ফেসবুকে লোকজনের সুখ প্রদর্শনের ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং। এখানে এলে মনে হয় যেন দেশের মানুষ সিঙ্গাপুর, নেপাল, থাইল্যান্ড, কক্সবাজার, সিলেটে বেড়াচ্ছে তো বেড়াচ্ছেই... বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাথে তাদের স্ত্রীরা। ফেসবুকের হোমপেইজে ভরা বিভিন্ন ফ্রাইড চিকেনের প্লেটের ছবি, ডিএসএলআর ক্যামেরাতে অনেক চকচকে পুরুষ-নারীর যুগল, যাদের প্রায় সবাই প্রেম নামক হারাম সম্পর্কতে যুক্ত, যাদের প্রতিটি মূহুর্তই যিনা হিসেবে আল্লাহর কাছে গৃহীত হচ্ছে। কারো আবার নতুন আইফোন, নতুন আইপ্যাড, মোটর সাইকেল, গাড়ির নিত্যনতুন ছবি দেখবেন...
অথচ এই দেশে খুব অল্প পরিমাণ মানুষের কাছে খুব বেশি পরিমাণ সম্পদ আটকে আছে। ফ্রাইড চিকেনে ঢুকলে প্রায় হাজার টাকার মামলা। এককালে অনেক টাকা বেতন পাওয়া ইঞ্জিনিয়ারদের লাইনের বি,এস,সি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেও আজকাল খুব কম ছেলেমেয়েই দশ-বারো হাজারের বেশি টাকার বেতনে ঢুকতে পারে। মেডিকেলে যারা পড়ে, তাদের তো ৬ বছর পেরিয়ে অনারারী (অনাহারী বলে পরিচিত) ডাক্তার থাকার সময়ে বিনা বেতনে কাজ করে, খ্যাপ দিয়ে পেটে ভাত যোগাতে হয়। দেশে চাকুরির বাজারের অবস্থা খুবই সঙ্গীন তা পাগলেও জানে, রাস্তার কুকুরেও হয়ত বুঝে। খুব কম ছেলেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে ভালো চাকরির স্বপ্ন দেখার সাহস করে যদি মামা-চাচা না থাকে! এসব বুঝে সবাই, বুঝে না শুধু শো অফে অস্থির থাকা অসুস্থ মানসিকতার রোগীর দল।
এমন অনেকের কথা জানি, যারা ফেসবুকে এমন এমন ছবি তুলে দেয় যেন তারা না জানি কী! অথচ তাদের ভাষা হচ্ছে অত্যন্ত অভদ্র এবং তাদের আশেপাশে গেলেও অপরিচ্ছন্নতার দরুণ গায়ের গন্ধ পাওয়া যায়। ফেসবুক এমন মানুষদের দিয়েছে নিজেদেরকে 'স্মার্ট' হিসেবে তুলে দিয়ে লাইক কুড়ানোর তুমুল অধিকার!
শো-অফের অসুস্থতা ভুলিয়ে দিয়েছে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীলতা। সবাইকে সেলফিশ বানিয়ে ছেড়েছে সোশাল নেটওয়ার্কের অবাধ শেয়ারিং করার সুযোগ। অনেক বয়ষ্করাও আগ-পিছ ভুলে, সামাজিক ও পারিবারিক দায়িত্ব ও সম্পর্ক ভুলে ডুব দিয়ে ইন্টারনেটে বসে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা। নিজেকে প্রকাশ করে সবার কাছে আলোচিত থাকার চেষ্টার অন্ত নেই লোকদের। অদ্ভুত এক সমাজ, অদ্ভুত সেই 'ভার্চুয়াল সামাজিকতা'। বাস্তবে হয়ত কোন একজনের সাথে দেখা করে না, কথাও হয় না বছরের পর বছর, কিন্তু অনেকদিন পর দেখা হলে বলে, 'আপনার তো দেখি কোন খবরই নাই কোথাও'। কিসের কোথাও? উত্তরে বলে, 'ফেসবুকে আপনার অ্যাক্টিভিটিই নাই!" আর তাই বলছে, 'কোথাও খবর নেই"! বিচিত্র এই ফেসবুক নেশা!
ফেসবুক দিয়েছে একজনের ভেতরের অজস্র স্বত্ত্বাকে প্রকাশ করার বাজে সুযোগ। মাল্টিনিক আর ফেক নিকের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন ইম্প্রেশনে মনের সুখে খায়েশ মিটিয়ে কমেন্টিং করার অক্ষয় অধিকার দিয়েছে ফেসবুক। ভেতরের কুশ্রী, কদর্য মনকে একের পর এক খারাপ কাজে ডুব দিয়ে থাকার সুযোগ দিয়েছে ফেসবুক। ভিন্ন নামে, ভিন্ন ছবি নিয়ে এসে কাউকে পটাতে বা জ্বালাতে ফেক নিক খোলে অনেকেই। ফেসবুকে চ্যাট করতে, প্রেম করার জন্য ব্যবহার হয় মাল্টিনিক। গালাগালির তুবড়ি ছোটাতেও অনেকে ফেক নিক নিয়ে আসে। অথচ কেউ নিজের ভদ্র চেহারাতেই বা ফেক নিকেই গালি দিক না কেন, কিরামান-কাতিবিন সবই লিখছেন।
আল্লাহ আমাদেরকে যাবতীয় ফিতনাহ থেকে রক্ষা করুন।
[২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪]
অথচ এই দেশে খুব অল্প পরিমাণ মানুষের কাছে খুব বেশি পরিমাণ সম্পদ আটকে আছে। ফ্রাইড চিকেনে ঢুকলে প্রায় হাজার টাকার মামলা। এককালে অনেক টাকা বেতন পাওয়া ইঞ্জিনিয়ারদের লাইনের বি,এস,সি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেও আজকাল খুব কম ছেলেমেয়েই দশ-বারো হাজারের বেশি টাকার বেতনে ঢুকতে পারে। মেডিকেলে যারা পড়ে, তাদের তো ৬ বছর পেরিয়ে অনারারী (অনাহারী বলে পরিচিত) ডাক্তার থাকার সময়ে বিনা বেতনে কাজ করে, খ্যাপ দিয়ে পেটে ভাত যোগাতে হয়। দেশে চাকুরির বাজারের অবস্থা খুবই সঙ্গীন তা পাগলেও জানে, রাস্তার কুকুরেও হয়ত বুঝে। খুব কম ছেলেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে ভালো চাকরির স্বপ্ন দেখার সাহস করে যদি মামা-চাচা না থাকে! এসব বুঝে সবাই, বুঝে না শুধু শো অফে অস্থির থাকা অসুস্থ মানসিকতার রোগীর দল।
এমন অনেকের কথা জানি, যারা ফেসবুকে এমন এমন ছবি তুলে দেয় যেন তারা না জানি কী! অথচ তাদের ভাষা হচ্ছে অত্যন্ত অভদ্র এবং তাদের আশেপাশে গেলেও অপরিচ্ছন্নতার দরুণ গায়ের গন্ধ পাওয়া যায়। ফেসবুক এমন মানুষদের দিয়েছে নিজেদেরকে 'স্মার্ট' হিসেবে তুলে দিয়ে লাইক কুড়ানোর তুমুল অধিকার!
শো-অফের অসুস্থতা ভুলিয়ে দিয়েছে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীলতা। সবাইকে সেলফিশ বানিয়ে ছেড়েছে সোশাল নেটওয়ার্কের অবাধ শেয়ারিং করার সুযোগ। অনেক বয়ষ্করাও আগ-পিছ ভুলে, সামাজিক ও পারিবারিক দায়িত্ব ও সম্পর্ক ভুলে ডুব দিয়ে ইন্টারনেটে বসে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা। নিজেকে প্রকাশ করে সবার কাছে আলোচিত থাকার চেষ্টার অন্ত নেই লোকদের। অদ্ভুত এক সমাজ, অদ্ভুত সেই 'ভার্চুয়াল সামাজিকতা'। বাস্তবে হয়ত কোন একজনের সাথে দেখা করে না, কথাও হয় না বছরের পর বছর, কিন্তু অনেকদিন পর দেখা হলে বলে, 'আপনার তো দেখি কোন খবরই নাই কোথাও'। কিসের কোথাও? উত্তরে বলে, 'ফেসবুকে আপনার অ্যাক্টিভিটিই নাই!" আর তাই বলছে, 'কোথাও খবর নেই"! বিচিত্র এই ফেসবুক নেশা!
ফেসবুক দিয়েছে একজনের ভেতরের অজস্র স্বত্ত্বাকে প্রকাশ করার বাজে সুযোগ। মাল্টিনিক আর ফেক নিকের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন ইম্প্রেশনে মনের সুখে খায়েশ মিটিয়ে কমেন্টিং করার অক্ষয় অধিকার দিয়েছে ফেসবুক। ভেতরের কুশ্রী, কদর্য মনকে একের পর এক খারাপ কাজে ডুব দিয়ে থাকার সুযোগ দিয়েছে ফেসবুক। ভিন্ন নামে, ভিন্ন ছবি নিয়ে এসে কাউকে পটাতে বা জ্বালাতে ফেক নিক খোলে অনেকেই। ফেসবুকে চ্যাট করতে, প্রেম করার জন্য ব্যবহার হয় মাল্টিনিক। গালাগালির তুবড়ি ছোটাতেও অনেকে ফেক নিক নিয়ে আসে। অথচ কেউ নিজের ভদ্র চেহারাতেই বা ফেক নিকেই গালি দিক না কেন, কিরামান-কাতিবিন সবই লিখছেন।
আল্লাহ আমাদেরকে যাবতীয় ফিতনাহ থেকে রক্ষা করুন।
[২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে