২১ অক্টো, ২০১৪

[গ্রন্থচারণ] মুহম্মদ বিন কাসিম: নসীম হিজাযী


​​​​ঈদের ছুটিতে একটা স্নিগ্ধ দিন ছিলো গতকাল। আমার সারাটা দিন কেটেছে মুহম্মদ বিন কাসিমের সাথে। হাজার বছর আগের ইতিহাস আর তার দৃশ্যপটগুলোতে ডুবে ছিলাম গোটাদিন।

সেই ষষ্ঠ শতকেই ইসলাম এসেছিলো ভারতবর্ষে আরব ব্যবসায়ীদের সাথে। তারা সমুদ্র পেরিয়ে জাহাজে চড়ে এসেছিলো ব্যবসা করতে ঠিকই, কিন্তু তাদের আমল-আখলাক ও সম্পদের বিনিময়ের সৌন্দর্য মুগ্ধ করেছিলো ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী বন্দরগুলোর মানুষদের। পরবর্তীতে অনেক মানুষই ইসলাম গ্রহণ করে। আরবদের বহনকারী এমনই বাণিজ্য জাহাজগুলোকে আক্রান্ত করে সিন্ধুরাজ দাহিরের নির্দেশে দেবলের রাজা। আক্রান্ত হয় মুসলিম নারী ও পুরুষেরা, নির্যাতিত হয় বন্দীরা। নিপীড়িতা এক মুসলিম বোন লুকিয়ে চিঠি লিখে পাঠান তখনকার বসরার শাসনকর্তা হাজ্জাজ বিন ইউসুফের বরাবরে। মুসলিম মুজাহিদরা এই অত্যাচারকে মেনে নিবে না এমন আত্মবিশ্বাস থেকে লেখা এই চিঠিটি পৌঁছে যায় বসরায়। রাজা দাহিরের অত্যাচারে অত্যাচারিত মুসলিম বোনের কান্নাজড়ানো চিঠি হাতে পেয়ে মানবতাকে মুক্ত করে ইসলামকে ছড়িয়ে দিতে মুহম্মদ বিন কাসিম সেনাপতি হিসেবে সিন্ধু অভিযানে বের হন। মাত্র ১৭ বছর বয়স, কিন্তু কী ভীষণ তার বীরত্বগাঁথা! ঈমানের তেজোদীপ্ততা তার এবং তার সঙ্গীদের বীরত্বকে হাজারগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিলো। তাদের অল্প কিছু মুজাহিদসমৃদ্ধ সেই সেনাদল জাহাজে চড়ে ভারতবর্ষে এসে দেবল, আরোর, ব্রাহ্মণাবাদের যুদ্ধগুলোতে হিন্দু শাসকদের অত্যাচারের বেড়াজালকে ছিন্নভিন্ন করে প্রতিটি যুদ্ধে পরাজিত করেছিলো, মুক্ত করেছিলো সাধারণ মানুষকে, দিয়েছিলো স্বাধীনতা ও মুক্তির স্বাদ।

এই ইতিহাসকে উপন্যাসের আদলে পাওয়া যাবে নসীম হিজাযীর মুহম্মদ বিন কাসিম বইটিতে। অসাধারণ বইটি মিস করা ঠিক না। নসীম হিজাযীর অনবদ্য সাহিত্যগুলোতে ডুব দিয়ে অবগাহন করুন ইতিহাস আর উদ্দীপনার মিলিত স্রোতে।

২০ অক্টো, ২০১৪

তরুণ কবির কাছে লেখা চিঠি : রেইনার মারিয়া রিলকা


​​​এই পোস্টের কথাগুলো বিখ্যাত ঔপন্যাসিক রেইনার মারিয়া রিলকার লেখা 'লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট' নামক গ্রন্থটি থেকে বেছে নেয়া কিছু অংশমাত্র। পুরো চিঠিটি পড়তে চাইলে ক্লিক করুন এখানে। অনুবাদ করেছি আমি, মাঝে মাঝে কথাগুলো পড়তে বেশ লাগে! 

জীবনের যেসব বিষয় নিয়ে হিসাব-নিকাশ মেলেনি, সেগুলোর ব্যাপারে ধৈর্য ধরুন। সেই উত্তর-না-পাওয়া প্রশ্নগুলোকেই ভালোবাসতে চেষ্টা করুন, যেমন করে আপনি গ্রহণ করে থাকেন বন্ধ দরজার একটি ঘর অথবা ভিনদেশি ভাষায় লেখা কোন একটা বই। এখনই সব উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত হবেন না। আপনাকে সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর এখন দেয়া হবে না কেননা সেসব জেনে আপনি ঠিকভাবে বাঁচতে পারবেন না। তাছাড়া, এই বিষয়গুলো হলো অভিজ্ঞতার পথ দিয়ে যাওয়া। জীবনের এই দিনগুলোতে আপনার এই প্রশ্নগুলো বুকে নিয়েই বাঁচতে হবে। হয়ত, সময়ের সাথে কোন একদিন, আপনি নিজের অজান্তেই ধীরে ধীরে প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে যাবেন।
~রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
নিজের বেড়ে ওঠার গোটা সময়টাতে তুমি ধীরস্থিরভাবে এবং সতর্কভাবে বেড়ে ওঠো। যখন কেবল সম্ভবত নিজের ভেতরের গভীরতম অনুভূতিগুলো তোমাকে তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে তখন অন্যদের দিকে তাকিয়ে এবং অন্য কোথাও থেকে উত্তর খোঁজার মাঝে নিজের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে চরম ক্ষতি মনে হয় আর হতে পারে না।
~রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
অতএব প্রিয় বন্ধু আমার, যদি কখনো এমন দুঃখ-কষ্ট এসে তোমাকে জর্জরিত করে ফেলে যারা তোমার গোটা জীবনে পাওয়া কষ্টগুলোর চেয়েও বড়, যা তোমার সমস্ত কাজের উপরে কষ্টের ছায়া বিছিয়ে দেয়, কখনো ভীত হয়ে যেয়ো না। তোমাকে অবশ্যই ভাবতে হবে যে তোমার ভেতরে কিছু ঘটে চলেছে; মনে রেখো জীবন তোমায় ভুলে যায়নি; সে তোমাকে তার হাতে আঁকড়ে ধরেছে এবং তোমাকে পড়ে যেতে দেবে না। তুমি কেন তোমার জীবন থেকে অস্বস্তি, অশান্তি, ব্যথা, বিষণ্ণতাকে দূর করে দিতে চাইবে যখন তুমি জানই না তারা এসে তোমারই ভেতরে কী দারুণ সব অর্জনকে পূর্ণ করে চলেছে?
-- রেইনার মারিয়া রিলকা ['লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট' বই থেকে অনূদিত]

* * * * * *
যারা আপনাকে সাধারণ কিছু স্নিগ্ধ ও শান্ত কথা বলে একটুখানি স্বস্তি এনে দিতে চেষ্টা করেন, তাদের দেখে  এমনটা ভেবে বসবেন না যে তাদের জীবনটা যন্ত্রণাবিহীন। তার জীবনেও দুঃখ-কষ্ট এবং যন্ত্রণা থাকতে পারে যা হয়ত আপনার চাইতেও বেশি। যদি তেমনটা না-ই হতো, তাহলে তিনি এমন কিছু শব্দ কখনো খুঁজে পেতেন না।
~রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
এমন এক ভালোবাসাতে বিশ্বাস করুন যা আপনার জন্য জমা আছে যেমন থাকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদ। দৃঢ় বিশ্বাস রাখুন সেই ভালোবাসার মাঝে এমন সুবিশাল শক্তি আর আশীর্বাদ আছে যার মাঝে আপনি যত ইচ্ছা তত ঘুরে বেড়াতে পারবেন এবং সেই ভালোবাসার বৃত্ত থেকে বাইরে পা দেয়ার দরকারই আপনার হবে না। [রেইনার মারিয়া রিলকার উদ্ধৃতি অনুসরণে]

* * * * * *
কোন মানুষের সাথে আপনার সর্বশেষ কথোপকথন যা হয়েছিলো, তিনি কেবলই সেই মানুষটি নন। বরং, প্রকৃতপক্ষে আপনার সাথে তার গোটা সম্পর্কটি জুড়ে তিনি আপনার সাথে যেমন ছিলেন সেটিই তিনি।~রেইনার মারিয়া রিলকা

* * * * * *
আপনার প্রতিদিনের জীবন যদি খুব সেকেলে ও আনন্দহীন হয়, তাহলে দিনকে দোষ দিবেন না, বরং নিজেকে দোষারোপ করুন। নিজেকে বলুন যে আপনি এমন ভালো  একজন কবি নন যে দিনের ঐশ্বর্য থেকে কিছু পরিমাণ বের করে নিয়ে আসতে পারে। স্মরণ রাখবেন, স্রষ্টার কাছে অভাব বলতে কিছু নেই, যেমন নেই কোন আনন্দহীন জায়গা।
-- রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
আমার কাছে দু'জন মানুষের সম্পর্কের বন্ধন ভালো রাখার জন্য যে জিনিসটা সবচেয়ে বড় কাজ বলে মনে হয় তা হলো: পরস্পরের নির্জনতার একাকীত্বের হাত থেকে পরস্পরকে আগলে রাখা।
~ রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
একটা উত্তম বিয়ে সেটাই যেখানে দু'জন তাদের পরস্পরকে নিজ নিজ একাকীত্বের অভিভাবক বানিয়ে দেয়। ~ রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
খেয়াল রাখুন কোন কিছুর স্রেফ বাইরের আবরণ যেন আপনাকে বিভ্রান্ত না করে।
~ রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * * * *
জীবনে যা ঘটেছে তা থেকে খুব দ্রুত কোন সিদ্ধান্ত নিতে যেয়োনা, স্রেফ পেরিয়ে যেতে দাও সময়টাকে। তা না হলে অতীতকে অভিযোগের চোখে দেখাটা খুব সহজ হয়ে যাবে। অথচ তোমার বর্তমানে তুমি যা কিছুর সাথে পরিচিত হয়ে চলেছ, তারা খুব স্বাভাবিকভাবে এই অতীতের সাথে সম্পর্কিত।
~রেইনার মারিয়া রিলকা [লেটার্স টু আ ইয়াং পোয়েট]

* * * *
কোন মানুষের সাথে আপনার সর্বশেষ কথোপকথন যা হয়েছিলো, তিনি কেবলই সেই মানুষটি নন। বরং, প্রকৃতপক্ষে আপনার সাথে তার গোটা সম্পর্কটি জুড়ে তিনি আপনার সাথে যেমন ছিলেন সেটিই তিনি।~রেইনার মারিয়া রিলকা

মনের জানালা মাঝে # ১৮


(১৯২)
আঁধার নিয়ে শত-শতবার সমালোচনা করা, ​আহাজারি​ করার চেয়ে বরং অন্তত ১টা আলোর বাতি জ্বালানোও উত্তম। আমাদের প্রতিটি কাজই আমাদেরকে আল্লাহর কাছে অথবা আল্লাহর কাছ থেকে দূরে নিয়ে যায়।​

(১৯৩)
গল্প করার সময়, কথা বলার সময় সুন্দর শব্দগুলোকে পছন্দ করাটা যেন অনেকটা রিফ্রেশারের মতন। কিছু প্রিয়মুখ, প্রিয়জনদের সাথে যখন আলাপ হবে, তখন অতীতের তিক্ততা, গ্লানির গল্প করে যদি কাজে না লাগে, তাহলে পুরো এড়িয়েই যাওয়া উচিত। বরং কিছু সুন্দর শব্দ দিয়ে ঘেরা আলাপ করা যেতে পারে।

(১৯৪)
শুভ্রতা, স্নিগ্ধতা, স্বপ্নময়তা, ভালোবাসা, জান্নাত, বাগান, সাদাকাহ, আতিথেয়তা, মেহমান, উপহার, ফুল, সৌরভ, ভালো মানুষ, বিনয়ী, উদার, পরোপকারী, ভদ্র, সাহায্যকারী, নিরহংকার, আশাবাদ, সুন্দর ভবিষ্যত, হাসিমুখ কথা -- এরকম শব্দগুলো নিজেরাই কেমন একটা সুন্দর অনুভূতির জানান দেয়, তাইনা? এরকম সুন্দর শব্দ দিয়ে তৈরি বাক্যগুলোও অন্তরকে শান্তি দেয়। যদি সম্ভব হয়,  বাজে কথা ছেড়ে ভালো কথা নয় কেন?

(১৯৫)
আপনি যা অপছন্দ করে তাকে ধ্বংস করে গুঁড়িয়ে দেয়ার চেয়ে বরং আপনি যা ভালোবাসেন তাকে ছড়িয়ে দিন চারপাশে। ফুলের সুগন্ধ তো সবাই ভালোবাসে...

(১৯৬)
কখনো কখনো মানসিক ক্লান্তিগুলো শারীরিক ক্লান্তির চেয়ে শত-সহস্রগুণ বেশি শক্তিশালী এবং ক্ষতির দিক থেকেও মারাত্মক। তবু আমরা অনেক সময়েই মানসিক ক্লান্তি দূর করার উপায় খুঁজে পাইনা।

(১৯৭)
মানুষ আশা করে অন্যেরা তাকে বুঝবে। অথচ তা অসম্ভব। অন্য কেউ আপনার জীবনটার গলি-ঘুঁপচি জানে না, ধারণাও করতে পারবে না। তাই আপনাকে বোঝা সম্ভবও নয়। মিছে আশা করে ঠকবেন না। তার চেয়ে বরং নির্বিকার হোন, প্রত্যাশা কমিয়ে ফেলুন। মানুষের কাছে আশা না করে বরং প্রার্থনা করুন কেবলই আল্লাহর কাছে। আল্লাহ চাইলে আপনার প্রত্যাশাগুলো পূরণ হতেও পারে, হয়ত সেই মানুষটাই করবে। পদ্ধতিটা ভিন্ন...

(১৯৮)
একজন বই পড়ুয়া মানুষের সাথে থাকলে প্রতিদিন দেখবেন আপনি যেন বদ্ধ ঘরেও হিমেল বাতাসের পরশ পাচ্ছেন। তিনি প্রতিদিন আপনাকে নিত্য নতুন ধারণা, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, অনুপ্রেরণাময় গল্প, জীবনেতিহাস জানাবেন। পাঠিকা বা পাঠকের সাথে কাটানো সময়গুলো তাই অনেক 'অবোরিং' হয়। আপনি প্রতিদিন কিছু না কিছু পড়েন তো?​​

​​ (১৯৯)
পরীক্ষার রেজাল্টের দিনে মা-ছেলের কথোপকথন....
মা : কী রে, রেজাল্ট কী তোর?
ছেলে: (কুরআনের আয়াত আওড়িয়ে)
"পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য ব্যতীত আর কিছু নয়" (৫৭:২০)  
:P :P

লালমনিরহাটে খ্রিষ্টান মিশনারীদের আগ্রাসন

​​​ক'দিন আগে এক ভাই তাঁর লেখায় লিখেছিলেন লালমনিরহাটে এক স্কুলে বাচ্চারা খাওয়ার পূর্বে বিসমিল্লাহ না বলে বলে,বান্দা যীশুর নামে চাই! কী ভয়াবহ!

আমার জীবনের একটা বড় অভিজ্ঞতা ছিলো এই বছরের শুরুতে লালমনিরহাট ভ্রমণ--'মিশনারী রোডে' বাস থেকে নামতে যখন হলো, তখন টের পেয়েছিলাম এই শহরে 'মিশনারীরা' খুব তৎপর। পরবর্তীতে জেলা শহরের প্রাঙ্গনে যখন অজস্র চার্চ, চার্চ স্কুল, মিশনারী স্কুলের ভীড়ে তেমন কোন ন্যুনতম সরকারি/ইসলামিক প্রতিষ্ঠান তুলনা করার মতনও চোখে পড়লো না তখন টের পেয়েছি এই শহরে ওদের কর্মযজ্ঞ কী ভয়ংকর! এরপর আশেপাশে কয়েকটা মাদ্রাসা আর মক্তবে গিয়ে বুঝেছিলাম মিশনারীরা স্কুল দিয়ে, স্কুলে ফ্রি পড়িয়ে, স্কুলে চাল দিয়ে, মাঝে মাঝে বিভিন্ন গিফট দিয়ে কেমন করে মানুষকে তাদের দিকে আকর্ষণ করেছে। অর্থকষ্টে থাকা বাবামায়েরা সন্তানদের জন্য ইসলামিক স্কুলগুলোর আবেদন হারিয়ে 'মিশনারী স্কুলে' এগিয়ে যাচ্ছে।

১৪ অক্টো, ২০১৪

চরিত্রবান সন্তান পেতে হলে দরকার ভালো বই


আমার জীবনের খুব বড় একটা সময় আমি সাহিত্যে ডুব দিয়ে থেকেছি। আমার বাল্য আর কৈশোরের পুরোটাই ছিলো বইয়ের মাঝে হারিয়ে যাওয়া। বাংলা সাহিত্য, বিদেশি সাহিত্যের অনুবাদগুলো যেখানে পেতাম পড়ে ফেলতাম। আল্লাহ যেটুকু জ্ঞান দিয়েছেন সেটুকুকে পূর্ণ ভালোবাসায় ব্যবহার করা হয়েছিলো বইপাঠে। জীবনে পরবর্তীতে টের পেয়েছি আমার যেকোন পড়াশোনায় পৃষ্ঠা সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি হয় উপলব্ধি ও অনুধাবন। রবীন্দ্র-নজরুল, শরত-বঙ্কিম, সুনীল-শীর্ষেন্দু-সমরেশ, গোর্কি-তলস্তয়-শেক্সপিয়র পেরিয়ে একসময় ঘোর ভাঙ্গে ভার্সিটি লাইফে এসে। বাস্তব জীবন আর পেছনের হাজার হাজার দিনের কল্পনার জগতে বহু বহু পরিস্থিতি পেরিয়ে আসা জীবনের ফারাকটুকুকে বুঝতে ও নিজের অন্তরকে তা বুঝাতে অনেক বেশি সময় চলে গিয়েছিলো। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের চারপাশে অর্থহীন এক প্রকান্ড স্বাধীনতা, স্বেছাচারিতার সুযোগগুলোকে কেন অপছন্দ হতো, এটা নিজেকে বুঝাতে হয়েছিলো। সেসময় দেশে ও বিশ্বে যেসব মর্মস্পর্শী ঘটনা ঘটতো যেগুলোতে চারপাশের প্রায় সবার নিরুদ্বেগ থাকাটা মেনে নিতেও কষ্ট হতো।

১ অক্টো, ২০১৪

মনের জানালা মাঝে # ১৭



(১৮০)
প্রতিনিয়ত অনেক ছোট ছোট বিদায় নিতে হয় আমাদের। বিদায় নিই বন্ধুদের কাছ থেকে, পরিবারের কাছ থেকে, সহকর্মীদের কাছ থেকে, দ্বীনী ভাইদের/বোনদের কাছ থেকে। প্রতিটি বিদায়ই যেন অনুচ্চারিত শব্দে একটি কথা আমাদের বলে যায়-- একদিন পৃথিবীর সবকিছুর কাছ থেকে বিদায় নিতে হবে!

(১৮১)
শব্দ আপনাকে অনেক অর্থ দেবে ঠিকই, কিন্তু ব্যাখ্যা খুঁজতে আপনাকে ঐ নৈঃশব্দ্যের কাছেই ফিরে যেতে হবে।~লালবৃত্ত

(১৮২)
আশাহত হয়ে হয়ত তুমি ভেবেছিলে তপ্ত রৌদ্রের তেজে ক্লান্ত-শ্রান্ত-বিদ্ধস্ত হয়ে যাবে!
কিন্তু টের কি পাওনি আল্লাহ চাইলেই আকাশে মেঘ জমিয়ে শান্তির বৃষ্টি ঝরাতে পারেন?

(১৮৩)
চারিদিকে জীবনের এত আয়োজন, কেবল জীবনটাই কোন ফাঁকে মূল্যহীন হয়ে পড়লো। ~লালবৃত্ত

(১৮৪)
মুভিতে দেখা বিয়েগুলোর সাথে আপনার বিয়ের তুলনা করতে যাবেন না। মুভির বিয়েগুলো লিখেছে স্ক্রিন-রাইটাররা, আপনারটা লিখেছেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা। ~জনৈক

(১৮৫)
আল্লাহর সাথে কথোপকথনের অভ্যাসটা খুব সুন্দর! প্রতি মূহুর্তে এটা অনুভব করে কথা বলা যে তিনি আমাকে শুনছেন, আমার প্রতিটি আবেগ আর কথার উত্তর তিনি দিচ্ছেন, আমার প্রতিটি দোয়ার উত্তর তিনি প্রতিদান হিসেবে দিবেন। সুবহানাল্লাহ!

(১৮৬)
আখিরাতে বিচারের দিনে আল্লাহ আমাদের কাজগুলোকে গুণে দেখবেন না, বরং সেগুলোকে ওজন করবেন। তাই আমাদের কাজগুলোর পরিমাণ নয় বরং তাদের গুণগত মান গুরুত্বপূর্ণ।

(১৮৭)
যে পাহাড়ের চুড়া যতটা বেশি খাড়া এবং যেখানে উঠতে যত বেশি পরিশ্রম, সেই পাহাড়ের চুড়া থেকে চারপাশের দৃশ্য তত বেশি নয়নাভিরাম সুন্দর মনে হয়...

(১৮৮)
কারো চরিত্র সম্পর্কে যদি ধারণা পেতে চান তাহলে খেয়াল করুন তার বন্ধুদের প্রতি।

(১৮৯)
প্রচন্ড কঠিন, দুর্যোগময়, কষ্টকর সময়েও একজনের পক্ষে শান্তি খুঁজে পাওয়া সম্ভব যদি তিনি আল্লাহর দিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন।

(১৯০)
কখনো কখনো অন্য কারো হৃদয়কে প্রশান্ত করতে আপনার মুখের কয়েকটি শব্দই যথেষ্ট।

(১৯১)
আপনি যখন কাউকে উপদেশ দিতে যাবেন তখন কথা সংক্ষিপ্ত করুন, অনর্থক বাক্যগুলো এড়িয়ে যান।