২১ জুল, ২০১৪

গাজা গণহত্যা - ২০১৪: ডায়েরির পাতা থেকে


১০ জুলাই, ২০১৪

আজ কয়েকদিন ধরে ফিলিস্তিনে বোমা হামলা করছে নরাধম ইহুদিবাদী ইসরাইল নামক জারজ রাস্ট্রের এয়ারফোর্স, যারা বিশ্বের চতুর্থ অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ। এই বিপুল অস্ত্রধারী ও প্রযুক্তিময় ইতর আর্মি ও এয়ারফোর্সের প্রতিপক্ষ গাজা নামক এক শহর, যার লোকেরা নিরস্ত্র, যাকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ কারাগার বলেন অনেকে। আকাশে মিসাইল আর রকেট উড়লে তাদের মৃত্যুর অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না।

ক'দিন যাবত যাদের হত্যা করা হয়েছে তারা বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ইসরাইল চায় না ফিলিস্তিনে নতুন প্রজন্ম আসুক। শিশুদের হত্যা করে, পুরুষদের কারাগারে নিয়ে অত্যাচার করে আহত-নিহত করে শেষ করে দিতে চায় পুরুষদের সংখ্যা যেন নতুন সন্তান না আসে পৃথিবীতে। এরাই সেই বনী ইসরাইলের বংশধর, যারা আল্লাহর নাফরমানী করাকেই নিজেদের কাজ হিসেবে ধরে নিয়েছিলো।

ইসরাইলি ইহুদিবাদী শয়তানগুলোর হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে কথা বলার আজ কেউ নেই। গোটা পৃথিবী আজ ফুটবল নিয়ে কাতর। মেসি মেসি করতে করতে কেটে যায় বাংলার দামাল যুবক আর পুরুষগুলোর রাত। মিডিয়া এসব বিশ্বকাপমার্কা খবরের শিরোনামে ভরে রাখে পত্রিকার পাতাগুলো।


এইসব নোংরা 'মানবতা' আর 'সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ' টাইপের শব্দগুলো ঘেন্না লাগে। সত্য আর মিথ্যার এই বিপুল ব্যবধানকে দেখতে না পাওয়া মানুষগুলোর প্রতি করুণা হয়, ঘেন্নাও হয়। নিজের প্রতিও ঘেন্না হয়। হয়ত অন্ততপক্ষে মাঝরাতে আল্লাহর কাছে আর্জি করতে মাটিতে কপাল ঠেকিয়ে অশ্রুতে ভাসিয়ে দিলে নিজেকে সান্তনা দেয়ার মতন কিছু পাওয়া যেতে পারতো...

হে আমাদের আল্লাহ! যেদিন আপনি ছাড়া আর কেউ রবে না ক্ষমতার আস্ফালন দেখানোর, যেদিন আপনি সাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে যাকে ইচ্ছা তাকে সত্য কথা বলিয়ে বিচারকার্য পরিচালনা করবেন, সেদিনের তীব্র ভয়ংকর বিচারালয়ে আমাকে মাফ করুন, আমার মুসলিম ভাই ও বোনদের মাফ করুন। নিঃসন্দেহে অত্যাচারীদেরকে একবার মৃত্যু দেয়াটা খুব ক্ষুদ্র শাস্তি হয়ে যায়, নিশ্চয়ই আপনার অনন্তকালের শাস্তিই তাদের প্রাপ্য। আমরা আপনার কাছে আখিরাতের ভয়াবহতা এবং দুনিয়ায় আপনার নাফরমানী থেকে পানাহ চাই। আল্লাহ, আপনিই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, আপনিই তো ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।

১৪ জুলাই, ২০১৪

​ ​শয়তান ইহুদি ইসরাইলিগুলো গাজাবাসীকে "সরে যাওয়ার" জন্য আহবান জানিয়েছে কারণ তারা বোমা হামলা করবে। এই গাজাবাসীরা সেই মানুষগুলোরই উত্তরসূরী যারা ফিলিস্তিন ভূ-খন্ডে ইসরাইলিদের উড়ে এসে জুড়ে বসে অত্যাচার করে ঘরছাড়া করেছিলো ফিলিস্তিনিদেরকে। এখন গাজাবাসী ফিলিস্তিনিদের যাওয়ার কোন জায়গা নেই, কেবল উড়ে আসা রকেট আর বোমার আঘাতে নিহত হওয়ার অপেক্ষা করা ছাড়া। মিশরের পশু জেনারেল সিসি রাফাহ ক্রসিং বন্ধ করে দেয়ার পরে এই গাজাবাসীর চারপাশই বন্ধ, যাওয়ার কোন কোনাকাঞ্চি বাকি নেই পৃথিবীতে। ধ্বংস হোক ইহুদিবাদী ইসরাইলিরা, বনী ইসরাইলের বংশধর এইসব শয়তানরা পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্য জাতি। একদিন এইসব ইহুদিগুলো পরাজিত হয়ে মাটির সাথে মিশে যাবে। অথচ মু'মিনদেরকে আল্লাহ বিজয়ের ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিয়েছেন। কোথায় এখনকার মুসলিমদের ঈমান? সবার হৃদয়েরই কেন এত খারাপ অবস্থা যে এই পরিষ্কার ইসলামবিদ্বেষী পৃথিবীতে তারা ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনা?

২২ জুলাই, ২০১৪

আল-আকসা পুনরুদ্ধারে ঐক্যের বিকল্প নেই, আরব দেশগুলোর সম্মিলিত আঘাতে ইসরাইলকে নিশ্চিহ্ন করে ন্যায় প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। তাই আত্মিক উন্নয়ন, বুদ্ধির উন্নয়ন ও দাওয়াহ প্রদানের মাধ্যমে সত্য প্রচার করে আগামী প্রজন্মের জন্য জয়ের পথ তৈরি করে যাওয়া আমাদের সবার ব্যক্তিগত একটি লক্ষ্য হতে পারে।

* * *
হাজার হাজার নিরস্ত্র মানুষদের উপরে পৃথিবীর সর্বাধুনিক অস্ত্রসজ্জিত ইহুদিবাদী শয়তান ইসরাইলিগুলো আকাশ ও স্থল অভিযান করেছিলো ফিলিস্তিনে , মেরে ফেলেছে শত-শত নারী ও শিশুসহ অজস্র মুসলিম। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ছাদবিহীন কারাগার হিসেবে পরিচিত গাজাতে হামাস প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলে। প্রায় অর্ধশত ইহুদি ইসরাইলি সেনা খতম হয়েছে বলে জানা গেছে। আল্লাহর অশেষ রাহমাতে ইহুদি নরাধমগুলো পর্যুদস্ত হয়েছে শাহাদাতের তামান্নায় বিভোর আল-কাসসাম ব্রিগেডের আঘাতে। এত এত বিমান, ড্রোন, ক্যামেরা, প্রযুক্তি দিয়ে ঘিরে থাকা সত্বেও গাজা থেকে তেল আবিবে রকেট হামলা, ড্রোন হামলা করে ইসরাইলকে অবাক করে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে হামাস।

রমাদানে আমাদের দোয়ায় যেন আমরা না ভুলি ফিলিস্তিন, সোমালিয়া, আফগানিস্তান, ইরাক, কাশ্মীর, বার্মা, শ্রীলংকা, চেচনিয়া, চীনের নিপীড়িত, নির্যাতিত আমাদেরই ভাইবোনদের কথা। আল্লাহ আমাদের উম্মাহকে একত্রিত ও শক্তিশালী করে দিন এবং কাফির-মুশরিক ইসলামের শত্রুদের বিষদাঁত ভেঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বিজয় দান করুন। আমীন।