৬ জানু, ২০১৪

সব কিছুর পরে একটাই আশা, একটাই স্বস্তি

​ইদানিং যা হয়, তেমন কোন পড়াশোনাই হয়না, তবে গুতাই এখানে-ওখানে। প্রায়ই আবিষ্কার করি, আমার বলা/চিন্তা করা সব কথাই আসলে বলা হয়ে গেছে, স্কলাররা বলে দিয়ে গেছেন। পড়া হয়নি তাই জানিনা। অনেকসময় ব্যাপক চিন্তাভাবনা করে একটা কথা ভেবে বের করে রাখার পরে দেখেছি অমুক কথার চেয়ে অনেক সুন্দর করে আরো বিস্তৃত কথা সংক্ষেপে বলে গিয়ে গেছেন অন্য কোন পূর্বেকার মানুষ, যাদের আল্লাহ জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করেছিলেন। তাদের কথাবার্তা পড়লে বলার কিছু খুঁজে পাইনা। নিজের পুরোনো কথাবার্তাগুলোর কথা ভেবে লজ্জিত হয়ে যাই, না জানি কী লিখে রেখেছি সেখানে...


যাই হোক, সেসব তো অনেক গভীর উপলব্ধির কথা, কিছু হালকা-পাতলা নিজের কথা বলি এবার। আমরা আসলে সবাই নিজের স্কেলে পৃথিবী দেখি, সবাইকে নিজের মতন করে হিসেব করি। আল্লাহর দেয়া এই বিশাল পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের জীবনই বিষ্ময়কর। আল্লাহ কী তুমুল ভিন্নতা আর বৈচিত্র্য দিয়ে একেকটি জীবন উপহার দিয়েছেন -- এই বৈচিত্র্যের একতা কেবল ইসলামেই হয়, অন্য কোথাও নয়। অন্য বিশ্বাসের লোকেরা বৈচিত্র্যকে সহ্য করে না, কিন্তু যারা আল্লাহকে রব মেনে সেই বিশ্বাসকে বুকে নিয়ে চলেন, তারা যেভাবেই হোক, জীবনের জটিলতা সেরে পরক্ষণেই ফিরে আসেন আল্লাহর ইবাদাতে, দাওয়াতের কাছে আন্তরিকভাবে। বৈচিত্র্য নিয়েও কেবল বুকের ভিতরের সেই স্পিরিটটার কারণেই আমরা এক হতে পারি।

আমাদের উচিত না সবাইকে এক করে ফেলা। আবার অন্যদের মত করে নিজেকে হিসেব করতে গেলেও আমরা দ্বিধান্বিত ও বোকা হয়ে যাবো। কারো জীবনে হয়ত একটা বিষয় অনেক জটিল, অন্যের জন্য হয়ত তা অনেক সহজ। কারো জীবনে যা নি'আমাত হিসেবেই কেউ গুণে না, অন্যের জীবনে তা পরম চাওয়া। 
সব কিছুর পরে একটাই আশা, একটাই স্বস্তি -- আল্লাহ সবাইকে তার নিজ অনুগ্রহে দান করেন। প্রতিটি জীবন তার ভালোবাসায় বেড়ে ওঠে। কেউ কারো মতন নই আমরা, কেউ কখনো হতেও পারবো না। ডানে-বামে তাকানো আসলে বোকামি... খুব স্মার্ট মনে করা লোকটি/মহিলাটি হয়ত সবচেয়ে খুবই বোকা। জানেও না সে বিভ্রমের মুগ্ধতায় আনন্দে কাটিয়ে দিচ্ছে। আল্লাহর হিসেবে সে হয়ত কঠিন ধরা খাবে। যিনি খুব সাদামাটা অতি সাধারণ মানুষ, তার সারল্যে কেউ হয়ত হেসে নেয় -- আল্লাহ হয়ত তার অজস্র পুরষ্কার আখিরাতের জন্য রেখে দিয়েছেন। এসব নিয়ে হিসেব করাই বিভ্রম, বোকামি, নির্বুদ্ধিতা, নিজের সাথে নিজের হঠকারিতা।

[০৩ জানুয়ারি, ২০১৪]