১ এপ্রি, ২০১৩

নিখুঁত শিল্পী এবং ন্যায়ের সৃষ্টি

আমি যখন বান্দরবানের পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে দূর দিগন্তে তাকিয়ে ছিলাম, তখন আমার রক্তবিন্দুর প্রতিটি কণা বোধকরি সেই সুমহান আল্লাহর সৃষ্টির সৌন্দর্যে মোহিত হয়েছিলো। বঙ্গোপসাগরের পানি ঘেঁষে বসে থাকা বিকেলেও নীল জলের তরঙ্গের দোলা আমার হৃদয়ের প্রতিটি কণাকেই দুলিয়েছিলো -- কানে বাতাস এসে ফিসফিস করে জানিয়ে গিয়েছিল, এ সেই মহান সত্ত্বার সৃষ্টি, যিনি নিরুপম, যিনি সুন্দর, যিনি নির্ভুল। রাহমানের প্রতিটি সৃষ্টির নির্ভুল ও অনুপম শৈলীকে দেখেই তার প্রতি আমাদের ভালোবাসাগুলো জেগে ওঠে, জানি এই সুশৃংখল পৃথিবীর স্রষ্টা পরম সুন্দর কেউ হতেই হবে, কাউকে থাকতেই হবে যিনি সবকিছুর মালিক, নইলে কী করে মানুষের চেহারা এত সুন্দর হয়? সকালে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে থাকি যখন, সামনের মানুষগুলোর দিকে চোখ যেতে কতবার নাকমুখ এখান থেকে ওখানে সরিয়ে সাজিয়েছি কল্পনায়, নাহ! অভ্যস্ততাই শুধু না, আসলেই আমার কল্পনায় এর চাইতে সুন্দর রূপ ভাবতে পারিনা। কার্টুন নেটওয়ার্কে সেদিন অ্যালিয়েন হিসেবে মানুষের মতই ৪হাতওয়ালা প্রাণীর রূপ দেখে কেবল হাসি পাচ্ছিলো। বুঝলাম, তিনি সত্যিই সেরা শিল্পী।


এই শহরের রাস্তায় হাঁটি, সামনে পেছনে কদর্য ভাষা, কুৎসিত গালির বৃষ্টি দেখি, মানুষের আহাজারি শুনি, ব্যথিত হই। পত্রিকায় দেখি অসাম্যের জগত, ধ্বংসের খবর, জুলুমের খবর, মিথ্যে দোষারোপের চিত্র ও আগ্রাসনের স্বরূপ জানি। চোখের কোণে পানি আসে শোষিতের আহাজারিতে, মজলুমের কষ্ট দেখে। এসব দেখে আমার সেই অনাগত সময়ের প্রতি ভালোবাসা প্রগাঢ় হয়। আমি উপলব্ধি করি, যে বিশ্বজগত যিনি এত নিপুণ ও সাম্যের মাঝে চলছে, সেখানে এই মানুষগুলো কেবল কষ্ট পেয়ে যাবে বা কিছু মানুষ ক্রমাগত অন্যের হক নষ্ট করবে, শোষণ করবে -- আর এই অসাম্য, অনিয়ম আর অন্যায়ের ফল তারা পাবে না, তা হতে পারে না। আমি সেই মহান পবিত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার সেই দিনটির বিচারব্যবস্থার প্রতি বিশ্বাস রাখি, যেদিন তিনি পুংখানুপুঙ্খ হিসাব নিবেন, প্রতিটি অন্যায়ের, প্রতিটি আচরণের, প্রতিটি যন্ত্রণার। সেদিন অত্যাচারকারীদের অত্যাচারের শিকার হওয়ার বদৌলতে কারো অনন্তজীবন হবে সুখময়, আর সেই অন্যায় করার কারণেই কারো হবে অনন্ত জীবনের দহন, যে দহনে মৃত্যু হয়না, মৃত্যুহীন জীবনের অনন্ত শাস্তি...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে