৩১ আগ, ২০১২

অভিমানী মন

যদি কখনো আপনার ক্লাসমেট, চেনাজানা বা বন্ধুমহলে এমন কেউ থাকে, যে অল্প কথায় মন খারাপ করে ফেলে, অভিমান করে -- সে যদি ক্ষতিকর না হয়ে থাকে, তাহলে সম্ভব হলে তার প্রতি বিরক্ত হবেন না।

হয়ত সে কোনদিন ভালো ব্যবহার পায়নি তার গড়ে ওঠার সময়টাতে, হয়ত সে সুন্দর ব্যবহার কি তা-ই জানেনা, হয়ত সে ভালোবাসা পেতে শিখেনি আপনজনদের কাছ থেকে। হয়ত সে আজীবন কেবল তার সমালোচনা শুনেই বড় হয়েছে।

 হয়ত তার প্রতি আপনার ভালো ব্যবহারটুকু তার জীবন বদলে দিতে পারে। কে জানে, হয়ত আপনার এই ভালো ব্যবহারটুকু আপনার অনন্তকালের জীবনটাও বদলে দিতে পারে...

২৮ আগ, ২০১২

বিয়ে করতে কি কোন প্রস্তুতির দরকার হয়?

আমাদের সমাজে ছেলেমেয়েরা কেন বিয়ে করে? 
অনেক তরুণ-তরুণীরা হয়ত বিয়ে করতে চায় কারণ তাদের বন্ধুবান্ধবরা বিয়ে করে ফেলছে, কারও আবার বাবা-মা চাপ সৃষ্টি করছে বিয়ে করার জন্য, কেউ ঘরের পারিবারিক জীবনের সমস্যা থেকে মুক্তির জন্যও বিয়ে করতে চায়। কেউ কেউ অন্যের শারীরিক সৌন্দর্য দেখে বা অর্থ-সম্পদের কারণে বিয়ে করতে আগ্রহী হয়। কেউ কেউ খুঁজে একজন সঙ্গী, কেউ পারিবারিকভাবে শক্ত একটা অবলম্বন পেতেও বিয়ে করতে চায় যেটা একটা বিয়ের মাধ্যমে সম্ভব। আবার মুসলিম হিসেবে রাসূলের সুন্নাহ পালনের মাধ্যমে ইবাদাত হিসেবেও বিয়ে করতে চান।

আরেকটা মানুষের সাথে আজীবন থাকার অভিপ্রায়ে যখন যাত্রা শুরু হয় দু'জন ছেলে এবং মেয়ের, তখন তাদের অনেক রকমের প্রস্তুতির দরকার পড়ে। দু'টো পরিবারকে তারা জুড়িয়ে দেয়, এখানে আরেকটা পরিবারের সাথে *নিজেদেরকে* মানিয়ে নেয়ার ব্যাপার থাকে। অনেক ধরণের চারিত্রিক গুণ প্রয়োজন, যেগুলো ছাড়া দিব্যি সমস্যাবিহীন *সিঙ্গেল* লাইফ কাটানো গেলেও বিবাহিত তা অবধারিত প্রয়োজন। তাই এগুলোর অবর্তমানে যদি সম্পর্কে চাপ বা টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়, অন্য কাউকে দায় দেয়ার নেই, ভোগান্তি তো হবেই।

বর্তমান সময়ে টেলিভিশন মিডিয়া, কমার্শিয়ালের মাঝে ডুবে থেকে অনেক ছেলেমেয়েরাই বিয়েকে মডার্ন ডেটিং টাইপের কিছু ভেবে বসেন। কেবল অবিমিশ্র সুখ, উদ্দাম আনন্দ। অথচ, বিয়ের পর দেখা যায় টুথব্রাশ এখানে কেন, টাওয়েল ওখানে কেন টাইপের ছোট ছোট জিনিসেও অমিল পাওয়া যায় একজন আরেকজনের। বিয়ের প্রথম দিকে ভালোবাসা উপচে পড়ার কারণে এইসব অগ্রাহ্য করলেও কিছুদিন পর আরেকজনের এইসব ছোটখাটো অমিলগুলোও অসহ্যবোধ হতে থাকে। 

১৭ আগ, ২০১২

বিয়ের অপর নাম প্রশান্তি, উচ্ছ্বাস আর দয়া

কিশোর বয়স থেকে বিয়ের ব্যাপারে আমার একটা প্রশ্ন ছিলো মনে, সেই  প্রশ্নটা যাদের করেছিলাম, তাদের উত্তর কিছু খুবই নিম্নমানের। তাই আদতে আমার কৌতুহল নিবৃত্ত হয়নি। প্রশ্নটি ছিলো, দু'জন মোটামুটি অপরিচিত মানুষ কীভাবে সারাটা জীবন একসাথে কাটিয়ে দিতে পারে? মোটামুটি অপরিচিত বললাম এই কারণে যে, বিয়ের আগে থেকে আসলে তেমন একটা জানাজানি একদমই সম্ভব না। একসাথে থাকতে গেলে তখন টের পাওয়া যায় যে অনেকে অনেক ছোট-ছোট বিষয়েই বিরক্ত হয়। আর তার উপরে যখন একটা বয়স পরে অনেকের শরীরে রোগবালাই  ভর করে, তখন তো অপরজন অপার ভালোবাসায় আর যত্নে তার দেখাশোনা করেন -- এমনটাই বা কী করে সম্ভব?

অবশেষে আমি আমার প্রশ্নের উত্তর পেলাম। তাও পেয়েছি পবিত্র কুরআনুল কারীমের আয়াত থেকে। নুমান আলী খানের আলোচনা থেকে শেখা সেই আয়াতটির ব্যাখ্যা এখানে উল্লেখ করছি --


আল্লাহ বলছেনঃ

"আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে"।  [সূরা আর-রুমঃ ২১]

      
এই আয়াতটিতে আল্লাহ্‌ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের অতুলনীয়, সংক্ষিপ্ত এবং সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা দিয়ে এই সম্পর্ককে তাঁর (সুবহানাহু ওয়া তা'আলা) একটি নিদর্শন (আয়াত) বলে উল্লেখ করেছেন। আসুন এই পবিত্র সম্পর্ক সম্বন্ধে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা কি বলেছেন সেটা জানি। সম্পর্কটির বিভিন্ন পর্যায় তিনি তিনটি শব্দের দ্বারা ব্যাখ্যা করেছেন।

৮ আগ, ২০১২

আলোর স্পর্শ


ইদানিং কিছু যখন পড়তে গিয়ে মনে হয় বিশাল আবিষ্কার করে ফেলেছি, তখন ডানে বামে তাকিয়ে দেখি আমার চেয়ে কমবয়েসি অনেক মানুষ সেসব অনেক বছর আগেই পড়ে শেষ করে ফেলেছে।নিজেকে তখন হঠাত বাচ্চা বলে মনে হতে থাকে.... সেদিন একটা বই পড়তে গিয়ে একটা মজার জিনিস জানলাম, সেটা অভ্যাসবশত শেয়ার করার জন্য  লাফ দিয়ে ফোন হাতে নিয়েই থেমে গেলাম। ছোট ভাইটা নিশ্চয়ই এসব পড়ে রেখেছে অনেক বছর আগেই। সবাই তো আর আমার মতন মূর্খ ছিলনা!

আজকাল কুরআনের তাফসীর পড়তে গিয়ে দেখি আব্বু অজস্রবার পড়ে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে আন্ডারলাইন করে, হাইলাইটার দিয়ে হাইলাইট করে রেখেছেন। অথচ আমি হতভাগা একবারও পড়ি নাই।

ইদানিং দ্বীনের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত সব মানুষগুলোকেই ব্যাপক হিংসা হয়... ছোটবড় কোন ছাড়াছাড়ি নাই...

১ আগ, ২০১২

তারিক রামাদান প্রবচনগুচ্ছ - ২

আগের পর্বঃ তারিক রামাদান প্রবচনগুচ্ছ - ১

ইসলামের বার্তার ব্যাপ্তি সামগ্রিক জীবন নিয়ে, যেখানে প্রতিটি বিশ্বাসের পাতায় পাতায় আছে যুক্তি, আছে কল্যাণ। প্রতিটি নিয়মের সাথে জুড়ে আছে আমাদের জীবনের পূর্ণাঙ্গ চিত্র। আর এই চিত্রকে অনুপ্রেরণার মাধ্যমে যিনি ছড়িয়ে দিতে পারেন বলে আমি বুঝেছি -- তিনি তারিক রামাদান। পশ্চিমের তরুণদের অনুপ্রেরণা এই ভিন্নমাত্রার ইসলামিক স্কলারের লেখা পড়তে গিয়ে এবং আলোচনা শুনতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হওয়া কিছু প্রবচন আমি সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছি। এই প্রচেষ্টার দ্বিতীয় পর্ব আজ প্রকাশ করছি।