২৬ জুন, ২০১৪

ফেসবুকে প্রচুর সময় নষ্ট হয়

ফেসবুকে প্রচুর সময় নষ্ট হয় আমার। খুব সম্ভব প্রায় সবারই এভাবে অবলীলায় সময় নষ্ট হয় ফেসবুকে। ফেসবুক তথা ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড এক অদ্ভুত ভ্রমময় জায়গা। নিজের পছন্দের কথা শুনতে ও শুনাতেই সবাই ফ্রেন্ড লিস্ট সাজায়। ভুল হোক, শুদ্ধ হোক -- পরবর্তীতে অনেক বেশি রেসপন্স পাওয়ার পরে মানুষটি ভুলে যায় প্রকৃতপক্ষে খুব কম লোকই তার মতন মত ধারণ করে। আমার জীবনের উপলব্ধি হলো-- এই সমাজে তীব্র খারাপের সংখ্যা যেমন কম, ভালো করতে চাওয়া দল-মতের মানুষও খুব কম। কিন্তু আছে প্রচুর জাহেল বা অজ্ঞ-মূর্খ লোক, ভালো-খারাপকে আলাদা করার আগ্রহও বা জ্ঞান নাই যাদের; তারা প্রকারান্তরে খারাপদেরকেই সাহায্য করে। নিজের সমমনা লোকদের ফ্রেন্ড লিস্টে/গ্রুপে/ফলো লিস্টে নিয়ে "অনেক বেশি কাজ হচ্ছে/ অনেক ভালো আছি/ আমাদের মতটাই সঠিক/ আমরাই ঠিক ভাবছি/আমরা জনমত বদলে দিচ্ছি" টাইপের মূর্খতা আর অজ্ঞতায় ভরা চিন্তা যেই বিভ্রমে রেখে দেয় আমাদেরকে তা অনেক ক্ষতিকর।

২৩ জুন, ২০১৪

রামাদান পরিকল্পনা : হিজরি ১৪৩৫

​​​​​​​ইসলামকে নতুন করে বুঝতে শেখার পর রামাদান আমার কাছে অন্যরকম আবেদন নিয়ে হাজির হয়! বিগত কয়েক বছর রজব পেরিয়ে শাবান মাসে এসে অনেক পরিকল্পনা করেছিলাম রামাদানের জন্য। খানিকটা পড়াশুনা করে, বুঝে আর শুদ্ধ আবেগ থেকে আমি 'অ্যাম্বিশাস' বা উচ্চাভিলাসী পরিকল্পনা না করার চেষ্টা করেছিলাম। তবু ক্রমাগত ঠেকে শিখছি! আলেমরা সবসময়েই বলেন রামাদানে অতি উঁচু লক্ষ্য আর পরিকল্পনা না করে বরং বর্তমান জীবনধারার সাথে মিলে যায় এমন কিছু লক্ষ্যস্থির করতে।

আল্লাহ এমন আমলকে পছন্দ করেন যা হয়ত আকারে ছোট, কিন্তু যদি তা নিয়মিত করা হয়। এই বিষয়টাকে মাথায় রেখে অন্যান্যবারের মতন তাই রামাদানে আহামরি কিছু ঠিক করিনি। এখনকার অবস্থান থেকে নিজেকে উন্নত দেখতে চাই তাই মূলত কুরআনকে ঘিরেই কিছু পরিকল্পনা করেছি। অন্য বছরগুলোতে ইসলামি সাহিত্য ও আলোচনা নিয়ে চিন্তাভাবনা ও ঘাঁটাঘাঁটি করতাম। এইবার কুরআন তিলাওয়াত, তার অনুবাদ এবং শুধু ত্রিশ পারার সূরাসমূহের তাফসির গভীরভাবে পড়ার মাঝেই মূল পড়াশোনা স্থির রাখবো। উস্তাদ নু'মান আলী খানের তাফসীর আলোচনাগুলোর অডিও mp3 শুনতে চেষ্টা করবো নিয়মিত ইনশাআল্লাহ। [http://www.nakcollection.com/download-tafsir.html]
ব্যাস এতটুকুই! কুরআনকে ঘিরে কুরআন নাযিলের মাসে পরিকল্পনায় আল্লাহ অনেক বারাকাহ দিবেন ইনশাআল্লাহ!

প্রতিদিন চাকুরিস্থলে, ঘরে দা'ওয়াহ সংক্রান্ত কাজ করার জন্য কিছু ছোট ছোট পরিকল্পনাও করেছি। অনলাইন জগত থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবো, যেহেতু এখানে আমার অযথাই অনেক সময় নষ্ট হয়, না চাইলেও অনেক ছবি দেখে ফেলতে হয় যা অনুচিত, অনেক তুচ্ছ আলোচনা পড়ে ফেলতে হয় যা দুনিয়া ও আখিরাতে কোন কল্যাণ আনবে না বরং সন্দেহ ও ঘৃণা দিয়ে মনকে বিষিয়ে দেয়।

একটা বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ম নে হয়-- রামাদানে নিজের মধ্যে আনা প্রতিটি পরিবর্তনকে একদম সবসময়ের জন্য ধারণ করতে চাওয়ার তৃষ্ণার্ত মানসিকতা। গীবত, ক্ষতিকর সমালোচনা, হিংসা, ঘৃণা, আজেবাজে আলাপ, খেলাধূলার মতন তুচ্ছ বিষয়ে দেদারসে সময় নষ্ট করার মতন বিষয়ে প্রচন্ড সতর্কতা যেন আজীবনের জন্য নিজের মাঝে গেঁথে যায় এমন চেষ্টা করা গুরুত্বপূর্ণ বলে অনুভব করছি।

প্রতিটি মুসলিমই রামাদানের জন্য অস্থির হয়ে অপেক্ষা করে, প্রস্তুতি নেয়। প্রাণপ্রিয় অতিথি রামাদানের জন্য মনের ঘরদোর পরিষ্কার করে বসে থাকার মাঝে আছে অন্যরকম এক আনন্দ! আল্লাহ আমাদের জন্য রহমত ও মাগফিরাতময় রামাদান কবুল করুন।

বর্ষণস্নাত  ঢাকা নগরী, 
২৩ জুন, ২০১৪ দুপুর

২২ জুন, ২০১৪

মনের জানালা মাঝে # ১৫

(১৬০)
আমাদের অনেকের জীবনের ক্ষুদ্র একেকটা অংশই একেকটা গল্প-উপন্যাসের চেয়ে অনেক অনেক বেশি নাটকীয় হয়। গল্প-উপন্যাসের কাহিনীগুলো তখন হাস্যকর রকমের তুচ্ছ মনে হতে থাকে...

(১৬১)
মাঝে মাঝে কিছু মানুষকে দেখে মুগ্ধ হতে হয় যারা ভালো কাজে, দ্বীনের জ্ঞানের মাঝে এত আগ্রহ, এত প্রাণশক্তি নিয়ে লেগে থাকেন। তাদের দেখে অবাক হয়ে মনে হয়, এত অনুপ্রেরণা তারা কোথা থেকে পান! তাদের নিরহংকার ও আন্তরিক আহবানে অনেক কিছু শেখা হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ এমন মানুষদেরকে রহম করুন, তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

 (১৬২)
আমাদের অতীতের প্রতিটি ঘটনা, প্রতিটি গল্পই আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা আর উদ্দীপনার গল্প হয়ে এসেছে। কিন্তু আমরা কীভাবে তাদেরকে ব্যাখ্যা করি, সেটা আমাদের উপরে নির্ভর করে।

(১৬৩)
সৌন্দর্যের বসবাস আমাদের ভেতরে, আমাদের হৃদয়ে, আমাদের চোখে, আমাদের মুখের শব্দগুলোতে, আমাদের দৃষ্টিতে, আমাদের চাহনিতে... সৌন্দর্য প্রকাশিত হয় আমাদের গোটা সত্ত্বাজুড়ে।

(১৬৪)
যে আল্লাহর সামনে হাঁটু গেঁড়ে সিজদাহ করতে পারে সে সবার সামনে দৃঢ় হয়ে শক্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে।

(১৬৫)
আমি আল্লাহর কাছে অনেককিছু চেয়েছিলাম এবং তিনি আমাকে কিছু সুযোগ দিয়েছিলেন। আমি হয়ত যা চেয়েছি তা পাইনি কিন্তু তা-ই পেয়েছি যা আমার প্রয়োজন ছিলো।

(১৬৬)
অন্যদের হক রক্ষা করতে গিয়ে, কষ্টে থাকা লোকের উপকার করতে গিয়ে নিজেকে বঞ্চিত ও হতভাগা মনে করা ঠিক নয়। যাকে খুশি করতে বা যার নির্দেশ মেনে এই কষ্টগুলো করা হয়ে তার কথা মনে করা উচিত। তিনি এই দুনিয়া ও সকল বিশ্বজগতের প্রতিপালক। তিনি যখন পুরষ্কার দিবেন, তখন কল্পনাতীত উপায়ে দিবেন। সেই প্রাপ্তির সৌন্দর্য আমাদের কল্পনাকেও ছাপিয়ে যায়, সুবহানাল্লাহ!

(১৬৭)
যদি মনে করেন দাড়িতে কাউকে দেখতে অনাকর্ষণীয় লাগে, তাহলে মনে রাখবেন সৃষ্টির সেরা মানুষ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা, তার দাড়ি ছিলো এবং তিনি দেখতে অনুপম সুন্দর ছিলেন।

(১৬৮)
আপনি হয়ত ফেসবুক সেলিব্রেটি টাইপের কেউ নন বা হতেও চাননি, আপনার নাম ধরে হয়ত খুব বেশি মানুষ চেনে না। আপনি সাদামাটা থাকেন বলে যদি কখনো মন খারাপ হয় তাহলে মনে রাখবেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আপনাকে নাম ধরেই চিনেন এবং তিনি প্রতি মূহুর্তেই আপনার কাজগুলো আগ্রহের সাথে দেখছেন।

(১৬৯)
ভালোবাসার গভীরতম সম্পর্কটি তার সাথে ঠিক করে রাখুন, তিনি গোটা পৃথিবীকে আপনার জন্য ঠিক করে দেবেন।

(১৭০)
সুরা আর-রুম একটা অসম্ভব সুন্দর সূরা, অসম্ভব সুন্দর এর অর্থ। শুধু রিডিং পড়ে গেলেও বুকে অদ্ভুত এক গভীর অনুভূতি হয়। আল্লাহ কেমন করে তার নিদর্শনগুলো বলেছেন এখানে, এত সুন্দর এক ভাষায় তা ভাবলেও বিষ্মিত হতে হয়। সুবহানাল্লাহ!!

সুরা আর-রুম: http://tanzil.net/#trans/bn.bengali/30:1

জমির মালিকানা ও ক্ষমতার লোভ এবং তাদের স্থায়িত্বকাল

​​​​​​​একসময় ইতিহাস পড়তে গিয়ে অত্যাচারী শাসক বাপকে হত্যা করে তার সন্তানের রাজা হবার অনেকগুলো দৃষ্টান্ত দেখেছিলাম। পার্সিয়ান আর রোমান সাম্রাজ্যের এমন বেশ কিছু গল্প মনে আছে, মুঘলদের মাঝেও ক্ষমতার এই লোভ নিয়ে ঘটনা ছিলো। নবাব সিরাজউদ্দৌলার খালা হিংসার একটি দৃষ্টান্ত। এমন হিংসুটে মানুষ পৃথিবীতে এসেছে যুগে যুগে, আবার চলেও গেছে নিঃস্ব হয়ে। শুধু পৃথিবীর সময়টা অনেক মানুষকে নিরতিশয় যন্ত্রণা দিয়েছে তারা।