২২ নভে, ২০১১

মন আর মায়াজাল [কবিতা]



ইদানিং এই এই চারপাশ, এই ঘুমভাঙ্গা ভোর,
এই মায়ামাখা মায়ের মুখ, বাবার উজ্জ্বল শুভ্র চেহারা,
সবকিছুকে আমার স্মৃতিময় লাগতে থাকে।
স্মৃতিকাতর হয়ে সবাইকে ভালোবাসায় একবার করে ছুঁই,
বন্ধুদেরকে বুকে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে মাথা ছুঁইয়ে দিই,
তারপর "আসি তবে বন্ধু" বলে বিদায় নিয়ে ফিরি।

১৮ নভে, ২০১১

একটা মিছিলের গল্প

মিছিল শব্দটি শুনলেই একটা দৃশ্য ভেসে ওঠে আমার চোখে। একদম সামনে কিছু মানুষ -- হাতে তাদের কিছু প্ল্যাকার্ড অথবা ব্যানার, পেছনে সারিতে সারিতে তাদের অনুসরণ করছে একদল মানুষ। তারা একটা নির্দিষ্ট কারণেই সবাই একসাথে, একই ছন্দে হেঁটে চলেছেন কোন একটা ময়দানে জমায়েত হবেন বলে। যে কারণে তারা সবাই একসাথে এগিয়ে চলেছেন -- হতে পারে সেটা কোন প্রাপ্তির বহির্প্রকাশ, হতে পারে সেটা কোন দাবী আদায়ের আকাঙ্খা। কারণ যেমনটাই হোক, তারা একই সাথে, একই গলায় শব্দোচ্চারণ করেন, একই পদক্ষেপে এগিয়ে চলেন সামনের দিকে।

এমন একটা মিছিলের কথা আমার মনের দৃশ্যপটে জেগে উঠছিলো বারংবার। অমন একটা মিছিলে আমিও শামিল হয়েছি। আমার চারপাশে একদল মানুষ -- তাতে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরীরাও আছে। দৃঢ় তাদের চেতনা, বুকে তাদের অজস্র ভালোবাসা, চিত্ত তাদের ভয়শূণ্য, দৃপ্ত তাদের পদক্ষেপ। আমি চারপাশে চেয়ে থেকে ভাবছিলাম -- এ আবার কোন মিছিল? আমি কীভাবে এখানে এলাম?


১৭ নভে, ২০১১

বিচ্ছুরিত আলোর নতুন প্রত্যয়

পথ চলতে আঁধারের সমুদ্র দেখে হতচকিত
স্বাপ্নিক আশাবাদী আত্মায় জাগে বিষের যন্ত্রণা।
আলো না থাকাকেও ওরা আলো বলতে চায়, কিন্তু
আমি বুঝেছি এটি আঁধার, যা আসলে আলোর বিচ্ছিন্নতা।
এই সমাজের আলোক উৎসগুলোর ছড়িয়ে পড়ার
পথ রুদ্ধ করে দেয় কিছু আলোকময় অন্ধকার অবয়ব,
তাদের বিশালাকার মূর্তিতে মুগ্ধ হয়, আর
অবনত হয় সহস্র মস্তক -- কিশোরীর দল, কিশোর ছেলে।
আলো বঞ্চিত করতে হলে কি তোমায় অন্ধকার করে দিতে হবে? নাহ!
আলোর ছুটে আসা ধারাকে বিচ্ছিন্ন করে ছড়িয়ে দিলেই ষড়যন্ত্র সফল।
একদল তাজা প্রাণ এই ছায়াকেই আলো মনে করে বেড়ে ওঠে,
ভালোবেসে গড়ে তোলে আঁধার-প্রাঙ্গন।
দীর্ঘ সময় আবছা আলোয় কাটালে সূর্যালোকে সবাই বিরক্ত হয়।
অথচ সেই আলোই আসলে তার বেঁচে থাকার প্রাণশক্তির সঞ্চয়।
সত্যকে দেখে ছিটকে পড়ে তাজা প্রাণগুলো, প্রতিবাদ করে তখনই
মিথ্যে দেখে যখন ভুলে যায় সত্যের সুগন্ধময় বিচরণ।
অথচ, প্রতিটি হীরের টুকরা হতে পারে আলোর উৎস।
সমাজের প্রতিটি আলোকময় আত্মা হতে পারে তেমনি
একেকটি আলোকজ্বল আলোর সৌন্দর্যময় ঝলকানি
হতে পারে সত্যের আর সুন্দরের সুসজ্জিত বাহন।
এই অন্ধকার বিদীর্ণ করে আসতে চাওয়া আলোকে দেখা যায় আজ
এই আলোর দল আর কখনো অপবর্তিত হবেনা।
ঝলসে উঠবে অজস্র আলোক আভার বিচ্ছুরিত সত্যে
অনন্তকালের এক সত্য চিরন্তন আলোর সাথে মিশে যাবার দৃঢ় প্রত্যয়ে, স্বপ্নে।

** অনেকদিন পরে কাব্য লেখার একটা প্রচেষ্টা করলাম। এরকম অনুভূতি দিয়ে কাব্য লেখা যায়, তা দেখেছি এই বাংলার বড় বড় কবিদের মাঝে। কাজী নজরুল ইসলাম, ফররুখ আহমদ, আল মাহমুদ লিখেছেন অসাধারণ কাব্য। এই শতাব্দীর কবি মতিউর রহমান মল্লিক, আসাদ বিন হাফিজ -- যারা শব্দ দিয়ে খোদার ভালোবাসা জাগানিয়া আর সমাজকে নিয়ে আশা দেখানিয়া মানুষ। আল্লাহ তাদের সকলের রুহের মাগফিরাত দান করুন এবং তাদের উত্তম বিনিময় দান করুন।

.....
ঢাকা, বাংলাদেশ
১৭/১১/২০১১

১৪ নভে, ২০১১

আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ কোন সে বাঁধনে

সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে আমাদের প্রজন্ম। আমাদের সময়, আমাদের পরিবার, আমাদের বন্ধন আর আমাদের চারপাশ! তথ্য প্রযুক্তিতে থ্রি-জি, ফোর-জি এর জেনারেশন বদলের চাইতেও দ্রুত বদলে যাচ্ছে আমাদের জেনারেশন, তার "ইন্টারনাল টেকনোলজি" আর ইভোলিউশন হচ্ছে অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে।

আগে একটা সময়ে আমাদের প্রজন্মের আব্বা-আম্মারা তাদের মধ্যে কথাবার্তা 'মেলামেশা' ছাড়াই বিয়ে-শাদী করেছিলেন। সারাটা জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন। আমাদের দেখলে গলার কণ্ঠ নামিয়ে তর্ক-ঝগড়া করতেন। কথায় কথায় মায়েরা বাপের বাড়ি 'যাও', 'যাবো' বলতে পারতেন না, বলতেন না... একাট্টা হয়ে দু'জনে মিলে যুদ্ধ করে সংসার নামের নৌকাটার হাল ধরতেন সংসার জীবনের চরম দুর্দিনেও... পারস্পরিক সম্মান, অগাধ বিশ্বাস আর দু'জনের মিলিত "কমিটমেন্টের" মাধ্যমে তারা পাড়ি দিয়েছেন বিশাল পথ। ভালোবাসা শব্দটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে দেখিইনা আমরা তাদেরকে!