ছোটবেলায় অনেক অনেক বই পড়া হতো। আমার ছেলেবেলায় ঢাকার সেই এলাকাটায় ছিলো না মাঠ, পুকুর, গাছ বেয়ে ওঠার মতন কোন গাছ। কিন্তু আমার ছিলো অনেক অনেক বই। আল্লাহ যুগিয়েছিলেন বলেই চারপাশে বইওয়ালা অদ্ভুত মানুষ ছিলেন সেই সময়। তাদের কাছ থেকে নিয়মিত বই সংগ্রহ করতে পারতাম। প্রতিদিন বইতে ডুব দিয়ে থাকতাম কয়েকটা ঘন্টা। আমার বাল্যকালের সেরা স্মৃতি ঐ বইগুলোর সাথেই! গোয়েন্দাকাহিনী, রহস্যোপন্যাস, অ্যাডভেঞ্চার, ট্রাভেলগ, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ক্লাসিকস... আরো কত কী! কিন্তু বইপড়ুয়াদের সাথে সময় কাটানো হয়নি আমার কোনদিনই। একলা আমার পাঠক জগত! সময়ের সাথে সাথে নানান পরীক্ষা, কলেজ-ভার্সিটি যাওয়ার পথে একসময় পাঠকের মৃত্যু ঘটলো।
এখন চারপাশে কিছু বইপড়ুয়া থাকলেও আমি পড়িনা তেমন, চেষ্টা করলেও কেন যেন পড়তে পারিনা। কৈশোর,তারুণ্য পেরিয়ে যৌবনের সায়াহ্নে এসে অর্থোপার্জন এবং অন্যান্যের ভীড়ে বইয়ের মাঝে ডুব দেয়ার সাহসটাও হারিয়ে গেছে। এখনো অনেক রোমাঞ্চ বই, ভ্রমণকাহিনী পড়তে ইচ্ছা করে। যেটুকু সময় পাই, দরকারি বইতে মুখ ডুবাতে হয় --ঠিক জীবিকা যেমন দরকারি, এটাও দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য দরকার বলে! পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে বইয়ের আয়েশে ডুব দেয়াটা মাঝে মাঝে অন্যায় বাহুল্য বলে অনুভব হয়। এইসব ভেবে নিজ চিন্তার মাঝে এক ধরণের টানাহেঁচড়া চলতেই থাকে...
বইপড়ুয়ারা অনেক কিছু করতে পারে। বই থেকে তৈরি হয় চিন্তার জগত,অনুভূতির জগত। চিন্তাকে পরিশীলিত করে সুন্দর বই। বইহীন সমাজে মনুষ্যত্বের শান দেয়া হয় না। বই পড়া ছাড়া লেখা হয়না। লেখনী তৈরি হয় পড়া থেকে। কত-শত অসাধারণ বই, কত সুন্দর সব চিন্তা দিয়েছেন আল্লাহ এই জগতে! মোবাইল-ল্যাপটপ-ট্যাবের মাঝে ডুবে থাকা অদ্ভুত প্রাণোচ্ছ্বলতাবিহীন যান্ত্রিক বালক-কিশোরদের দেখলে আমার খারাপ লাগা আরো বাড়ে। এই প্রজন্মের ভবিষ্যতে তো সুন্দর চিন্তা বের করে আনাও কঠিন হবে! সেবা প্রকাশনীর সেই অনুবাদগুলো, সাইমুম সিরিজ, নসীম হিজাজী... বিভূতিভূষণের অপু-দুর্গার পথের পাঁচালি, রবীন্দ্রনাথের কবিতা সঞ্চয়িতা, নজরুলের উপন্যাস, কাজীদার কবিতার বই সঞ্চিতা, শরতের উপন্যাসসমগ্র, কিশোর ক্লাসিকস, আর্থার কোনান ডয়েলের শার্লক হোমস, রবিনসন ক্রুসো, গালিভারস ট্রাভেলস, জিমকরবেট...
এখনকার শিশুদের হাতে বই তুলে দেয়ার কাজটা কেউ করছে না, সবার হাতেই মোবাইল থাকে। ৩-৪ বছরের পোলাপাইন "মোবাইল খ্যালে", তাদের বাবা-মা জানেনা সন্তানরা তাদের কী ভয়াবহ উপহার দেয়ার সম্ভাবনা নিয়ে বড় হচ্ছে। বইপড়ুয়া একটা সমাজ দরকার, কিন্তু কেমন করে? ভালো বই লিখবে কারা? কোথায় তারা?
[১৮ আগস্ট, ২০১৪]
এখন চারপাশে কিছু বইপড়ুয়া থাকলেও আমি পড়িনা তেমন, চেষ্টা করলেও কেন যেন পড়তে পারিনা। কৈশোর,তারুণ্য পেরিয়ে যৌবনের সায়াহ্নে এসে অর্থোপার্জন এবং অন্যান্যের ভীড়ে বইয়ের মাঝে ডুব দেয়ার সাহসটাও হারিয়ে গেছে। এখনো অনেক রোমাঞ্চ বই, ভ্রমণকাহিনী পড়তে ইচ্ছা করে। যেটুকু সময় পাই, দরকারি বইতে মুখ ডুবাতে হয় --ঠিক জীবিকা যেমন দরকারি, এটাও দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য দরকার বলে! পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে বইয়ের আয়েশে ডুব দেয়াটা মাঝে মাঝে অন্যায় বাহুল্য বলে অনুভব হয়। এইসব ভেবে নিজ চিন্তার মাঝে এক ধরণের টানাহেঁচড়া চলতেই থাকে...
বইপড়ুয়ারা অনেক কিছু করতে পারে। বই থেকে তৈরি হয় চিন্তার জগত,অনুভূতির জগত। চিন্তাকে পরিশীলিত করে সুন্দর বই। বইহীন সমাজে মনুষ্যত্বের শান দেয়া হয় না। বই পড়া ছাড়া লেখা হয়না। লেখনী তৈরি হয় পড়া থেকে। কত-শত অসাধারণ বই, কত সুন্দর সব চিন্তা দিয়েছেন আল্লাহ এই জগতে! মোবাইল-ল্যাপটপ-ট্যাবের মাঝে ডুবে থাকা অদ্ভুত প্রাণোচ্ছ্বলতাবিহীন যান্ত্রিক বালক-কিশোরদের দেখলে আমার খারাপ লাগা আরো বাড়ে। এই প্রজন্মের ভবিষ্যতে তো সুন্দর চিন্তা বের করে আনাও কঠিন হবে! সেবা প্রকাশনীর সেই অনুবাদগুলো, সাইমুম সিরিজ, নসীম হিজাজী... বিভূতিভূষণের অপু-দুর্গার পথের পাঁচালি, রবীন্দ্রনাথের কবিতা সঞ্চয়িতা, নজরুলের উপন্যাস, কাজীদার কবিতার বই সঞ্চিতা, শরতের উপন্যাসসমগ্র, কিশোর ক্লাসিকস, আর্থার কোনান ডয়েলের শার্লক হোমস, রবিনসন ক্রুসো, গালিভারস ট্রাভেলস, জিমকরবেট...
এখনকার শিশুদের হাতে বই তুলে দেয়ার কাজটা কেউ করছে না, সবার হাতেই মোবাইল থাকে। ৩-৪ বছরের পোলাপাইন "মোবাইল খ্যালে", তাদের বাবা-মা জানেনা সন্তানরা তাদের কী ভয়াবহ উপহার দেয়ার সম্ভাবনা নিয়ে বড় হচ্ছে। বইপড়ুয়া একটা সমাজ দরকার, কিন্তু কেমন করে? ভালো বই লিখবে কারা? কোথায় তারা?
[১৮ আগস্ট, ২০১৪]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে