১ এপ্রি, ২০১৪

নাটক-সিনেমা-উপন্যাসে সবকিছু এক্সট্রিম হয় কিন্তু বাস্তব জীবন তেমন নয়

নাটক-সিনেমায় সবকিছু বেশি বেশি হয়। যখন প্রেম হয়, তখন বেশি বেশি। নায়ক নায়িকা কলেজে ব্যাগ ছাড়া বই বহনকালে ঠুয়া খেয়েই প্রেমে পড়ে যায়। আবার তাদের ট্র্যাজেডিটাও বেশি বেশি। রাস্তার রিকসাওয়ালা কোটিপতি চৌধুরী সাহেবের মেয়ের সাথে প্রেম করে। রোমিও আর জুলিয়েটের পরিবারের শত দ্বন্দ্বের পরেও তাদের পেরেম চলতেই থাকে। একটা বেকুব মরে দেখে অপরজনেও আত্মহত্যা করে। এইরকম 'এক্সট্রিম' (Extreme) বিষয় মানব জীবনের জন্য স্বাভাবিক না। আসলে, বাস্তবতা আর নাটক-উপন্যাসের কোন তুলনাই চলে না।

বাস্তব জীবন অনেক অন্যরকম। এখানকার ট্র্যাজেডিতে এইরকম প্রেম কাহিনী থাকে না। এই ট্র্যাজেডিতে আত্মসম্মানবোধ রাখতে, সামাজিক মর্যাদা অটুট রাখতে যে কষ্ট হয়, তার মাঝে সব পেরেম-টেরেম হারিয়ে যায়, পালিয়ে যায়। বাস্তব জীবনে রাস্তার পাশের খুপরিতে বড় হওয়া পিচ্চিটার কাছে ডাবগাছের শাখাটা নিয়ে আনন্দের খেলাধূলার অংশ থাকে। চৌধুরী সাহেবদের কাছে চাঁদাবাজের আতঙ্ক, মেয়ের বেয়াড়া হয়ে যাওয়া, শাশুড়ির ক্যান্সার ধরা পড়ায় কেমোথেরাপির শিডিউল সামলানোর মতন কষ্ট থাকে। সব চৌধুরী সাহেবরা এখন নাইট ড্রেস পরে ডুপ্লেক্সে ঘুমাতে পারে না।

বাস্তব জীবনটা সুন্দর, তবে ভাষায় অপ্রকাশ্য। প্রতিটি মানুষের জীবনই একেকটা গল্পের চেয়েও বেশি। প্রত্যেকের জীবনেই সুন্দর কিছু গল্প আছে, কিছু প্রাপ্তি আছে, কিছু তীব্র বেদনা আছে। সব মিলিয়েই, সবাই মানুষ। এই সকল অপ্রাপ্তি-বঞ্চনা-গঞ্জনার বিপরীতে উত্তম প্রতিদান মিলিয়ে দিবেন আল্লাহ। বেঁচে থাকার সুখ আর দুঃখ সবই আল্লাহর জন্যই। সবাই আমরা তারই, তার কাছেই তো ফিরে যাবো। দুনিয়াতে এসে এই ফিরে যাওয়া অবধি কাহিনীগুলো হোক অনন্যসুন্দর এক ভালোবাসার মহাকাব্য...

[৩১ মার্চ, ২০১৪]