আপনার হৃদয় কি ভারাক্রান্ত? কষ্টে-যন্ত্রণায়, অপ্রাপ্তি-অশান্তি, শঙ্কায়-অস্থিরতায় কাটাচ্ছেন? একটা ব্যাপার জানেন? পৃথিবীতে এই মূহুর্তে কোটি কোটি মানুষ আপনার চেয়েও ভয়ংকর কষ্টে সময় কাটাচ্ছে। আপনি কি ভেবে দেখেছেন, আপনার এই মূহুর্তটা কিন্তু বেশিদিন থাকবে না!
কষ্টের একটা সময় থাকে। প্রথম ধাক্কাটা কিছুটা তীব্র হয়। কিছু বিষয়ে আবার পরবর্তীতে কষ্টটায় দীর্ঘ সময় ধরে ভুগতে হয়। সেগুলো যেমনই হোক, মানুষ অভ্যস্ত হয়ে যায়। সন্তানকে কবরে রেখে এসে পিতাকে বের হতে হয় জীবিকার সন্ধানে। সন্তান আর স্বামী মরে যাওয়ার পরেও একজন নারী ফিরে এসে রান্নার যোগাড় করেন অন্তত খেয়ে বেঁচে থাকতে। জীবন এমনই। আপনি যে কষ্টটিকে সহ্যের অতিরিক্ত ভাবছেন, যে ক্ষতিটাকে কল্পনাতীত ভেবে আপনার বুক ফেটে যাচ্ছে -- সেটুকুকেই আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার প্রেরণা পেতেন আরো অসংখ্য লোক। তারা সেটুকুও পান না।
আল্লাহ মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তার ইবাদাতের জন্য। আপনি না চাইলেও আপনাকে তিনি উপলব্ধি করিয়েই দেবেন যে আপনি এই পৃথিবীর কোনো কিছুরই উপরে ক্ষমতা রাখেন না, আপনি অসহায়। এই উপলব্ধিটা একটি পরম নিয়ামাত যখন আপনি বুঝবেন আল্লাহ ছাড়া কেউ নেই অভিভাবক।
সকল ক্ষতিই মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারে। মানুষ পরম অভিযোজন ক্ষমতার একটি প্রাণী। যাকে ছাড়া/যা ছাড়া জীবন কল্পনাও করতে পারেননি, তার বিদায়ের পরে আপনি দিব্যি খাবেন, ঘুমাবেন, হাসবেন। কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। দুঃখ নয়, গ্লানি হয়। এমনকি আনন্দের সময়ও নয়। দুনিয়া নিজেই অস্থায়ী। এর ভেতরের প্রতিটি প্রাণী, প্রতিটি সত্ত্বা, প্রতিটি কণা অস্থায়ী, নশ্বর। এমন কিছুর প্রতি কীসের এত আকাঙ্ক্ষা, এত স্বপ্ন আর কল্পনা-জল্পনা আমাদের যা কিছু সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে শেষ হয়ে যাবে?
[০৩ ডিসেম্বর, ২০১৫]