(৪৫৯)
আমরা হয়ত যা কিছুকে শেষ বলে মনে করি, তা হয়তো অন্য কিছুর শুরু। খুব বেশি আনন্দিত কিংবা খুব বেশি আশাহত হবার কিছু নেই! সব শেষেরই একটা শুরু থাকে, সব শুরুরই একটা শেষ থাকে। পৃথিবীটাই এমন...
(৪৬০)
কেউ কেমন করে বুঝবে একজন পোড় খাওয়া মুসাফিরের অভিজ্ঞতা সে নিজে হেঁটে পার হয়নি নিজ শহর বা গ্রামের ঐ মোড়গুলোই, জানে না মধ্য রাতে শ্বদন্তওয়ালা নষ্ট ছেলেগুলোর চোখের তীক্ষ্ণতা। অথচ সেই মুসাফির তো হেঁটেছে বছরের পর বছর, শহরে-গ্রামে-পাহাড়ে, তিক্ত-উষ্ণ-শীতল সব তীব্র পরিবেশে। কেমন করে ছোট্ট পৃথিবীতে মজে থাকা সংকীর্ণ মনের সামনের চোখ বুঝবে হাজার মাইল অতিক্রম করা হাজার মানুষ চোখে ধরে রাখা চোখদুটোর দৃষ্টিকে। পাহাড়ে উঠে মেঘকে সাদা মনে হলেই কি আর মেঘগুলো তুলোর মতন কিংবা সাদা রঙের হয়ে যায়? দৃষ্টির, উপলব্ধির আর অভিজ্ঞতাকে গুণতিতে না ফেললেই কি আর তা হিসেবের বাইরে চলে যায়? যা তুমি দেখতেই পাও না দুই চোখে, তা তুমি কেমন করে বুঝবে হে অবুঝ অহংময় অবিনয়ী উদ্ধত মানুষ?
(৪৬১)
তুমি তো অন্যের ততটুকু দেখেই একটা ধারণা করে বসো, যতটুকু দু'চোখে দেখতে পাও। আচ্ছা, কারো জীবনের কতটুকু তুমি জানতে বা বুঝতে পারো? তুমি কি জানো না, অদেখার একটা জগত আছে? সেখানে আছে জ্বিন, ফেরেশতা আর আল্লাহর আরো অজানা অজস্র সৃষ্টি। সেই জগতটা এই জগতের চেয়ে বেশি রোমাঞ্চকর, মোহনীয় --তা জানো? সে জগতটার অস্তিত্ব তো এই জগতের সমান্তরালেই।
তুমি কি তোমার ক্ষুদ্রতা অনুভব করতে পারো? তুমি ভাবতে পারো তোমার বিছানার কাঠের ঘুণপোকাটাও রিযিক পেয়ে বেচে আছে, আটলান্টিকের তলে একটা শেওলাও এই মূহুর্তে রিযিক পাচ্ছে তোমার আল্লাহর। তুমি কি বুঝতে পারছ এই সূর্যের যে আলো তোমার জানালার ফুটো হয়ে ফিনকি দিয়ে আলো ছড়াচ্ছে, ততটুকু আলোও কিন্তু তোমার জন্য বরাদ্দকৃত, সেটাও নিখুঁত করে তোমার আল্লাহর আদেশ।
তুমি কি ভেবে দেখেছ তুমি কতটা ক্ষুদ্র, আবার একই সাথে কতটা অসামান্য বিশেষ ভালোবাসা তোমার জন্য তোমার রবের পক্ষ থেকে? এই অদ্ভুত ক্ষুদ্রতা সত্ত্বেও মূল্যায়িত হবার অনুভূতি নিয়েও কি অন্তরে তুমি ঘৃণা, অহংকার, পরনিন্দা, হিংসার চাষ করতে পারো?
তুমি হৃদয়টা খুলে দিয়ে ওই আকাশের মতন করে দিতে পারো না? চেষ্টা করেই দেখো না, প্লিজ?