৩০ জানু, ২০১১

নীরবতা হীরন্ময়

খনো ভাবিনি এরকম কিছু লিখতে বসবো। কিন্তু কিছু কথা আজ বলতে ইচ্ছা করছে। এই কথাগুলো আমার বিগত জীবনে আবিষ্কার করা একদম গভীর উপলব্ধি থেকে বলা। 

ছোটবেলা থেকেই যে শিক্ষায় আমি বড় হয়েছি, তা ছিলো একটা পূর্ণাঙ্গ ইসলাম। যেই ইসলামের অর্থ শান্তি। যেই শান্তির পরশ শুধু এই জাগতিক জীবনকে ছাড়িয়ে অনন্তকালের আখিরাতকেও পূর্ণ করে। এই শান্তি জীবনের প্রতিটি ভাবনা, চিন্তা আর ব্যবহারের মাঝে প্রতিফলিত হয়। আচরণে আর মনের কাছে 'তীব্র' অনুভূতিগুলোকে শীতল সঞ্জীবনীর স্পর্শে স্বাভাবিক গ্রহণীয় করে তোলে। তখন আর মানুষ কিছুতেই 'হায় হায় সব চলে গেলো', '"এ জীবনের আর কী পেলাম" -- জাতীয় ভাবনা থেকে বহুদূরেই থাকে। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপেই বোধকরি তাই আমি 'এক্সট্রিম' হতে পারিনি। ব্যক্তিগতভাবে আমার সবসময়েই এটা নিয়ে একটা হালকা আক্ষেপ মতন ছিলো। কিন্তু কিছু স্বভাব মানুষের বদলে ওঠা ব্যাপক কষ্টসাধ্য, তার ভিন্নরূপ সঠিক পথকে খুঁজে বের করা তখন জরুরী হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে এই জ্ঞানের মাঝে আবিষ্কার করলাম কিছু সুন্দরতম পথনির্দেশনা। আমার মহান রব, যিনি বিশ্বজাহানের প্রতিপালক তিনি আমাকে নিকটবর্তী আর অত্যন্ত কল্যাণকর একটা পথের নির্দেশনা দিয়েছেন পবিত্র কুরআনুল কারীমেই। যার নাম এক কথায়-- মধ্যমপথ।

আমার দুঃখিনী মায়ের প্রতি

মা, আজ তোমার কাছে নতজানু হয়ে ক্ষমা চাইছি মা। সত্যি বলছি মা, খোদার কসম, আমার চোখে অশ্রু বয়ে চলেছে অবিরাম। মা জানো, আমি এই দুঃখবোধকে কীভাবে চাপাবো জানি না, তাই তোমাকে লিখতে বসেছি মা। জানি তুমি পাবেনা, জানি নপুংসকের দল তার আগেই এটা কেড়ে নেবে। তবু তোমায় না লিখলে আমার অপরাধবোধগুলো যে আমাকে কুরে কুরে খাবে গো মা!


মা, সে-ই কবে তুমি আমাদের মা হয়েছিলে বলতে পারো? আজ অনেক বছর হলো, তাইনা? তোমার সন্তানেরা এলো তোমার কোল জুড়ে। কত স্বপ্নই না ছিলো তাদের নিয়ে তোমার। তুমি স্বপ্ন দেখতে চেয়েছিলে একদল সুন্দর প্রজন্মের। তারা আকাশে বাতাসে আনন্দের হর্ষধ্বনি করবে... তারা তোমার মুখে হাসি ফোটাবে। সেই স্বপ্ন তো তোমার অমূলক ছিলো না গো মা। তুমি তো কম কষ্টে মা হওনি। তুমি দেখেছিলে, তোমার জন্য কতগুলো প্রাণ তাদের বুকের তাজা খুন ঝরিয়েছিলো। তুমি জানতে একদিন তুমি মুক্তি পাবে। সেদিন তোমার সন্তানেরা তোমার মুখ উজ্জ্বল করবে। এই আশা করাটা তোমার অধিকার ছিলো-- তুমি তো আর কম কষ্ট সহ্য করনি!

মা গো, তুমি চল্লিশটা বছর ধরে দেখছো মা-- কী অবর্ণনীয় নোংরা হয়েছে তোমার সন্তানেরা। মা গো, আজ তোমারই বাড়ির সীমানায় কতগুলো অসচ্চরিত্র, লাজহীন মেয়েদের উলঙ্গ নৃত্য দেখতে খরচ করছে তোমারই সন্তানেরা। এক ভাই যখন একবেলা খেতে পায় না, তখন হাজার হাজার টাকা খরচ করে আরেকজন প্রমোদানন্দ করে মা, তার অনেক খায়েশ! মা, এসব তো তোমারই দোষ। তুমি ভেবেছিলে তোমার এক সন্তান অপরজনকে না দিয়ে খাবে না। তুমি ভেবেছিলে তারা একে অপরের সাথে মন খুলে আলাপ করবে, অপরের ভুল দেখলে প্রতিবাদ করে তাকে শুধরে দেবে। তারা ভালোবাসার এক পরিবার রচনা করবে! কোথায় গো মা? এতগুলো বছর পর তোমার সন্তানেরা অনেক দল হয়েছে। তাদের মধ্যে যারা শক্তিশালী, তারা আজ অপর সবাইকে ছুরি চাকু দিয়ে হত্যা করতে চায়। কেউ চায় তার অর্থ দিয়ে সবকিছু কিনে অন্যদের ভিটেছাড়া করতে। মা গো, তুমি এই-ই চেয়েছিলে?

পড়শিদের সুন্দরী মেয়েগুলো যখন স্বল্পবসনে ঘুরে বেড়ায়, আমার বেশিরভাগ ভাইগুলো তাদের গিলে গিলে খায়। ওই বাড়ির লম্পট ছেলেটা দেখতে সুন্দর হলেও আমার বোনেরা ওর ঠোঁটের স্পর্শ পাওয়ার জন্য লাইন ধরে দাঁড়ায়, জানো মা? ওরা জানে আমাদের এই দুর্বলতা, আর তাই সুযোগ পেলেই মেয়েগুলো আর ছেলেগুলো আমাদের আঙ্গিনায় আসে, ঢলাঢলি করে, তারপর অনেক টাকা নিয়ে চলে যায়। আমি জানি মা, এসব কথা জেনে তুমি কখনই সহ্য করতে পারবে না, কিন্তু মা এই সত্য তো একদিন না একদিন তুমি জানবেই। একদিন হয়ত ওদের বাড়ির মেয়েগুলো, ওদের বাসার সুন্দর গাছ আর জলাশয়ের লোভে তোমাকেই বেচে দিতে পারে ওরা! -- এই আশংকা আমায় স্বস্তি দেয় না গো মা।

আমরা তোমাকে মা মা করে চিৎকার করেছি, তোমার মাটিকে সোনা সোনা বলে দাবী করেছি। আবার তোমাকেই বেচে দিতে যাছি পড়শিদের কাছে। মা, এই অসহায় সন্তানকে ক্ষমা করো। মা, এই দুর্বল সন্তানটা তোমাকে অনেক ভালোবাসতো মা। মা, আমার চোখের ঝরঝর ঝরে যাওয়া অশ্রুগুলো কেবলি তোমাকে ভালোবেসে-- বিশ্বাস করো। তোমাকে ওরা কীভাবে কলংকিত করতে পারে ভেবে আমি শিউরে উঠছি ক্রমাগত। মা গো, আমার ভাইগুলোকে অনেক বুঝাতে চাইছি, চেয়েছি। কিন্তু ওরা একদম মজে গেছে মা। শরাব, অর্থ, নারীর লোভে ওরা ভুলেই গেছে এই সম্পত্তি, এই বাড়িঘরের দেখাশোনার দ্বায়িত্বটা তুমি কতটা আদর করে দিয়েছিলে আমাদের।


ওরা আজ তোমার প্রতি ভালোবাসার অনুভূতি নিয়ে ব্যবসা করে। মা, বড় বোন মাঝে মাঝেই পড়শির বাড়ি বেড়াতে যায়। ফিরে এসে আমাদের নতুন নতুন আদেশ করে। জানো, সবগুলো কাজই কেমন যেন অদ্ভূত, তবু পালন করি। তুমি তো শিখিয়েছিলে বড়দের নির্দেশ পালন করতে! আমি তো তোমার কথাগুলো শুনি, ওরা কেন তবে এমন? ওরা কেন তোমার প্রতি সমস্ত প্রতিজ্ঞাই ভুলে গেলো?


আমি জানিনা আমার কী হবে। আমি জানিনা তোমার কী হবে মা। আমাকে ক্ষমা করিও। আমাকে ক্ষমা করিয়ো। আমি জানি তুমি আমার দুখিনি মা। তোমাকে কিছু দিতে পারলাম না মা। আমি ভীষণ লজ্জিত, মাগো! আমায় ক্ষমা করো।
---------
 ২৬ ডিসেম্বর ২০১০, দুপুর ০৩:৩০

জানি চলে যাবো একদিন

জানি একদিন চলে যাবো।
এই সকালের ঘাসগুলো আর আমার পায়ের স্পর্শ পাবেনা।
জানি সেদিন ঝরে যাওয়া পাতাদের আর কেউ মাড়িয়ে ঝুরঝুর করে দেবেনা।

জানি আটকে পড়া চড়ুইটাকে আর আমার মতন করে কেউ জানালা দিয়ে বের করে দেবেনা।
এই আমার আর পথ চলতে চলতে থেমে যাওয়া ঠেলাগাড়িটাকে ঠেলে দেয়া হবেনা।

সেদিন যেমন মায়ের কপালে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলাম তখন মনে হচ্ছিলো-- কতদিন আমার মামণিকে এভাবে পাবো জানিনা! এই মায়ের কোলে কোলেই বড় হয়েছি কতগুলো বছর! এই ছোট শরীরটার উপর কতনা পরিশ্রম বাড়িয়েছি সেই ছোট্টবেলায়। মামনির কত রাত যে ঘুম হয়নি আমার জন্য তা তো গুণেও হয়ত শেষ করা যাবেনা!

আজ আদরের ছোট বোনটার সাথে অভিমান করে কথা বলছি না দুপুর থেকে, হয়ত সে এখনো বুঝেনি আমাকে ফেলে রেখে বাসায় চলে এলো বলে এতটা পথ হেঁটে ফিরেছি নিজেকে কষ্ট দিতেই। তবু ওর উপর রাগ করবো না, ভালোবাসা একটুও কমবে না। কালই হয়ত ও চাইবে বলে সন্ধ্যাবেলায় বাইরে ছুটে যাবো সিংগাড়া নিয়ে আসতে।
কারণ, মাঝে মাঝেই মনে হয়-- একদিন হয়ত চাইলেও আর এত কাছে পাবো না, এভাবে করে ভালোবাসতে পারবো না।

মাঝে মাঝে অনেকের উপর অনেক রাগ হয়। অনেক মানুষের উপর! কেন তারা এত কষ্ট দিতে পারে অন্যদেরকে? প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলি না। খানিকক্ষণ নিজেকে বুঝাই, রাগ অন্যায়ের জন্ম দেয়...
এই যালিম মানুষদের বেশিরভাগের জন্যই করুণা হয়-- হায়! যদি তোমরাও একটু অনুধাবন করার ক্ষমতা হতো-- এই ছন্নছাড়া অল্প ক'দিনের বেড়াতে আসাটা খুব দম্ভের কিছু নয়।

ইদানিং কারো উপর রাগ করিনা, আক্রোশ দেখাই না। হয়ত কিছুদিন পরেই চলে যাবো একদম সবাইকে ছেড়ে-- এই মাঠ-ঘাট-প্রান্তর আর প্রিয়জনদের ছেড়ে।
সকালের স্নিগ্ধ আলোর পরশ হয়ত সেদিন চলে যাওয়া অনেকের মতন আমিও পাবো না।
রাতের এই জোছনার আলোতে পথে আমার ছায়াটাকে আলাদা করে দেখতে পাবো না। ছায়ার মাথাটাকে পা দিয়ে চেপে দেয়ার চেষ্টা করতে করতে বাসার গেটে চলে আসা হবেনা।

একদিন হয়ত চাইলেও কিছুই বলতে পারবো না, শুধু অনুভব করে যাবো। হয়ত সেদিন সব বুঝেও না বলতে পারার আক্ষেপে যন্ত্রণাদগ্ধ হবো।
অথবা হয়ত একদিন কেবলি ভালোবাসা পাবো। যে ভালোবাসা পেলে আর কিছু লাগেনা! আনন্দে আর স্মিত হাসিতে কেটে যাবে অনন্তকাল।

একদিন......... কতদূরেই না চলে যাবো!!

(পুনশ্চঃ এটা কবিতা নয়, কেবলি স্রোতের মতন করে ভাবনাদের বয়ে যাওয়া)
--------------------------
১৮ ডিসেম্বর ২০১০, রাত ১০:০৭

স্বপ্নগাঁথা রূপকথা

একদেশে এক রাজা ছিল। তার রাজত্বে সুখের অন্ত ছিলো না। রাজ্যের সব লোক সুখে ছিলো। সেই রাজ্যে কেউ মিথ্যা কথা বলতো না। কেউ অভাবে থাকলেও রাজা ও তার মন্ত্রীরা এসে খোঁজ করতো তার খাওয়া দাওয়া চলে কিনা। না হলে রাজকোষ থেকে তাদের সাহায্য করা হতো। মোটকথা, রাজ্যের সবার মুখে কেবলি রাজার গুণগান।

সেই রাজ্য ক্রমাগত বড় হতে থাকলো। রাজার প্রতি অনুগত যোদ্ধাদের সংখ্যাও বাড়তে লাগলো আর তারা সবাই মিলে ছুটে যেতে লাগলো রাজ্যের দৈর্ঘ্য বড় করার জন্য। রাজাও খুশি তার বাহিনীর উপর। তার চাইতে সে আরো বেশি খুশি ছিলো তার রাজকুমারের প্রতি। অমন রাজকুমার পাওয়া আনন্দেরই ব্যাপার বটে। পিতার সমস্ত সুন্দর গুণাবলী রপ্ত করেছিলো সে। রাজকুমারের বীরত্বের গাঁথা-গল্প রাজ্যের রমনীকূলের কানে মুখে চলতো। অমন শৌর্যবীর্যের অধিকারী যেই রাজকুমার, তাকে পছন্দ হবেই না কেন? কিন্তু রাজকুমারের এসবে ভ্রূক্ষেপ ছিলো না। সে জানতো, তার কাজ সে করে গেলে একদিন কুঁচবরণ রাজকন্যার মতন সুন্দরী অপরূপা ঠিকই তার অন্দর আলোকিত করবে।

রাজকুমারকে নিয়ে রাজার অনেক আশা ছিলো। তার আশা, তার মৃত্যুর পর তার ছেলে হাল ধরবে রাজ্যের। কিন্তু সে তার ছেলের বীরত্বের চাইতে তার ছেলের শিক্ষাদানের গুণাবলীতে আরো বেশি আশাবাদী ছিলো। রাজকুমার কখনই তার সিপাহসালারদের রণকৌশল শেখাতে কার্পণ্য করে না। বরং, রাজকুমার চাইতো তার সেনাবাহিনীর সবাই তার মতই অসাধারণ বীরত্ব অর্জন করুক। সবাই যখন ক্ষুরধার যুদ্ধবাজ হবে, তখনই তো তাদের সফলতা!

কিন্তু সেই সুখ বেশিদিন রইলো না। রাজ্যের কিছু হিংসুটে দুষ্ট লোক শত্রুদের রাজ্যের দৈত্যদের সাথে আঁতাত করলো। কিছু দৈত্য মানুষের রূপ ধারণ করে রাজ্যে ঘুরে বেড়াতো। তাদের ডেকে এনে সেই লোকগুলা রাজদরবারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস করতে লাগলো। শত্রুরাও জানলো রাজকুমার আর তার সিপাহসালারদের কী করে ভুলিয়ে রাখা যায়। তারা যদি কিছুদিন তাদের যুদ্ধকৌশল নিয়ে চর্চা না করে, তাহলে ক্রমেই তাদের দুর্বল করে দেয়া যাবে। রাজকুমার আর তার সৈন্যেরা প্রতিদিন কয়েকবেলা করে তাদের নিশানা চর্চা করতো। দৈত্যরা এই জিনিসটাকে খুব ভয় পেতো।

একদিন রাজা চলে গেলেন। নতুন রাজকুমার হবে রাজা। কিন্তু সবাই শোকগ্রস্ত। কেউই কাজে মনোযোগী না। এমন সময়ে দৈত্যরা তাদের মনিবের আদেশে প্রথমে সৈনিকদের লক্ষ্য করলো। সাহায্যকারী লোকদের সাহায্যে কিছু সুন্দরীদের দিয়ে কানপড়া দিলো তাদের। তারপর, সৈনিক, উজীর-নাজির-সিপাহসালাররাও মদ-শূরায় মত্ত হয়ে চিত্তবিভ্রম হয়ে পড়ে রইলো এক নাচনেওয়ালীর আড্ডায়। সেদিন হঠাৎ রাজ্য আক্রমণ হলো। দৈত্যের দল কাউকে রেহাই দিলো না। সমগ্র রাজ্যে রক্তের বন্যা বয়ে গেলো। শুধু রাজকুমারের মতন কিছু বীর, যারা সজাগ ছিলো সেদিন--তারাই কেবল প্রাণ নিয়ে পালাতে পারলো।

রাজকুমার গহীন বনে ছুটে চললো। তার পেছন পেছন ছুটছিলো প্রজাদের অনেকেই। খাল-বিল-নদী-পাহাড় পেরিয়ে তারা ছুটছে তো ছুটছেই। অনেক বছর চলে গেলো, অনেক সময় পেরিয়ে গিয়ে তারা থামলো। গায়ে তাদের ছিন্ন বস্ত্র। বেশিরভাগকেই হারিয়েছে তারা পথে। রাজকুমার একা ছুটে চলছিলো। তার মনে অনেক দুঃখ। বন জুড়ে কেবলি ভয়। একটা বুলবুলি পাখি এলো তার কাছে। রাজকুমারের কাছে কিছু সৈন্য জানিয়েছে তারা বেঁচে আছে, তারা একটু সুস্থ হলেই আবার রাজ্যের খোঁজে যাবে।

এরপর শুধু অপেক্ষার পালা। আশ্রয়হীনভাবে, ছিন্ন পোশাকে কেবলি তারা অপেক্ষায় ছিলো। তারপর একদিন এক পাখি উড়ে এলো তাদের হারানো রাজ্য থেকে। তার পায়ে লেখা চিঠি থেকে জানতে পারলো রাজ্যের শত্রু রাজার মৃত্যু হয়েছে। নতুন রাজা অনেক উদার মানুষ। তাদের ডেকে পাঠিয়েছে। আনন্দভরা মন নিয়ে আবার রাজ্যের পথে বেরিয়ে এলো তারা। পথে অনেকেই যোগ দিতে শুরু করলো। নিজেদের রাজ্যে ফিরে গেলে নিশ্চয়ই তাদের ফেলে দেবে না। তারা সেই রাজ্যে ফিরে গেলে কত আনন্দ হবে, এই ছিলো পথের কষ্ট ভুলে যাবার সবচাইতে বড় সান্তনা।

তারপর সবকিছু ভুলে গিয়ে পথ চলতো রাজকুমার। পথের ক্লান্তি তাকে ছেঁকে ধরতো, বিশালাকার দৈত্যরা পথে আক্রমণ করতো, খাবলে ধরতো গায়ের কাপড়, হত্যা করবে বলে তারা পিছু ছুটতো! কৌশল করে সে পালিয়ে বাঁচতো। রাজকুমার হতাশ হতো না কেননা সে জেনেছিলো একদিন সে তার গন্তব্য পৌঁছবেই। সেদিন তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হবে। নতুন রাজকুমারী ফুলময়ী তাকে জানিয়েছে তার বীরত্বের অনেক গল্প শুনেছে সে। কথাটা ভেবে আনন্দে ভরে যায় রাজকুমারের মন। খালি পায়ে কাঁটাভরা পথে হেঁটে চলেছে তো কী হয়েছে? এই পথের শেষ মঞ্জিল হলো এক সুন্দর বাগান দিয়ে। ফুল-ফল-স্বচ্ছপানির স্রোত... সেই অপেক্ষাতেই আছে সে।

স্বপ্ন নিয়েই হেঁটে চলে সে... সুখের দিন তো বেশি দূরে নয়!

----------
১০ ডিসেম্বর ২০১০, রাত ১১:৪৮

২৫ জানু, ২০১১

সাইমুম সিরিজের বইসমূহের ই-বুক লিঙ্ক

আবুল আসাদের অসাধারণ একটি সিরিজ সাইমুম সিরিজ। আদর্শ, কৌশল, অ্যাডভেঞ্চার এবং আরো অনেক অনেক স্বাদের মিলিত লেখনী এই সাইমুম সিরিজ। ছোটকালে পড়া বইগুলোর প্রতি অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে আমার। আল্লাহ আবুল আসাদকে উত্তম বিনিময় দান করুন :)


  • এই লিঙ্কে  সাইমুমের অনেকগুলো বইয়ের ডাউনলোড লিঙ্ক পাওয়া যাবে। বইগুলো যদিও স্ক্যান করা, তবু পড়া তো যায়!