৪ মে, ২০১৩

হৃদয়ের ক্ষত সারাবো কেমনে

মানব হৃদয়ের কিছু অব্যক্ত যন্ত্রণা থাকে, যেগুলো ছোট থেকে বড় হবার সময়ে মানুষ চোট খেতে খেতে ক্ষত করে ফেলে। শরীরের ক্ষতগুলো দেখা যায়, হৃদয়ের ক্ষত দেখা যায় না। সেই ক্ষতের উপরে আবার চোট পেলে যেই যন্ত্রণা মাত্রাছাড়া হয়ে যায়। কখনো সেই যন্ত্রণা আত্মসম্মানবোধে লাগায়, কখনো নিজের উপরে নিজেকে বীতশ্রদ্ধ করে তোলে, কখনো মনে হয় পৃথিবীটাই নির্মম, কখনো আবার শুধু নিজেকেই কপালপোড়া অভাগা মনে হয়... মনে হতেই পারে, মানব মনের ধরণটাই অমন। কিন্তু আসলেই কি তাই? হয়ত নিজের ভুলের কারণেই যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়েছিল, হতে পারে দুর্ভাগ্যক্রমে কিছু ঘটে গিয়েছিলো...

যা-ই হোক না কেন। ঠিক সেই মূহুর্তটার কষ্টটুকুকে স্রেফ তার কাছেই সোপর্দ করে দিতে হয়, যিনি এই মূহুর্তেও আমার সাথেই আছেন, যিনি আমার প্রতি তার অন্তহীন ভালোবাসা আর দয়া দিয়েই এই কষ্টের মূহুর্তটা দিয়েছেন, তিনি চান তার দিকে যেন ফিরে যাই। কতটা অপমানবোধ, হতাশা, গ্লানি, অপরাধবোধ, অসহায়ত্ব, ক্ষুদ্রতার অনুভূতি আমাকে গ্রাস করেছে সেটা বিষয় নয় -- বিষয় হচ্ছে কার কাছে নিজেকে সঁপে দিচ্ছি, কার কাছে নিজের মনের কষ্টগুলো দিয়ে দিচ্ছি। তার কাছে ফিরে যাওয়াটাই আমার এই জীবনের সফলতম মূহুর্ত। আমার যতই পরাজয় আর গ্লানি থাকুক, তার কাছে ফিরে গেলে তিনি এর চাইতে শতগুণ বেশি প্রতিদান আমাকে দিবেন। এই দুনিয়াতেও দিতে পারেন, অথবা দুনিয়া ও আখিরাতে উভয় জীবনেই দিলে তো আমি পরম ভাগ্যবান।

তার কাছে ছোট হবার কিছু নেই, তিনি আমার সবকিছু জানেন। আমাকে সমগ্র পৃথিবী ছোট করতে চাইলেও তিনি যদি আমার প্রতি প্রসন্ন থাকেন, তার জন্যই যদি হয় আমার প্রতিটি মূহুর্ত, আমার তো হারাবার কিছু নেই। তার সন্তুষ্টি পেয়ে এই পৃথিবী থেকে যেতে পারলেই তো আমার শ্রেষ্ঠতম পাওয়া। মনে রাখতে হবে, তার ভান্ডার অফুরান। তিনি বঞ্চিত ও অসহায়কে এক পলকেই সম্পদশালী ও যাবতীয় কল্যাণের মালিক করে দিতে পারেন। তার ক্ষমতার শেষ নেই, তিনি সবচাইতে আপনজন। পৃথিবীর মানুষ পারেনা আমাদের হৃদয়ের ক্ষত সারাতে, তাকে স্মরণেই আমাদের প্রশান্তি, প্রাপ্তি, মুক্তি। প্রচন্ড গরমে স্বস্তির এক পশলা বৃষ্টিতে সিক্ত হওয়া তো এমনই এক মুগ্ধকর অনুভূতি!! হে প্রেমময়, হে ক্ষমাশীল, হে মহাসম্পদশালী মহাপবিত্র, আমাদের দয়া করুন।

[৪ মে, ২০১৩]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মূল্যবান মতামত জানিয়ে যান লেখককে