২৬ সেপ, ২০১৫

রুমী কবিতা (চতুর্দশ কিস্তি)


* * * * * * * *
সূর্যের মতন হও মানুষকে অনুগ্রহ ও দয়া করায়
রাতের মতন হও অন্যদের ভুলগুলো ঢেকে দেয়ায়
বয়ে চলা স্রোতধারার মতন হও উদারতায়
মৃত্যুর মতন হয়ে যাও রাগ ও ক্ষুব্ধতায়,
মাটির মতন হও বিনম্রতায়,
তুমি যেমন তেমন করেই নিজেকে প্রকাশ করো।
যেমন করে নিজেকে প্রকাশ করো, তেমনটিই হও।

~জালালুদ্দিন রুমী

* * * *
আমরা তো কেবল শ্রেষ্ঠতম চিত্রশিল্পীর হাতে থাকা এক রংতুলি। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * *
আমার ভেতরে যে সৌন্দর্য তুমি দেখতে পাও, তা আসলে তোমারই প্রতিচ্ছবি। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * *
প্রতিটি মূহুর্ত, একটি নতুন সৌন্দর্য। ~রুমী

* * * * *
মাটি ও পানির এই আবাসের মাঝে,
আমি যেন ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছি।
এসো এখানে, হে মোর প্রিয়,
নতুবা আমায় চলে যেতে দাও।

~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * *
আমার হৃদয়ের আকার তো ক্ষুদ্র, এতটাই ছোট যে তা প্রায় দেখাই যায় না। এত বিশাল পরিমাণ দুঃখ-বেদনা আমি কীভাবে ধারণ করবো এতে?

তিনি উত্তর দিলেন, "খেয়াল করে দেখো, তোমার চোখটাও তো অনেক ক্ষুদ্র। কিন্তু এই চোখে তো তুমি গোটা বিশ্বজগতকেই ধারণ করো।"

~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * *
গতকাল আমি চতুর ছিলাম তাই পৃথিবীকে বদলে দিতে চেয়েছিলাম। আজ আমি বুদ্ধিমান হয়েছি, তাই নিজেকেই বদলে দিচ্ছি।~ জালালুদ্দিন রুমী

২৫ সেপ, ২০১৫

মনের জানালা মাঝে # ৩৬


(৩৭৭)
আজ আপনি একটি গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিতে পারছেন কেননা কেউ একজন একদিন গাছের চারাটি যত্ন করে রোপন করেছিল।

(৩৭৮)
এক অন্ধ ব্যক্তিকে তার অন্ধত্ব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর দিলেন,
আল্লাহ আমাকে এতটাই ভালোবাসেন যে তিনি চান আমি মৃত্যুর পর তাকে দেখার আগে যেন আর অন্য কাউকে না দেখি।

 #দৃষ্টিভঙ্গি #অনুপ্রেরণা

(৩৭৯)
পৃথিবীতে সুন্দর কম নয়। আবার, কেবল কিছু মানুষ শান্তি, সুন্দর ও সুখের স্পর্শে থাকে সে ধারণাটাও ভুল। আসলে, সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে দ্রষ্টার চোখে, তার মনের মাঝে। যে দেখে, যা দেখে তাকে আপন মাধুরী মিশিয়ে রচনা করে।

তাই কিছু মানুষ চারপাশে অনিন্দ্য সুন্দর দেখতে পায়, কিছু মানুষ আনন্দ ও উচ্ছলতা পায় নিয়তই। সুন্দর তো ছড়িয়ে আছে চারপাশে; দেখতে পাচ্ছেন তো আপনি?

(৩৮০)
আমাদের জীবনের জটিলতার মাঝে পড়ে আমরা অনেক সময় হাসতে ভুলে যাই। অনেকে আবার মনে করেন ব্যক্তিত্ব রাখতে হলে হাসতে হয় কম। কেউ কেউ ভালো মুসলিম হতে গিয়ে কম হাসেন। এরা সবাই ভীষণ ভুলে ডুবে আছে। কেননা আমরা হাদিস থেকে জানি, হাসিমুখে অন্যের সাথে সাক্ষাতও হলো সাদকা।

আপনি মন খুলে হাসুন। প্রাণ খুলে হাসুন। আপনার শরীর ভালো থাকবে। মন চনমনে হবে। প্রাণবন্ত মানুষ হোন। অন্তত চেষ্টা করুন। প্যাঁচানো চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্তি দিন। নিজেকে নিজের চিন্তার কারাগারে আটকে রাখবেন না।

পৃথিবীটা খুব সুন্দর। আমাদের জীবনটাও। আলহামদুলিল্লাহ। দুশ্চিন্তায় আজকের দিনটি নষ্ট করবেন না। ইতিবাচক হোন। হাসুন, আনন্দিত হতে শিখুন খুব ছোট ছোট বিষয়েও।

দেখবেন জীবনটা কেমন বদলে যাবে!

(৩৮১)
অতিরিক্ত তথ্য মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কেবলমাত্র কল্যাণকর জ্ঞানার্জন করুন, সুরক্ষিত থাকুন।

(৩৮২)
# আগে মানুষ মনের কথা ডায়েরিতে লিখতো। কেউ পড়লে বিরক্ত হতো।
# এখন মানুষ মনের কথা ফেসবুকে লিখে। কেউ না পড়লে বিরক্ত হয়।

মোরাল:  ফেসবুক মানুষকে বেহায়া বানিয়ে দিয়েছে।

[কৃতজ্ঞতা: মাহফুজ ভাই]

 (৩৮৩)
আহমদ মুসা ক্যারিবিয়ান দ্বীপে গিয়ে একবার খুতবা দিয়ে জুমুয়ার নামাজ পড়িয়েছিলো। লোকেরা অনেকদিন পর তার ইমামতিতেই জুমুয়া পড়েছিলো কেননা তারা তাদের মুসলিম পরিচয় ভুলে গিয়েছিলো রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে।

আহমদ মুসা আমার ছোটবেলায় পড়া গল্পের প্রধান চরিত্র। কিন্তু আহমদ মুসার খুতবা দিতে পারার যোগ্যতা আমার খুব মনে ধরেছিল। তাই সেই অনুপ্রেরণা থেকে নামাজ সংক্রান্ত বইতে সুন্নাহ খুতবার দোয়া পেয়ে মুখস্ত করতে চেয়েছিলাম। এর মাঝে ছিলো সূরা নিসার ১ নং আয়াত। আজকে খেয়াল করলাম আয়াতটা মুখস্ত হয়ে আছে আমার। আলহামদুলিল্লাহ। খুতবা না পারলেও এতটুকুই বা কম কীসে"!

যারা সুন্দর সাহিত্য লিখেন তারা কতই না সুন্দর কাজ করেন! আল্লাহ সাইমুম সিরিজের লেখকের কাজগুলোতে বারাকাহ দান করুন এবং তাকে কবুল করে নিন।

২৪ সেপ, ২০১৫

মনের জানালা মাঝে # ৩৫



(৩৭১)
ভালোবাসা আর ভালোলাগার মধ্যে পার্থক্য কী?
একজন জ্ঞানী ব্যক্তি সুন্দর উত্তর দিয়েছিলেন--
তোমার যখন কোন ফুল ভালো লাগবে, তুমি তাকে ছিঁড়ে নেবে।
যখন তূমি ফুলকে ভালোবাসবে, তুমি গাছটাতে প্রতিদিন পানি দেবে।
যারা একথা বুঝতে পারে, তারা জীবনকে বুঝতে পারে।

(৩৭২)
কোন মানুষ কি কখনো অন্য কাউকে বুঝে? সবাই অন্যকে নিজের মতন করে বুঝে। তাই, কেউ যখন ভালোবাসা পায়, তখন যে ভালোবাসা পায়, তার চেয়ে বেশি ভূমিকা যে ভালোবাসে তার।

ভালোবাসা পেয়ে নিজে বর্তে যাবার চেয়ে সম্ভবত বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো কৃতজ্ঞ হওয়া।

(৩৭৩)
জীবনে হোঁচট খেয়েছেন? আহত? পথহারা মনে হচ্ছে নিজেকে? হাল ছাড়বেন না। হেরে যাবেন না। উঠুন। ঘুরে দাড়ান প্রতিবন্ধকতার যন্ত্রণা থেকে। এগিয়ে চলুন। এভাবেই যেতে হয়, এভাবেই চলতে হয়। পৃথিবীর জীবনটাই এমন। বারবার পরাজিত মনে হবে নিজেকে। কিন্তু প্রতিটি জেগে ওঠাই প্রকৃত সফলতা। বাকিটুকু তো কেবল আনুষ্ঠানিকতা!

(৩৭৪)
জীবনের ব্যর্থতাকে আপনি কেমন করে সামলে নেন সেটার উপরে নির্ভর করে আপনি গড়ে উঠবেন নাকি ধ্বংস হবেন।

(৩৭৫)
সবসময় বেশি সিরিয়াস থাকা শরীর-মনের জন্য উপকারী না। একটু কৌতুক, হাসিঠাট্টা, ছোটাছুটি করা প্রয়োজন। সময় পেলে প্রকৃতির সান্নিধ্যে ঘুরে বেড়ানোও প্রয়োজন। পৃথিবীর জীবনটা অত বোরিং না, পেইনও না। এবং অবশ্যই শুধুমাত্র সুখের জায়গাও না। তাই, খারাপ সময়কে গ্রহণ করে নিন। এবং অপেক্ষা  করুন, ভালো সময় অবশ্যই আসবে!

(৩৭৬)
আমাদের জীবনে আল্লাহ শত-শত মানুষ এবং হাজার হাজার ঘটনা উপহার দেন যার বেশিরভাগই কল্যাণকর। আমরা মাঝে মাঝে তার মাত্র একটি-দু'টি-তিনটি থেকে তিক্ততা, যন্ত্রণা, কষ্ট  পেয়ে কাতর হয়ে যাই, আশাহত হয়ে যাই। এই বিশাল পৃথিবীর যিনি মালিক, তিনি তার আপন মহিমায় সমস্ত কিছুকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। আপনার-আমার শ্বাস-প্রশ্বাস, খাবারের যোগানও তার মাঝে একটি। যদি এই মূহুর্তেই খুব বড় রোগ হয়, যদি এখনই খাবার গ্রহণের, চোখে দেখার ক্ষমতা রহিত হয়ে যায়-- পারবো কি তা পুনরুদ্ধার করতে?  কেন আমরা তবু প্রাণভরা শুকরিয়ায় 'আলহামদুলিল্লাহ' বলে উঠিনা?

ভেবে কি দেখেছি আমাদের খাবারটা শস্যক্ষেত থেকে আমার হাত পর্যন্ত আসার পথে কত কৃষক, কত শ্রমিক, কত গুদাম, কোল্ড স্টোরেজ, বাস-ট্রাক-রিকসা-ভ্যান, মুটে-মজুর, বিক্রেতার হাত ঘুরে যত্নভরে একজন রাঁধুনির রান্নার ফলে আমাদের প্লেটে উঠে এসেছে? আল্লাহ তার নিজ দয়ায়, মহিমায়, ঔদার্যে ও ক্ষমায় ঘিরে রেখেছেন আমাদের একেকটি জীবন। এই সৃষ্টির চারিধারে কেবল তারই সৃষ্টির মহত্ব।

আমাদের একেকটি প্রাণ। মাঝে মাঝে বড্ড চিন্তার অতীত এক মিরাকল মনে হয়। আল্লাহ যেন আমাদেরকে তার দয়া ও ভালোবাসায় জড়িয়ে রাখেন।

২৩ সেপ, ২০১৫

মনের জানালা মাঝে # ৩৪



(৩৬০)
একজন স্নিগ্ধ ও কোমল মনের মানুষের সাথে কিছুসময় সুন্দর কথোপকথনের অনুভূতি বর্ণনাতীত আনন্দময়।

(৩৬১)
যে উপেক্ষা করতে শেখেনি, সে কোনদিন বড় হতে পারেনি।

(৩৬২)
কোন কাজে সফলতা অর্জনের মূল চাবি হলো কাজটিকে ভালোবাসা, সে যত ছোট কাজই হোক না কেন। কাজটির তুচ্ছ অংশগুলোকেও সমান ভালোবাসতে হয়।

(৩৬৩)
যখন আমরা ভালোবাসা দিয়ে, আনন্দ নিয়ে কোন কাজ করতে থাকি, কাজটি হয় সুন্দর এবং আমরা অর্জন করি দক্ষতা।

(৩৬৪)
কখনো কখনো আমাদের নিরবতায় একলা থাকার খুব প্রয়োজন-- আমরা কে তা বুঝতে এবং আমরা জীবনে সত্যিকার অর্থেই কী চাই তা উপলব্ধি করতে...

(৩৬৫)
আপনি যদি ঘুমাতে না পারেন, তাহলে শুয়ে থেকে দুশ্চিন্তা আর এলোমেলো চিন্তা না করে কিছু করুন যা আপনাকে প্রেরণা যোগাবে।

(৩৬৬)
সবাই আপনার মতন চিন্তা করে না। আপনিও অন্যদের মতন চিন্তা করেন না। কেউ কারো মতন চিন্তা করে না। সবাই অন্যদের থেকে একদম আলাদা।

(৩৬৭)
কখনো কখনো নিজ জীবন থেকে ছুটি নেয়া প্রয়োজন আমাদের। ব্যস্ততা থেকে একটু অবসর। সম্ভব হলে শহর থেকে দূরে কোন গ্রামীণ পরিবেশে প্রকৃতির মাঝে মুঠোফোন-অন্তর্জাল ছেড়ে একটু নিজের সাথে সময় কাটানো... নিজেকে চিনতে, নিজেকে বুঝতে। শরীরের ভেতরের আত্মাটাকে তার চাওয়া ও কাজগুলোর বোঝাপড়া করতে...

 (৩৬৯)
যেকোন কাউকে ভালোবাসতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সাহস। সাহস লাগে অন্যের ভুল উপেক্ষা করতে, সাহস লাগে সংশয় কাটিয়ে উঠতে, সাহস লাগে অসুন্দরকে সুন্দর করে দেখতে। অথচ যে হৃদয় ভালোবাসতে পারে না, সে হৃদয় নানা জরাজীর্ণতা আর অসুস্থতায় ভরে যায়। সুস্থ থাকতে চাইলে প্রচুর ভালোবাসতে হয়। ভালোবাসতে চাইলে খুব সাহসী হতে হয়। ভালোবাসতে চাইলে মানুষের ভুল-ত্রুটি খোঁজার অসুস্থতা পেরিয়ে সুন্দরকে দেখতে চাওয়ার মন বানাতে হয়। সৌন্দর্য তো তাদের জন্য সবকিছুতেই ছড়িয়ে থাকে যারা তা দেখতে পায়!

(৩৭০)
কোন কিছু করতে গেলে ভুল হবেই। তারাই কোন ভুল করেনা যারা কোন কাজ করার চেষ্টাও করেনা। ভুল হলেও এগিয়ে চলুন, সফলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ!

২২ সেপ, ২০১৫

মনের জানালা মাঝে # ৩৩


(৩৫০)
​লোকে কী ভাবলে সেকথা চিন্তা করতে থাকলে সারাজীবন তাদের কারাগারে বন্দী হয়ে থাকতে হবে।

(৩৫১)
রাতের আধারে সবকিছু কেমন যেন রহস্যময় লাগে। প্রকৃতি অদ্ভুত গা ছমছম করা অনুভূতি দেয়। মানুষগুলোর আচরণ বদলে যায়, ভালোত্ব আর পশুত্ব দুই-ই প্রগাঢ় হয়ে যায়।

দিন ও রাতের পরিবর্তনে আছে আয়াত, নিদর্শন। উন্মুখ মন তাই খুঁজে চলে রাত আর দিনের মাঝে গেঁথে থাকা জ্ঞান। হতে পারে একটি উপলব্ধি বদলে দিতে পারে একটি জীবনের গল্প...

(৩৫২)
বিভিন্ন রকম ভাষায় কথা বলতে পারা খুব মূল্যবান বিষয়।
কিন্তু সকল রকম ভাষায় মুখ বন্ধ রাখতে পারা অমূল্য বিষয়।

(৩৫৩)
জ্ঞান হলো কী কথা বলতে হবে তা জানা।
প্রজ্ঞা হলো কথাটি বলা উচিত নাকি উচিত নয় তা জানা।

(৩৫৪)
বোকা অথবা খারাপ মানুষেরাই বিনয়কে দুর্বলতা মনে করে। তাই বলে বিনয়ের মাহাত্ম্য কখনো কমে যায় না। বিনয়ী হওয়ার নিরন্তর প্রচেষ্টাতে ছাড় দেবেন না কখনো।

(৩৫৫)
মানুষের হাসিতে তাদের ব্যক্তিত্ব ফুটে ওঠে....

(৩৫৬)
আল্লাহ ভাঙ্গা জিনিসগুলোকে অদ্ভুত সুন্দরভাবে ব্যবহার করেন। মেঘ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝরে, মাটিকে বিদীর্ণ করে তাতে হয় ফসল, ফসল ভেঙ্গে তৈরি হয় বীজ, বীজ ভেঙ্গে হয় চারা। সুতরাং, আপনি যখন ভেঙ্গেচুরে যাবেন, প্রশান্তির সাথে আশ্বস্ত হোন এই ভেবে যে আল্লাহ আপনাকে খুব ভালো কিছুতে পরিণত করার পরিকল্পনা করছেন। [অনূদিত]

(৩৫৭)
অতীত যখন পেছন থেকে বারবার কেবলই ডাকতে থাকে, তখন তাকে দৃঢ়ভাবে উপেক্ষা করুন। নিশ্চিত জেনে নিন, আপনাকে তার নতুন কোন কিছুই বলার নেই।

(৩৫৮)
আমাদের শহরে আল্লাহর সৃষ্টি একেকটি মানুষের মাঝে ভালোবাসা ঢেলে দিয়ে পথচলা, কথোপকথনে, লেনদেনের মাঝে অন্যরকম আনন্দ আছে। এই ভালোবাসা হয়ত অনেকেই টের পায়না, কিন্তু যিনি হৃদয়ের সৃষ্টিকারী, যার নিপুণ ভালোবাসায় সৃষ্টিগুলো টিকে আছে, তার সৃষ্টিকে ভালোবাসা দেয়ার প্রতিদান তিনি তো অবশ্যই দেবেন!

(৩৫৯)
কখনো কখনো আমাদের নিরবতায় একলা থাকার খুব প্রয়োজন-- আমরা কে তা বুঝতে এবং আমরা জীবনে সত্যিকার অর্থেই কী চাই তা উপলব্ধি করতে...

রুমী কবিতা (ত্রয়োদশ কিস্তি)


* * * * * * * *
তুমি যখন পথ ধরে হাঁটতে শুরু করবে, সামনের পথ তখন স্পষ্ট হয়ে দেখা দিবে।" -- রুমী

* * * * * * * *
তুমি জন্মেছিলো দু'টি ডানা নিয়ে। কেন তবে জীবনভর হামাগুড়ি দিতেই তোমার এত পছন্দ?" -- রুমী

* * * * * * * *
তুমি যে কষ্টদের সহ্য করছ তারা তোমার কাছে বার্তাবাহক হয়ে এসেছে, তাদের কথা শোন। ~ রুমী

* * * * * * * *
যখন তোমাকে দিতে চেয়ে কেউ  হাতে স্বর্ণ তুলেছে, তখন তোমার হাতের দিকে তাকিয়ো না, কিংবা স্বর্ণের দিকেও না। যে দিচ্ছে তার দিকে তুমি তাকাও। ~ রুমী [মসনবী, দ্বিতীয় খন্ড]

* * * * * * * *
তুমি তো সমুদ্রের মাঝে কোন জলবিন্দু নও, তুমি এক ফোঁটা জলবিন্দুর মাঝে সম্পূর্ণ এক সমুদ্র। ~ জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * * * *
যদি কবিতার পুনরাবৃত্তি ঘটে, তাহলে বসন্তও ফিরে ফিরে আসবে।~ রুমী

* * * * * * * *
তুমি মনে করো তুমি হলে বিপদ অথচ তুমি হলে সুরক্ষা। তুমি মনে করো তুমি দরজার তালা অথচ তুমি সেই চাবিটি যা তালাটি খুলে দেয়। তুমি যে আসলে অন্য কেউ হতে চাও, তা খুবই বাজে একটা ব্যাপার। তুমি তোমার নিজের চেহারাটি দেখো না, তোমার সৌন্দর্য তুমি দেখো না। যদিও তোমার চেয়ে বেশি সুন্দর কেউ নয়। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * * * *
তুমি কি মনে করো আমি যা করছি তা আমি জানি? নাকি আমার একটি শ্বাস-প্রশ্বাসের অর্ধেকটাও আমার নিজের অধিকারে আছে? এ তো এমনই যে কলমটি যা লিখছে তা যতটুকু সে জানে, অথবা বলটি এরপর যেদিকে যাবে বলে সে ধারণা করে। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * * * *
দুঃখ-কষ্টগুলো হতে পারে সহানুভূতির বাগান। তুমি যদি তোমার হৃদয়কে সবকিছুর জন্যই উন্মুক্ত রাখতে পারো, তাহলে তোমার কষ্টগুলো হয়ে যেতে পারে ভালোবাসা আর প্রজ্ঞার প্রতি তোমার জীবনভর আকাঙ্ক্ষার সবচেয়ে বড় বন্ধু। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * *
যখন তোমার শরীরের চিন্তা ও চাওয়ার উর্ধে এসে নিজেকে মুক্ত করতে পারবে, তখন এমনিতেই একদম নতুন এক জগতে প্রবেশ করবে। ~জালালুদ্দিন রুমী

১৬ সেপ, ২০১৫

রুমী কবিতা (দ্বাদশ কিস্তি)

 

* * * * * * * *
অন্যেরা যা বলে তা করতে গিয়ে, আমি হয়েছিলাম অন্ধ।
অন্যদের ডাকাডাকি শুনে আসতে গিয়ে, আমি হারিয়েছিলাম পথ।
এরপর আমি সবাইকেই ছেড়েছিলাম, এমনকি আমার নিজেকেও।
তখন আমি সবাইকেই খুঁজে পেয়েছি, এমনকি আমার নিজেকেও।
~ জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * * * *
তোমার দু'হাত প্রসারিত করো যদি প্রিয়তমর আলিঙ্গন পেতে চাও। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * * * *
তুমি যা খুঁজছো তা যদি হয় খাবার, তুমি খাবার পাবে।
তুমি যা খুঁজছো তা যদি হয় আত্মা, তুমি তোমার আত্মাকে খুঁজে পাবে।
তুমি যদি এই গোপন রহস্যটি বুঝতে পারো,
তুমি জানবে তুমি সেটাই যা তুমি খুঁজে বেড়াও।
~ জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * * * *
একটা কলম একাই লিখতে শুরু করেছিলো। সে যখন লিখতে এলো 'ভালোবাসা', তখন ভেঙ্গে গেলো। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * * * *
তুমি দেখেছ তোমার অফুরন্ত শক্তি
তুমি দেখেছ তোমার মোহনীয় সৌন্দর্য
তুমি দেখেছ তোমার সোনালী ডানা
তবে কেন তুমি উদ্বিগ্ন?
~ জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * * * *
যে পথ তোমাকে শুদ্ধ করে সেটাই সঠিক পথ। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * * * *
প্রতিটি দিনকে পেছনে ফেলে আসাই ভালো। বয়ে যাওয়া পানির স্রোতের মতন যেন, সমস্ত দুঃখ-কষ্টকে ফেলে চলে যাওয়া। গতকালের দিনটি তো শেষ, সেই দিনটির সমস্ত গল্প বলা হয়ে গেছে। আজকে নতুন কিছু অংকুর মাটি বিদীর্ণ করে মাথা তুলে জাগবে। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * * * *
যদি তোমার অহংবোধ তোমার পথপ্রদর্শক হয়ে থাকে, তাহলে আর ভাগ্যের সাহায্যের জন্য নির্ভর করো না। তুমি দিনের বেলায় ঘুমিয়ে কাটাও আর রাতগুলো তো এমনিতেই ক্ষুদ্র। তুমি যখন জেগে উঠবে তখন হয়ত তোমার জীবনটা শেষ হয়ে যাবে। ~জালালুদ্দিন রুমী

১৪ সেপ, ২০১৫

মনের জানালা মাঝে # ৩২


(৩৪০)
 লেখনীর শৈল্পিকতা

কিছু মানুষের লেখা অনেক বছর ধরেই পড়া হয়ে যায়। ইদানিং অনেকের লেখার ভাষায়, শব্দে, গভীরতায়, আবেগে কেমন মোহমুগ্ধ হয়ে যাই। আজ একজনের লেখা পড়ে চোখে প্রায় পানি চলে এলো... নিজে ভীষণ মন-প্রাণ-শ্রম দিয়ে লিখতে চেষ্টা করতাম বলে বুঝি, এই দক্ষতা,উন্নতিটুকু কতটা অমূল্য। সেই মানুষগুলো হয়ত নিজেরাও টের পাননা আল্লাহ তাদের শব্দে, লেখনীতে কী ভীষণ শক্তি দিয়েছেন! এরকম সুবিশাল শক্তি আল্লাহ এই দুনিয়ার লক্ষ লক্ষ সাহিত্যে, শিল্পে ছড়িয়ে দিয়েছেন। সেসব সৃষ্টিশীলতার সৌন্দর্যের মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন হয় তারই সৃষ্টি কোটি কোটি মানব হৃদয়। সবকিছু তারই সৃষ্টি-- এই দক্ষতা, এই শিল্প, এই সৌন্দর্য, এই আবেগ, এই অনুভূতি সবই তার সৃষ্টি। আমাদের নিপুণ স্রষ্টা, আল-খালিক, গাফুরুর রাহীম।

(৩৪১)
সৌন্দর্য ছড়িয়ে থাকে সমস্ত সৃষ্টির মাঝে। এমনকি আমাদের প্রতিদিনের প্রতিটি কাজের মাঝেও। যত্ন করে, ভালোবাসা দিয়ে করা কাজগুলো হৃদয়ে আনন্দ তৈরি করে।

(৩৪২)
সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে সর্বত্র। কেবল সুন্দর মনগুলোই তা খুঁজে পায়...

(৩৪৩)
সত্যিকারের গন্তব্য খুঁজে পাওয়ার আগে একজন মুসাফিরকে বেশ কিছু মরীচীকার বিভ্রম পার হতে হয়।

(৩৪৪)
জীবনের চলার পথে মানুষের মাঝে যে ভালোবাসা আপনি ছড়িয়ে যাবেন, সে ভালোবাসাই ঘুরে ফিরে এসে আপনাকে স্পর্শ করবে; অন্য কোথাও, অন্য কারো মাধ্যমে।

(৩৪৫)
খাঁচার শিকের ভেতরে জন্ম নিয়ে খাঁচায় বেড়ে ওঠা পাখিরা মনে করে ওড়াওড়ি হয়ত এক প্রকার রোগ।
 
(৩৪৬)
জীবিত মানুষের চেয়ে মৃত মানুষ বেশি পরিমাণ ফুল উপহার পেয়ে থাকে। কেননা, অনুশোচনার অনুভূতি কৃতজ্ঞতার অনুভূতি থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।~ অ্যানি ফ্র্যাঙ্কের ডায়েরি থেকে

(৩৪৭)
"বোঝেনা সে বোঝেনা"....
বাংগালি আবালবৃদ্ধবনিতা নারীর মরণনেশার নাম, প্রতিটি নারী মনকে কুটিল থেকে কুটিলতর করার অব্যর্থ মারণাস্ত্র।

(৩৪৮)
একদা একজন জ্ঞানী মানুষ....
.
.
.
.
.
কোন কথাই বলেন নি!

(৩৪৯)
বিশালতার সাথে সৌন্দর্যের একটা কেমন যেন যোগ আছে। এই যে আকাশ। তার মাঝে সাদা মেঘ যখন ভেসে যায়। সে এক অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য। কিন্তু এই সৌন্দর্যকে আকাশ কিংবা মেঘ--কেউই উপলব্ধি করতে পারে না। শূণ্যে ভেসে থাকা মেঘগুলো জানেনা সেই বিশালতার নিচে সে কেমন শৈল্পিক স্নিগ্ধতা তৈরি করে মানব মনে। বিশালতার সাথে বেদনার কেমন যেন যোগ আছে। মানব মন ঠিক বুঝে না। মানুষ বুঝেই বা কতটুকু?

৯ সেপ, ২০১৫

রুমী কবিতা (একাদশ কিস্তি)


* * * * * *
আমি বললাম: আমার চোখ দুটোর কী হবে?
তিনি বললেন: পথের উপর তাদের স্থির রাখো।

আমি বললাম: আমার কামনার কী হবে?
তিনি বললেন: ওদের পুড়তে দাও।

আমি বললাম: আমার হৃদয়ের ব্যাপারে বলুন?
তিনি বললেন: এর মাঝে কী আছে তা আমাকে বলো।

আমি বললাম: কষ্ট আর ব্যথা।
তিনি বললেন: এগুলো থাকুক তোমার হৃদয়েই।

ক্ষতগুলো তো এমনই স্থান যার ভেতর দিয়ে তোমার মাঝে আলো প্রবেশ করে।

~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
সমস্ত উদ্বেগ মুছে ফেলে একদম মুক্ত হয়ে যাও,
চিন্তা করো তার কথা যিনি সকল চিন্তাকে সৃষ্টি করেছেন।
যখন সমস্ত দ্বার এখনো এত অবারিত
কেন তুমি তবু বন্দীশালাতেই বাস করো?
 ~ রুমী

* * * * * *
অনেক মানুষ দেখেছি যাদের জড়িয়ে রাখার মতন কোন কাপড় ছিলো না,
অনেক কাপড় দেখেছি যা যাদের জড়িয়ে রেখেছিলো তারা মানুষ ছিলো না।
~ জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
প্রার্থনাগুলো কুয়াশাকে দূর করে দিয়ে প্রাণের শান্তিকে ফিরিয়ে এনে দেয়।~ জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
যাও, তোমার নিজ হৃদয়ের দরজায় কড়া নাড়ো। ~ রুমী

* * * * * *
তুমি যদি তোমার মাঝে আমাকে খুঁজে না পাও তাহলে আর কোথাও পাবে না কোনদিন। আমি তো তোমার মাঝেই ছিলাম, আমার সূচনা থেকে। ~ জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
সৌন্দর্য আমাদের চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে। ~ জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
নীরবতার মাঝে উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়। ~ জালালুদ্দিন রুমী

শামস তাবরিজি [২]


* * * * * *
ভালোবাসা ছাড়া জীবন হলো স্রেফ আবর্জনার মতন।

"আমি কি আত্মিক, নাকি বস্তুগত, নাকি শারীরিক ভালোবাসার দিকে মন দিবো?"

এসব প্রশ্ন করতে যেয়ো না। বৈষম্য তো কেবল বৈষম্যেরই জন্ম দেয়। ভালোবাসার জন্য এসব নানান রকম নাম, বিভাজন অথবা সংজ্ঞার প্রয়োজন নেই। হয় তুমি ভালোবাসার মাঝেই আছ, একদম কেন্দ্রে। নতুবা এই পরিসীমার বাইরে তুমি আছ, এই দুরত্বের হাহাকার বুকে নিয়ে।

~শামস তাবরিজি

* * * * * *
জীবনে তোমার যা-ই হোক না কেন, কখনো হতাশ হয়ে পড়ো না। এমনকি সবগুলো দরজাও যদি বন্ধ হয়ে যায়, একটি গোপন পথ তুমি খুঁজে পাবে যার হদিস কেউ জানেনা। তুমি হয়ত এখনো দেখতে পাচ্ছ না, কিন্তু এই পথের শেষে জান্নাতের অনেকগুলো বাগান আছে। কৃতজ্ঞ হও! তুমি যা চাও তা পাওয়ার পর শুকরিয়া করা তো সহজ, বরং যা চাইছ তা পাওয়ার আগেই শুকরিয়া করো।

~ শামস তাবরিজি

* * * * * * *
তুমি কি ভবিষ্যতের দিকে চেয়ে আছ জান্নাত-জাহান্নাম দেখতে? অথচ তোমার বর্তমানের মাঝেই রয়েছে সেগুলো। যখন তুমি কোন চুক্তি, যুক্তি আর প্রত্যাশা ছাড়াই ভালোবাসতে পারবে, তখন তুমি জান্নাত খুঁজে পাবে। যখন তুমি ঘৃণা আর মারামারিতে জড়িয়ে থাকবে, তুমি খুঁজে পাবে জাহান্নাম।

~শামস তাবরিজি

* * * * * * *
আল্লাহর বান্দারা তো কখনো ধৈর্যহারা হয় না। কেননা সে তো জানেই যে সদ্য প্রকাশিত বাকা চাঁদটির পূর্ণিমার চাঁদে পরিণত হতে সময় লাগবে। ~শামস তাবরিজি

৮ সেপ, ২০১৫

একগুচ্ছ অনুবাদ [৬]

 

* * * * *
আমরা যদি নিজেদের আন্তরিকভাবে জিজ্ঞাসা করি, কোন মানুষটি আমাদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তবে খুঁজে পাবো সেইসব মানুষদের যারা আমাদেরকে উপদেশ, সমাধান, পরামর্শ দেয়ার পরিবর্তে আমাদের কষ্টগুলোর কথা শুনে দুঃখগুলো ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন এবং তাদের উষ্ণ হাতে আমাদের ক্ষতস্থানে হাত বুলিয়ে দিয়েছিলেন।

আমাদের যেসব বন্ধুরা আমাদের সংশয় কিংবা বিষণ্নতার সময়ে নিশ্চুপ হয়ে পাশে থাকতে পারে, যারা আমাদের কষ্ট ও বেদনাবিধুর সময়ে আমাদের সাথে থাকতে পারে, যারা আমাদের সহ্য করতে পারে জ্ঞানহীনতা, দুর্বলতা, অসুস্থতার সময়ে, যারা আমাদের মুখোমুখি হতে পারে আমাদের সত্যিকারের ক্ষমতাহীনতাকে দেখে, তারাই আমাদের প্রকৃত বন্ধু।

[Henri J.M.Nouwen-এর উদ্ধৃতির আলোকে]

 * * * *
সংবেদনশীলতা জীবন উপস্থিত থাকার একটি চিহ্ন। কঠিন হৃদয়ের মানুষ হয়ে যাওয়ার চেয়ে হৃদয়ে আঘাত পাওয়া ভালো। আমি সেইসব মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি যারা খুব কঠিন সময়েও তাদের হৃদয়কে উন্মুক্ত রাখেন, যারা তাদের হৃদয়কে যতটুকু আবৃত রাখতেই হয় তার চেয়ে বেশি সময় তা ঢেকে রাখতে অনাগ্রহ বোধ করেন, যারা চিনতে পারেন সাহস লুকিয়ে আছে দুর্বলতার গভীরেই। অমঙ্গলকারী যুদ্ধবাজরা যখন নিজেদেরকে শেষ করে ফেলবে তখন এই হৃদয় উন্মুক্ত রাখা মানুষগুলোই পৃথিবীকে অধিকার করবে। ~ জেফ ব্রাউন

* * * * *
যদি কিছু পছন্দ না হয়, সেটাকে বদলে ফেলো। যদি তা বদলে ফেলতে না পারো, তাহলে সেটির ব্যাপারে তোমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাও। ~ মায়া আঞ্জেলো

* * *
"আপনার সৃষ্টিশীলতার পুরোটা আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না। যতই সৃষ্টি করবেন, ততই অর্জন করবেন।"~ মায়া অ্যাঞ্জেলো
 
* * * * *
আমি আমাকে যা মনে করি আমি তা নই। তুমি আমাকে যা মনে করো আমি তা নই। বরং তুমি আমাকে যা মনে করো বলে আমি মনে করি, সেটাই আমি।
~ থমাস কুলি [ইন্সক্রিপশন: প্রেইরি পোয়েট্রি]

* * * * *
কোন কিছুর জন্যই অপেক্ষা না করা প্রচন্ড ভয়ংকর একটা ব্যাপার।
~ এরিক মারিয়া রেমার্ক [থ্রি কমরেডস]

* * * * *
আমরা যা কিছু শুনি তার সব বাস্তবতা নিয়, বরং মতামত।
আমরা যা কিছু দেখি তার সবই সত্য নয়, বরং দৃষ্টিভংগি।
~মার্কাস অরেলিয়াস
 
* * * * * *
একটা সুউচ্চ পাহাড় আরোহণের পর থেকে একজন মানুষের চোখে আরোহণ করার মতন আরো অনেক পাহাড় চোখে পড়ে। ~নেলসন ম্যান্ডেলা

* * * * * *
 যখন খুব অন্ধকার হবে, তখন তুমি তারাদের স্পষ্ট করে দেখতে পাবো। ~রালফ ওয়ালডো এমারসন

* * * * * * * *
আমার পেছনে থেকো না, আমি হয়ত নেতৃত্ব দিতে পারবো না।
আমার সামনে থেকো না, আমি হয়ত অনুসরণ করবো না।
আমার পাশে পাশে থেকো, আমার বন্ধু হয়ে।
~ আলবেয়ার কামুস

৬ সেপ, ২০১৫

রুমী কবিতা (দশম কিস্তি)



* * * * *
কখনো আশা হারিয়ো না, হে আমার হৃদয়। অদেখার জগতে তো অনেক অলৌকিক ঘটনার বসবাস। ~ জালালুদ্দিন রুমী

* * * * *
যদি তুমি মণিমুক্তোর ভাণ্ডারে পরিণত হতে চাও,
তবে তোমার ভেতরের সুপ্ত গভীর সমুদ্রটিকে উন্মুক্ত করে দাও।
~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
ভাগ্যবান তো সে মানুষ যে হিংসাকে তার সংগী করে নিয়ে চলে না। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
যা কিছুই ঘটুক না কেন, তুমি প্রাণখুলে হাসো; আর ভালোবাসার মাঝে নিজেকে হারিয়ে দাও। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
তোমার মাঝে আমি আমার ধ্বংসস্তূপ ছেড়ে পালিয়ে এসে লুকাই। দয়া করো, আমাকে আর আমার মাঝে ফিরিয়ে দিয়ো না। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
তুমি কেন সবার দরজায় করাঘাত করে ফিরছো? যাও, তুমি তোমার নিজ হৃদয়ের দরজায় কড়া নাড়ো। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
আমি একজন চিত্রশিল্পী
সারাদিন একে যাই নানান ছবি।
কিন্তু যখন তোমার সৌন্দর্যের কথা স্মরণ করি,
আমার সমস্ত চিত্রকর্ম ছুড়ে ফেলে দিতে ইচ্ছা হয়।

আমি একজন ভাষ্কর,
যে পাথর খোদাই করে তৈরি করি সে ছবির প্রতিমূর্তি,
কিন্তু যখন তোমার সৌন্দর্যের কথা মনে হয়,
আমার সমস্ত শিল্পকর্ম আগুনে ফেলে দিতে ইচ্ছা হয়।

~জালালুদ্দিন রুমী

* * * *
নিশ্চুপ হয়ে নিজের ভেতরে বয়ে চলা তরঙ্গের শব্দমালা শোনো। ~জালালুদ্দিন রুমী

১ সেপ, ২০১৫

সবার জন্য ভালো গল্প : ইসলামী সমাজের নৈতিক ভিত্তি

​​​ছোটকালে গল্প পড়তাম অনেক, সবাই কমবেশি তেমনই পড়ে। আমরাও এখন ছোটদের পড়াই, আমাদের বড়রাও পড়েছেন। রূপকথা পড়তে পড়তে রাক্ষস-খোক্কস, দৈত্য-দানো, হিজিবিজি সব গল্প পড়েছি। পড়েছি বিদেশের অনেক গল্প, মালয়-চীনের রুপকথা। কোথাও বেড়াতে গেলে বুকশেলফ, টেবিলের পাদানির নিচে ঘেঁটে-ঘুটে বই খুঁজে পড়ে সময় কাটাতাম। কিছু বই পড়ে কল্পনাশক্তি বাড়তো, আনন্দ হতো। কিছু বই পড়ে গা ঘিনঘিন লাগতো কেননা গল্পের দৃশ্যপট খুব বাজে ও নোংরা মতে হতো। স্মৃতিগুলো আমি ভুলিনি, মনে দাগ কেটে আছে সেসব সময়গুলো...

মনের জানালা মাঝে # ৩১



(৩২৯)
 *** হালাল কৌতুক এবং বুদ্ধিদীপ্ত ফাতওয়া***

প্রশ্ন: যদি আমি সলাত আদায়ের সময় একটা সিংহ মসজিদে ঢুকে পড়ে তখন কী করবো?

উত্তর: হুমম। আচ্ছা ঠিক আছে, আপনি যদি আপনার ওযু ধরে রাখতে পারেন তাহলে সলাত চালিয়ে যাবেন।

[সংগৃহীত ও অনূদিত]

(৩৩০)
'না' বলতে শিখুন।
'না' বললে হয়ত আপনার উপরে কেউ ক্ষুব্ধ হবে, কিন্তু আপনি বন্দীত্ব থেকে মুক্তি পাবেন।
আজ পর্যন্ত কেউ আপনাকে না জানিয়ে থাকলে জেনে নিন --
আপনার মুক্তি অন্যদের রাগের চেয়ে অনেক বেশি দামী।

(৩৩১)
জীবনযুদ্ধের সমুদ্রে আপনি যখনই হাল ছাড়বেন, তখনি ভেসে যাবেন। কখনো হাল ছাড়বেন না, কখনো না। শান্তির সময় তো খুব কাছেই!

(৩৩২)
জীবন নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত, উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই। খুব ভাগ্যবান 'সবকিছু পাওয়া' মানুষরাও বেঁচে ভোগ করতে পারেনি চিরকাল। যে সময়টা চলে যাচ্ছে, তা-ও আসলে খুব সুন্দর। জীবনের সৌন্দর্য খুঁজে নিয়ে কৃতজ্ঞ হোন।

(৩৩৩)
জীবন থেকে যা হারিয়ে যায়, তা নিয়ে শোকে কাতর হওয়া তো বোকাদের কাজ। কেননা, যা আছে তা থেকে আরো হারিয়ে যেতে পারে। মানুষের তো কোন ক্ষমতাই নেই, সমস্ত ক্ষমতা শুধুই আল্লাহর। তিনি যাকে ইচ্ছা, যখন ইচ্ছা দান করেন। তাই, জীবনের বর্তমান নিয়ে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।

(৩৩৪)
অতিচিন্তা: যে সমস্যাগুলো কখনো ছিলো না, সে সমস্যাগুলো তৈরি করে তার যন্ত্রণায় থাকার এক অদ্ভুত শিল্প।

(৩৩৫)
কেউ আপনাকে ফুল এনে দেবে সে আশায় অপেক্ষা করে বসে থাকবেন না। নিজেই বাগান তৈরি করুন এবং সে বাগানের ফুল দিয়ে আপনার আত্মাকে সাজান।

(৩৩৬)
সে তো সৌভাগ্যবান যার অন্তত এমন একজন বন্ধু আছে যে তার না-বলা কথাগুলো বুঝতে পারে।

(৩৩৭)
রিকসাওয়ালা লোকটা ভোরে বাস থেকে নেমে সদ্য লেগুনা চাপায় স্পটডেড এক দুর্ভাগা লোকের খুলি ভেংগে রক্ত বয়ে রাস্তা ভেজানো লাশের গল্প করছিলেন....

জীবনে কতই না হাহাকার আমাদের, তাইনা?

(৩৩৮)
ভূমিকম্প একটি রিমাইন্ডার। পাপ থেকে বিরত থাকার প্রত্যয়ের, কান্নাকাটি করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার...

(৩৩৯)
"মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়"...