ভার্সিটি জীবনে অনেককে 'ছ্যাঁকা' খায়। ছ্যাকার আগে তো প্রেম হতে হয় -- আমাদের সময়ের বেশিরভাগ প্রেমের সূত্রপাত ছিলো কলেজ লাইফের কোচিং সেন্টারগুলোতে, নইলে কলেজে পড়ার সময় কোন এক 'কাজিনের বান্ধবী' টাইপের জায়গা থেকে। অথবা, 'ফোন' নাম্বার পেয়েছিলো কোন বন্ধুর কাছে -- সেই জিনিস থেকে কথা বলতে বলতে প্রেম। কিছুদিন এইসব প্রেম চলে দুর্দান্ত মুডে। ক্লাস থেকে বের হয়েই কানে ফোন নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে রুমে ফেরা। সব বন্ধুরা একসাথে হল থেকে বের হয়ে যখন নাশতা করতে বের হয়, তখন 'প্রেমিকরা' কানে ফোন নিয়ে পেছনে থাকত। এই দৃশ্য সার্বজনীন, সকল ভার্সিটিতে, সকল সেমিস্টারের ছেলেপিলেদের মাঝে এখনো এমন দৃশ্য আছে বলে মনে হয় আমার।
ইদানিং দেখতে পাই ঢাকার রাস্তায় ব্যস্ত পথেও কিছু ছেলেমেয়ে ফোনে কথা বলতে বলতে পার হয় এবং তারা কথাতে এতটাই ডুবে থাকে যে খেয়ালই করে না বড় গাড়িগুলোকে, তারা কেবল আল্লাহর প্রচন্ড দয়ার কারণেই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায়। এইসব ছেলেমেয়েদের পথচলতে চারপাশের ব্যাপারে উদাসীন অথচ হাসিমুখ দেখে আমার কেন যেন মনে হয় অন্য প্রান্তে বিপরীত লিঙ্গেরই কেউ আছে হয়ত। তাদের মাঝে হারাম সম্পর্কের জোয়ার বইছে, শয়তান তাদের অনুভূতিতে বেশি করে উচ্ছ্বাস মাখিয়ে দিচ্ছে, ফলে এই ভালোবাসার নেশার মাতলামিতে ডুবে থাকছে তারা।আবেগের ভাগাভাগি, কিছু স্বপ্ন আর খুঁনুসুঁটি তো আনন্দেরই বটে! কিন্তু নদীতে তো জোয়ার হলে ভাটাও আসে, অনৈতিক সম্পর্কের উদ্দাম আনন্দের জোয়ার পেরিয়ে প্রেমে ভাটার টান আসে, সে টান তারা সামলাতে পারে না। সে টানে দু'জনাই ভেসে যায়, একদম হারিয়েই যায় বেশিরভাগ সময়েই। এই ভাটারই ফল ছ্যাঁকা খাওয়া। সুস্থ-স্বাভাবিক এক যুবক হতাশা আর উচ্ছন্নতাকে আলিঙ্গন করে নেয় এমন সময়ের পরেই।
একটা ছেলের একটা মেয়ের সাথে কিছুদিন আলাপ-সালাপ, মেলামেশা করার পরে তাদের মাঝে হঠাৎ নতুন কিছু ঘটনা হতো, তাতে মেয়েটি ছেলেটার ফোন ধরে না বা এড়িয়ে যেতে শুরু করে। তখনই কী অস্থিরতা একেকজনের! অস্থিরদের এমন একেকটা দৃশ্য দেখে আমার অনেকবার মনে হয়েছে, এই বিষয়গুলো বিয়ের পরে হলে আনন্দ আর উচ্ছ্বাসও থাকত, হারিয়ে ফেলার ভয় থাকত না, অশান্তিগুলো থাকত না। ভালো অনুভূতিই যদি চাইলে, তবে কেন সোজা পথ ছেড়ে পেছনের রাস্তা দিয়ে লুকোচুরি?
কত রকম ছেলে আছে , তাদের কত রকম রি-অ্যাকশন!! কেউ কেউ খাওয়া-নাওয়া ছেড়ে দেয় হয়ে যায় প্রচন্ড মনমরা। কারো এমন উদাসীনতায় পরীক্ষায় ফেল হয়ে যেত। খুব ভালো রেজাল্ট করে আসা ছাত্রছাত্রীরা আচমকা বাজে রেজাল্ট করে সবাইকে চমকে দিতো। এইরকম সময়ে একটা 'স্বান্তনা বাণী' বেশ প্রসিদ্ধ ছিলো, একটু 'জ্ঞানী জ্ঞানী ভাবওয়ালা" (আদতে একে জ্ঞান বলে না) বড় ভাই বা বন্ধুরা হৃদয়ভাঙ্গা ছেলেটাকে বলত --
"ছেড়ে দাও, সে যদি ফিরে আসে তাহলে বুঝবে সে তোমারই। আর যদি ফিরে না আসে তাহলে বুঝবে সে কখনো তোমার ছিলো না।" [বিচিত্র এক দার্শনিক আলাপ]
এই কথাগুলো আমার কাছে ফাঁকা বুলির মতন অর্থহীন মনে হত, যা কোন হৃদয়ে প্রকৃত পরশ শান্তির পরশ দিতে পারে না। সেই ছেলেটির জীবনে যা হচ্ছে তখন তার একটা কারণ, তার পুরোনো অভ্যাস আর স্মৃতিকে ছাড়তে না পারা। দিনের সময়গুলোতে মেয়েটিকে সে তার জীবনের অংশ করে ফেলেছিলো। নেশার মতই বিষয়টা, মোহগ্রস্ততা। যখন এই সমাজের চারপাশে বিলবোর্ডে, টেলিভিশনে, কমার্শিয়ালে সুন্দর ছেলেমেয়েদের উপস্থিতি, যখন 'বন্ধু ছাড়া লাইফ ইম্পসিবল' হয়, তখন কারো কারো শুকনো যুদ্ধ করা জীবনে হঠাৎ ভিন্ন দ্যোতনার হাজির হলে সেই ভালোলাগার পিছনে কারণ আরো শক্ত হয়ে যায়। সেই জিনিস চলে গেলেও সে নিজেকে হতভাগা, অভাগা, ব্যর্থ, দুঃখী ভাবতে থাকে। সেক্যুলার প্রবাহের সাংস্কৃতিক আবহে তাদের গুছিয়ে উঠার সুযোগ কমই থাকে। আমি দেখেছি, একটা প্রেমে ছ্যাকা খেয়ে পরের *মেয়েগুলোকে* ছ্যাঁকা দিতেই প্রেম করেছে কেউ কেউ। আগাগোড়া দম্ভে ভরপুর মানুষগুলো জানেও না তাদের ইগোর কারণে তারা এমন সব অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে -- যার খেসারত হয়ত আখিরাতে সীমাহীন অপমান, লাঞ্ছণা আর যন্ত্রণা দিয়েই দিতে হবে।
আজ উস্তাদা ইয়াসমিন মোজাহেদের একটা কথা পড়ে কিছু ভাবনা আসার পরেই এই কথাগুলো লিখতে বসলাম:
"আমাদের সমস্যা হলো আমরা আমাদের হৃদয়ের জন্য বন্ধুত্ব এবং দাসত্ব বিষয়টাকে গুলিয়ে ফেলি। আমাদের রব আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ককে "বন্ধুত্ব" হিসেবে নামিয়ে নিয়ে আসি এবং স্রষ্টারই অন্য সৃষ্টির "দাসত্ব" করতে থাকি।" -- ইয়াসমিন মোজাহেদ
এই হাইপার-সেক্সুয়ালাইজড সোসাইটির সর্বত্রই এখন হারামকে উস্কে দেয়ার অস্ত্র। প্রেম যেন হতেই হবে, এটা যেন এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সবকিছু করলেও 'দায়িত্ববোধের' ভয়ে বিয়ে করে না। বিবাহপূর্ব ছেলে-মেয়েদের সম্পর্ক সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ যা আল্লাহর কাছে চরম অপছন্দনীয় ও অগ্রহণীয়। একে কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য করের উপায় নেই। ৬-৭ বছর ধরে প্রেম করছে, একসাথে খেতে যায়, বেড়াতে যায়, লং-জার্নি করে দু'জনে একসাথে তবু বিয়ে করে না এমন কাপল আমি দেখেছি কাছে থেকেই। সবই যখন হচ্ছে, বিয়ে কেন করা যায় না? শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত গিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া সম্পর্কের পরে নেশাতে ডুবে যেতে দেখেছি অনেককে। জীবনের এক পাপ সৃষ্টি করে নতুন পাপের, নতুন ধ্বংসের অভ্যাসের। বয়ে যেতে থাকে অন্যায়ের স্রোতে।
খুব সুন্দরী, মিষ্টভাষী, স্মার্ট মেয়েটি চলে গেলো জীবন থেকে? কেন ছেলেটা বুঝে না যে এই মেয়েটি ক'দিন পরে এখনকার বৃদ্ধাদের মতই হয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের আত্মা রয়ে যায় অনন্তকাল। জান্নাতে কারো কোন প্রাপ্তির অপূর্ণতা রবে না। প্রকৃত উদ্দেশ্য আমাদের সেই অনন্তকালের জীবনকে সুখময় করা। দুনিয়ার এই বিভ্রম থেকে মুক্ত হবার চেষ্টা করাই উচিৎ। মৃত্যু আমাদের খুবই কাছে। সম্পূর্ণ সুখের স্থান কেবলই জান্নাত। পৃথিবীর জীবনটা কেবল তাদের সাথেই সম্পর্কে বাঁধা হোক যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে একে অপরকে সাহায্য করবে।
শুধু আল্লাহর কাছে ফিরে আসাই হতে পারে সমাধান। আল্লাহ আমাদের রব, তিনিই আমাদের স্রষ্টা, তিনি আমাদের সবচাইতে কাছের, আপনতম জন। যখন কেউ নেই, যখন আমরা অসহায়, আমরা মরুভূমিতে একদম একা, ক্লান্ত পড়ে আছি -- তখনো কেবল আল্লাহই আছেন আমাদের সাথে। অপারেশন থিয়েটারের অসহায় শুয়ে আছি যখন, তখনো আল্লাহ আমাদের ফেলে যাননা, তিনি আমাদের পরম ভালোবাসায় পাশেই থাকেন। অনন্তকালেও তিনিই থাকবেন সাথে। যখন বাবা-মা আমাদের বিনিময়ে হলেও মুক্তি পেতে চাইবেন, তখন কেবল আল্লাহর রাহমাত আমাদের মুক্তি দিতে পারে। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষটির পথ ধরে চললে তিনি আমাদের জন্য সুপারিশ করবেন -- আর কেউ না। আপনজন আর দূরেরজন চিনতে যেন আমরা ভুল না করি। আল্লাহ আমাদেরকে সরল-সঠিক সেই পথটির দিশা দিন যে পথে চললে আমরা তার সন্তুষ্টি পাবো এবং তার প্রতি সন্তুষ্টচিত্তে অতিক্রান্ত করবো শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। নিশ্চয়ই কেবল আল্লাহই আমাদের আপনতমজন যিনি প্রেমময়, ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩
ইদানিং দেখতে পাই ঢাকার রাস্তায় ব্যস্ত পথেও কিছু ছেলেমেয়ে ফোনে কথা বলতে বলতে পার হয় এবং তারা কথাতে এতটাই ডুবে থাকে যে খেয়ালই করে না বড় গাড়িগুলোকে, তারা কেবল আল্লাহর প্রচন্ড দয়ার কারণেই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায়। এইসব ছেলেমেয়েদের পথচলতে চারপাশের ব্যাপারে উদাসীন অথচ হাসিমুখ দেখে আমার কেন যেন মনে হয় অন্য প্রান্তে বিপরীত লিঙ্গেরই কেউ আছে হয়ত। তাদের মাঝে হারাম সম্পর্কের জোয়ার বইছে, শয়তান তাদের অনুভূতিতে বেশি করে উচ্ছ্বাস মাখিয়ে দিচ্ছে, ফলে এই ভালোবাসার নেশার মাতলামিতে ডুবে থাকছে তারা।আবেগের ভাগাভাগি, কিছু স্বপ্ন আর খুঁনুসুঁটি তো আনন্দেরই বটে! কিন্তু নদীতে তো জোয়ার হলে ভাটাও আসে, অনৈতিক সম্পর্কের উদ্দাম আনন্দের জোয়ার পেরিয়ে প্রেমে ভাটার টান আসে, সে টান তারা সামলাতে পারে না। সে টানে দু'জনাই ভেসে যায়, একদম হারিয়েই যায় বেশিরভাগ সময়েই। এই ভাটারই ফল ছ্যাঁকা খাওয়া। সুস্থ-স্বাভাবিক এক যুবক হতাশা আর উচ্ছন্নতাকে আলিঙ্গন করে নেয় এমন সময়ের পরেই।
একটা ছেলের একটা মেয়ের সাথে কিছুদিন আলাপ-সালাপ, মেলামেশা করার পরে তাদের মাঝে হঠাৎ নতুন কিছু ঘটনা হতো, তাতে মেয়েটি ছেলেটার ফোন ধরে না বা এড়িয়ে যেতে শুরু করে। তখনই কী অস্থিরতা একেকজনের! অস্থিরদের এমন একেকটা দৃশ্য দেখে আমার অনেকবার মনে হয়েছে, এই বিষয়গুলো বিয়ের পরে হলে আনন্দ আর উচ্ছ্বাসও থাকত, হারিয়ে ফেলার ভয় থাকত না, অশান্তিগুলো থাকত না। ভালো অনুভূতিই যদি চাইলে, তবে কেন সোজা পথ ছেড়ে পেছনের রাস্তা দিয়ে লুকোচুরি?
কত রকম ছেলে আছে , তাদের কত রকম রি-অ্যাকশন!! কেউ কেউ খাওয়া-নাওয়া ছেড়ে দেয় হয়ে যায় প্রচন্ড মনমরা। কারো এমন উদাসীনতায় পরীক্ষায় ফেল হয়ে যেত। খুব ভালো রেজাল্ট করে আসা ছাত্রছাত্রীরা আচমকা বাজে রেজাল্ট করে সবাইকে চমকে দিতো। এইরকম সময়ে একটা 'স্বান্তনা বাণী' বেশ প্রসিদ্ধ ছিলো, একটু 'জ্ঞানী জ্ঞানী ভাবওয়ালা" (আদতে একে জ্ঞান বলে না) বড় ভাই বা বন্ধুরা হৃদয়ভাঙ্গা ছেলেটাকে বলত --
"ছেড়ে দাও, সে যদি ফিরে আসে তাহলে বুঝবে সে তোমারই। আর যদি ফিরে না আসে তাহলে বুঝবে সে কখনো তোমার ছিলো না।" [বিচিত্র এক দার্শনিক আলাপ]
এই কথাগুলো আমার কাছে ফাঁকা বুলির মতন অর্থহীন মনে হত, যা কোন হৃদয়ে প্রকৃত পরশ শান্তির পরশ দিতে পারে না। সেই ছেলেটির জীবনে যা হচ্ছে তখন তার একটা কারণ, তার পুরোনো অভ্যাস আর স্মৃতিকে ছাড়তে না পারা। দিনের সময়গুলোতে মেয়েটিকে সে তার জীবনের অংশ করে ফেলেছিলো। নেশার মতই বিষয়টা, মোহগ্রস্ততা। যখন এই সমাজের চারপাশে বিলবোর্ডে, টেলিভিশনে, কমার্শিয়ালে সুন্দর ছেলেমেয়েদের উপস্থিতি, যখন 'বন্ধু ছাড়া লাইফ ইম্পসিবল' হয়, তখন কারো কারো শুকনো যুদ্ধ করা জীবনে হঠাৎ ভিন্ন দ্যোতনার হাজির হলে সেই ভালোলাগার পিছনে কারণ আরো শক্ত হয়ে যায়। সেই জিনিস চলে গেলেও সে নিজেকে হতভাগা, অভাগা, ব্যর্থ, দুঃখী ভাবতে থাকে। সেক্যুলার প্রবাহের সাংস্কৃতিক আবহে তাদের গুছিয়ে উঠার সুযোগ কমই থাকে। আমি দেখেছি, একটা প্রেমে ছ্যাকা খেয়ে পরের *মেয়েগুলোকে* ছ্যাঁকা দিতেই প্রেম করেছে কেউ কেউ। আগাগোড়া দম্ভে ভরপুর মানুষগুলো জানেও না তাদের ইগোর কারণে তারা এমন সব অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে -- যার খেসারত হয়ত আখিরাতে সীমাহীন অপমান, লাঞ্ছণা আর যন্ত্রণা দিয়েই দিতে হবে।
আজ উস্তাদা ইয়াসমিন মোজাহেদের একটা কথা পড়ে কিছু ভাবনা আসার পরেই এই কথাগুলো লিখতে বসলাম:
"আমাদের সমস্যা হলো আমরা আমাদের হৃদয়ের জন্য বন্ধুত্ব এবং দাসত্ব বিষয়টাকে গুলিয়ে ফেলি। আমাদের রব আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ককে "বন্ধুত্ব" হিসেবে নামিয়ে নিয়ে আসি এবং স্রষ্টারই অন্য সৃষ্টির "দাসত্ব" করতে থাকি।" -- ইয়াসমিন মোজাহেদ
এই হাইপার-সেক্সুয়ালাইজড সোসাইটির সর্বত্রই এখন হারামকে উস্কে দেয়ার অস্ত্র। প্রেম যেন হতেই হবে, এটা যেন এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সবকিছু করলেও 'দায়িত্ববোধের' ভয়ে বিয়ে করে না। বিবাহপূর্ব ছেলে-মেয়েদের সম্পর্ক সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ যা আল্লাহর কাছে চরম অপছন্দনীয় ও অগ্রহণীয়। একে কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য করের উপায় নেই। ৬-৭ বছর ধরে প্রেম করছে, একসাথে খেতে যায়, বেড়াতে যায়, লং-জার্নি করে দু'জনে একসাথে তবু বিয়ে করে না এমন কাপল আমি দেখেছি কাছে থেকেই। সবই যখন হচ্ছে, বিয়ে কেন করা যায় না? শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত গিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া সম্পর্কের পরে নেশাতে ডুবে যেতে দেখেছি অনেককে। জীবনের এক পাপ সৃষ্টি করে নতুন পাপের, নতুন ধ্বংসের অভ্যাসের। বয়ে যেতে থাকে অন্যায়ের স্রোতে।
খুব সুন্দরী, মিষ্টভাষী, স্মার্ট মেয়েটি চলে গেলো জীবন থেকে? কেন ছেলেটা বুঝে না যে এই মেয়েটি ক'দিন পরে এখনকার বৃদ্ধাদের মতই হয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের আত্মা রয়ে যায় অনন্তকাল। জান্নাতে কারো কোন প্রাপ্তির অপূর্ণতা রবে না। প্রকৃত উদ্দেশ্য আমাদের সেই অনন্তকালের জীবনকে সুখময় করা। দুনিয়ার এই বিভ্রম থেকে মুক্ত হবার চেষ্টা করাই উচিৎ। মৃত্যু আমাদের খুবই কাছে। সম্পূর্ণ সুখের স্থান কেবলই জান্নাত। পৃথিবীর জীবনটা কেবল তাদের সাথেই সম্পর্কে বাঁধা হোক যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে একে অপরকে সাহায্য করবে।
শুধু আল্লাহর কাছে ফিরে আসাই হতে পারে সমাধান। আল্লাহ আমাদের রব, তিনিই আমাদের স্রষ্টা, তিনি আমাদের সবচাইতে কাছের, আপনতম জন। যখন কেউ নেই, যখন আমরা অসহায়, আমরা মরুভূমিতে একদম একা, ক্লান্ত পড়ে আছি -- তখনো কেবল আল্লাহই আছেন আমাদের সাথে। অপারেশন থিয়েটারের অসহায় শুয়ে আছি যখন, তখনো আল্লাহ আমাদের ফেলে যাননা, তিনি আমাদের পরম ভালোবাসায় পাশেই থাকেন। অনন্তকালেও তিনিই থাকবেন সাথে। যখন বাবা-মা আমাদের বিনিময়ে হলেও মুক্তি পেতে চাইবেন, তখন কেবল আল্লাহর রাহমাত আমাদের মুক্তি দিতে পারে। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষটির পথ ধরে চললে তিনি আমাদের জন্য সুপারিশ করবেন -- আর কেউ না। আপনজন আর দূরেরজন চিনতে যেন আমরা ভুল না করি। আল্লাহ আমাদেরকে সরল-সঠিক সেই পথটির দিশা দিন যে পথে চললে আমরা তার সন্তুষ্টি পাবো এবং তার প্রতি সন্তুষ্টচিত্তে অতিক্রান্ত করবো শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। নিশ্চয়ই কেবল আল্লাহই আমাদের আপনতমজন যিনি প্রেমময়, ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩