১৬ সেপ, ২০১২

অতীত স্মৃতি এবং খোঁটা দেয়া

অতীত স্মৃতি
অতীতের স্মৃতি সবাইকে ভোগায়। অতীতের ভুল অন্তরকে বিদ্ধ করে, অতীতের কষ্ট ক্রমাগত বেদনার উদগীরণ করে। বিশেষ করে যেই মানুষ আল্লাহকে ভালোবেসে, ইসলামের অনুপম সৌন্দর্যকে অনুধাবন করে দ্বীনকে ধারণ করতে চায় -- তাকে সেই অতীতের পাপ দংশন করতে থাকে, সেইটা বাঁধন-হারা কষ্টে রূপান্তরিত হয় যখন আরেকজন মুসলিম/মুসলিমাহ সেই ভুল নিয়ে কটাক্ষ করে।


ইসলামের নির্দেশনা অন্যরকম! যিনি দ্বীনের মাঝে এলেন, তিনি তো আপনারই দ্বীনী ভাই/বোন। তার ফেলে আসা সময়কে হয়ত আল্লাহ পুরোটাই ক্ষমা করে দিবেন, আমরা জানিনা। কিন্তু তার অতীতের ভুল মনে করিয়ে দিলে তার নিজেকে উন্নত করার গতিকে হয়ত আমরাই স্তব্ধ করে দিলাম। কাউকে কষ্ট দেয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই। বরং সৎকাজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অগ্রসর হবার আদেশ রয়েছে। ভুলবশত বা অজ্ঞতাবশত একটা কথা বলে ফেলে আমরা এমন কষ্ট কাউকে দিয়ে ফেলতে পারি, যেই ব্যাপারে হয়ত ওই মানুষটার বুকে গভীর খারাপ লাগা আছে -- খোঁচা দিয়ে কষ্ট জাগিয়ে দিয়ে তার দ্বীনের পথে হোঁচট খাওয়ানোর অপরাধ থেকে আমরা মুক্তি পাবো কি?

এই প্রসঙ্গে বলছি, কারণ আমাদের মাঝে অসংখ্য মুসলিম মুসলিমাহ আছেন, যারা মুসলিম পরিবারে জন্ম নিয়েও ইসলামকে নতুন করে উপলব্ধি করেন। তাদের পথটাও প্রতিবন্ধকতাময় থাকে। তাদেরকে আন্তরিকভাবে বুকে টেনে এনে পথ দেখিয়ে একসাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের দায়িত্ব আমাদেরই। যিনি তাওবাহ করেন, আল্লাহর কাছে তার মর্যাদা অন্যরকম! ইকরিমা বিন আবু জাহল আর খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) জীবনের প্রথম পর্যায়ে ইসলামের দুশমনি করেছিলেন, আল্লাহ তাদের পরবর্তী জীবনকে করেছেন উন্নত ও সম্মানিত।

খোঁটাদেয়া বা বিরক্তি প্রকাশঃ

প্রতিটা মানুষ জীবনের প্রতিটা কাজের হিসাব দিবে, সে যে কারণেই হোক। ফেসবুকে বা ব্লগে কোন সম্মানিত (বা সাধারণ) মানুষকে নিয়ে অসম্মান করে কথা বলে নিজের আরাম লাগার কথাটা হলেও।

গীবত করার অপরিসীম আনন্দ ইসলামের শিক্ষা না। সে যেই মানুষই হোক না কেন। তার কাছে গিয়ে কথা বলার সুযোগ যদি একটুও থাকে, তবে পিছনে কুৎসা গেয়ে (সত্য হোক বা মিথ্যা) আনন্দ পাওয়ার চাইতে তাকে জানানোই সঠিক আচরণ। একটা দল বা গোষ্ঠীকে সমর্থন করছি বা ইসলামের পথে চলা কোন একটা গাড়িতে উঠে বসেছি বলেই হিসাব সহজ হয়ে যাবে বা জান্নাত নিশ্চিত, এমন সম্ভাবনা তো নাই-ই। হিসাব নিবেন মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা, যিনি পরম মহাবিচারক, যিনি সবারই পালনকর্তা, যিনি সবার রব, যার কাছে সবাই সমান।

আমাদের প্রতিটা কথার হিসেব হবে। প্রতিটা লেখাই কিন্তু রয়ে যাচ্ছে  অনলাইনের ডাটাবেজগুলোতে, কিরামান কাতিবিন ফেরেশতাদের কাছেও। আপনার/আমার ভুল কথার জন্য কেউ যদি ভুলপথে পরিচালিত হয়, তার হিসেবও আমাদেরকেই বইতে হবে। অনুগ্রহ করে কারো ব্যাপারে খারাপ কথা বলার আগে সাবধান। খুব সাবধান, খুব!


"অতঃপর কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে।" ... [সূরা যিলযাল ৭-৮]

"কোন সৎকাজকে অবজ্ঞা করো না, যদিও তা তোমার ভাই এর সাথে হাসিমুখে সাক্ষাত করার কাজ হয়।" [মুসলিম]

@ হাদিস রেফারেন্সঃ রিয়াদুস সলিহীন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে