আজ অদ্ভুত একটা অনুধাবন হলো, একদম নতুন, একদম অন্যরকম!! আজকে কৃতজ্ঞ চিত্ত আর প্রশান্ত হৃদয়ের একটা স্বরুপ জানলাম...
ইমাম সুহাইব ওয়েবের একটা আলোচনা শুনছিলাম আজ। একটা বিষয়ে যা বুঝেছি তা অনেকটা এমন --
দুনিয়ার জমিনে, জীবন ধারণে আমরা অনেক স্যাক্রিফাইস করি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য। হয়ত সবাই কোন উপলক্ষে গান শুনছে যখন, ছেলেমেয়ে এলোমেলো আনন্দ নাচানাচি করছে, তখনো আমরা এইসব বিষয়কে এড়িয়ে চলছি আল্লাহর দ্বীনকে পালন করার জন্য। কারণ আমরা জানি এইসব আচরণের বহুমাত্রিক ক্ষতি আমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ করে জীবনকে ফিতনাময়, অশান্তিময় করে ফেলে। সামনে পিছনে অজস্র অবৈধ টাকা-পয়সার স্রোত, অথচ আমাদের জীবনে অনেক অভাব থাকলেও আমরা হয়ত কষ্টই করে যাচ্ছি...
কিন্তু তাই বলে, এরকম মানুষরা যখন জান্নাতি হবে, তখন কি তারা জান্নাতে ঢুকেই বলবেন, "কোথায় আমার গাড়ি, কোথায় আমার সেই পার্টি, বাড়ি কই। কোথায় সেই সুন্দরী, কোথায় সেই রাজপুত্র... "
না, তা নয়, বরং, আল্লাহ তাদেরকেই জান্নাতের প্রবেশ করাবেন সেদিন, যারা জান্নাতি তারা জান্নাতে ঢুকেই বলবেন -- আলহামদুলিল্লাহ। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে এই জান্নাতে আসার জন্য পথপ্রদর্শন করেছেন।
এই মানুষগুলো সবসময়েই কৃতজ্ঞ। তাদের আত্মা প্রশান্ত ছিল সবসময়েই। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা (রাহিমাহুল্লাহ) একটা খুব সুন্দর কথা বলেছিলেন,
"In this world is a Paradise, whoever does not enter it will not enter the Paradise of the Hereafter." [১]
ইমাম সুহাইব অন্য আরেক আলোচনায় বলছিলেন,
স্কলাররা বলেন, এই দুনিয়ার জান্নাত বলতে ইমাম ইবনে তাইমিয়া বুঝিয়েছিলেন অন্তরের প্রশান্তিকে। দুনিয়াতেও একজন আল্লাহর বান্দার অন্তরে সেই প্রশান্তিই থাকবে, আর সেটা জান্নাতেও সে পাবে। এই দুনিয়াতে যার অন্তর প্রশান্তিতে থাকবে না, তার আখিরাতে জান্নাত পাওয়া হবে কী করে?
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ)-র আরেকটা সুন্দর কথা আছেঃ
"আমার শত্রুরা আমার কিইবা করতে পারবে? আমার জান্নাত তো আমার অন্তরে। আমি যেখানেই যাই সে আমার সাথে সাথেই থাকে, আমার থেকে কখনো বিচ্ছিন্ন হয়না সেটা। কারাগার আমার ইবাদতের জন্য নির্জন আশ্রয়স্থল, মৃত্যুদন্ড আমার জন্য শাহাদাতের সুযোগ, আর দেশ থেকে নির্বাসন হচ্ছে আমার জন্য এক আধ্যাত্মিক ভ্রমণ।" [২]
আসলে, কৃতজ্ঞচিত্ত, প্রশান্ত আত্মার বান্দা হওয়া কতই না বরকতময়, সুন্দর... সূরা আল-ফাজরে যেই 'নাফসুল মুতমাইন্নাহ' বা প্রশান্ত আত্মাদের কথা বলা হয়েছে, তাফসীর পড়ে এমন হৃদয়ের অধিকারীদের কথা বলা হয়েছে বলেই বুঝলাম, এরাই সেই মানুষেরা -- যারা দুনিয়াতে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জীবনধারণ করার জন্য চলার পথের সমস্ত কষ্টকে হাসিমুখে মেনে নেন। আল্লাহ রব্বুল আলামীনের প্রতি তারা সবসময়েই থাকেন কৃতজ্ঞ আর সন্তুষ্ট। তাদের হৃদয় থাকে প্রশান্ত...
আখিরাতে জান্নাতিদের আল্লাহ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলবেনঃ
♥ "হে প্রশান্ত আত্মা! চলো তোমার রবের দিকে এমন অবস্থায় যে তুমি (নিজের শুভ পরিণতিতে) সন্তুষ্ট (এবং তোমরা রবের) প্রিয়পাত্র। শামিল হয়ে যাও আমার (নেক) বান্দাদের মধ্যে এবং প্রবেশ করো আমার জান্নাতে।" ♥
-- [সূরা ফাজর : ২৭-৩০]
আল্লাহ আমাদেরকে সেই প্রশান্ত আত্মাকে অর্জন ও ধারণ করার তাওফিক দিন, আল্লাহ আমাদেরকে কবুল করে নিন।
রেফারেন্সঃ
ইমাম সুহাইব ওয়েবের একটা আলোচনা শুনছিলাম আজ। একটা বিষয়ে যা বুঝেছি তা অনেকটা এমন --
দুনিয়ার জমিনে, জীবন ধারণে আমরা অনেক স্যাক্রিফাইস করি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য। হয়ত সবাই কোন উপলক্ষে গান শুনছে যখন, ছেলেমেয়ে এলোমেলো আনন্দ নাচানাচি করছে, তখনো আমরা এইসব বিষয়কে এড়িয়ে চলছি আল্লাহর দ্বীনকে পালন করার জন্য। কারণ আমরা জানি এইসব আচরণের বহুমাত্রিক ক্ষতি আমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ করে জীবনকে ফিতনাময়, অশান্তিময় করে ফেলে। সামনে পিছনে অজস্র অবৈধ টাকা-পয়সার স্রোত, অথচ আমাদের জীবনে অনেক অভাব থাকলেও আমরা হয়ত কষ্টই করে যাচ্ছি...
কিন্তু তাই বলে, এরকম মানুষরা যখন জান্নাতি হবে, তখন কি তারা জান্নাতে ঢুকেই বলবেন, "কোথায় আমার গাড়ি, কোথায় আমার সেই পার্টি, বাড়ি কই। কোথায় সেই সুন্দরী, কোথায় সেই রাজপুত্র... "
না, তা নয়, বরং, আল্লাহ তাদেরকেই জান্নাতের প্রবেশ করাবেন সেদিন, যারা জান্নাতি তারা জান্নাতে ঢুকেই বলবেন -- আলহামদুলিল্লাহ। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে এই জান্নাতে আসার জন্য পথপ্রদর্শন করেছেন।
এই মানুষগুলো সবসময়েই কৃতজ্ঞ। তাদের আত্মা প্রশান্ত ছিল সবসময়েই। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা (রাহিমাহুল্লাহ) একটা খুব সুন্দর কথা বলেছিলেন,
"In this world is a Paradise, whoever does not enter it will not enter the Paradise of the Hereafter." [১]
ইমাম সুহাইব অন্য আরেক আলোচনায় বলছিলেন,
স্কলাররা বলেন, এই দুনিয়ার জান্নাত বলতে ইমাম ইবনে তাইমিয়া বুঝিয়েছিলেন অন্তরের প্রশান্তিকে। দুনিয়াতেও একজন আল্লাহর বান্দার অন্তরে সেই প্রশান্তিই থাকবে, আর সেটা জান্নাতেও সে পাবে। এই দুনিয়াতে যার অন্তর প্রশান্তিতে থাকবে না, তার আখিরাতে জান্নাত পাওয়া হবে কী করে?
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ)-র আরেকটা সুন্দর কথা আছেঃ
"আমার শত্রুরা আমার কিইবা করতে পারবে? আমার জান্নাত তো আমার অন্তরে। আমি যেখানেই যাই সে আমার সাথে সাথেই থাকে, আমার থেকে কখনো বিচ্ছিন্ন হয়না সেটা। কারাগার আমার ইবাদতের জন্য নির্জন আশ্রয়স্থল, মৃত্যুদন্ড আমার জন্য শাহাদাতের সুযোগ, আর দেশ থেকে নির্বাসন হচ্ছে আমার জন্য এক আধ্যাত্মিক ভ্রমণ।" [২]
আসলে, কৃতজ্ঞচিত্ত, প্রশান্ত আত্মার বান্দা হওয়া কতই না বরকতময়, সুন্দর... সূরা আল-ফাজরে যেই 'নাফসুল মুতমাইন্নাহ' বা প্রশান্ত আত্মাদের কথা বলা হয়েছে, তাফসীর পড়ে এমন হৃদয়ের অধিকারীদের কথা বলা হয়েছে বলেই বুঝলাম, এরাই সেই মানুষেরা -- যারা দুনিয়াতে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জীবনধারণ করার জন্য চলার পথের সমস্ত কষ্টকে হাসিমুখে মেনে নেন। আল্লাহ রব্বুল আলামীনের প্রতি তারা সবসময়েই থাকেন কৃতজ্ঞ আর সন্তুষ্ট। তাদের হৃদয় থাকে প্রশান্ত...
আখিরাতে জান্নাতিদের আল্লাহ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলবেনঃ
♥ "হে প্রশান্ত আত্মা! চলো তোমার রবের দিকে এমন অবস্থায় যে তুমি (নিজের শুভ পরিণতিতে) সন্তুষ্ট (এবং তোমরা রবের) প্রিয়পাত্র। শামিল হয়ে যাও আমার (নেক) বান্দাদের মধ্যে এবং প্রবেশ করো আমার জান্নাতে।" ♥
-- [সূরা ফাজর : ২৭-৩০]
আল্লাহ আমাদেরকে সেই প্রশান্ত আত্মাকে অর্জন ও ধারণ করার তাওফিক দিন, আল্লাহ আমাদেরকে কবুল করে নিন।
রেফারেন্সঃ
- [তাফসীর] প্রশান্ত আত্মার ব্যাখ্যা : নফসে মুতমাইন্নাহ কী
- [ভিডিও] ইমাম সুহাইব ওয়েব :: Understanding Islam and Moderation
- [ভিডিও] ইমাম সুহাইব ওয়েব :: I tried but it didn't work
- [লিঙ্ক] ইমাম ইবনে তাইমিয়ার বইসমূহ : কালামুল্লাহ ডট কম
- [১] ইবনুল কাইয়িম Ibn al-Qayyim, al-Wabil (p.69)
- [২] ইবনুল কাইয়িম Ibn al-Qayyim, al-Wabil (p.69)