(২৮৫)
"এখানে বলা হয়েছে আমেরিকার ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের গল্প যেখানে প্রায় ৭০ বছর পর নেকড়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল ১৯৯৫ সালে । সেখানে দীর্ঘদিন নেকড়ে না থাকার ফলে হরিণের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। অল্প কিছু নেকড়ে যে প্রাণীটিকে আপাতদৃষ্টিতে একটি নিরীহ প্রাণী খেকো হিংস্র প্রাণী মনে হয় সেটি একটি ইকো সিস্টেমকে পুনরায় ব্যালেন্সড অবস্থানে নিয়ে আসে। এই ন্যাচারাল ডাইভার্সিটি থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।" [জাহিদ রাজন ভাইয়ের পোস্ট থেকে নেয়া বর্ণনা]
# ভিডিও:: https://www.youtube.com/watch?v=ysa5OBhXz-Q
(২৮৬)
এইতো চুপচাপ, ঝুপঝাপ কতজন চলে যায়, মরে যায়
প্রতিটি মৃত্যুর মাঝে শেখার মতন বহু কিছু রয়ে যায়।
(২৮৭)
ইংরেজি ২০১৫ সালের প্রথম প্রহর এখন। চারিদিকে পটকার তাণ্ডব, গানের সুরে ভেসে গেছে পথঘাট। জানি অনেকখানে চলছে ড্রিংকস আর ডিজে পার্টি। খুব কাছের প্রিয়জন পৃথিবীকে বিদায় দিয়ে যাওয়ার এই ক্ষণে আমি উপলব্ধি করতে পারছি ধ্বসে যাওয়া, ক্ষয়ে যাওয়া, নষ্ট হয়ে যাওয়া এই সমাজের উত্তাল অস্থিরতা ও জঘন্যতা। আমরা কতই না বেখবর, কতই না অবিবেচক, মূর্খ, হতভাগা। আমাদের সময় হয়ত ফুরিয়ে আসছে। আমাদের ভালো কাজ করার শক্তি হয়ত নিঃশেষ হয়ে আসছে। আমরা জানিনা কতদিন আর এই বাতাসে নিঃশ্বাস নেবো, কতখানি রিযিক আমাদের জন্য রয়েছে এই খাবারে, এই বাতাসে, এই ঘরবাড়িগুলোতে। [০১ জানুয়ারি, ২০১৫]
(২৮৮)
ইদানিং জীবনে পথ চলতে অনেক কিছু দেখি। ইদানিং অভিজ্ঞতা হয় অনেক বেশি তীব্র, ক্ষুরধার, কষ্টদায়ক। কিন্তু তারপরেও সময়ের অভাবে লেখা হয় না। জীবনের ব্যস্ততা অন্যরকম মাত্রায় বেড়ে চলেছে, কমবেশি সবারই এমন হয়। আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার কথা মনে পড়ছে যিনি হাজার বছর আগে থেকেই যত্নবান হতে বলেছিলেন জীবনের ব্যস্ততার আগের অবসর নিয়ে।
জানি জীবন ক্রমাগত ব্যস্ত থেকে ব্যস্ততর হয়, জীবন জটিল থেকে জটিলতর হয়। আল্লাহ যদি সময়ে বারাকাহ না দেন, তাহলে কেউ কিছুই করতে পারবে না। আল্লাহ যদি আমাদের জীবনকে সহজতা দান না করেন, তাহলে কেউ এর ক্রমবর্ধমান জটিলতা ও ঝামেলাকে কমাতে পারে না।
আমাদের মধ্যে যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি বলে দাবী করি, তাদের জীবন ক্রমাগত কঠিন হয়। আল্লাহ আমাদেরকে প্রকৃতপক্ষে তার দিকে ফিরিয়ে নিতে চান, তার দয়ায় আমরা তাকে স্মরণ করতে পারি, তার দয়ায় আমরা দুনিয়া অশান্তির মাঝে শান্তির স্পর্শ পাই আত্মায়, হৃদয়ে।
(২৮৯)
গতকাল কাটাবনে ঘুরঘুর করলাম নসীম হিজাযীর যে বইগুলো পড়িনি সেগুলো খুঁজে বের করতে। মোটামুটি লাভ হয়নি বলা যায়। হয়ত শেষতক বাংলাবাজার যেতে হবে আমার। রিভেরি অনেকদিন হিজাযীর এই বইগুলো আনে না। তবে মজার ব্যাপার হলো কামিয়াব প্রকাশনীতে, এনায়েতুল্লাহ আলতামাশের বই পেলাম, নসীম হিজাযীরগুলাও চকচকে মলাটের, একটু বেটার কালেকশন। শফীউদ্দিন সরদারের বইও দেখলাম। আগামীতে কিনবো আশা রাখলাম...
আলতামাশের ঈমানদীপ্ত দাস্তান নেড়েচেড়ে দেখলাম, পর্ব ৬ পর্যন্ত এখানে আছে। মোট ক'টি পর্ব বইটার? অনুবাদে দেখলাম, একজন মাওলানা সাহেব অনুবাদ করেছেন; বেশ চমকৃত হলাম।
আল্লাহ আমাকে মুহাম্মাদ আসাদের "মক্কার পথ" কেনার তাওফীক দিয়েছেন। বইটি খুব আকর্ষণীয়। Reverie থেকে ১৭৫ টাকায় পেয়েছি। "প্রতি মাসে একটি বই" শ্লোগানে আমি বিগত বেশ ক'টি বছর চলছি। আলহামদুলিল্লাহ ব্যক্তিগত পাঠাগার সমৃদ্ধ হচ্ছে, বইয়ের তাকগুলো ভরে আসছে। ছোট ছোট স্বপ্ন, মাঝে মাঝে বেশ প্রেরণা দেয়।
# আগামীতে পাঠাগারের ছবি দিয়ে শো-অফ করতে চাই, কারো যদি বুক জ্বলে এবং যদি সে-ও একটা ব্যক্তিগত লাইব্রেরি করার উদ্যোগ নেয়... সেই আশায়!
(২৯০)
আল্লাহ আমাদের জীবন ও মৃত্যু দিয়েছেন, এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন যেন আমাদের মধ্যে কাজকর্মে কে বেশি উত্তম তা তিনি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। আমরা পরীক্ষার মুখোমুখি হই যেন কারা আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখি, কারা আল্লাহকে ভালোবেসে জীবনধারণ করি, কারা দুনিয়ার চেয়ে আখিরাতকে ভালোবাসি তা আমাদের কাজ দিয়েই বোঝা যায়। আল্লাহ আমাদেরকে বিভিন্ন বিপদ-আপদ, ভয়-শংকা, রোগ-বালাই দিয়ে স্মরণিকা (reminder) দেন যেন আমরা দুনিয়াকে নয় বরং আল্লাহকেই বেশি আঁকড়ে ধরি। পৃথিবীর কিছু আমাদেরকে সাহায্য করতে পারে না, সুখ দিতে পারে না, শান্তি দিতে পারে না; এসবের মালিক একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহর হাতেই সমস্ত হিদায়াহ,সমস্ত মুক্তি, সমস্ত শান্তি। সেইদিন বেশি দূরে নয় যেদিন আমরা কাফনের কাপড় পেঁচিয়ে মাটির নিচে জায়গা নিবো। আমরা সবাই আল্লাহরই এবং আমরা সবাই তার কাছেই ফিরে যাবো।
(২৯১)
আমার উস্তায ক'দিন আগে একটা হাদিস পড়াচ্ছিলেন, যে হাদিসটা শেখার পর চোখ ভিজে উঠেছিলো। পুনর্বার শিখেছিলাম সেদিন, আলেমদের মৃত্যুর মাধ্যমে আল্লাহ দুনিয়া থেকে ইলম উঠিয়ে নেন। একবার এক ইমামকে লেকচারে বলতে শুনেছিলাম, জ্ঞানের সূর্য হলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং চাঁদ হলেন আলেমগণ। তারা রাসূলুল্লাহর (সা) জ্ঞানকে প্রতিফলিত করেন। আলেমরা নবীদের কাজ করেন, তাদের জ্ঞান এই দুনিয়ার জন্যই অনেক দামী। আলেমদের সম্মান ও শ্রদ্ধা করা আমাদের জন্য একটি প্রয়োজন, আলেমরা আমাদের জন্য নি'আমাত।
(২৯২)
কয়েকঘন্টা আগে আমার দাদীজান দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন। ঢাকা থেকে প্রায় সাড়ে তিনশ' কিলো দূরে এক বিছানায় শুয়ে পার্থিব জীবনের কষ্ট-যন্ত্রণা, ক্ষণস্থায়ী বিভ্রমকে পেছনে ফেলে আল্লাহর কাছে চলে গেলেন তিনি। আল্লাহ তাকে দীর্ঘ হায়াত দান করেছিলেন, সম্ভবত আটানব্বই বছরের বেশিদিন তিনি পৃথিবীতে থেকেছেন। তার সাওম পালন সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে যতদূর জানা যায়, তিনি কয়েক বছর পূর্ব পর্যন্ত রামাদানের রোজা মিস করেননি, পর্দার ব্যাপারে সারাজীবন অত্যন্ত সচেতন ছিলেন তিনি। কুরআন বুঝার জন্য আরবি জানতেন না ঠিক, কিন্তু নিয়মিত তিলাওয়াত করতেন এবং জান্নাত-জাহান্নাম শব্দগুলো পড়ে তার আকুলতা ও আবেগঘন হয়ে যাওয়ার দৃশ্য আমি নিজে দেখেছি। আল্লাহ আমার দাদীকে ক্ষমা করে দিন। তার আখিরাত শুরু হয়ে গেছে, এই সময়টা খুব কঠিন। আল্লাহ যেন কবরের কঠিন সময়কে সহজ করে দেন এবং দাদীর জন্য জান্নাতুল ফিরদাউস কবুল করেন। [রাত ১:০০টা, ০১/০১/২০১৫]