৩০ আগ, ২০১৫

মনের জানালা মাঝে # ৩০




(৩২১)
ফাল্গুনের এই রাতের ঝিরিঝিরি হাওয়া এত সুন্দর, জান্নাতের বাগানের হাওয়া না জানি কত সুব্দর! নিশ্চয়ই আল্লাহ জান্নাতে আমাদের দুনিয়ার জীবনের খা খা করা অপূর্ণতায় ভরা বুকের জায়গায় শান্তি দিয়ে পরিপূর্ণ করে দেবেন। হে আল্লাহ! আমাদের জান্নাতের পথে পরিচালিত করুন।

(৩২২)
আপনার তাকদীরে যা আছে তা অবশ্যই আপনার কাছে আসবে এবং যা আল্লাহ দেবেন না তা কেউ কখনো এনে দিতে পারবে না।

(৩২৩)
কেউ যখন আপনাকে ঘৃণা করবে তখন আপনার নিঃশ্বাসগুলো পর্যন্ত সমস্যা হিসেবে মনে করা হবে।

(৩২৪)
সবসময়ে যেকোন পরিস্থিতি ও অবস্থাতেই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া করা উচিত। আপনি-আমি জানিনা আগামী সময়টা আমার জন্য আরো খারাপ হবে নাকি ভালো হবে। পরে হয়ত এই অকৃতজ্ঞতার জন্য আফসোস হতে পারে।

(৩২৫)
আল্লাহর কাছে চাওয়ার সময় খুব হিসেব করে চাওয়া উচিত। এক্ষেত্রে মজা করে বলা যায়, "আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না'" বরং প্রকৃতপক্ষে কিছু চাইতে হলে আল্লাহর কাছেই চাওয়াগুলো সোপর্দ করতে হয়। আল্লাহর কাছে এমন কিছু চাইবেন না যেন চাওয়া জিনিসটা পাওয়ার পরে আবার তার জন্য আফসোস হয়। চাইতে হয় এমনভাবে যা আমাদের জন্য কল্যাণকর। গাইবের খবর আমরা একটুও জানিনা, জানেন আমাদের আল্লাহ।

নাবীদের দু'আ অন্যরকম দারুণ ছিলো! এই যেমন--
"হে আল্লাহ আমাকে উপকারী জ্ঞান দাও'
অথবা,
"হে আমার রব! আমাকে দুনিয়াতে কল্যাণ দাও, আমাকে আখিরাতেও কল্যাণ দাও।"

কীসে কল্যাণ তা কি আমরা বুঝি? আমরা অস্থির, অধৈর্য। আমাদের সবকিছুতেই তাড়াহুড়া। অথচ সুসংবাদ তো ধৈর্যশীলদের জন্য...

(৩২৬)
সংকীর্ণমনা ও ক্ষুদ্রবুদ্ধির মানুষেরা কখনো কল্পনাই করতে পারে না যে তাদের চিন্তার দৌড় যেখানে শেষ হয়, তার অনেক উপরের জায়গায় মানুষ চিন্তা করে, কাজ করে। 'কুয়োর ব্যাং' -এর উদাহরণ আমাদের চারপাশেই অনেক দেখা যায়।

(৩২৭)
এমনটা তো হতেই পারে যে জীবনে পাওয়া প্রকৃতির প্রতিটি বর্ষণ আল্লাহ আপনাকে এমনভাবে দান করেন যেন বর্ষাধারার সাথে অশ্রুধারাও ঝরে যায়। এটাই তাকদীর, তিনি এমনটাই চান। তাতেই সন্তুষ্ট ও আনন্দিত থাকুন। বৃষ্টিবিলাস হয়ত আপনার জন্য কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণই বয়ে আনবে... তিনিই উত্তম পরিকল্পনাকারী।

(৩২৮)

*** ভ্যালেন্টাইনস ডে পালন! ***

ভ্যালেন্টাইন ডে জিনিসটা এখন হয়ে গেছে বিবাহবহির্ভূত প্রেম-আনন্দে ডুবে থাকা পাপাচার ও নির্লজ্জতার উপলক্ষ। অথচ আল্লাহ নির্লজ্জতার ধারে কাছে যেতেও নিষেধ করেছেন কুর'আনে। যাকে নিয়ে প্রেম ভালোবাসা করতে যাচ্ছে লোকে, সে যদি তার বিয়ে করা জীবনসংগী না হয়, তাহলে সে আল্লাহর অবাধ্যতা করতে যাচ্ছে এবং সেই প্রেম-ভালোবাসাকে আল্লাহ যিনা বা ব্যভিচার বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

নারী-পুরুষের পারস্পারিক আনন্দকে আল্লাহ বিয়ের মাধ্যমে পরস্পরের দায়িত্ব নিয়ে তবেই অনুমতি দিয়েছেন। পশুদের মতন যার-তার সাথে, যেখানে-সেখানে শরীর-মনের চাহিদা মেটানোর সুযোগ আল্লাহ মানুষ নামক সৃষ্টিকে দেননি।

আল্লাহর আদেশ সৃষ্টির শেষ দিন পর্যন্ত অলংঘনীয় থাকবে। ব্যভিচারের সংজ্ঞাও আমরা ইচ্ছেমতন দিতে পারবো না। মৃত্যুর পরের জীবন নিয়ে চিন্তা থাকলে বিয়ে করে প্রেম করা উচিত এবং গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড সম্পর্ক সাবধানে বর্জন করা উচিত।

[১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫]

১৯ আগ, ২০১৫

মনের জানালা মাঝে # ২৯



(৩১০)
হে আল্লাহ! আমাদের ক্ষমা করুন, আমাদের দয়া করুন। আমাদের উপরে আপতিত সকল গজব-মুসিবাতের থেকে আমাদের পরিপূর্ণ মুক্তি দান করুন। হে আল্লাহ! আপনার জালিম বান্দাদের জুলুমের হাত থেকে, তাদের হাতে জিল্লতির হাত থেকে আমাদেরকে সুরক্ষিত রাখুন। নিশ্চয়ই আপনি যাকে ইচ্ছা ইজ্জত দান করেন, যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন। নিশ্চয়ই আপনার হাতেই সমস্ত ক্ষমতা।

(৩১১)
"গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন।" -- এটা আসলেই দারুণ কথা।
জ্ঞানকে জীবনে কাজে লাগাতে না চাইলে/পারলে, ওই জ্ঞান অহংকার বাড়ানো ছাড়া আর কোন কাজে আসে না।

(৩১২)
মজার ব্যাপার হচ্ছে মানুষ সমালোচনা করার সময় নিজ রূচি ও জ্ঞান থেকেই করে। তাই কেউ খুব নোংরা ও ভিত্তিহীন কথা বললে আমাদের হতভম্ব হবার কিছু নেই। মানুষের রূচি গড়ে ওঠে তার চিন্তা-চেতনা ও পছন্দ থেকে। ইমাম গাজ্জালির লেখা থেকে শিখেছিলাম যে যখন কেউ অন্যের ব্যাপারে বাজে কথা বলে তখন সে নিজের হৃদয়ের খারাপ দিক অন্যদের কাছে উন্মুক্ত করে দেয়। আব্দুল কাদির জিলানির কথা থেকে শিখেছি মানুষের মুখের কথা তার হৃদয়ের অবস্থা বলে দেয়। সমালোচনা সবাইই করতে পারে। গীবত, পরনিন্দায় অধিকাংশ মানুষের জুড়ি নেই। কিন্তু সমালোচক হিসেবে, উপদেশ নিতে আমাদের মাঝে তাদেরকেই আমন্ত্রণ করা হয়, তাদের মতামতই গ্রহণ করা হয় যারা তাদের রূচি ও জ্ঞানের উচ্চতার ব্যাপারে প্রসিদ্ধ।

যার মন সুন্দর, সে একটি কথা শুনে তা থেকে সৌন্দর্য খুঁজে পায়। যার মন বিষাক্ত সে প্রতিটি কথায় বিষ পায়, রাগান্বিত ও অসুস্থ হয়। মানুষের চিন্তা তার বডি-ল্যাংগুয়েজ তৈরি করে।

আল্লাহ আমাদের হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করুন। আমাদের উত্তম আখলাক দান করুন।

(৩১৩)
মানুষ বা 'ইনসান' তো ভুলে যায়, বিস্মরিত হয়। আমাদের পিতা সাইয়্যিদিনা আদাম আলাইহিস সালাম একটা কথা বলে পরে ভুলে গিয়েছিলেন বলে তা অস্বীকার করেছিলেন। আমরাও সবাই অনেক কিছুই অমন করে ভুলে যাই। ভুলে যাওয়া মানেই মিথ্যা বলা নয়, এটাই মানুষের জন্য স্বাভাবিক। আমাদের সবারই কমবেশি এমন সমস্যা হয়। কিন্তু এটা অনেকে বুঝতে চায় না, তারা মনে করে মানুষটি মিথ্যা বলেছে।

[সূত্র: History of the Prophets অডিও লেকচার সিরিজ]

(৩১৪)
জীবনের ভালো সময়ে অনেকেই কাছে থাকে, খারাপ সময়েই প্রকৃত শুভাকাংখী ও বন্ধুদের চেনা যায়। কিন্তু ভালো চেহারার আড়ালে, আপন বন্ধু হয়ে কিছু চরম নির্মম মানুষও থাকে যারা খারাপ সময়কে আরো খারাপ করে দেয় কুটিলতা, সংকীর্ণমনতা ও মিথ্যাচার দিয়ে। মূল কষ্টগুলো তখন এদের বাড়িয়ে দেয়া কষ্টের তুলনায় নিতান্ত নস্যি মনে হয়। আল্লাহ এসব বক্র হৃদয়ের লোকদের ক্ষমা করুন, হিদায়াহ দিন এবং আমাদেরকে এমন জাহেলদের হাত থেকে রক্ষা করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহই উত্তম অভিভাবক।

(৩১৫)
ফেসবুক সেলিব্রেটি হওয়া অনেকটা সাথে মনোপলি খেলায় বড়লোক হবার মতন। এমন ভাব, যেন অনেক আছে! আসলে কিছুই নাই...

(৩১৬)
সদ্য ধোয়া ও ইস্ত্রি করা সাদা পোশাক মনকে প্রফুল্ল রাখতে সহায়তা করে। সাদা পোশাকের শুভ্রতা হয়ত আমাদের মনকে স্পর্শ করে। পরিষ্কার পোশাক যদি অন্য কোন উজ্জ্বল রং হয়, তখনো অবশ্য মন ভালো লাগে। আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ যেন পোশাকের শুভ্রতা আমাদের মনেও দান করেন।

(৩১৭)
এই সমাজে কিছু নির্বোধ, জালিম মানুষ আছে যারা আল্লাহর দ্বীন থেকে প্রাণরসটুকু সরিয়ে রীতিনীতির শেকল টাইপের একটা যন্ত্রণার বিষয় হিসেবে ইসলামকে অন্যদের উপরে চাপিয়ে দেয়, তাদের বীভৎস বুঝ দিয়ে মানুষের দ্বীনদারী হিসেব করতে বসে যায়।

​(৩১৮)
​​অন্যদের জীবনের সুখ দেখে নিজের কেন নেই তা ভেবে ঈর্ষান্বিত হবার কিছু নেই। তাদের জীবনের দুঃখগুলো আপনি সব জানেন না। জানলে হয়ত ভয়ে পালিয়ে বাঁচতেন।

(৩১৯)
​​​রুবেল ও হ্যাপির ব্যাপারে বাজারে যা প্রচলিত তা অশ্লীল ও অন্যায়। কিন্তু ফান করে হলেও সবাই সাগ্রহে তা প্রচার করছে। ঈমান থেকে থাকলে অশ্লীলতার স্পষ্ট ইংগিত কেন ঘেন্না করিনা আমরা? শেষ যামানার চিহ্ন নয়তো? #ব্যথিত

(৩২০)
কারো জন্য বুকে ঘৃণা রেখে জীবন কাটাবেন না। এ ঘৃণা অন্যদের তেমন ক্ষতি করবেনা বরং আপনিই চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

১৬ আগ, ২০১৫

রুমী কবিতা (নবম কিস্তি)



* * * * *
তোমার হৃদয় থেকে আমার হৃদয় পর্যন্ত একটা পথ আছে। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * *
দরজা খুলতে এত সংগ্রাম কেন করছ যখন চারপাশের দেয়ালগুলো শুধুই বিভ্রম। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * *
সুনসান-নীরবতাপূর্ণ আমার হৃদয়ের মাঝে নৌকা বাওয়ার মতন আনন্দ আমি আর কিছুতেই পাইনা। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * *
তোমার নিজের ছোট্ট পুকুরটির মাঝে সাঁতরে বেড়াও। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * *
চাঁদ তো তার আলোর বন্যায় আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ভাসিয়ে দেয়;
তোমার ঘরটিকে কতটুকু আলোয় পূর্ণ করে তা নির্ভর করে তোমার জানালার উপর।
~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * *
বেদনার মাঝে রয়েছে রত্নভান্ডার; এতে লুকিয়ে থাকে দয়া। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * *
যা কিছু আসে, তা চলে যাবে। যা কিছু পাওয়া গেছে, তা হারিয়ে যাবে। কিন্তু তুমি তো এই আসা-যাওয়া এবং যেকোন বর্ণনার উর্ধে। তুমি এমনই। ~জালালুদ্দিন রুমী


* * * * *
আমি ছিলাম মৃত, তারপর জীবন পেলাম
কাঁদলাম, তারপর হাসলাম।
ভালোবাসার শক্তি আমার মাঝে এলো,
আমি সিংহের মতন হিংস্র
আর তারাদের মতন স্নিগ্ধ হলাম ।
~জালালুদ্দিন রুমী

* * *
পাখিরা তাদের স্বাধীনতায় আকাশের শূণ্যে বৃত্ত এঁকে ঘুরে ঘুরে উড়ে।
তারা কীভাবে শেখে সেটা?
তারা শূণ্যে থেকে পড়ে যায়, যেতেই থাকে,
আর তাদের রয়েছে ডানা।
~ জালালুদ্দিন রুমী

১৫ আগ, ২০১৫

একগুচ্ছ অনুবাদ [৫]



* * * * *
অহংবোধের মূল উদ্দেশ্য কোন কিছু দেখতে পাওয়া নয় বরং কোন কিছু হতে পারা। ~ আল্লামা মুহাম্মাদ ইকবাল

* * * * *
যেসব মানুষের তাদের চিন্তার পদ্ধতির উপরে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই, তারা সম্ভবত তাদের চিন্তার স্বাধীনতার কারণে ধ্বংস হয়ে যাবে। যদি চিন্তাগুলো হয় অপরিপক্ক, তখন চিন্তার স্বাধীনতা মানুষদেরকে পশুতে পরিণত করার প্রক্রিয়াতে পরিণত হয়ে যায়। ~ আল্লামা মুহাম্মাদ ইকবাল

* * * * *
আপনি আপনার চিন্তাগুলো তৈরি করেন, আপনার চিন্তাগুলো তৈরি করে আপনার চাওয়া। আপনার চাওয়াগুলো তৈরি করে আপনার বাস্তবতা। ~ড ওয়েইন ডেয়ার

* * * * *
হাসুন। হাসির পুরোটাই শান্তিময়।~ড. তারিক রামাদান

* * * * *
আমার পরস্পর যোগাযোগের মাধ্যমগুলো যতই বৃদ্ধি পেতে থাকে, আমরা ততই কম যোগাযোগ করি। -যোসেফ প্রিসলি

* * * * *
সফলতা অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ চাবি হলো আত্মবিশ্বাস। আত্মবিশ্বাস অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ চাবি হলো পূর্বপ্রস্তুতি।~আর্থার অ্যাশ

* * * * *
নিজের চোখ দিয়ে দেখে এবং নিজ হৃদয় দিয়ে অনুভব করে এমন মানুষ তো খুবই কম। ~আলবার্ট আইনস্টাইন

* * * * *
ভবিষ্যত তো তাদের হাতে মুঠোয় যারা তাদের স্বপ্নের সৌন্দর্যেকে বিশ্বাস করে। ~ইলিনর রুজভেল্ট

* * * * * *
"মানুষজনের সম্পর্কে যত বেশি ভালো করে জানি, আমার কুকুরটিকে আমি ততই ভালোবাসতে থাকি।" ~ মার্ক টোয়েন

* * * * * *
"জীবনের ভুলগুলো হলো অনভিজ্ঞতা এবং জ্ঞানের মধ্যবর্তী সংযোগ পথ।" ~ মার্ক টোয়েন

* * * * * *
যে জিতে সে কখনো হাল ছেড়ে দেয় না। যে হাল ছেড়ে দেয় সে কখনো জিতে না। ~ ন্যাপোলিয়ন হিল

* * * * * *
প্রতিদিন এমন একটি কাজ করো যা করতে তুমি সাহস পেতে না।~ ইলিনর রুজভেল্ট

* * * * * *
যখন সবকিছু তোমার বিপরীতে যায়, তখন মনে রাখবে বিমান কিন্তু মাটি ছেড়ে আকাশে ওঠার সময় বাতাসের বিপরীতেই কাজ করে, একই দিকে নয়।~ হেনরি ফোর্ড

* * * * * *
তখনই আসলে একটা কাজ পুরোপুরি শুরু হয় যখন মানুষ কথা বলা ছেড়ে কাজে ব্যস্ত হয়।~ ওয়াল্ট ডিজনি

* * * * * *
আপনার না করা ১০০ টি চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে।~ ওয়েইন গ্রেটস্কি

* * * * * *
"কেবলমাত্র আঁধারের মাঝেই তুমি তারাদের জ্বলতে দেখতে পাবে।"~ মার্টিন লুথার কিং

১৩ আগ, ২০১৫

আশা ও ভালোবাসার কথা



মানুষ তার চারপাশের পরিবেশ দ্বারা খুব বেশি প্রভাবিত। যখন আপনি এমন কিছু মানুষের সান্নিধ্য পাবেন যারা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে, যারা এই চলমান অন্যায়-অস্থিরতা-হত্যা-খুনের পৃথিবীর মাঝেও অদম্য আশাবাদের সুতোয় মালা গাঁথে--তখন আপনিও আশাবাদী হবেন আপনার জীবন নিয়ে। তখন নিজ জীবনকেও সম্ভাবনার আধার মনে হবে, মনে হবে একদিন চারপাশকে নিয়ে আপনি সুখ আনতে পারবেন। টের পাবেন আপনি বিশ্বাস করছেন যে চলমান কষ্টের সময়টা কেটে গেলেই আপনি আবার সুন্দর সময় খুঁজে পাবেন। এই আশাবাদের তরী বেয়ে চলেই এসেছে মানবজাতি এতটা পথ। নতুবা প্রতিটি মানুষের জীবনেই যে ভীষণ ধাক্কা আসে জীবনের একেকটি ক্ষেত্রে, মানুষকে পরাজিত হয়ে পদদলিত হতে থাকতে হত। কিন্তু সম্ভাবনাকে আঁকড়েই মানুষ এগিয়ে যায়।

১১ আগ, ২০১৫

স্মৃতিময় স্মৃতিকাতরতা


তখন সন্ধ্যাবেলা
আঁধার ঘনিয়ে আসছিলো ক্রমেই। সারাটি দিন ছিলো বৃষ্টির বর্ষণ। শুধু যে বর্ষার বর্ষণ তা নয়, উত্তাল সমুদ্রের নিম্নচাপের প্রভাবও বটে। অপেক্ষাকৃত অচেনা পথে আনমনে হাঁটছিলাম, সামনের ভেজা পিচঢালা রাস্তা আর সন্ধ্যার আকাশ যেন মিশে গেছে চোখের সামনেই। হঠাৎ মাগরিবের আজান শুরু হলো কাছেই কোথাও। সুমধুর আজানের ধ্বনি, ঢাকায় এমন সুমধুর আজান সচরাচর কানে আসে না। উত্তর দিতে শুরু করতেই একটু পরেই কানে এলো আরেকটা কোথাও আজান শুরু হবার ধ্বনি। সহসাই মনে হলো, এরপর কোন মুফতি সাহেবের সাক্ষাৎ পেলে জেনে নিতে হবে এতগুলো মসজিদে আজান হলে কি একটার উত্তর দিলেই চলবে কিনা। পরে আবার মনে হলো, সেটাই তো হবার কথা, হয়ত কখনো শুনেছিলামও এমন মাস'আলা, কেন যেন স্পষ্ট মনে নেই এখন!

১০ আগ, ২০১৫

তাই স্বপ্ন দেখবো বলে আমি দু'চোখ পেতেছি



আমরা একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের একটা সময় অতিক্রম করছি এখন। সময়টা কঠিন যাচ্ছে। এমন কঠিন সময় হয়ত যুগে যুগেই নির্দিষ্ট বিরতি পর পর আসে। যুগের বিচার করলে আমাদের চলে না। আজ থেকে মাত্র ১০০ বছর আগে এই পৃথিবীতেই ঘটে গিয়েছিলো নারকীয় বিশ্বযুদ্ধ। হানাহানি-খাদ্যমন্দা-ক্ষমতা দখলের লড়াইতে ডুবে ছিলো সমগ্র বিশ্ব। অনেকেই অনেক অর্জন করেছে, তারপর বছর বিশ যেতে না যেতেই আবার আরো বড় ভয়ংকর সময় -- সেই ক্ষমতা খাটানোর যুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা নাগাসাকিকে বিষাক্ত করে দিয়ে লক্ষ লক্ষ প্রাণনাশ করে দিয়ে আমেরিকান জাতিগোষ্ঠী বিশ্বকে কব্জা করেছে আপন কৌশলে। অথচ তার দুইশ বছর আগেও ব্রিটিশ সূর্য ডুবতো না কোথাও। এমন আরো অজস্র চোখ দিয়ে দেখা যাবে "সময়"গুলো।

প্রেম-বিয়ে সংস্কৃতি এবং দুষ্টচক্রগুলো


প্রেম-ভালোবাসা এবং বিয়ে বিষয়ে আমার সাধ্যমতন কিছু অতি স্বল্প আকারে লেখা লিখেছিলাম একসময়। স্রেফ এতটুকুর কারণেই অনলাইনে এবং বাস্তব জীবনে বিভিন্ন তীর্যক তীক্ষ্ণ ভাষায় কটুক্তি ও সমালোচনা আমি শুনেছি। কিছু কথার কারণে কষ্টও পেয়েছিলাম। সে যাই হোক, আমি জানি, এই বিষয়টাতে আমি কেন বারবার গুরুত্বপূর্ণ বলতে চেয়েছি। কেবল ইচ্ছে হলেই লিখতে বসিনি, অনেক সময় নিয়েই ভেবে কথাগুলো বলতে চেয়েছি কেননা আমার জীবনের বেড়ে ওঠার সময়গুলোর অভিজ্ঞতার আলোকেই কিছু কথা জানাতে চেয়েছি। আমি প্রচুর মানুষের সাথে মিশেছি সবসময় হাইস্কুলের সময় সময় থেকেই -- আমার তা ভালো লাগত। আমি ভার্সিটি লাইফের কখনো হলের বাইরে কাটাইনি, মিশেছি, জেনেছি, সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করেছি। আমার এই দীর্ঘ সময়ে উপলব্ধি ছিলো বেশ কিছু যার একটি হলো, তরুণ প্রজন্মের আনপ্রোডাক্টিভিটি, সময় নষ্ট করা, দ্বীন থেকে দূরে সরে যাওয়া, মেধা কমে যাওয়ার পেছনে যেই জিনিসটাকে আমার খুব বড় মনে হত তা হলো -- প্রেম।

৮ আগ, ২০১৫

যেভাবে বই পড়া যেতে পারে



আমাদের জীবনের আয়ু তো সীমিত। বেঁচে থাকার সময়গুলো আল্লাহ আমাদেরকে দিয়েছিলেন যেন তার উত্তম ব্যবহারে সৎকর্ম করে আমাদেরকে জাহান্নামের আগুণ থেকে বাঁচাতে পারি। কী করেছি আজ অবধি? কতখানি কী সংগ্রহ করেছি? নিয়্যাহ কি ঠিক ছিলো? এখনো কি আছে? সত্যিই কি আল্লাহর জন্য জীবন ধারণ করছি? এখন? এই মূহুর্তে? চোখটা বন্ধ করলে কি অনুভব করতে পারি যে আমি আমার সর্বস্ব নিয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার দরবারে দাঁড়িয়ে আছি, আমার সবকিছুর হিসেব হবে? চিন্তা করতে গেলে আমার কাছে কেমন যেন মনে হয়, আমি পরীক্ষার হলে বসে আছি, অনেক্ষণ ধরে প্রশ্ন দেখেছি কিন্তু তেমন কিছুই লিখিনি -- সেই খাতা জমা দিতে হবে এখনই, আমি নিশ্চিত বুঝতে পারছি আমার তো পাশ করা হবেনা... বুক ধরফর করে ওঠে। নিশ্চয়ই আমরা ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত, আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন।