৮ আগ, ২০১২

আলোর স্পর্শ


ইদানিং কিছু যখন পড়তে গিয়ে মনে হয় বিশাল আবিষ্কার করে ফেলেছি, তখন ডানে বামে তাকিয়ে দেখি আমার চেয়ে কমবয়েসি অনেক মানুষ সেসব অনেক বছর আগেই পড়ে শেষ করে ফেলেছে।নিজেকে তখন হঠাত বাচ্চা বলে মনে হতে থাকে.... সেদিন একটা বই পড়তে গিয়ে একটা মজার জিনিস জানলাম, সেটা অভ্যাসবশত শেয়ার করার জন্য  লাফ দিয়ে ফোন হাতে নিয়েই থেমে গেলাম। ছোট ভাইটা নিশ্চয়ই এসব পড়ে রেখেছে অনেক বছর আগেই। সবাই তো আর আমার মতন মূর্খ ছিলনা!

আজকাল কুরআনের তাফসীর পড়তে গিয়ে দেখি আব্বু অজস্রবার পড়ে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে আন্ডারলাইন করে, হাইলাইটার দিয়ে হাইলাইট করে রেখেছেন। অথচ আমি হতভাগা একবারও পড়ি নাই।

ইদানিং দ্বীনের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত সব মানুষগুলোকেই ব্যাপক হিংসা হয়... ছোটবড় কোন ছাড়াছাড়ি নাই...


* * * * * * *

আসহাবে রাসূলের জীবনকথা নামের একটা বই আছে আমার কাছে, সাহাবাদের জীবনী সেটা। মাত্র ৫-৬ পাতায় একেকজন সাহাবীর জীবনের ঘটনাগুলো উদ্ধৃত আছে। যখনই বইটা পড়তে যাই, চোখের অশ্রুতে চোখ বারবার ঝাপসা হয়, বারবার। কোনদিন ভাবিনি আমার এই বয়েসে আমি এরকম হয়ে যাবো, একটা পাতা পড়তে গেলেও আমি চোখের অশ্রুর কাছে আটকা পড়ে যাবো।
একটা সময় ভাবতাম অশ্রু পৌরুষত্বের বিরোধী, সেটা শিখেছিলাম এই *প্রচলিত* সমাজের কাছেই। কিন্তু ইসলামকেই একমাত্র জীবনবিধান হিসেবে মেনে নিতে চাওয়ার পর পড়তে গিয়ে একদিন জেনেছি, অশ্রু হলো রাহমাত, যা প্রিয়জনকে ভালোবাসার কারণে বহে যেতে পারে, জেনেছি অশ্রু যদি আমার আল্লাহকে স্মরণে হয়, তবে সেটা অল্প ক'দিনের জীবনের পরের অনন্তকালের জীবনে মুক্তির উসিলা হতে পারে -- আল্লাহকে স্মরণ করে ক্ষমা চাওয়া বান্দার অশ্রু তিনি সইতে পারেন না।

সাহাবা আজমাঈন কী অপরূপ চরিত্রের অধিকারী ছিলেন! কত ভীষণ বদলে গিয়েছিলেন তারা এই ইসলামের ছায়াতলে এসে -- সেটা ভেবে ভেবে শিহরিত হই। সমস্ত সম্পদ কী করে একেকজন সাদাকাহ করে ফেলেছিলেন, নিশ্চিত মৃত্যূ বুঝেও যুদ্ধের ময়দান থেকে ফিরে আসেন নি, শহীদ হয়েই ফিরেছেন। আল্লাহ তাদের চলা সেই পথে আমাদের পরিচালিত করুন, আমাদেরকে আল্লাহ দ্বীনের জন্য কবুল করে নিন।

এই পৃথিবী আর ক'দিনের? এরপর তো অনন্তকালের জীবন। নিশ্চয়ই আমরা সবাই আল্লাহরই বান্দা, তার কাছ থেকেই এসেছি এবং তার কাছেই আমাদের ফিরে  যেতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে