথে গর্ত খুঁড়তে থাকে মেধা ও শ্রম দিয়ে যখন...

তখনো কিছু মানুষ জান্নাতে যাবার প্রবল স্বপ্নে ছোট ছোট ভালো কাজ করতে থাকে প্রতিদিন, আত্মসমালোচনা আর কল্যাণমুখী শ্রমের বেলুনে চেপে উড়ে যেতে থাকে নিঃশব্দে...

গন্তব্যে পৌঁছানো আসলে একটা সিদ্ধান্ত, একটা প্রার্থনা, আর প্রতিদিনের কিছু কাজ...

(১৩২)
অযুর পানির সাথে সাথে যখন অশ্রুগুলো ধুয়ে যায়, তখন অদ্ভুত একটা অনুভূতি হয়...

(১৩৩)
কম চ্যাটিং এবং মোবাইলে বা আড্ডায় বেশিক্ষণ অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা না বলা অন্তরকে হু-হু শূণ্যতা থেকে অনেকখানি রক্ষা করে। তবে, কুরআন তিলাওয়াত এবং নিয়মিত নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করলে অন্তর প্রায় পুরোপুরি প্রশান্তি পায়...

(১৩৪)
আমরা আসলে যত বেশি ভালোবাসি, ততই প্রিয়জনের ভালো গুণগুলোকে বড় করে দেখে তাতে মুগ্ধ হতে থাকি আর সীমাবদ্ধতা ও ত্রুটিগুলোকে এড়িয়ে গিয়ে ভুলে যেতে থাকি...

(১৩৫)​
শেষ রাত থেকে ঘুম হয়নি। উঠে বসে ছিলাম। ফজরের পরে জোর করে ঘুমুতে চাইলেও কয়েকবার কেমন অস্পষ্ট স্বপ্ন দেখে ধরফর করে উঠে বসলাম। উপায়ন্তর না পেয়ে বেশ সকাল সকাল তাই অফিসে রওনা হয়ে গেলাম।

অমন সকালে যেমন ফুরফুরে মেজাজে অফিসে আসার কথা, তেমন মেজাজ ছিলো না। একটু যেন বিরক্তই ছিলাম। রিকসা থেকে নামতেই এক মধ্যবয়েসি মহিলা বেশ অধিকারের ভঙ্গিতে শক্তপোক্ত গলায় টাকা দাবী করলো... ভিক্ষা চাইছেন তিনি। বিরক্তি আমার ধুম করে বেড়ে গেলেও নিচু স্বরে "মাফ করেন চাচী" বলে এগিয়ে গিয়ে বিরক্তি ঝাড়লাম যেন সিঁড়িগুলোর উপরে। সিড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে খেয়াল হলো, এই মূহুর্তে যদি পা ফসকে পড়ে গিয়ে গড়াতে থাকি আর ঐ ভিখারিনী চাচীর সামনে গিয়ে পড়ি -- আমার এই বিরক্তি কি আর থাকবে? আমি কি আর তখন ওভাবে "মাফ করেন" বলার সময়ের মতন করে কথা বলতে পারবো?

আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে কৃতজ্ঞ হবার মতন শত-শত জিনিস মনে হয় চারপাশে থাকে। টের পাইনা আমরা। মাঝে মাঝে টের পেলেও হয়ত আমলে নিই না।