মাঝে মাঝে কিছু মানুষের মৃত্যুর সংবাদ পাই। অনেক অনাড়ম্বর। খুব কাছের মানুষগুলো তাদের ব্যাপারে যে সাক্ষ্য দেয় তা হৃদয়স্পর্শী। শুনে মনে হয়, আল্লাহ বোধকরি তাকে জান্নাতবাসী করবেন। আবার, পরম আড়ম্বরে দেখি অনেকের মৃত্যু হয়। পত্রিকা, টেলিভিশন, টক-শো, ফিচার, স্মরণসভায় বক্তাদের মিলনায়তন কাঁপানো আলাপ। ব্যক্তিজীবনে তারা চরিত্রহীন এবং সাধারণ মানুষকে যথেষ্টই যন্ত্রণা দিয়েই দীর্ঘজীবন ধরে সবাইকে যন্ত্রণা দিয়ে তাদের বিদায় হয়েছে। তখনই অনুভব করি, আসলে আমাদের পরিচিতি, সম্পর্ক, খ্যাতি, আরাম-আয়েশ, বন্ধন, জাঁকজমক বিষয়গুলো খুবই ঠুনকো। এই পৃথিবীর কোন কিছু পাওয়ার আশা করে নিজেকে বিলিয়ে দেয়াটাই বোকামি, মূর্খতা। যাবার বেলায় সবাই শূণ্যহাতে বিদায় নেয় -- এই উপলব্ধিটা এই আঙ্গিকে হলে বেশ খা খা করে বুকটা।
একটা পরম সত্য সবাই খুব ভালো করে জানে -- বিদায় সবাই হয় এই জগত থেকে, কেউ থাকতে পারেনা। কেউ জানেও না কতদিন বেঁচে থাকবে। গত শনিবার irb24.net রেডিওতে মুফতি কাজী ইব্রাহিমের একটা আলাপের একাংশ আমাকে অন্য একটা চিন্তায় নিয়ে গেলো। একই রকম চিন্তাগুলো শিখেছিলাম সাইয়েদ কুতুবের "আল কুরআনের শৈল্পিক সৌন্দর্য" বইটিতে। ইদানিং যখন একলা একা অনুভূতিতে অস্থির লাগে, প্রায়ই মনে হয় রাস্তায় বেরিয়েও কত মানুষ দেখছি এখন, অথচ আমার নিশ্চিত কবরবাসে কেউ তো কাছে থাকবে না। আব্বা-আম্মা, ভাই-বোন কেউ না। সাহাবাদের জীবন পড়তে গিয়ে দেখেছি তারা ঘরের আসবাব কম থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করলে উত্তর দিয়েছিলেন, আখিরাতের আমার ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছি। তাদের কাছে আখিরাত খুব স্পষ্ট ছিলো, আখিরাতের ঘরবাড়ি ছিলো বাস্তব। আমি তো মিনিটখানেকও এই ভাবনাতে থাকতে পারিনা। কেন... তা জানিনা!
কবরের অনুভূতি মাঝে মাঝে শিহরিত করে, এক দীর্ঘকাল সেখানে সঙ্গী হবে নিজের করে যাওয়া কাজগুলো। পুলসিরাত পার হবার সময়ের ভয়াবহ অন্ধকার, হয়ত সেদিকে এগিয়ে যাব, সেই ইভেন্ট পার না করে উপায় হবে না কারো। কিন্তু ঈমানের আলো কী দীপ্তি দিয়ে অন্ধকার রাতে পথ দেখাবে আমাকে? যখন রাস্তায় পুলিশের সাঁজোয়া যানগুলো সাইরেন বাজিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এগিয়ে যায়, আশেপাশের মানুষদের হন্তদন্ত ভাব আর হৃদয়ের অবস্থা অনুভব করে মনে হয়, হাশরের অসহায়ত্ব আমাদের কতই না বাঁধন-হারা হবে, জীবনের লুকিয়ে করা, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল কাজের হিসাব থাকবে। কী এক আতঙ্কের বিষয়! ভাবলেই স্তব্ধ হয়ে যাই। সেখানে তো শুধু তারাই এগিয়ে থাকবেন, অন্তর প্রশান্তি পাবে আল্লাহর একান্ত করুণাধারায় -- যারা এই দুনিয়া থেকেই সেই সময়গুলোর বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়েছেন, যারা নিশ্চিত আল্লাহর প্রতিটি ওয়াদায়। যাদের জীবনে এখন থেকেই সেই প্রত্যাশাগুলোকে ছুঁতে চেয়ে কাজ করেন...
নিজেকে বড় অভাগা মনে হয় যখন দেখি এই চিন্তাগুলো জীবনের এতগুলো বছর পেরিয়ে এসে এতদিনে এরকম টুকরো টুকরো করে শিখছি, আমার কাছে মনে হয় আখিরাতের এই দৃশ্যপট হৃদয়ে জায়গা না পেলে পৃথিবীর বিভ্রমকে পেরিয়ে যাওয়ার শক্তি পাওয়া কঠিনই বটে! পরক্ষণেই শেখা জ্ঞান থেকে স্মরণ করি -- হোক না দেরি, তবু তো ভাবতে পারছি; এই তো একটা আলো, একে বুকে ধারণ করেই হয়ত মুক্তির পথে এগিয়ে যাওয়া যাবে। আখিরাতের স্মরণ হওয়া প্রতিটি মূহুর্তই তো আল্লাহর একান্ত রাহমাত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে আখিরাতের জন্যই প্রস্তুত হবার তাওফিক দান করুন। আমাদের মুসলিম ভাইদের ঈমানকে শক্তিশালী করে দিন।
# এই ক্ষুদ্র লেখাটি উতসর্গ করছি সাইয়্যেদ কুতুব রাহিমাহুল্লাহকে, যার লেখনী আমার জীবনের যুগান্তকারী কিছু উপলব্ধির উৎস। আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন।
[১৬ জুলাই, ২০১৩]
একটা পরম সত্য সবাই খুব ভালো করে জানে -- বিদায় সবাই হয় এই জগত থেকে, কেউ থাকতে পারেনা। কেউ জানেও না কতদিন বেঁচে থাকবে। গত শনিবার irb24.net রেডিওতে মুফতি কাজী ইব্রাহিমের একটা আলাপের একাংশ আমাকে অন্য একটা চিন্তায় নিয়ে গেলো। একই রকম চিন্তাগুলো শিখেছিলাম সাইয়েদ কুতুবের "আল কুরআনের শৈল্পিক সৌন্দর্য" বইটিতে। ইদানিং যখন একলা একা অনুভূতিতে অস্থির লাগে, প্রায়ই মনে হয় রাস্তায় বেরিয়েও কত মানুষ দেখছি এখন, অথচ আমার নিশ্চিত কবরবাসে কেউ তো কাছে থাকবে না। আব্বা-আম্মা, ভাই-বোন কেউ না। সাহাবাদের জীবন পড়তে গিয়ে দেখেছি তারা ঘরের আসবাব কম থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করলে উত্তর দিয়েছিলেন, আখিরাতের আমার ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছি। তাদের কাছে আখিরাত খুব স্পষ্ট ছিলো, আখিরাতের ঘরবাড়ি ছিলো বাস্তব। আমি তো মিনিটখানেকও এই ভাবনাতে থাকতে পারিনা। কেন... তা জানিনা!
কবরের অনুভূতি মাঝে মাঝে শিহরিত করে, এক দীর্ঘকাল সেখানে সঙ্গী হবে নিজের করে যাওয়া কাজগুলো। পুলসিরাত পার হবার সময়ের ভয়াবহ অন্ধকার, হয়ত সেদিকে এগিয়ে যাব, সেই ইভেন্ট পার না করে উপায় হবে না কারো। কিন্তু ঈমানের আলো কী দীপ্তি দিয়ে অন্ধকার রাতে পথ দেখাবে আমাকে? যখন রাস্তায় পুলিশের সাঁজোয়া যানগুলো সাইরেন বাজিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এগিয়ে যায়, আশেপাশের মানুষদের হন্তদন্ত ভাব আর হৃদয়ের অবস্থা অনুভব করে মনে হয়, হাশরের অসহায়ত্ব আমাদের কতই না বাঁধন-হারা হবে, জীবনের লুকিয়ে করা, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল কাজের হিসাব থাকবে। কী এক আতঙ্কের বিষয়! ভাবলেই স্তব্ধ হয়ে যাই। সেখানে তো শুধু তারাই এগিয়ে থাকবেন, অন্তর প্রশান্তি পাবে আল্লাহর একান্ত করুণাধারায় -- যারা এই দুনিয়া থেকেই সেই সময়গুলোর বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়েছেন, যারা নিশ্চিত আল্লাহর প্রতিটি ওয়াদায়। যাদের জীবনে এখন থেকেই সেই প্রত্যাশাগুলোকে ছুঁতে চেয়ে কাজ করেন...
নিজেকে বড় অভাগা মনে হয় যখন দেখি এই চিন্তাগুলো জীবনের এতগুলো বছর পেরিয়ে এসে এতদিনে এরকম টুকরো টুকরো করে শিখছি, আমার কাছে মনে হয় আখিরাতের এই দৃশ্যপট হৃদয়ে জায়গা না পেলে পৃথিবীর বিভ্রমকে পেরিয়ে যাওয়ার শক্তি পাওয়া কঠিনই বটে! পরক্ষণেই শেখা জ্ঞান থেকে স্মরণ করি -- হোক না দেরি, তবু তো ভাবতে পারছি; এই তো একটা আলো, একে বুকে ধারণ করেই হয়ত মুক্তির পথে এগিয়ে যাওয়া যাবে। আখিরাতের স্মরণ হওয়া প্রতিটি মূহুর্তই তো আল্লাহর একান্ত রাহমাত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে আখিরাতের জন্যই প্রস্তুত হবার তাওফিক দান করুন। আমাদের মুসলিম ভাইদের ঈমানকে শক্তিশালী করে দিন।
# এই ক্ষুদ্র লেখাটি উতসর্গ করছি সাইয়্যেদ কুতুব রাহিমাহুল্লাহকে, যার লেখনী আমার জীবনের যুগান্তকারী কিছু উপলব্ধির উৎস। আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন।
[১৬ জুলাই, ২০১৩]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে