যদি আমরা জীবনের একটু পেছনে ফিরে তাকাই, মনে হয় সেখানে অনেক প্রাপ্তি পাবো, পাবো অনেক অপ্রাপ্তির অনুভূতি। যে জিনিসটা নিশ্চিত পাবো, তা হলো কিছু দগদগে ঘা। অনেক কষ্ট আর বেদনার ফেলে আসা অসহায় দিন, দুশ্চিন্তার রাত, শঙ্কা ও সঙ্কোচের মূহুর্তে ভরা অনেকগুলো দিন। জীবনে খুব ছোট ছোট ব্যাপারে ঠকে ঠকে, প্রতারিত হয়ে, অবহেলা পেয়ে, রিক্ত থেকেই আমরা স্বস্তির কিছু প্রাপ্তি পাই, প্রশান্তির নিঃশ্বাস নিতে পারি। দুনিয়াতে যারা বড় হয়, তারা কমবেশি সবাই অনেক ত্যাগ করেন। আল্লাহ পৃথিবীর সবকিছুই খুব 'সিসটেমেটিক' করে তৈরি করেছেন। নিপুণ সেই স্রষ্টার হাতের স্পর্শে সবকিছু অদ্ভুত এক দ্যোতনার মাঝে চলে। দিন না পেরিয়ে রাত হয়না, অঙ্কুরোদগম না হলে চারাগাছ ফোটে না, গর্ভকে ধারণ না করলে হয়না সন্তান -- অমন লক্ষ-কোটি উদাহরণ সৃষ্টিজুড়ে...
এসবের মাঝে আমি এক অন্যরকম শঙ্কায় থাকি ইদানিং। পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখি, জীবনে আমার এই অবস্থান, এই প্রাপ্তি, এই শান্তি, এই অশান্তি, এই যন্ত্রণা--সবকিছুতে আমার 'চয়েস' একটা ভূমিকা পালন করেছে। আমি পছন্দ করেছি আমার পথ, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আল্লাহ এগিয়ে দিয়েছেন। এমনটা সবার সাথেই হয়। আমরা যা পছন্দ করি, যা প্রচন্ড বেশি করে চাই, আল্লাহ সেই পথে আমাদের এগিয়ে দেন। যারা দুনিয়া চায়, তারা দুনিয়া পায়। সত্যিকারের চাওয়া হলো সাধনা, ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকা।
দেখেছি কিছু ছেলে প্রেম করতে উদগ্রীব ছিলো অনেক বছর, সুন্দরী মেয়ে লাগবে। পেয়েছেও, জীবনটা ছ্যাড়াব্যাড়া হয়েছে তার সেই সুন্দরীর সাথে সহযাত্রায়। কারো 'আনকন্ডিশনাল' স্বপ্ন ছিলো দেশের বাইরে যাবে, গিয়েছেও। সেখানে গিয়ে দিন-রাত ফেসবুকে ফটো আপলোড করে, আহাজারি করে ঈদে, ছুটিছাটায়। কেউ চেয়েছিলো কর্পোরেট চাকুরি। সেই চাকুরির জটিলতা আর হারাম উৎসের টাকার স্পর্শেই হয়ত, যন্ত্রণাদগ্ধ জীবন দেখেছি।
বেশ ক'জন মানুষের কথা জানি, বিনীতভাবে অদম্য আগ্রহ ছিলো কুরআন হিফজ করার; করেছেনও। যৌবনে এসে অনেকগুলো বছর লাগিয়ে স্মৃতিতে ধরেছেন কুরআন। অনেককে চিনি যারা চেয়েছিলেন দ্বীন পালন করা যায় এমন একটা 'লাইফস্টাইল', অস্থির থাকেননি টাকা-পয়সা ইনকামের সোর্সের কথা ভেবে ভেবে নির্ঘুম থেকে। আমি খুব কাছ থেকে জানি, শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে একের পর এক হারাম উৎসের চাকুরি এড়িয়ে যেতে যেতে অর্থকষ্টে ভুগে কেবল আল্লাহর কাছে কান্নাকাটির দৃশ্য। একসময় আল্লাহ কল্পনাতীত উপায়ে পথ করে দিয়েছেন তাকে/ তাদেরকে। 'ব্যাকডোর' দিয়ে মেয়ের সাথে/ছেলের সাথে আগে ইটিশ-পিটিশ করে চেখে নিয়ে এরপর ফর্মালি এগিয়ে বিয়ে করার 'ধান্দা' না করে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে, সবর করে সঠিক শারীয়াহসম্মত উপায়ে বিয়ে করা মানুষের জীবনের 'সহজতা' দেখেছি।
দ্বীনকে আঁকড়ে ধরতে চাওয়া মানুষগুলো শুরুতে একদম অসহায়, পাপক্লিষ্ট, দুর্বলই থাকে। মানুষ সবসময়েই পাপাচারী, দুর্বল, অসহায়। কিন্তু তাদের বুকের ভেতরটা অন্যরকম একটা জায়গা! মুসলিমের বুকের ভেতরের আর্তিটা, ইসলামকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পালন করার তীব্র আগ্রহের বদৌলতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা তাদের জন্য ইসলাম পালন করাকে সহজ করে দিতে থাকেন।
বুকের চাওয়াটা অনেক বড় ব্যাপার। আল্লাহ যাদের দয়া করেন, তারাই কেবল চাইতে পারেন। আল্লাহর কাছে এমন একটা হৃদয়, এমন জিহবা, এমন অশ্রুসিক্ত চোখের জন্য তাই খুব বেশি করে দোয়া করতে থাকা দরকার। জীবনের চাওয়া যেন না হয় দুনিয়াকেন্দ্রিক, দুনিয়া তো বিভ্রম! তবে আখিরাত যারা চায়, দুনিয়ার কাঠিন্যকে তাদের জন্য সহজ করে দেন আল্লাহ। জান্নাতের পথকে আল্লাহ যেন আমাদের জন্য সহজ করে দেন, আমীন।
[০৪ আগস্ট, ২০১৪]
এসবের মাঝে আমি এক অন্যরকম শঙ্কায় থাকি ইদানিং। পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখি, জীবনে আমার এই অবস্থান, এই প্রাপ্তি, এই শান্তি, এই অশান্তি, এই যন্ত্রণা--সবকিছুতে আমার 'চয়েস' একটা ভূমিকা পালন করেছে। আমি পছন্দ করেছি আমার পথ, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আল্লাহ এগিয়ে দিয়েছেন। এমনটা সবার সাথেই হয়। আমরা যা পছন্দ করি, যা প্রচন্ড বেশি করে চাই, আল্লাহ সেই পথে আমাদের এগিয়ে দেন। যারা দুনিয়া চায়, তারা দুনিয়া পায়। সত্যিকারের চাওয়া হলো সাধনা, ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকা।
দেখেছি কিছু ছেলে প্রেম করতে উদগ্রীব ছিলো অনেক বছর, সুন্দরী মেয়ে লাগবে। পেয়েছেও, জীবনটা ছ্যাড়াব্যাড়া হয়েছে তার সেই সুন্দরীর সাথে সহযাত্রায়। কারো 'আনকন্ডিশনাল' স্বপ্ন ছিলো দেশের বাইরে যাবে, গিয়েছেও। সেখানে গিয়ে দিন-রাত ফেসবুকে ফটো আপলোড করে, আহাজারি করে ঈদে, ছুটিছাটায়। কেউ চেয়েছিলো কর্পোরেট চাকুরি। সেই চাকুরির জটিলতা আর হারাম উৎসের টাকার স্পর্শেই হয়ত, যন্ত্রণাদগ্ধ জীবন দেখেছি।
বেশ ক'জন মানুষের কথা জানি, বিনীতভাবে অদম্য আগ্রহ ছিলো কুরআন হিফজ করার; করেছেনও। যৌবনে এসে অনেকগুলো বছর লাগিয়ে স্মৃতিতে ধরেছেন কুরআন। অনেককে চিনি যারা চেয়েছিলেন দ্বীন পালন করা যায় এমন একটা 'লাইফস্টাইল', অস্থির থাকেননি টাকা-পয়সা ইনকামের সোর্সের কথা ভেবে ভেবে নির্ঘুম থেকে। আমি খুব কাছ থেকে জানি, শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে একের পর এক হারাম উৎসের চাকুরি এড়িয়ে যেতে যেতে অর্থকষ্টে ভুগে কেবল আল্লাহর কাছে কান্নাকাটির দৃশ্য। একসময় আল্লাহ কল্পনাতীত উপায়ে পথ করে দিয়েছেন তাকে/ তাদেরকে। 'ব্যাকডোর' দিয়ে মেয়ের সাথে/ছেলের সাথে আগে ইটিশ-পিটিশ করে চেখে নিয়ে এরপর ফর্মালি এগিয়ে বিয়ে করার 'ধান্দা' না করে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে, সবর করে সঠিক শারীয়াহসম্মত উপায়ে বিয়ে করা মানুষের জীবনের 'সহজতা' দেখেছি।
দ্বীনকে আঁকড়ে ধরতে চাওয়া মানুষগুলো শুরুতে একদম অসহায়, পাপক্লিষ্ট, দুর্বলই থাকে। মানুষ সবসময়েই পাপাচারী, দুর্বল, অসহায়। কিন্তু তাদের বুকের ভেতরটা অন্যরকম একটা জায়গা! মুসলিমের বুকের ভেতরের আর্তিটা, ইসলামকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পালন করার তীব্র আগ্রহের বদৌলতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা তাদের জন্য ইসলাম পালন করাকে সহজ করে দিতে থাকেন।
বুকের চাওয়াটা অনেক বড় ব্যাপার। আল্লাহ যাদের দয়া করেন, তারাই কেবল চাইতে পারেন। আল্লাহর কাছে এমন একটা হৃদয়, এমন জিহবা, এমন অশ্রুসিক্ত চোখের জন্য তাই খুব বেশি করে দোয়া করতে থাকা দরকার। জীবনের চাওয়া যেন না হয় দুনিয়াকেন্দ্রিক, দুনিয়া তো বিভ্রম! তবে আখিরাত যারা চায়, দুনিয়ার কাঠিন্যকে তাদের জন্য সহজ করে দেন আল্লাহ। জান্নাতের পথকে আল্লাহ যেন আমাদের জন্য সহজ করে দেন, আমীন।
[০৪ আগস্ট, ২০১৪]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে