প্রতিটি মানুষ সুখী হতে চায়। প্রতিটি মানুষের চাওয়ার ভেতরেই থাকে সুখী হবার অদম্য আগ্রহ। শব্দগুলো কাছাকাছি, অল্প কিছু পার্থক্য যদিও আছে বাংলায় -- সুখ, শান্তি, প্রশান্তি। কখনো ভালোলাগাও এমন শব্দ। কীভাবে তা অর্জন করা যায়?
দার্শনিক ব্লেইজ প্যাসকেলের একটি থিওরিতে পড়লাম -- মানুষের মূলতঃ তিনটি সত্ত্বার মাঝে অভাবের অনুভূতি থাকে -
১) শারীরিক
২) বুদ্ধিবৃত্তিক
৩) আত্মিক
জন্মের পর থেকেই মানুষ পরনির্ভরশীল। প্রথমেই তার মা-কে প্রয়োজন হয়। মায়ের একটানা যত্নে সে বড় হয়। শারীরিক এই মা-নির্ভরতা থেকে যখন সে খানিকটা বড় হয়ে স্বনির্ভর হতে শেখে, তখন থেকে তার মনে অনেক প্রশ্ন থাকে। এই প্রশ্ন হলো-- বুদ্ধিবৃত্তিক অভাব। সে নিজে থেকেই নিজেকে জিজ্ঞাসা করে কেন সে এইখানে এলো।
মৃত্যুচিন্তা এখানে গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের প্রায় প্রতিটি মনেই মৃত্যুর কথা এলেও সে এই চিন্তাকে ভুলে থাকতে চায়, এড়িয়ে যেতে চায়। কিন্তু তার খেয়াল থাকে না এই সত্যকে তার আলিঙ্গন করতেই হবে।
মানুষ বেশিরভাগ সময় অসুখী হয় অন্যের দিকে তাকিয়ে। তুলনা করতে গিয়ে তার মনের সুখ তিরোহিত হয়। অথচ প্রতিটা জীবন একদম আলাদা। আরেকজনের সাথে কারো কোন মিল থাকে না। সুখ প্রত্যেকের নিজের দিকেই তাকিয়ে অনুভব করা উচিত। কখনো কখনো একটা মূহুর্তের ক্ষুদ্র ভালোলাগাই জীবনে আনন্দের ঢেউ বয়ে আনে। বুদ্ধিমান মানুষ, যারা নিজেদের বুদ্ধিকে ব্যবহার করে, তারা অন্যদের সুখ দেখে নিজেকে সুখী-দুখী হিসেব করতে বসে না। তারা নিজেদের জীবনকে নিজেদের চোখেই দেখে।
যারা আবেগের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তারা সুখ পায় না। যারা আবেগকে চিনে নিয়ে তাকে জয় করে, তারা আবেগ থেকে উদ্ভুত আনন্দও পায়, বিপদেও পড়ে না। আবেগ এক ধরণের ফাঁদ, সেই ফাঁদে আবেগস্বর্বস্বরা নিয়মিত ভূপাতিত হয়।
রেফারেন্স:
- প্রাসঙ্গিক ভিডিও : The Quest for Meaning - ড তারিক রমাদান - http://www.youtube.com/watch?v=XgW3vP7p3no