ফেসবুকে অনেক তথ্য-- সত্য বা মিথ্যা, সৌম্য বা অশ্লীল, খারাপ বা ভালো। এত বেশি পেইজ, এত বেশি প্রোফাইল, এত বেশি কথা, এত বেশি কমেন্ট যে এখন অনেক কথাবার্তা দেখলেই এক ধরণের নিরাসক্তি চলে আসে। সবারই কথা বলার সুযোগ থাকায় ইডিয়ট ও মূর্খদের বেহুদা প্যাঁচাল অনেক বেশি থাকে তাই সেসবের মাঝে পড়ে এখন ফেসবুকে আর ব্লগে লোকের কথায় আমরা খুব কমই প্রভাবিত হই। অনেক ক্ষেত্রেই অনলাইনে বিভিন্ন তথ্য দেখে বিশ্বাস করে পরে সেগুলো মিথ্যা প্রমাণিত হতে দেখে সেই প্রবঞ্চিত হওয়ার অভিজ্ঞতা অনেক কিছুই বিশ্বাস করতে ভেতর থেকে বাধা দেয়। ফলে অনেক সত্য কথাও অবহেলা ও অবজ্ঞায় হারিয়ে যায়। আমরা অনেক সুন্দর সুন্দর কথা দেখি কিন্তু বাস্তব জগতে সুন্দর চিন্তার মানুষের চরম আকাল দেখে সেসব সুন্দর কথা তো দূরে থাক, সেগুলোর পেছনের মানুষগুলোকেও অনেকক্ষেত্রে বিশ্বাস করতে ও সম্মান করতে ইচ্ছা করে না।
এখন প্রচুর নিউজ পোর্টাল। পান থেকে চুন খসলেও তা নিউজ। অথচ প্রতিটি নিউজ কেমন যেন বুকের ভেতরে ঘিনঘিনে বিষয় তৈরি করে। রাজনৈতিক নেতাদের নির্বোধ-মিথ্যা-অসার কথাবার্তা দেখে ঘিনঘিন লাগে, বিভিন্ন ছোট খবরের বড় ফোকাস এবং বড় খবরের ছোট ফোকাস দেখে বুঝতে পারা যায় মিডিয়ার ভন্ডামি। প্রায়ই অশ্লীলতার হিড়িক লাগে অনেক নিউজ পোর্টালে, তারা সেসব দিয়ে লাইক ও হিট বাড়ায়-- আদতে তা ক্ষতি ছাড়া জনমানুষের কোন কাজে আসে না। বানিয়ে বানিয়ে নিউজ করে, উলটাপালটা শিরোনাম দেয় হিট বাড়াতে। এসবের কারণে অনেক নিউজও অনেকে বিশ্বাস করি না আমরা।
এই সভ্যতা এবং এই টেকনোলজি ফেসবুকে পেইজ এবং অনলাইনে প্রচুর ওয়েবসাইট নির্মান করবেই। এই গতিবেগ, এই তীব্র শক্তি দিয়ে এত এত সৃষ্টি -- তা কি আদৌ মানুষের কোন ভালো করতে পারছে? আমাদের ভেতরের সুন্দরগুলো, ভালো কিছু করতে চাওয়ার আকাংখাগুলো তো খারাপ ও ঘিনঘিনে অনুভূতিগুলোর পেছনে চাপা পড়ে চলেছে ক্রমশ।
মোটের উপরে এই সীমাহীন তথ্যভান্ডার আমাদের খুবই কম উপকারে আসে। এককালের এনসাইক্লোপিডিয়ার একটা খন্ড কারো জীবনে যে পরিমাণ জ্ঞান ও উপলব্ধির সৃষ্টি করতো, এখনকার গোটা গুগলের সার্চিং দিয়ে আসা কোটি কোটি ওয়েবসাইটের তথ্য তার সহস্রভাগের এক অংশ জ্ঞান ও বোধ তৈরি করতে পারে না।
জানিনা আমরা ঠিক কোন প্রযুক্তিকে আলিঙ্গন করতে বাধ্য হচ্ছি। যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আমাদেরকে মাত্র অল্প কিছু ভালো দিয়ে খারাপের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে, সে প্রযুক্তিকে আমরা কেন ভালো মনে করে তার পেছনে ছুটতে বাধ্য হচ্ছি? শত শত বছর আগের সেই প্রাকৃতিক পৃথিবী কি অনেক ভালো ছিলো না? তখন হৃদয়গুলোতে সত্যিকারের আবেগ ও অনুভূতি ছিলো, পরের দুঃখে সহানুভূতি ও সহৃদয় প্রতিক্রিয়া ছিলো; এখনকার মতন লাইক-কমেন্ট-শেয়ার নির্ভর সস্তা লোকদেখানো প্রতিক্রিয়া নয়...
[৩০ জানুয়ারি, ২০১৫]
এখন প্রচুর নিউজ পোর্টাল। পান থেকে চুন খসলেও তা নিউজ। অথচ প্রতিটি নিউজ কেমন যেন বুকের ভেতরে ঘিনঘিনে বিষয় তৈরি করে। রাজনৈতিক নেতাদের নির্বোধ-মিথ্যা-অসার কথাবার্তা দেখে ঘিনঘিন লাগে, বিভিন্ন ছোট খবরের বড় ফোকাস এবং বড় খবরের ছোট ফোকাস দেখে বুঝতে পারা যায় মিডিয়ার ভন্ডামি। প্রায়ই অশ্লীলতার হিড়িক লাগে অনেক নিউজ পোর্টালে, তারা সেসব দিয়ে লাইক ও হিট বাড়ায়-- আদতে তা ক্ষতি ছাড়া জনমানুষের কোন কাজে আসে না। বানিয়ে বানিয়ে নিউজ করে, উলটাপালটা শিরোনাম দেয় হিট বাড়াতে। এসবের কারণে অনেক নিউজও অনেকে বিশ্বাস করি না আমরা।
এই সভ্যতা এবং এই টেকনোলজি ফেসবুকে পেইজ এবং অনলাইনে প্রচুর ওয়েবসাইট নির্মান করবেই। এই গতিবেগ, এই তীব্র শক্তি দিয়ে এত এত সৃষ্টি -- তা কি আদৌ মানুষের কোন ভালো করতে পারছে? আমাদের ভেতরের সুন্দরগুলো, ভালো কিছু করতে চাওয়ার আকাংখাগুলো তো খারাপ ও ঘিনঘিনে অনুভূতিগুলোর পেছনে চাপা পড়ে চলেছে ক্রমশ।
মোটের উপরে এই সীমাহীন তথ্যভান্ডার আমাদের খুবই কম উপকারে আসে। এককালের এনসাইক্লোপিডিয়ার একটা খন্ড কারো জীবনে যে পরিমাণ জ্ঞান ও উপলব্ধির সৃষ্টি করতো, এখনকার গোটা গুগলের সার্চিং দিয়ে আসা কোটি কোটি ওয়েবসাইটের তথ্য তার সহস্রভাগের এক অংশ জ্ঞান ও বোধ তৈরি করতে পারে না।
জানিনা আমরা ঠিক কোন প্রযুক্তিকে আলিঙ্গন করতে বাধ্য হচ্ছি। যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আমাদেরকে মাত্র অল্প কিছু ভালো দিয়ে খারাপের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে, সে প্রযুক্তিকে আমরা কেন ভালো মনে করে তার পেছনে ছুটতে বাধ্য হচ্ছি? শত শত বছর আগের সেই প্রাকৃতিক পৃথিবী কি অনেক ভালো ছিলো না? তখন হৃদয়গুলোতে সত্যিকারের আবেগ ও অনুভূতি ছিলো, পরের দুঃখে সহানুভূতি ও সহৃদয় প্রতিক্রিয়া ছিলো; এখনকার মতন লাইক-কমেন্ট-শেয়ার নির্ভর সস্তা লোকদেখানো প্রতিক্রিয়া নয়...
[৩০ জানুয়ারি, ২০১৫]