৩০ জুন, ২০১৩

মৃত্যুর চাইতে বড় দুঃসংবাদ পাপীদের জীবনে কি হতে পারে?

মনে কি পড়ে এই তো কিছুদিন আগেই কত মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আমাদের অন্তরে কি দাগ কাটেনি একটুও? স্মরণ হয়নি আমাদের একদিন আমরাও তাদের মতন চলে যাবো? অথচ আমরা তাদের ভুলে গিয়ে আবার আগের মতন খিস্তি খেউড় আর হতাশার আলাপে ডুবে গেছি, আমাদের পাওয়া না পাওয়ার দিব্যি আলাপে আনন্দ খুঁজে নিয়েছি। যতক্ষণ বেঁচে আছি ততক্ষণই ভালো আছি, এখনো সম্ভাবনা আছে সুন্দর কিছুর, অনন্তকালে মুক্তি পাওয়ার। মৃত্যুর চাইতে বড় কোন দুঃসংবাদ পাপীদের জীবনে কি আর হতে পারে? মৃত্যু ত মুমিনদের সুসংবাদ -- এই দুনিয়ার পরীক্ষা পেরিয়ে অনন্তকালের শান্তির...

 ৩০/০৬/২০১৩

আমাদের জীবনটা একটা পথচলা

আমাদের জীবনটা একটা পথ চলার মতন, এই পথে আমরা মুসাফির। আল্লাহ পৃথিবীতে আমাদের পাঠিয়েছেন, তারই কাছে ফিরে যাবো। যাওয়া সুনিশ্চিত, যেমনটাই হোক এই পথচলার দৈর্ঘ্য। খুব অদ্ভুত বিষয় হলো, মুসাফির যেমন ট্রেনে চড়ে যাবার সময় তার গন্তব্যে যেই ট্রেন যাবে সেটা ছাড়া অন্যগুলোতে চড়ে বসার কথা নয়, আমাদেরও তেমনি উচিত নয় গন্তব্যে নিয়ে যাবে যেই কাজ তা ছাড়া অন্য কাজে নিজেদের ব্যস্ত রাখা। জান্নাত ছিলো আমাদের আদি নিবাস, আদম আলাইহিস সালাম সেখান থেকেই এই পৃথিবীতে পা রেখেছিলেন। আমাদের ফিরে যাওয়া তখনই সার্থক হবে যেদিন জান্নাতে পা দিতে পারবো। এই কথাটা মনে রেখেই পথ চলা দরকার। যে কাজের, চিন্তার, কথার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই আমাকে জান্নাতের পথে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার, তাতে লেগে থাকা বোকামিই... ভুল করলে, যাচ্ছেতাই আচরণ করলে সেগুলো আমাদের ভুল পথে নিয়ে যাবে, গন্তব্যও হবে ভুল -- আমরা জাহান্নামে নিপতিত হবো। আল্লাহ আমাদেরকে জান্নাতি হিসেবে কবুল করে নিন।

একদিন ইমাম আহমাদকে তার ছেলে প্রশ্ন করলেন, “বাবা, আমরা কবে শান্তি পাবো?”
 তিনি (রাহিমাহুল্লাহ) উত্তর দিলেন, “জান্নাতে আমাদের প্রথম পদচিহ্নটি রাখার মূহুর্তটি থেকেই।”

“তুমি আখিরাতের সন্তান হও, দুনিয়ার জীবনের সন্তান হয়ো না, নিশ্চয়ই সন্তান তার মা-কে অনুসরণ করে।” — ইমাম ইবনুল কায়্যিম“

আমি এমন মানুষদের (সাহাবা) সান্নিধ্য অর্জন করেছিলাম যারা তাদের কোন সৎকাজকে ছেড়ে দেয়া যতটা ভয় করতেন তা তোমরা তোমাদের পাপকাজের পরিণামকে যতটুকু ভয় কর তার চাইতেও বেশি।”— আল-হাসান আল-বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)

২৮ জুন, ২০১৩

ফেসবুক যখন ইগো প্রকাশের নিপুণ মাধ্যম

ফেসবুক একসময় এমন ছিলো না, জ্ঞানের প্রতিযোগিতা, সৌন্দর্যের প্রতিযোগিতা, দাম্পত্য জীবনের সুখ প্রদর্শনের প্রতিযোগিতা, ক্ষমতার দাপট দেখানোর প্রতিযোগিতা, নিজের ব্যক্তিগত-পারিবারিক-রাজনৈতিক-সামাজিক সবকিছুই ফিল্টারবিহীনভাবে প্রকাশ করা এবং যাবতীয় ইগো প্রকাশের উন্নত এবং ঝামেলাহীন ড্রেইনেজ সিস্টেম এই ফেসবুক। ইগোকে প্রশ্রয় দান করলে তা সেই ব্যক্তিকেই খুবলে খুবলে খায়, সে আরো বন্দী হয়ে যায় নিজের নফসের কাছে। বাস্তব জগতের কারাগারে বন্দী থাকলে সেই শিক দেখা যায়, কিন্তু নিজের নফসের কাছে, হিংসা-পরশ্রীকাতরতা-ক্রোধ-অহংকার-দম্ভ আমাদেরকে যেই শিকের আড়ালে বন্দী করে রাখে তা চোখে দেখা যায় না, তা অদৃশ্যমান। কিন্তু সেগুলো বড়ই ভয়ঙ্কর। ফেসবুকের উসিলায় আমাদের এই ভয়াবহ কারাগারে বন্দী হওয়াটা সহজ থেকে সহজতর হয়ে গেছে।

আসলে নিজেকে মুক্ত করার এই প্রক্রিয়া নিজেদের ভিতর থেকেই আসে, নিজেকে খেয়াল করতে হয় গভীর করে, আগ্রহভরে। আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হয়, আল্লাহ ছাড়া কেউ সাহায্য করার নেই, তিনি যাকে ইচ্ছা তাকেই দান করেন। আল্লাহ আমাদের জন্য কঠিন জিনিসও সহজ করে দিতে পারেন, সহজ জিনিসও কঠিন করে দিতে পারেন। আল্লাহ আমাদের জন্য কোন কিছু সহজ করে না দিলে তা কখনো সহজ হয় না। বান্দা চাইলে আল্লাহ তাকে অবশ্যই দান করেন, এই চাওয়া আমাদের ভিতর থেকে আর্তি হয়ে আসা প্রয়োজন। আল্লাহ আমাদের মুসলিম ভাই ও বোনদেরকে ক্ষমা করুন, পরিচালিত সরল ও সঠিক পথে।

প্রখ্যাত তাবিঈ ইমাম আল-হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ) খুব সুন্দর একটা কথা বলেছিলেনঃ

"বুদ্ধিমান ব্যক্তির জিহবা তার হৃদয়ের পেছনে থাকেঃ সে যখন কথা বলতে চায়, প্রথমে সে চিন্তা করে। যদি শব্দগুলো তার জন্য কল্যাণকর হয় তাহলে সে তা বলে। আর যদি কথাগুলো তার জন্য অকল্যাণকর হয় তাহলে সে চুপ থাকে।

একজন মূর্খ ব্যক্তির জিহবা তার হৃদয়ের সামনে থাকেঃ সে কথা বলার সময় খুব কমই চিন্তা করে এবং তার জন্য কল্যাণকর বা অকল্যাণকর যা-ই হোক সে বলে ফেলে।"


আমাদের প্রকৃত কল্যাণ ও অকল্যাণ নিয়ে হিসেব করা উচিত আখিরাতের কথা চিন্তা করে। এটা নিশ্চিত, বিষয়টা সহজ না এবং আমাদের জন্য চিন্তা করা ও কাজ করা সচরাচর বেশ কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু যেই আখিরাত সত্য এবং সেখানকার কল্যাণ ও অকল্যাণও সত্য -- তার জন্য একটুখানি প্রচেষ্টা যদি করি আজকে, আল্লাহ আমাদের রাহমাত দান করবেন এবং আমরা ধীরে ধীরে নিজেদের উন্নত করতে পারব। কোন দীর্ঘযাত্রার প্রথম পদক্ষেপটাই না নিলে কেউ কখনোই কোথাও পোঁছাতে পারতাম না। এই শুরু করাটাই আসল, 'বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম' বলে আমাদের এই যাত্রাটি শুরু হয়ে যাক আজই, এক্ষুনি! ইনশা আল্লাহ...

* quote collected from the page of Imam Omar Suleiman

[২৮ জুন, ২০১৩]

আন্তরিক কাজকেই আমরা পছন্দ করি মুখভরা বুলি নয়

মানুষের মুখভরা প্রচুর বুলি, প্রচুর জ্ঞানগর্ভ কথার অলংকার, প্রচুর উপদেশবাণী মনে হয় খুব কমই আমরা গ্রহণ করি। আমরা সম্ভবত অনেক বেশি শিক্ষা গ্রহণ করি অন্যদের আন্তরিক কাজগুলো থেকে, তাদের জীবন দিয়ে করা বিভিন্ন আচরণ ও কাজ থেকে। জীবন তিন দশকের শেষভাগে এসেও আমি দেখলাম আজকে যখন একজন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র অফিসার অফিসে ঘুরতে এলেন, তখন আমি কীভাবে তাকে অভ্যর্থনা দিবো, কীভাবে কথা বলবো এটার একটা ধারণা পেতে আমি শেখার জন্য তাকাচ্ছিলাম একজন সিনিয়র কলিগের দিকে, যার অন্য অনেক আচরণের বেশ কিছু আমার পছন্দ ছিলো। অথচ উনি আমাকে কখনো উপদেশ দিতে আসেননি, শেখাতে আসেননি।আমি দেড় বছর ধরে তাকে দেখে নিজে থেকেই এই আস্থাটি রেখেছি তার উপরে।

একটু বেখেয়াল হলেই চেপে ধরে যেই ভুল

একটা ভুল আমার জীবনে একটু বেখেয়াল হলেই চেপে ধরে ঘায়েল করে ফেলে আমাকে,আমি বারবার পথচ্যুত হই। ব্যাপারটা হলো, জীবনের মূল উদ্দেশ্য কখনই পার্থিব কিছু অর্জন করা  নয়। কখনো পৃথিবীর সমস্ত সুখ এক করে পেলেও তা আমার চিরস্থায়ী হবে না, কখনও প্রাপ্তিগুলো আমাদের পরিপূর্ণ শান্তি দিবে না। এই অন্তর পৃথিবীতে কখনই পূর্ণ হবার নয়, এই পৃথিবীর মতই আমাদের সুখগুলোও ক্ষণস্থায়ী। পৃথিবীর মাটিতে যেকোন রকমের প্রাপ্তিতে ভরপুর থাকা ঝকঝকে চকচকে মানুষগুলো কখনই আমাদের আলোচ্য বিষয় না। এই জীবনে আমাদের আসলে হারানোর কিছু নাই।

যে ছেলেটা মুসলিম হিসেবে বাঁচতে চায় তার জীবনটাই ভয়াবহ

যে ছেলেটা মুসলিম হিসেবে বাঁচতে চায় তার জীবনটাই ভয়াবহ। বন্ধুদের আড্ডায় কানকে সংযত রাখতে হয়, মুখে রাগ নিয়ে কথা বলা যায় না, বান্ধবীদের সাথে সবাই চিকেন খেতে গেলে সেখান থেকে কৌশলে সরে আসতে হয়, যত্রতত্র চকচকে বিলবোর্ড দেখে চোখ নামাতে হয়, বাসে-ট্রেনে চলতে গেলেও চোখ নামিয়ে সংযম করতে হয়। চারিদিকে ছাগু বলার লোকের অভাব নেই অবয়ব দেখে, শত্রুতা তো আছেই সবার। সবশেষে ঘরে ফিরতে হয়। প্রতিদিন-প্রতিমূহুর্তের এমন যুদ্ধযাত্রাগুলো সামলেই পড়াশোনা, চাকরি-বাকরি করা। একসময় এই যুদ্ধেও তার ক্লান্ত লাগতে থাকে। ছাত্রজীবন পেরিয়ে বছরের পর বছর চাকুরি করে বেতনের স্বর্বস্ব দিয়ে বাবা-মায়ের সংসারে দিলেও এমন সন্তানরা তখনো 'কমবয়েসি' থাকে। এমন সন্তানরা যখন বিয়ে করতে যায় তখন প্র্যাক্টিসিং মুসলিম পরিবারের লোকেরা অনেক অনেক টাকা খোঁজে, বাড়িঘর খোঁজে ঢাকা শহরে, শক্তপোক্ত আত্মীয় খোঁজে, তাদের মুখনিঃসৃত শব্দগুলো থাকে প্রখর, তীব্র ধারালো, নোংরা...

ফেসবুকে কল্যাণকর কথাতেও ডিসেনসিটাইজড হওয়া

আমার প্রথম ফেসবুক একাউন্ট যদি হিসেব করি, আমি তখন থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর ধরে একটানা ফেসবুকে ছিলাম/আছি। জীবনের কেন্দ্রে যেদিন থেকে সজ্ঞানে আল্লাহকে আনতে চেয়েছি, তখন থেকে ফেসবুকিং জিনিসটাতেও ভিন্নতা এসেছিলো, আসাই স্বাভাবিক। আমি শতাধিক মানুষকে চিনি যারা এমন করেই বদলেছেন।

ইদানিং আমার মনে হয় আমি সবচাইতে বেশি যে বিষয়টাতে ক্ষতিগ্রস্ত তা হলো -- 'ডিসেনসিটাইজেশন'... নাহ, আমি কোন নেগেটিভ বিষয়ে অনুভূতিহীন হয়ে যাবার কথা বলছি না। বলছি ভালো কথাতেই অবশ হয়ে যাওয়া।

৯ জুন, ২০১৩

ইউ টার্ন

আমি অসহায় এক বালক ছিলাম, কিশোর ছিলাম, তরুণ ছিলাম। শত-শত হাজার-হাজার বিষয় জানতে-শুনতে হয়েছে যা আমি চাইনি, জেনে-মনে রেখেও কখনো আনন্দবোধ করিনি তেমন। ভার্সিটির হলে থেকে বলিউড আর হলিউডের সর্বস্ব জানা হয়েছিলো চারদিকে শুনেই। শখ করে দশটা হিন্দি মুভিও দেখিনি জীবনে, আমি তবুও ওদের অনেক নায়ক-নায়িকার কার সাথে কার সম্পর্ক-বিয়ে তা ঠিকই জেনেছি। হয়ত কানে শুনে এখন পত্রিকায় পড়লে চোখে পড়ে। কোনদিন কোন গেমস খেলতে না বসলেও কয়টা বস পার হয়ে কম্পানি অফ হিরোস, কল অফ ডিউটি, কাউন্টার স্ট্রাইক, ফিফাতে কী কী ফিচার এসেছে তা আমি ঠিকই জেনেছিলাম। ক্লাসমেট-জুনিয়রদের বদৌলতে দেশের কোন ভার্সিটিতে মেয়ের সংখ্যা কেমন আনুপাতিক, তাদের কারা কেমন, কোন নায়িকার কয়টা বিয়ে, কার গার্লফ্রেন্ড কে, কে কার এক্স-গার্লফ্রেন্ড, কোথায় কবে কাকে কার সাথে দেখা গেছে... এরকম অপ্রয়োজনীয় তথ্যভান্ডারের মাঝে ডুবে থাকতাম।

৫ জুন, ২০১৩

শুধু তোমার কাছেই এই চাওয়া

হে আল্লাহ! আমি জানি আপনি আমাকে যতটা সুন্দর করে সৃষ্টি করেছিলেন, যতটা যত্ন ও ভালোবাসায় আমাকে অজস্র রাহমাতে পরিপূর্ণ করেছিলেন আমি ততই সবকিছুকে পায়ে ঠেলে নাফরমানিতে আর ভুলে ডুবে ছিলাম। নিজের অবস্থান নিজেই নিচ থেকে নিচে নামিয়েছি, অমর্যাদা করেছি নিজের, যুলুম করেছি নিজের উপরে। হে আল্লাহ, নিজের ভুলেই আপনার কাছ থেকে সরে গেছি দূর থেকে দূরে। হে আল্লাহ, যখন এই পৃথিবীর সব মানুষ আমার উপরে হতাশ হয়, ক্ষুব্ধ হয়, তখনো ঠিক ঐ মূহুর্তেই আমার তাওবা কবুল করে আমাকে ভালোবাসায় জড়িয়ে দিতে কেবল আপনিই থাকেন। কষ্টের সেই কঠিন সময়টাতে খুব ভালো করে বুঝি আপনি গাফুরুল ওয়াদুদ-- আপনি প্রেমময় ও ক্ষমাশীল। 

হে আল্লাহ! জীবনের ভুলগুলোর দিকে তাকিয়ে শত-শতবার উপলব্ধি করেছি আমি কতটা বোকা, অলস, একগুঁয়ে, দুর্বল চিত্তের, দুর্বল ঈমানের পাপী বান্দা। এই আত্মখেদ জেগে ওঠার সময় শয়তান আমাকে আরো দূরে ঠেলে দিতে চায় আপনার পথ থেকে। হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আপনি তাওবা কবুল করেন। আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। জীবনের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীর জীবনকে আপনার সন্তুষ্টির জন্যই তৈরি করার জন্য তাওফিক দিন। 

হে আল্লাহ, আপনিই তো একমাত্র দাতা। আপনি ছাড়া আমাদের আর কেউ নেই। আমরা দুর্বল, আমরা শুধু আপনার কাছেই হাত পেতে ভিক্ষা চাইছি। যেসব গুণাবলী অর্জন করলে আপনার আরো কাছে যেতে পাবো, আপনার ভালোবাসা পেতে পারব, সেগুলো অর্জন করার তাওফিক দিয়ে দিন। আপনার প্রিয় কাজগুলোকে ভালোবাসার তাওফিক দিয়ে দিন।হে রব্বুল আলামীন, অপর মুসলিম ভাইদের প্রতি ভালোবাসা আমাদের মাঝে তৈরি করে দিন, তাদের প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করা থেকে আমাদের অন্তরকে রক্ষা করার এবং অন্তরকে পরিশুদ্ধ করার তাওফিক দান করুন। 

হে আল্লাহ, সৎপথের সন্ধান পাওয়ার পর গোমরাহীর পথে আর যেন কখনো ফিরে না যাই। হে আল-মুজিব, আমাদেরকে আপনার পথের উপরে দৃঢ় ও অবিচল থাকার তাওফিক দিন। হে গাফুরুর রাহীম, হে আর-রাযযাক, আমাদের সকল অভাব ও অসহায়ত্ব থেকে কেবলমাত্র আপনার কাছেই আশ্রয় চাইছি। হে আল জাব্বার, আল-মুতাকাব্বির, আল-কারীম, আমাদেরকে দয়া করুন। জান্নাতী হবার জন্য যেসব গুণাবলী প্রয়োজন আপনি আমাদেরকে দান করুন। হে আল-কারিম, আল-মান্নান, আপনি ছাড়া আমাদের আর কেউ নেই যে কিছু দিবে, আমরা শুধু আপনার কাছেই ভিক্ষা চাই। হে গাফুরুর রাহীম, আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আমাদেরকে জীবনকে কবুল করুন, আমাদের তাওবা কবুল করুন, আমাদের দু'আ কবুল করুন। হে আল্লাহ! এই জমীনের বুকে এই উম্মাহকে আপনি বিজয় দান করুন।

৩১ মে, ২০১৩

কেউ পারবে না আমার পাশে দাঁড়াতে

যখন জানি পৃথিবীর কেউ পারবে না এইসব সময়ে আমার পাশে দাঁড়াতে, আমাকে সাহায্য করতে, আমার কষ্টগুলোর ভাগ নিয়ে আমাকে পথ দেখাতে, তখন সেই মহিমান্বিত গ্রন্থখানি হাতে নিয়ে পাতা ওল্টাই অসহায়ের মতন, পিপাসার্ত আর ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে -- সেই 'নূর' কুরআন যে এভাবে কথা বলে তা একদমই নতুন করেই উপলব্ধি করছি যেন! 'আল ফুরকান' -- সত্য মিথ্যার প্রভেদকারী, জীবনের প্রতিটি কঠিনতম ধাপে তা নতুন করে শেখাচ্ছে আমাকে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা জগতে যা হয়, যা হবে, যা হবে -- এই সব বিষয়ই জানিয়ে রেখেছেন, কী করতে হবে তাও বলে দিয়েছেন। খুঁজে নিতে হবে সেখান থেকেই... আমাদের মহাপবিত্র রাহমানকে ছাড়া আর কাকে ভালোবাসব? আর কে আমাকে পথ দেখাতে পারবে? আর কে আমার অশান্ত হৃদয়কে শান্ত করবে, আমার করণীয় বলে দিবে? কেউ না... সমস্ত ক্ষমতা কেবল তারই, আর কারো কোন ক্ষমতা নেই...

সেদিন পড়ছিলাম এইরকম কিছু কথা। হৃদয়কে শীতল করে দেয়... 

 
"যা কিছু আকাশসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে আছে, সব আল্লাহরই। যদি তোমরা মনের কথা প্রকাশ কর কিংবা গোপন কর, আল্লাহ তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। অতঃপর যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করবেন এবং যাকে ইচ্ছা তিনি শাস্তি দেবেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান। রসূল বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। 

হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর।"

---- [সূরা আল বাকারাহ, আয়াতঃ ২৮৪-২৮৫-২৮৬]

১১ মে, ২০১৩